এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “দেশীয় রাজ্য বলতে কী বোঝো? দেশীয় রাজ্যগুলির ভারতভুক্তিকরণের ক্ষেত্রে ভারত সরকার কী ধরনের পদ্ধতি অবলম্বন করেছিল?” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাস পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “দেশীয় রাজ্য বলতে কী বোঝো? দেশীয় রাজ্যগুলির ভারতভুক্তিকরণের ক্ষেত্রে ভারত সরকার কী ধরনের পদ্ধতি অবলম্বন করেছিল?” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের অষ্টম অধ্যায় “উত্তর-ঔপনিবেশিক ভারত: বিশ শতকের দ্বিতীয় পর্ব (1947-1964)“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

দেশীয় রাজ্য বলতে কী বোঝো?
1947 খ্রিস্টাব্দে স্বাধীনতা লাভের পূর্বে ভারতীয় ভূখণ্ডে ব্রিটিশের প্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রণের বাইরে প্রায় 600টি স্বশাসিত রাজ্যের অস্তিত্ব ছিল। আয়তনে এরা ছিল দেশের মোট আয়তনের শতকরা 48 ভাগ এবং মোট জনসমষ্টি ছিল প্রায় 9 কোটি। এগুলিকে দেশীয় রাজ্য বলে অভিহিত করা হয়েছে।
দেশীয় রাজ্যগুলির ভারতভুক্তিকরণের ক্ষেত্রে ভারত সরকার কী ধরনের পদ্ধতি অবলম্বন করেছিল?
প্রথমত, ভারত রাষ্ট্রের প্রদেশগুলির সঙ্গে তার পার্শ্ববর্তী দেশীয় রাজ্যগুলির সংযুক্তি। যেমন-উত্তর প্রদেশের সঙ্গে গাড়োয়াল, রামপুর ও বেনারসের সংযুক্তি, পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে কোচবিহারের সংযুক্তি প্রভৃতি। দ্বিতীয়ত, কয়েকটি দেশীয় রাজ্যকে পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত করে অপেক্ষাকৃত বৃহৎ রাজ্যে রূপান্তর। যেমন – পাঞ্জাব ও পাতিয়ালার 8টি দেশীয় রাজ্যকে যুক্ত করে 1948 খ্রিস্টাব্দে PEPSU (The Patiala and East Punjab States Union) গঠন করা হয়। তৃতীয়ত, কয়েকটি দেশীর রাজ্যকে কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলে রূপান্তরিত করা। যেমন – হিমাচল প্রদেশ, কচ্ছ, ভোপাল, ত্রিপুরা, মণিপুর ইত্যাদিকে কেন্দ্রীয় শাসনাধীন অঞ্চলে পরিণত করা হয়। সর্বোপরি, সামরিক অভিযানের মাধ্যমে ভারতভুক্তি। যেমন-হায়দ্রাবাদ প্রভৃতি।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
দেশীয় রাজ্য কাকে বলে?
1947 সালে ভারতের স্বাধীনতার আগে, ব্রিটিশ শাসনের প্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রণের বাইরে প্রায় 600টি স্বশাসিত রাজ্য ছিল। এগুলি দেশের মোট আয়তনের 48% এবং প্রায় 9 কোটি জনসংখ্যা ধারণ করত। এগুলিকেই দেশীয় রাজ্য বলা হয়।
দেশীয় রাজ্যগুলির ভারতভুক্তিকরণে কী পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়েছিল?
ভারত সরকার নিম্নলিখিত পদ্ধতিগুলি ব্যবহার করেছিল –
1. প্রদেশের সঙ্গে সংযুক্তিকরণ – যেমন, উত্তরপ্রদেশের সঙ্গে গাড়োয়াল, রামপুর ও বেনারসের সংযুক্তি।
2. একাধিক রাজ্য মিলে বৃহত্তর রাজ্য গঠন – যেমন, পাঞ্জাব ও পাতিয়ালার ৮টি রাজ্য মিলে PEPSU (পাটিয়ালা ও পূর্ব পাঞ্জাব স্টেটস ইউনিয়ন) গঠন।
3. কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে রূপান্তর – যেমন, হিমাচল প্রদেশ, কচ্ছ, ভোপাল, ত্রিপুরা ও মণিপুরকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল বানানো হয়।
4. সামরিক অভিযান – হায়দ্রাবাদের মতো কিছু রাজ্যকে সামরিক শক্তির মাধ্যমে ভারতভুক্ত করা হয়।
PEPSU কী?
PEPSU (The Patiala and East Punjab States Union) ছিল পাঞ্জাব অঞ্চলের 8টি দেশীয় রাজ্যের সমন্বয়ে গঠিত একটি রাজ্য, যা 1948 সালে তৈরি হয়েছিল। পরবর্তীতে এটি পাঞ্জাব রাজ্যের সঙ্গে একীভূত হয়।
কোন দেশীয় রাজ্যকে সামরিক শক্তির মাধ্যমে ভারতভুক্ত করা হয়েছিল?
হায়দ্রাবাদ ছিল প্রধান দেশীয় রাজ্য, যাকে 1948 সালে অপারেশন পোলো -এর মাধ্যমে ভারতীয় সেনাবাহিনী জোরপূর্বক ভারতভুক্ত করে।
কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত হওয়া কিছু দেশীয় রাজ্যের উদাহরণ দাও।
কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত হওয়া কিছু দেশীয় রাজ্যের উদাহরণ হল – হিমাচল প্রদেশ, কচ্ছ, ভোপাল, ত্রিপুরা, মণিপুর।
দেশীয় রাজ্যগুলির ভারতভুক্তিকরণে কারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন?
সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল (ভারতের প্রথম উপ-প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী) এবং বি.পি. মেনন (সচিব) দেশীয় রাজ্যগুলির ভারতে একীভূতকরণে মূল ভূমিকা পালন করেন।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “দেশীয় রাজ্য বলতে কী বোঝো? দেশীয় রাজ্যগুলির ভারতভুক্তিকরণের ক্ষেত্রে ভারত সরকার কী ধরনের পদ্ধতি অবলম্বন করেছিল?” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই “দেশীয় রাজ্য বলতে কী বোঝো? দেশীয় রাজ্যগুলির ভারতভুক্তিকরণের ক্ষেত্রে ভারত সরকার কী ধরনের পদ্ধতি অবলম্বন করেছিল?” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের অষ্টম অধ্যায় “উত্তর-ঔপনিবেশিক ভারত: বিশ শতকের দ্বিতীয় পর্ব (1947-1964)” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন