অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – স্বাধীনতা – ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

Sourav Das

আজকের এই আর্টিকেলে অষ্টম শ্রেণির বাংলা বিষয়ের ষট্‌বিংশ অধ্যায়স্বাধীনতা’ নিয়ে আলোচনা করা হবে, যেখানে ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এই প্রশ্নগুলো অষ্টম শ্রেণির বাংলা পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এগুলো প্রায়ই পরীক্ষায় আসে এবং শিক্ষার্থীদের প্রস্তুতিতে সহায়তা করবে।

অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – স্বাধীনতা – ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর
অষ্টম শ্রেণি – বাংলা – স্বাধীনতা – ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর
Contents Show

স্বাধীনতা বলতে কী বোঝো? কী কী বিষয়ে মানুষের স্বাধীনতা প্রয়োজন বলে তুমি মনে করো?

স্বাধীনতা হল মানবমনের এক জাগ্রত স্বাধিকারবোধ। এই বোধের অন্যতম ভাবটি হল, অন্যের অধীনে না থাকার মানসিকতা।

মানুষের মনে অনেক বিষয়েই স্বাধীনতা বা স্বাধিকারবোধ কাজ করে। তার মধ্যে অন্যতম কয়েকটি হল – বাকস্বাধীনতা , মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, কাজ করার স্বাধীনতা, বেঁচে থাকার স্বাধীনতা ইত্যাদি। তবে সমাজতাত্ত্বিকরা মনে করেন, মানুষের উল্লেখযোগ্য স্বাধীনতাবোধটি হল আর্থিক স্বাধীনতা।

মানুষ পরাধীন হয় কখন?

মানুষ পরাধীন হয় তখনই, যখন বলপূর্বক কোনো মানুষের স্বাধীন সত্তাকে হরণ করে নেওয়া হয়। অনেকসময় দেখা যায় রাজনীতিগতভাবে ক্ষমতা দখল করে, মারণাস্ত্রের ভয় দেখিয়ে, মৃত্যুর ভয় দেখিয়ে মানুষের স্বাধীনতা হরণ করে নেওয়া হয়। এতে মানুষের স্বাধীনতাবোধের অপমৃত্যু হয়। তখনই মানুষ অন্যের অধীন হয়ে পড়ে। নিজের উপর আর তার নিজের কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকে না।

মৃত্যুর পরে তো আমার কোনো/স্বাধীনতার প্রয়োজন হবে না, – পঙ্ক্তিটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।

স্বাধীনতা হল এক গভীরতম ভোগের বিষয়। কেন-না এই জীবনবোধের মধ্য দিয়ে চলমান যে-কোনো মানুষই সার্বিক সুখী। পরাধীন মানুষ কখনও যথার্থ সুখী হতে পারে না। মানুষ যখন বেঁচে থাকে, তখন তার স্বাধিকার ও স্বাধীনতা নিয়ে বাঁচার প্রশ্ন দেখা দেয়। মৃত মানুষের যেহেতু জৈবনিক কোনো লক্ষণ থাকে না, সেহেতু স্বাধীনতা ভোগ করার তার কোনো প্রয়োজনীয়তাই থাকে না। অতএব যদি স্বাধীনতা প্রয়োজন হয় তবে তা অর্জন করতে হবে এখনই। পরাধীনতায় কাতর হতে হতে মৃত্যু হয় যদি, তবে সে মৃত্যু হবে আপশোশের। স্বাধীনতা ভোগ করে জীবনপথ পার হওয়াই শ্রেষ্ঠ বাঁচা।

স্বাধীনতা একটা শক্তিশালী বীজপ্রবাহ, – পঙ্ক্তিটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।

বীজ হল একটা সত্তা। স্বাধীনতাবোধও তেমনই এক সত্তা, যা বীজাকারে মানবহৃদয়ের অন্দরে নিহিত থাকে। জন্মগ্রহণ করেই মানুষ একপ্রকার স্বাধীনতা অর্জন করে। কিন্তু পিতা-মাতা যদি পরাধীন দেশের নাগরিক হয়, তবে জন্মলাভ করেই পরাধীনতা তার আপনিই অর্পিত হয়। পরাধীন মানুষ যতই নির্যাতিত হোক, তার অন্তরে কিন্তু স্বাধীনতার বীজটি লালিত হতে থাকে হৃদয়ের রসে জারিত হয়ে। বীজ যেমন উপযুক্ত উপাদান পেলে অঙ্কুরিত হয়, তেমনই স্বাধীনতাও বীজপ্রবাহ-স্বরূপ উপযুক্ত ইন্ধন পেলে বোধের প্রসার ঘটায়। কখনো-কখনো এই বোধ উন্মাদনার আকার নিয়ে বিস্ফোরণের মতো ফেটে পড়ে। তখনই স্বাধীনতা অর্জনের পথ পরিষ্কৃত হয়।

আমাদেরও তো অন্য সকলের মতন/অধিকার রয়েছে,/দুপায়ের ওপর দাঁড়িয়ে থাকার,/দুকাঠা জমির মালিকানার। – পঙ্ক্তিটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।

স্বাধীনতার অন্য নাম স্বাধিকার। এই স্বাধিকার বিভিন্ন প্রকারের হতে পারে। তা পল্লবিত হতে হতে জীবনের অজস্র চাহিদাকে স্পর্শ করে স্পর্ধিত হতে পারে। কিন্তু যদি স্বাধীনতা না থাকে, তখন মানুষের মধ্যে গুমরে মরা স্বাধিকার বোধেরই একদিন অপমৃত্যু ঘটে। কবি আপস করে বাঁচতে রাজি নন। তাঁর চাই অধিকার। অন্য সকলের মতো তিনি সেই অধিকারের প্রত্যাশী, যা তাঁর নিজভূমে তাঁকে দু-পায়ে শক্ত হয়ে দাঁড় করিয়ে রাখতে পারে। অর্থাৎ তিনি চান, সেই ভূমি যা তাঁর নিজস্ব, সেখানে দাঁড়িয়ে তিনি স্বাধীনভাবে মতপ্রকাশ করতে পারেন। যে ভূমিতে শিকড় চালিয়ে তাঁর স্বাধিকারবোধ পুনরুজ্জীবিত হয়ে উঠতে পারে।

স্বাধীনতা আমার প্রয়োজন/তোমার যেমন। – পঙ্ক্তিটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।

স্বাধীনতা এমন একটি নিজস্ব জীবনবোধ, যা প্রত্যেক মানুষেরই জন্মগত অধিকার, যা না থাকলে মানুষ জীবন্মৃত। এই স্বাধিকারবোধ অর্জনই তাঁর কাছে একমাত্র প্রত্যাশা। কারণ তিনি বাঁচার মতো বাঁচতে চান। তবে একা স্বাধীনতা অর্জন করে বাঁচা তাঁর প্রত্যাশা নয়। সকলেই স্বাধীনভাবে বাঁচুক এমন বোধে আক্রান্ত কবি স্বাধীনতাবোধকে প্রসারিত করে দিতে চেয়েছেন অন্যান্য স্বাধীনতাপ্রত্যাশীদের অন্তরে। স্বাধীনতা তাঁর নিশ্চিত প্রয়োজন, যেমন অন্যেরও।

স্বাধীনতা কোনদিন আসবে না – কবির এমন ধারণা কেন হয়েছিল?

কবি অর্থাৎ ‘স্বাধীনতা’ নামক অনুবাদ কবিতার কথক মনে করেন স্বাধীনতা হল মানুষের এক এমন স্বাধিকারবোধ, যা প্রয়োগ করতে গেলে চাই তীব্র আন্দোলন, ভয়ংকর শক্তির প্রবল প্রহার। ভয় বা সমঝোতা নয়, পিছিয়ে পড়া বা আপস নয়, স্বাধীনতার পথে স্বাধীনতা পেতে চাই-চাওয়ার অধিকার। নাহলে কোনোদিনই স্বাধীনতা আসবে না।

কোন্ কথা শুনে কবির কেন কান পচে গিয়েছিল?

যারা রক্ষণশীল, স্থবির, যারা বড়ো আন্দোলনে শামিল হতে ভয় পায় বা ‘যা পেয়েছি যথেষ্ট পেয়েছি’ বলে যারা সন্তুষ্ট হয়ে বসে থাকে, তাদের কথা শুনে কবির কান পচে গিয়েছিল। তাদের বক্তব্য হল – ‘সময়ে/সবই হবে, কাল একটা নূতন দিন।’ কবির বিশ্বাস এই কাল কোনোদিনই আসে না। আজ নয়, কাল হবে, ভেবে বেঁচে থাকতে তিনি রাজি নন।

মৃত্যু হওয়ার পূর্বেই কবি কী, কেন প্রার্থনা করেছিলেন?

মৃত্যু যেভাবেই আসুক না কেন, তা জীবন শেষ হয়ে যাওয়াকেই নির্দেশিত করে। তাই কবির সদম্ভ ঘোষণা – ‘মৃত্যুর পরে তো আমার কোনো/স্বাধীনতার প্রয়োজন হবে না,’ স্বাধীনতা নামক পরম পাওয়াটি তিনি আজই পেতে চান। কারণ তাঁর গভীর বিশ্বাস আগামীকালের রুটি দিয়ে আজ বাঁচা যায় না। তা ছাড়া কবি স্বাধীনতাকে মনে করেছেন একটা শক্তিশালী বীজপ্রবাহ, যা তলে তলে অঙ্কুরিত হয় এবং শিকড় বিস্তার করে।


আজকের এই আর্টিকেলে অষ্টম শ্রেণীর বাংলা বিষয়ের ষট্‌বিংশ অধ্যায়স্বাধীনতা’ নিয়ে ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নগুলো অষ্টম শ্রেণীর বাংলা পরীক্ষায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এগুলো পরীক্ষায় প্রায়ই আসে। আশা করি, এই নিবন্ধটি আপনার প্রস্তুতিতে সহায়ক হয়েছে। যদি আপনার কোনো প্রশ্ন থাকে বা আরও সহায়তা প্রয়োজন হয়, টেলিগ্রামে আমার সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। এছাড়াও, আপনার বন্ধুদের সঙ্গে এই পোস্টটি শেয়ার করতে ভুলবেন না, যাতে তারাও উপকৃত হতে পারে। ধন্যবাদ!

Please Share This Article

Related Posts

নবাব সিরাজউদ্দোলা কে ছিলেন? পলাশীর যুদ্ধের কারণ ও ফলাফল লেখো।

পলাশীর যুদ্ধের কারণ ও ফলাফল

Class 8 English – The Happy Prince – About Author and Story

Class 8 English – The Happy Prince – About Author and Story

Class 8 English – The Happy Prince – Question and Answer

Class 8 English – The Happy Prince – Question and Answer

About The Author

Sourav Das

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

"SolutionWbbse" শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনলাইন অধ্যয়ন প্ল্যাটফর্ম। এখানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য গাইডলাইন, এবং বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনার সাহায্য প্রদান করা হয়। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকল বিষয়ের শিক্ষণীয় উপকরণ সহজেই সকল শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়া।

Editor Picks

বিংশ শতকে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে ভারতে সংঘটিত কৃষক বিদ্রোহগুলির সাধারণ বৈশিষ্ট্য কী ছিল?

অহিংস অসহযোগ আন্দোলনে কৃষক সমাজ কীভাবে অংশগ্রহণ করেছিল?

কংগ্রেস সমাজতন্ত্রী দল সম্পর্কে টীকা লেখো।

সারা ভারত কিষান সভা কী উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল?

বারদৌলি সত্যাগ্রহের প্রতি জাতীয় কংগ্রেসের কীরূপ মনোভাব ছিল?