নবম শ্রেণি – বাংলা – কর্ভাস – ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন ও উত্তর

Rahul

সত্যজিৎ রায়ের লেখা কর্ভাস একটি বিজ্ঞান কল্পকাহিনী। এই গল্পে প্রোফেসর শঙ্কু এবং তার বন্ধুরা একটি অদ্ভুত পাখির সন্ধানে বেরিয়ে পড়েন। পাখিটির নাম কর্ভাস। কর্ভাস একটি রহস্যময় পাখি। এটি পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে দেখা যায়, কিন্তু কেউ এর অস্তিত্ব নিশ্চিত করতে পারে না।

নবম শ্রেণি – বাংলা – কর্ভাস – ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন ও উত্তর
Contents Show

সেই থেকে পাখিদের বুদ্ধির দৌড় সম্পর্কে মনে একটা অনুসন্ধিৎসা রয়ে গেছে। — কীভাবে এই অনুসন্ধিৎসা তৈরি হয় উল্লেখ করো।

অনুসন্ধানের ইচ্ছা – ছেলেবেলায় শঙ্কুর ধারণা ছিল যে, পাখি কথা বললেও সেই কথার অর্থ বোঝে না। কিন্তু বাড়ির পোষা ময়নাটিই তাঁর সমস্ত ধারণা পালটে দিয়েছিল। একদিন দুপুরে তিনি যখন সবে স্কুল থেকে ফিরেছেন ময়নাটি হঠাৎ ভূমিকম্প বলে চিৎকার করে ওঠে। শঙ্কু কোনো ভূমিকম্প টের না পেলেও পরদিন কাগজে দেখেন সত্যিই সেদিন ভূমিকম্প হয়েছিল। এখান থেকেই তাঁর মনে পাখিদের বুদ্ধি নিয়ে অনুসন্ধান করার ইচ্ছা জাগে।

সেই কারণেই আমার ল্যাবরেটরিতে আবার কাক, চড়ুই, শালিক ঢুকতে আরম্ভ করেছে। — কারণটি কী ছিল?

কারণ – পাখিদের বুদ্ধি নিয়ে মনের মধ্যে যথেষ্ট আগ্রহ থাকলেও তা নিয়ে প্রোফেসর শঙ্কু চর্চা করতে পারেননি। তার একটি কারণ ছিল অন্যান্য গবেষণায় তাঁর ব্যস্ততা, অন্য কারণটি হল তাঁর প্রিয় বেড়াল নিউটন। সে পাখি পছন্দ করত না। কিন্তু বয়সের কারণে নিউটন পাখি নিয়ে উদাসীন হয়ে পড়েছে। আর এই কারণেই বিভিন্ন পাখিরা আবার শঙ্কুর গবেষণাগারে ঢুকতে আরম্ভ করেছে।

কালকে তো একটা ব্যাপারে রীতিমতো হকচকিয়ে গেছি। — কোন্ বিষয়ের কথা বলা হয়েছে?

বিষয়বস্তু – শঙ্কুর গবেষণাগারে যে নানারকম পাখিরা আসে তার মধ্যে একটি কাক তার আচরণের কারণে বিশেষভাবে বিজ্ঞানীর নজরে পড়ে। যেমন, একদিন যখন শঙ্কু তাঁর যন্ত্র তৈরির কাজ করছেন সেইসময় কাকটিকে দেখা যায় একটা আধখোলা দেশলাইয়ের বাক্স থেকে ঠোঁট দিয়ে একটা কাঠি বের করে তার মাথাটা বাক্সের মধ্যে ঘষছে। মুখ দিয়ে আওয়াজ করে কাকটিকে থামানো হলেও সেটি জানলায় গিয়ে এমন শব্দ করে যা শুনতে হাসির মতো লাগে।

যেটার সঙ্গে পাখির কোনো সম্পর্ক নেই। — কোন্ প্রসঙ্গে এ কথা বলা হয়েছে লেখো।

প্রসঙ্গ কথা – কর্ভাস প্রথম থেকেই ছিল একদম অন্যরকম কাক। তারপরে শঙ্কুর অরনিথন নামক যন্ত্রের সাহায্যে সে নিজেকে শিক্ষিত করে তোলে। যেসব প্রশ্নের উত্তর সংখ্যার সাহায্যে বা অল্প কয়েকটি শব্দের সাহায্যে দেওয়া যায়, কর্ভাস সেগুলির সবই শিখে নিয়েছে। শুধু শেখাই নয়, পাখিটির মধ্যে মানবিক বুদ্ধিরও প্রকাশ ঘটে। তাই সানতিয়াগো যাবার সুটকেস গোছানোর পরে শঙ্কু দেখেন সুটকেসের চাবি মুখে নিয়ে কর্ভাস দাঁড়িয়ে আছে। তার এই দক্ষতা প্রসঙ্গেই শঙ্কু আলোচ্য মন্তব্যটি করেছেন।

সে গভীর মনোযোগ দিয়ে আমার কথা শুনছে এবং কথা বুঝতেও পারছে। — কার সম্পর্কে কখন এ কথা বলা হয়েছে?

আলোচ্য মন্তব্যের বক্তা ও সময়কাল – সানতিয়াগোতে পক্ষীবিশারদদের সম্মেলনে বক্তৃতা দেওয়ার জন্য মঞ্চে উঠেই প্রোফেসর শঙ্কু কর্ভাসকে খাঁচা থেকে বের করে টেবিলের উপরে ছেড়ে দিয়েছিলেন। প্রকাণ্ড লম্বা মেহগনির টেবিলের পিছনেই সম্মেলনের কর্তৃপক্ষরা বসেছিলেন। যতক্ষণ শঙ্কু মাইক্রোফোনে তাঁর বক্তৃতা দিয়েছেন কর্ভাস এক পা-ও নড়েনি। তার একপাশে ঘাড় কাত করার ভঙ্গি এবং মধ্যে মধ্যে মাথা উপর-নীচ করা দেখেই কর্ভাস যে মনোযোগী শ্রোতা তা শঙ্কু বুঝতে পারেন।

ব্যাপারটা শুনে কৌতূহল হয়েছিল। — কোন্ বিষয়ের কথা বলা হয়েছে লেখো।

বক্তব্যের বিষয় – সানতিয়াগোর পক্ষীবিজ্ঞানীদের সম্মেলনে উদ্যোক্তাদের প্রধান কোভারুবিয়াস প্রোফেসর শঙ্কুকে অনুরোধ করেন অতিথিদের আমোদপ্রমোদের জন্য যে ব্যবস্থা করা হয়েছে তাতে সেদিনের বিকেলের অনুষ্ঠানে তিনি যেন অবশ্যই হাজির থাকেন। একজন চিলিয়ান জাদুকর, আর্গাস তাঁর খেলা দেখাবেন। তাঁর ম্যাজিকের বিশেষত্ব হল তাতে তিনি নানারকম পাখি ব্যবহার করেন। এই বিষয়টিই শঙ্কুকে কৌতূহলী করে তোলে।

একজন জাদুকরের পক্ষে নামটা বেশ মানানসই। — মন্তব্যটি ব্যাখ্যা করো।

মন্তব্যটির ব্যাখ্যা – সানতিয়াগোর হোটেলে শঙ্কুর যখন ডিনার হয়ে গেছে সেইসময় তাঁর সঙ্গে দেখা করতে আসেন জাদুকর আর্গাস। আর্গাসের ম্যাজিক দেখে তাঁর প্রতি শঙ্কুর আগ্রহ জন্মেছিল। আর্গাসের দীর্ঘ আকৃতিতে শঙ্কুর মনে বিস্ময় জন্মায়। আর্গাসকে শঙ্কু মনোযোগের সঙ্গে লক্ষ করেন। চেয়ারে বসার পরে তাঁর ম্যাজিকের প্রশংসা করে প্রোফেসর শঙ্কু জানান যে গ্রিক উপকথায় তিনি আর্গাস নামে একজন কীর্তিমান পুরুষের কথা পড়েছেন, যার সর্বাঙ্গে ছিল সহস্র চোখ। এই হিসেবেই একজন জাদুকরের ক্ষেত্রে আর্গাস নামটা বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে শঙ্কু মনে করেছেন।

কর্ভাস এখন বিশ্রাম চাইছে। — কোন্ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এ কথা বলা হয়েছে?

ঘটনার পরিপ্রেক্ষিত – জাদুকর আর্গাস সানতিয়াগোর হোটেলে প্রোফেসর শঙ্কুর সঙ্গে দেখা করতে আসেন এবং কর্ভাসের বুদ্ধির নমুনা দেখতে চান। সৌজন্যের খাতিরে খাঁচার দরজা খুলে দেওয়ার কথা বললেও শঙ্কু জানিয়ে রাখেন যে সারাদিনের পরিশ্রমে তিনি এবং তার পাখি দুজনেই ক্লান্ত। আর কর্ভাসের ইচ্ছার বিরুদ্ধে তিনি কিছুই করতে চান না। এরপরে খাঁচার দরজা খুলে দিলে কর্ভাস ডানার তিন ঝাপটায় খাটের পাশে টেবিলে এসে ঠোঁটের ঠোকরে ল্যাম্পটা নিভিয়ে দেয়। তারপরে খাঁচায় ফিরে গিয়ে ঠোঁট দিয়ে টেনে দরজা বন্ধ করে দেয়। আর্গাসকে সে বুঝিয়ে দেয় যে, তার বিশ্রামের প্রয়োজন।

আপনার অনুরোধ রক্ষা করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। — কার অনুরোধ কেন রক্ষা করা সম্ভব ছিল না?

উদ্দিষ্ট ব্যক্তি – কর্ভাস গল্পে জাদুকর আর্গাস প্রোফেসর শঙ্কুর কাছে কর্ভাসকে চাইলে প্রোফেসর তাঁকে এ কথা বলেছেন।
অনুরোধ না রাখার কারণ – আর্গাস তাঁর পৃথিবীভ্রমণে গোটা বিশ্বের মানুষদের চমকে দেওয়ার জন্য কর্ভাসকে সঙ্গে নিতে চেয়েছিল। সে হোটেলের ঘরে শঙ্কুকে সম্মোহিত করারও চেষ্টা করেছিল। কিন্তু আর্গাসের এসব দাবি বা চেষ্টা যে বৃথা সে – কথা জানিয়ে শঙ্কু বলেন যে, কর্ভাস শুধু তাঁর ছাত্রই নয়, তাঁর সন্তানের মতো। সে তাঁর বন্ধু। প্রফেসারের অক্লান্ত পরিশ্রম ও গবেষণার একমাত্র অবলম্বন হল কর্ভাস। তাই কর্ভাসকে দিয়ে দেওয়ার যে অনুরোধ আর্গাস করেছিল তা রক্ষা করা শঙ্কুর পক্ষে সম্ভব ছিল না।

অবশেষে কোভারুবিয়াসের শরণাপন্ন হতে হলো। – কেন এই শরণাপন্ন হতে হয়েছিল এবং তিনি কী পরামর্শ দিয়েছিলেন?

শরণাপন্ন হওয়ার কারণ – কর্ভাস গল্পে জাদুকর আর্গাস কর্ভাসকে চুরি করে নিয়ে গেলে তাকে উদ্ধারের জন্য প্রোফেসর শঙ্কু কোভারুবিয়াসের শরণাপন্ন হয়েছিলেন।
পরামর্শ – কোভারুবিয়াস শঙ্কুকে বলেছিলেন যে তিনি আর্গাসের বাড়ির ঠিকানা জেনে দিতে পারলেও তাতে কোনো লাভ হবে না, কারণ ধূর্ত আর্গাস কর্ভাসকে নিয়ে নিশ্চয় অন্য কোথাও পালিয়ে গেছে। তবে শহরের বাইরে বেরোতে গেলে একটাই রাস্তা আছে। কোভারুবিয়াস শঙ্কুদের ভালো ড্রাইভার, গাড়ি এবং পুলিশ সঙ্গে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন, আর আধ ঘণ্টার মধ্যে তাদের বেরিয়ে পড়তে বলেন।

আমি জানি, এ সংকটে আর্গাসের কোনো ভেলকিই কাজ করবে না। — বক্তা কে? তাঁর এ কথা বলার কারণ কী?

বক্তা – কর্ভাস গল্পের উল্লিখিত অংশটির বক্তা প্রোফেসর শঙ্কু।

উদ্ধৃত বক্তব্যের কারণ – জাদুকর আর্গাস তার সিলভার ক্যাডিলাক গাড়িতে করে কর্ভাসকে নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু বুদ্ধিমান কর্ভাস খাঁচা থেকে বেরিয়ে আর্গাসের চশমাটি খুলে নিয়ে পালিয়ে যায়। দুর্বল দৃষ্টিশক্তির আর্গাসের পক্ষে সম্ভব ছিল না চশমা ছাড়া কিছু দেখা। তাই তার গাড়ি দুর্ঘটনায় পড়ে, এমনকি শঙ্কুদের সামনে পেয়ে হাতে অস্ত্র থাকলেও সঠিকভাবে গুলি চালানো তার পক্ষে সম্ভব ছিল না। এই পরিস্থিতির সুযোগ নিয়েই পুলিশের পক্ষ থেকে তাকে রিভলভার ফেলে দিতে বলা হয়। আর্গাসও তা করতে বাধ্য হয়, কারণ সে তখন প্রায় অন্ধের সামিল।

কর্ভাস গল্পটি একটি রোমাঞ্চকর এবং শিক্ষামূলক গল্প। এটি আমাদেরকে বিজ্ঞানের অপার সম্ভাবনা এবং মানবতার শক্তি সম্পর্কে ভাবতে উৎসাহিত করে। গল্পটি আমাদেরকে বিজ্ঞানকে ভালোবাসতে এবং প্রকৃতির প্রতি সদয় হতে শেখায়।

Please Share This Article

Related Posts

ভাস্বর বাতি, CFL বাতি ও LED বাতির মধ্যে পার্থক্য লেখো।

ভাস্বর বাতি, CFL বাতি ও LED বাতির মধ্যে পার্থক্য লেখো।

নবম শ্রেণী ইতিহাস - প্রাককথন: ইউরোপ ও আধুনিক যুগ

নবম শ্রেণী ইতিহাস – প্রাককথন: ইউরোপ ও আধুনিক যুগ

নবম শ্রেণী ইতিহাস - বিপ্লবী আদর্শ,নেপোলিয়নীয় সাম্রাজ্য ও জাতীয়তাবাদ - বিষয়সংক্ষেপ

নবম শ্রেণী ইতিহাস – বিপ্লবী আদর্শ, নেপোলিয়নীয় সাম্রাজ্য ও জাতীয়তাবাদ – বিষয়সংক্ষেপ

About The Author

Rahul

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

"SolutionWbbse" শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনলাইন অধ্যয়ন প্ল্যাটফর্ম। এখানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য গাইডলাইন, এবং বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনার সাহায্য প্রদান করা হয়। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকল বিষয়ের শিক্ষণীয় উপকরণ সহজেই সকল শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়া।

Editor Picks

Madhyamik English Suggestion 2026

Madhyamik Bengali Suggestion 2026

Madhyamik Bengali Suggestion 2026 – প্রবন্ধ রচনা

Madhyamik Bengali Suggestion 2026 – প্রতিবেদন

Madhyamik Bengali Suggestion 2026 – সংলাপ