নবম শ্রেণি – বাংলা – রাধারাণী – ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন ও উত্তর

নবম শ্রেণি – বাংলা – রাধারাণী – ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন ও উত্তর

মোকদ্দমাটি বিধবা হাইকোর্টে হারিল। — কী নিয়ে মোকদ্দমা এবং তাতে হেরে বিধবার অবস্থা কেমন হয়েছিল?

মোকদ্দমার বিষয় – রাধারাণীর মা-র সঙ্গে তাদের একজন জ্ঞাতির এই মোকদ্দমা হয়েছিল সম্পত্তির অধিকার নিয়ে।
বিধবার অবস্থা – রাধারাণীর মা হাইকোর্টে মোকদ্দমা হেরে যাওয়ার পরেই ডিক্রি জারি করে তাদের ভিটে থেকে উচ্ছেদ করা হল। প্রায় দশ লক্ষ টাকার সম্পত্তি বেহাত হল। নগদ টাকা যা ছিল তা মামলার খরচে চলে গেল। রাধারাণীর মা যাবতীয় অলংকার বিক্রি করে প্রিভি কাউন্সিলে আপিল করল, কিন্তু এভাবে তারা সর্বস্বান্ত হয়ে পড়ল।

Table of Contents

কিন্তু আর আহারের সংস্থান রহিল না। — এই সংস্থান না থাকার কারণ আলোচনা করো।

অথবা, রাধারাণীর মা-র দৈন্যদশার কারণ কী?

দৈন্যদশার কারণ – একজন জ্ঞাতির সঙ্গে সম্পত্তি নিয়ে মামলায় রাধারাণীর বিধবা মা হাইকোর্টে হেরে যায়। জ্ঞাতি ডিক্রি জারি করে তাদের পিতৃপুরুষের ভিটে থেকে উচ্ছেদ করে দশ লক্ষ টাকার সম্পত্তির দখল নেয়। খরচ এবং পাওনা শোধ করতে বাকি সব অর্থ চলে যায়। গয়না ইত্যাদি বিক্রি করে রাধারাণীর মা প্রিভি কাউন্সিলে আপিল করলেও খাবার জোগাড়ের অবস্থা তাদের আর থাকে না৷

রাধারাণীর বিবাহ দিতে পারিল না। — রাধারাণীর বিবাহ দিতে না পারার কারণ আলোচনা করো।

বিবাহ দিতে না পারার কারণ – সম্পত্তির অধিকার নিয়ে এক জ্ঞাতির সঙ্গে মামলায় হেরে যাওয়ায় রাধারাণীর বিধবা মা-র প্রায় দশ লক্ষ টাকার সম্পত্তি হাতছাড়া হয়। নগদ টাকা যেটুকু ছিল তা পাওনা শোধ ইত্যাদিতে ব্যয় হয়ে যায়। গয়নাগাটি বিক্রি করে রাধারাণীর মা প্রিভি কাউন্সিলে আপিল করায় তারা আর্থিকভাবে নিঃস্ব হয়ে যায়। এই দারিদ্র্যের কারণেই দৈহিক পরিশ্রম করে কোনো রকমে বেঁচে থাকা রাধারাণীর মা-র পক্ষে রাধারাণীর বিয়ে দেওয়া সম্ভব হয়নি।

তাহাতেই মার পথ্য হইবে। — কে এরকম ভেবেছিল? তার ভাবনাসূত্রটি ব্যাখ্যা করো।

উদ্দিষ্ট ব্যক্তি – রাধারাণীর মনে উল্লিখিত ভাবনাটি এসেছিল।
ভাবনাসূত্র – জ্ঞাতির সঙ্গে মোকদ্দমায় সর্বস্ব হারিয়ে রাধারাণীর বিধবা মা একটি কুটিরে থাকতে করতে শুরু করেন এবং দৈহিক শ্রমের দ্বারা দিন কাটান। কিন্তু গভীর অসুখে আক্রান্ত হওয়ায় তিনি পরিশ্রমের ক্ষমতা হারান। রথের দিনে মায়ের শারীরিক অবস্থার পরিবর্তনের কারণে তাঁর জন্য পথ্যের প্রয়োজন হয়। রাধারাণী বন থেকে কিছু ফুল তুলে এনে মালা গেঁথে সিদ্ধান্ত নেয় রথের হাটে সেটি বিক্রি করেই মায়ের পথ্য জোগাড় করবে।

কণ্ঠস্বর শুনিয়া রাধারাণীর রোদন বন্ধ হইল। — কার কণ্ঠস্বর শুনে কেন রাধারাণীর রোদন বন্ধ হয়েছিল? 

উদ্দিষ্ট ব্যক্তি – যে অপরিচিত পথিক রথের মেলায় রাধারাণীর ঘাড়ের ওপরে এসে পড়েছিল তার গলার আওয়াজ শুনে রাধারাণীর কান্না বন্ধ হয়েছিল।
রাধারাণীর কান্না বন্ধ হওয়ার কারণ – বৃষ্টিতে মেলা ভেঙে যাওয়ার কারণে মালা বিক্রি না হওয়ায় রাধারাণী যখন কাঁদছে, অন্ধকারে কেউ তার ঘাড়ের উপরে এসে পড়ে। ভয়ে রাধারাণী উচ্চৈঃস্বরে কেঁদে ওঠে। তখন সেই অপরিচিত ব্যক্তি প্রশ্ন করেন — কে গা তুমি কাঁদ? গলার আওয়াজে রাধারাণী বুঝতে পারে মানুষটি দয়ালু স্বাভাবের। তাই তার কান্না বন্ধ হয়েছিল।

অগত্যা রাধারাণী কাঁদিতে কাঁদিতে ফিরিল। — রাধারাণীর কেঁদে কেঁদে ফেরার কারণ ব্যাখ্যা করো।

কাঁদার কারণ – রাধারাণী বুনোফুলের মালা গেঁথে রথের মেলায় গিয়েছিল, তা বিক্রি করে মা-র পথ্য সংগ্রহ করতে। 0না হওয়ার পরেই প্রবল বৃষ্টিতে মেলা ভেঙে যায়। রাধারাণী তবুও মেলায় ভিড় আরও জমবে এবং তার মালাও বিক্রি হবে এই আশায় বৃষ্টিতে ভিজতে থাকে। কিন্তু রাত হওয়ার পরেও বৃষ্টি না থামায় তার আশা ভেঙে যায়। মালা বিক্রি না হওয়ায় রাধারাণী অন্ধকারে কাঁদতে কাঁদতে বাড়ির পথ ধরল।

রাধারাণীর ক্ষুদ্র বুদ্ধিটুকুতে ইহা বুঝিতে পারিল। – কার বুদ্ধিকে ক্ষুদ্র বুদ্ধি বলা হয়েছে এবং কেন?

উদ্দিষ্ট ব্যক্তি – রাধারাণীর বুদ্ধিকে ক্ষুদ্র বুদ্ধি বলা হয়েছে।
ক্ষুদ্র বুদ্ধি বলার কারণ – এগারো বছরও পূর্ণ না হওয়া মেয়েটির বুদ্ধি এমনিতেই অপরিণত। একইসঙ্গে বনফুলের মালা বিক্রি করতে গিয়ে সে যে অবস্থায় পড়েছে তা-ও তার পক্ষে যথেষ্ট বিড়ম্বনার। অন্ধকার পথে দুর্যোগের মধ্যে একা রাধারাণী যে পরিণত মানুষের মতো বুদ্ধিপ্রয়োগ করতে পারবে না, তা বলাই বাহুল্য। পরিস্থিতির সাপেক্ষে রাধারাণী তাই অতি ক্ষুদ্রবুদ্ধি।

সেই এক পয়সার বনফুলের মালার সকল কথাই বাহির করিয়া লইল। — কার কথা বলা হয়েছে? মন্তব্যটি ব্যাখ্যা করো।

উদ্দিষ্ট ব্যক্তি – রথের মেলায় আকস্মিকভাবে যে পথিকের সঙ্গে রাধারাণীর পরিচয় হয়েছিল এখানে তার কথা বলা হয়েছে।
মন্তব্যের ব্যাখ্যা – পথিক রাধারাণীকে পিছল পথে হাত ধরে বাড়ি পৌঁছোতে সাহায্য করে। কিন্তু এই যাত্রাপথে পথিক রাধারাণীর পরিচয়, অল্পবয়সি রাধারাণীর একলা রথ দেখতে যাওয়া, তার কান্নার কারণ ইত্যাদি বিষয়ে প্রশ্ন করে এক পয়সার বনফুলের মালা সম্বন্ধে যাবতীয় তথ্যই জেনে নেয়।

তুমি দাঁড়াও, আমি আলো জ্বালি। — এই আলো জ্বালার কারণ আলোচনা করো।

আলো জ্বালার কারণ – রথের মেলায় রাধারাণীর মালা বিক্রি না হওয়ার ফলে সে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। অন্ধকার পথে এক পথিকের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। সে রাধারাণীর মালাটি চার পয়সা দিয়ে কিনে নেয়। কিন্তু রাধারাণীর সন্দেহ হয় তাকে দেওয়া মুদ্রাগুলি বড়ো এবং চকচক করছে। পথিক ডবল পয়সা, নূতন কলের পয়সা ইত্যাদি বললেও নির্লোভ রাধারাণী বাড়িতে গিয়ে তা আলোয় পরীক্ষা করে নেওয়ার কথা জানায়।

আলো জ্বালিয়া রাধারাণী দেখিল, টাকা বটে, পয়সা নহে। — রাধারাণী কে? কখন সে আলো জ্বেলে উক্ত ঘটনাটি দেখেছিল?

রাধারাণীর পরিচয় – রাধারাণী গল্পাংশের মুখ্য চরিত্র রাধারাণী ছিল এক পিতৃহীন দশ-এগারো বছরের বালিকা।
উদ্দিষ্ট সময় – রথের মেলায় পরিচয় হওয়া পথিক রাধারাণীর কাছ থেকে চার পয়সা দিয়ে বনফুলের মালাটি কেনে। কিন্তু রাধারাণীর পয়সাটি বড়ো মনে হয়। পথিক ডবল পয়সা ইত্যাদি বললেও রাধারাণী সেটি বাড়ি এনে আলো জ্বেলে পরীক্ষা করার কথা বলে। পথিককে বাইরে অপেক্ষায় রেখে চকমকি ঠুকে আগুন জ্বেলে রাধারাণী দেখে তার অনুমানই যথার্থ।

মা! এখন কী হবে? — বক্তা কে? এ কথা বলার কারণ কী?

বক্তা – উল্লিখিত মন্তব্যটি করেছিল রাধারাণী।
বক্তব্যের কারণ – মালার দাম হিসেবে পথিক রাধারাণীকে চার পয়সা দেওয়ার পরেও রাধারাণীর সন্দেহ হয় যে, পথিক পয়সার বদলে টাকা দিয়েছে কি না। পথিক অস্বীকার করলেও রাধারাণী বাড়িতে ফিরে চকমকি ঠুকে আগুন জ্বেলে দেখে তার অনুমান ঠিক। পথিক তাকে টাকাই দিয়েছে। কিন্তু বাইরে এসে দেখে যাকে সে অপেক্ষা করতে বলেছিল সেই পথিক চলে গিয়েছে। এই অবস্থাতে রাধারাণী অসহায় হয়ে মায়ের কাছে জানতে চায় যে সেই পরিস্থিতিতে কী করা উচিত।

পদ্মলোচন ইহাদের কাছে সুপরিচিত। — পদ্মলোচন কাদের কাছে কেন সুপরিচিত?

উদ্দিষ্ট ব্যক্তিবর্গ – পদ্মলোচন রাধারাণী এবং তার মা-এর কাছে সুপরিচিত ছিল।
সুপরিচিত হওয়ার কারণ – রাধারাণীর পিতার সময় থেকেই পদ্মলোচনের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ। রাধারাণীদের সেই পারিবারিক সুদিনের সময় অনেকবারই পদ্মলোচন চার টাকার কাগজের দাম শপথ করে আট টাকা সাড়ে বারো আনা নিত। আর তার সঙ্গে দু-আনা মুনাফা যোগ করে—মোট আট টাকা সাড়ে চোদ্দো আনা নিত। এভাবেই পদ্মলোচন রাধারাণীদের কাছে সুপরিচিত হয়ে গেছিল।

নোটখানি তাহারা ভাঙাইল না। — নোটখানি কারা কেন ভাঙাল না?

উদ্দিষ্ট ব্যক্তিবর্গ – রাধারাণী গল্পাংশে রাধারাণী আর তার মা পথিকের ফেলে যাওয়া নোটটি ভাঙাল না।
নোট না ভাঙানোর কারণ – রাধারাণী এবং তার মা পথিক রুক্মিণীকুমার রায়ের ফেলে যাওয়া নোটটি ভাঙায়নি তার কারণ এর আগে মালার দাম হিসেবে তিনি যে টাকা দিয়েছিলেন তাতেই তাদের প্রয়োজন মিটে গিয়েছিল। নোটটি তাদের প্রয়োজন ছিল না। বরং নোটটি নিলে তাদের অসততাই প্রতিষ্ঠিত হত। তাই তারা নোটটি তুলে রাখল। কেন-না তারা দরিদ্র হলেও লোভী নয়।

তাহারা দরিদ্র, কিন্তু লোভী নহে। — মন্তব্যটি ব্যাখ্যা করো।

মন্তব্যের ব্যাখ্যা – রথের মেলা থেকে ফেরার পথে রাধারাণীর সঙ্গে একজনের পরিচয় হয়। রাধারাণীকে সাহায্যের জন্য সে তার কাছ থেকে মালা কেনে, তার জন্য কাপড় পাঠানোর ব্যবস্থা করে, এমনকি নিজের ও রাধারাণীর নাম লেখা একটি নোটও তাদের ঘরে রেখে যায়৷ কিন্তু রাধারাণীরা দরিদ্র হলেও লোভী নয়। সেই ব্যক্তি মালার দাম হিসেবে যা দিয়েছিল, তাই যথেষ্ট ছিল। তা উপকারীর উপকারের চিহ্নস্বরূপ সেই নোটটি তারা খরচ করেনি।

অসংখ্য ধন্যবাদ সময় করে আমাদের এই নবম শ্রেণি – বাংলা – রাধারাণী – ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন ও উত্তর পােস্টটি পড়ার জন্য। এই ভাবেই solutionwbbse.com ওয়েবসাইটের পাশে থাকো যেকোনো প্ৰশ্ন উত্তর জানতে এই ওয়েবসাইট টি ফলাে করো এবং নিজেকে তথ্য সমৃদ্ধ করে তোলো, ধন্যবাদ।

Share via:

মন্তব্য করুন