নবম শ্রেণি – বাংলা – চন্দ্ৰনাথ – সামগ্রিক বিষয়ভিত্তিক প্রশ্নোত্তর

Gopi

এই বইটি নবম শ্রেণির বাংলা বিষয়ের চন্দ্ৰনাথের কবিতা, গল্প, উপন্যাস, নাটক ও প্রবন্ধের সামগ্রিক বিষয়ভিত্তিক প্রশ্নোত্তর নিয়ে রচিত। বইটিতে চন্দ্ৰনাথের সাহিত্যকর্মের বিভিন্ন দিক যেমন- লেখকের জীবন ও সাহিত্যকর্ম, কবিতা, গল্প, উপন্যাস, নাটক ও প্রবন্ধের বিষয়বস্তু, চরিত্র, ভাষারীতি, শিল্পরীতি ইত্যাদির উপর প্রশ্নোত্তর রয়েছে।

বইটিতে মোট ৫টি অধ্যায় রয়েছে। প্রথম অধ্যায়ে চন্দ্ৰনাথের জীবন ও সাহিত্যকর্মের উপর প্রশ্নোত্তর রয়েছে। দ্বিতীয় অধ্যায়ে চন্দ্ৰনাথের কবিতা, তৃতীয় অধ্যায়ে গল্প, চতুর্থ অধ্যায়ে উপন্যাস এবং পঞ্চম অধ্যায়ে নাটক ও প্রবন্ধের উপর প্রশ্নোত্তর রয়েছে।

বইটিতে প্রশ্নগুলি অত্যন্ত সহজ ও সুস্পষ্টভাবে লেখা হয়েছে। প্রশ্নগুলির উত্তরগুলিও যথাযথ ও তথ্যবহুল। বইটি নবম শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীদের চন্দ্ৰনাথের সাহিত্যকর্ম সম্পর্কে একটি পরিপূর্ণ ধারণা দেওয়ার জন্য একটি আদর্শ সহায়ক গ্রন্থ।

নবম শ্রেণি – বাংলা – চন্দ্ৰনাথ

চন্দ্রনাথের সঙ্গে তার বন্ধুদের সম্পর্কটি চন্দ্রনাথ গল্প অবলম্বনে আলোচনা করো।

চন্দ্রনাথ ও বন্ধুদের সম্পর্ক – তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের চন্দ্রনাথ গল্পের কেন্দ্রে আছে তিন সহপাঠী বন্ধু — চন্দ্রনাথ, হীরু এবং গল্পকথক নরু বা নরেশ।
চন্দ্রনাথের দৃষ্টিভঙ্গি – তিন বন্ধুর সম্পর্ক চন্দ্রনাথকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়েছে। প্রাথমিকভাবে চন্দ্রনাথকে দেখলে মনে হয়েছে সে কোনো সম্পর্ক নিয়ে নয়, শুধু নিজেকে নিয়েই ভাবিত। তাই স্কুলের পরীক্ষায় চন্দ্রনাথ প্রথমবার দ্বিতীয় হলে হীরুর প্রথম হওয়ার সাফল্যকে সে মেনে নিতে পারেনি। হীরুর বিরুদ্ধে সে অসদুপায় অবলম্বনেরও অভিযোগ এনেছে। এমনকি হীরু স্কলারশিপ পাওয়ার পরে উৎসব করলে নিমন্ত্রণ সত্ত্বেও সে তাতে যোগ দেয়নি বরং চিঠি লিখে বলেছে – এ উৎসবটা না করিলেই পারিতে। স্কলারশিপটা কী এমন বড়ো জিনিস!
চন্দ্রনাথের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি – অপরদিকে, হীরু এবং কথকের মনে চন্দ্রনাথের সম্পর্কে শুধু প্রীতি নয়, শ্রদ্ধার বোধও বজায় ছিল। চন্দ্রনাথের তৈরি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলাফলে চন্দ্রনাথ তাকে নিজের তুলনায় খারাপ অবস্থানে রাখলে ক্রুদ্ধ নরু কামনা করেছে — এই দাম্ভিকটা যেন ফেল হয়। কিন্তু গল্পের শেষে হীরু স্কলারশিপ পেলেও নরু অকপটেই স্বীকার করেছে যে চন্দ্রনাথ হীরুর তুলনায় শ্রেষ্ঠ। অন্যদিকে হীরুও চন্দ্রনাথকে মন থেকেই বন্ধু বলে ভাবত। তাই হীরুর অনুষ্ঠানে চন্দ্রনাথ অনুপস্থিত থাকলেও তার রেখে যাওয়া চিঠিকে হীরু বন্ধুর স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে রেখে দেয়।

চন্দ্রনাথ গল্পে চন্দ্রনাথের চরিত্রের বৈশিষ্ট্য আলোচনা করো।

চন্দ্রনাথের চরিত্র – বৈশিষ্ট্য – তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের চন্দ্রনাথ গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র চন্দ্রনাথ নিজের শ্রেষ্ঠত্ব নিয়ে অহংকারী এক কিশোর।
অহংকারী – তাই স্কুলের পরীক্ষায় হীরুর প্রথম হওয়া এবং নিজের দ্বিতীয় হওয়াকে সে মানতে পারে না। হীরুর বিরুদ্ধে অসদুপায় অবলম্বনের অভিযোগ আনে চন্দ্রনাথ। নিজেকে শ্রেষ্ঠত্বের আসনে দেখতে সে এতটাই ভালোবাসে যে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষার কাল্পনিক ফলাফলও তৈরি করে চন্দ্রনাথ এবং সেখানে নিজের নম্বরের অনুপাতে বাকিদের ফলাফলও ঠিক করে ফেলে।
দাম্ভিকতা – চন্দ্রনাথের মধ্যে ঔদ্ধত্যের প্রকাশ ঘটে যখন সে স্কুলকে দ্বিতীয় স্থান অর্জনের পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করে চিঠি দেয়। প্রধান শিক্ষককে উদ্দেশ্য করে গুরুদক্ষিণার যুগ আর নেই বলার মধ্যে তার এই দাম্ভিকতাই ফুটে ওঠে। এক্ষেত্রে নিজের দাদার নির্দেশও সে শুধু অমান্য করেনি, দাদার সঙ্গে সম্পর্কের বিচ্ছেদও ঘটিয়েছে। তাই হীরুর কাকার বিশেষ পুরস্কার দেওয়ার প্রস্তাবকে চন্দ্রনাথের অপমানজনক বলে মনে হয়েছে।
সৌজন্যতার অভাব – অহংকারের কারণেই হীরুর বাড়ির প্রীতিভোজে আমন্ত্রণ পেয়েও চন্দ্রনাথ হাজির হয়নি, বরং স্কলারশিপ পাওয়ার মতো সামান্য কারণে অনুষ্ঠান করার প্রয়োজন ছিল না বলে চিঠি লিখে রেখে গেছে। সব মিলিয়ে অহংকার, চূড়ান্ত আত্মমর্যাদা এবং চরম আত্মকেন্দ্রিকতার প্রতীক হয়ে উঠেছে চন্দ্রনাথ চরিত্রটি।

চন্দ্রনাথ গল্পে হীরুর চরিত্রটি যেভাবে পাওয়া যায় লেখো।

কথামুখ – তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের চন্দ্রনাথ গল্পাংশে হীরু পার্শ্বচরিত্র হলেও একটি বিশিষ্ট চরিত্র।
মেধা – চন্দ্রনাথের পরীক্ষায় প্রথম হওয়ার একচেটিয়া সাফল্যকে দূরে সরিয়ে সে স্কুলের পরীক্ষায় প্রথম হয়েছে এবং এটা যে কোনো আকস্মিক ঘটনা নয়, তা প্রমাণিত হয়েছে যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষাতেও সে চন্দ্রনাথকে পিছনে ফেলে স্কলারশিপ পেয়েছে।
সৌজন্যবোধ – চন্দ্রনাথ নানাভাবে হীরুর স্কুলের পরীক্ষায় প্রথম হওয়াকে তাচ্ছিল্য করেছে, অসদুপায় অবলম্বনের অভিযোগ এনেছে। কিন্তু হীরুর তরফ থেকে তার সাফল্যের জন্য চন্দ্রনাথকে ছোটো করার কোনো চেষ্টাই করা হয়নি। বরং হীরু চন্দ্রনাথকে তার কাকার দেওয়া বিশেষ পুরস্কারের কথা বলে সান্ত্বনা দিতে চেয়েছে।
বন্ধুপ্রীতি – স্কলারশিপ পাওয়া উপলক্ষ্যে হীরুর বাড়িতে আয়োজিত প্রীতিভোজে চন্দ্রনাথ উপস্থিত থাকুক, এটা সে আন্তরিকভাবেই চেয়েছিল। চন্দ্রনাথের চলে যাওয়া তাকে কষ্ট দিয়েছিল। চন্দ্রনাথ সম্পর্কে হীরুর বন্ধুত্বপূর্ণ মনোভাব কতটা আন্তরিক ছিল, তা বোঝা যায় যখন হীরুর উদ্দেশে লেখা চন্দ্রনাথের শ্লেষাত্মক চিঠিটিকেও সে স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে রেখে দিতে চেয়েছিল। ধনীর সন্তান হলেও এবং আইসিএস হওয়ার মতো উচ্চাশা থাকলেও হীরুর চরিত্রে সৌজন্য ও সহৃদয়তার এক মিশ্রণ ঘটেছিল।

চন্দ্রনাথ পাঠ্য অবলম্বনে চন্দ্রনাথের দৈহিক বিবরণ দাও। তাকে কালপুরুষ নক্ষত্রের সঙ্গে তুলনা করার কারণ নির্ণয় করো।

চন্দ্রনাথের দৈহিক বর্ণনা – চন্দ্রনাথ পাঠ্যাংশে চন্দ্রনাথ ছিল এক দীর্ঘাকৃতি সবল সুস্থ দেহের অধিকারী নির্ভীক কিশোর। তার মুখের গড়ন ছিল অসাধারণ। প্রথমেই দৃষ্টি আকর্ষণ করত চন্দ্রনাথের অদ্ভুত মোটা নাক, সামান্যমাত্র চাঞ্চল্যেই যার অগ্রভাগ ফুলে ওঠে। বড়ো বড়ো চোখ, চওড়া কপাল, আর কপালের ঠিক মাঝখানে শিরা যেন ত্রিশূলের চেহারা নিয়েছিল। সামান্য উত্তেজনাতেই রক্তের চাপ প্রবল হলে ওই শিরা ফুলে উঠত।
কালপুরুষ নক্ষত্রের সঙ্গে তুলনার কারণ – জীবনপথে চন্দ্রনাথ ছিল সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র এক চরিত্র। পরীক্ষায় দ্বিতীয় হওয়া সে মেনে নিতে পারে না। স্কুলের পুরস্কারকে অনায়াসে প্রত্যাখ্যান করে। স্পর্ধার সঙ্গে বলে, সেকেন্ড প্রাইজ নেওয়া আমি বিনিথ মাই ডিগ্‌নিটি বলে মনে করি। আত্মমর্যাদা রক্ষার জন্য সে দাদার নির্দেশ অমান্য করতে দ্বিধা করে না, এমনকি তার সঙ্গে সম্পর্কও ছেদ পড়ে। হেডমাস্টারমশাইয়ের ডাক ফিরিয়ে দিয়ে অনায়াস ঔদ্ধত্যে বলে — গুরুদক্ষিণার যুগ আর নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষায় হীরুর ভালো রেজাল্টের জন্য যখন উৎসব হয়, তাতে আমন্ত্রণ পেয়েও চন্দ্রনাথ তাতে যোগ দেয় না, বরং বলে — এ উৎসবটা না করিলেই পারিতে। স্কলারশিপটা কী এমন বড়ো জিনিস! লাঠির প্রান্তে পোঁটলা বেঁধে হয়তো জনহীন প্রান্তরে সকলের থেকে পৃথক হয়ে হারিয়ে যায় চন্দ্রনাথ — ঠিক যেমন রাতের আকাশে শিকারির মতো ভাস্বর হয়ে থাকে কালপুরুষ নক্ষত্র, বাকিদের থেকে সর্বদা স্বতন্ত্র হয়ে।

চন্দ্রনাথকে ঘিরে নরুর যে মুগ্ধতা ছিল তার পরিচয় দাও।

নরুর মুগ্ধতা – তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের চন্দ্রনাথ গল্পে চন্দ্রনাথ ছিল গল্পকথক নরুর সহপাঠী। অত্যন্ত মেধাবী চন্দ্রনাথ সম্পর্কে নরুর ছিল গভীর শ্রদ্ধাবোধ। তাই জীবনে প্রথমবার দ্বিতীয় হয়ে সে যখন পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করে তখন শ্রদ্ধাবশত নরু বলে — তাঁহার কথা অবহেলা করিতে পারিলাম না। চন্দ্রনাথ নরুকে তাঁর ঘরে অভ্যর্থনা না করলেও নরু রেগে যায় না। বরং সে তাহার স্বভাব নয় — বলে বিষয়টিকে হালকা করতে চায়। যদিও চন্দ্রনাথের তৈরি করা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাল্পনিক রেজাল্ট নরুকে ক্ষুব্ধ করে, কিংবা চন্দ্রনাথের তার দাদার প্রতি ব্যবহারকে নরু ভালোভাবে মেনে নিতে পারে না। কিন্তু তাতে চন্দ্রনাথের প্রতি তার মুগ্ধতায় কোনো খামতি হয়নি। ইউনিভার্সিটির পরীক্ষায় হীরু চন্দ্রনাথকে পিছনে ফেললে নরু দুঃখিত হয়েছে, নিজের মনেই বলেছে — সত্য বলিতে কী চন্দ্রনাথ ও হীরুতে অনেক প্রভেদ। চন্দ্রনাথের শ্রেষ্ঠত্বে আমার অন্তত সন্দেহ ছিল না। চন্দ্রনাথ যখন এই ব্যর্থতার পরে নিরুদ্দেশ হয়ে গিয়েছে তখনও নরু কল্পনা করেছে — চন্দ্রনাথ লাঠির প্রান্তে পোঁটলা বেঁধে একা জনহীন পথে চলেছে। দু-পাশের প্রান্তর যেন পিছনের দিকে চলেছে, মাথার ওপরে গভীর নীল আকাশে ছায়াপথ, পাশে কালপুরুষ নক্ষত্র সঙ্গে চলেছে। এই কল্পনাও আসলে চন্দ্রনাথের প্রতি নরুর মুগ্ধতারই আর – এক প্রকাশ।

পরিশেষে বলা যায় যে, নবম শ্রেণি – বাংলা – চন্দ্ৰনাথ – সামগ্রিক বিষয়ভিত্তিক প্রশ্নোত্তর একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও প্রয়োজনীয় বই। বইটি নবম শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীদের চন্দ্ৰনাথের সাহিত্যকর্ম সম্পর্কে একটি পরিপূর্ণ ধারণা দেওয়ার জন্য একটি আদর্শ সহায়ক গ্রন্থ।

JOIN US ON WHATSAPP

JOIN US ON TELEGRAM

Please Share This Article

About The Author

Related Posts

Class 9 – English – A Day in The Zoo – Question and Answer

Class 9 – English – A Day in The Zoo – Question and Answer

Tom Loses a Tooth

Class 9 – English Reference – Tom Loses a Tooth – Question and Answer

The North Ship

Class 9 – English Reference – The North Ship – Question and Answer

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

Trending Now

Class 9 – English – A Day in The Zoo – Question and Answer

Class 9 – English Reference – Tom Loses a Tooth – Question and Answer

Class 9 – English Reference – The North Ship – Question and Answer

Class 9 – English – His First Flight – Question and Answer

Class 9 – English – A Shipwrecked Sailor – Question and Answer