এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “ধাতব পরিবাহী কাকে বলে? দুটি ধাতব পরিবাহী এবং দুটি অধাতব পরিবাহীর নাম লেখো।” — নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “তড়িৎপ্রবাহ ও রাসায়নিক বিক্রিয়া” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

ধাতব পরিবাহী কাকে বলে?
ধাতব পরিবাহী – যেসব ধাতব পদার্থের মধ্য দিয়ে সহজেই তড়িৎ চলাচল করে এবং তড়িৎ পরিবহণের ফলে যাদের রাসায়নিক পরিবর্তন ঘটে না, কেবল উষ্ণতার পরিবর্তন হয় এবং তড়িৎপ্রবাহ বন্ধ হলে পুনরায় পূর্বের অবস্থায় ফিরে আসে, সেইসব ধাতব পদার্থকে ধাতব পরিবাহী বলে। যেমন – সোনা, তামা ইত্যাদি ধাতব পরিবাহী।
দুটি ধাতব পরিবাহী এবং দুটি অধাতব পরিবাহীর নাম লেখো।
দুটি ধাতব পরিবাহীর নাম হল – তামা, অ্যালুমিনিয়াম।
দুটি অধাতব পরিবাহীর নাম হল – গ্রাফাইট, গ্যাস কার্বন।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
ধাতব পরিবাহী ও ইলেক্ট্রোলাইটিক পরিবাহীর মধ্যে মূল পার্থক্য কী?
ধাতব পরিবাহী ও ইলেক্ট্রোলাইটিক পরিবাহীর মধ্যে মূল পার্থক্য হল –
1. ধাতব পরিবাহী – এখানে তড়িৎ প্রবাহের ফলে রাসায়নিক পরিবর্তন ঘটে না, কেবল উষ্ণতা বৃদ্ধি পায়। তড়িৎপ্রবাহ ইলেকট্রনের প্রবাহের মাধ্যমে হয়। যেমন – তামা, অ্যালুমিনিয়াম।
2. ইলেক্ট্রোলাইটিক পরিবাহী – এখানে তড়িৎ প্রবাহের ফলে রাসায়নিক পরিবর্তন ঘটে (বিয়োজন হয়) এবং আয়নের মাধ্যমে তড়িৎ পরিবহন হয়। যেমন – লবণ পানি, অম্লের দ্রবণ।
গ্রাফাইট একটি অধাতু হওয়া সত্ত্বেও এটি কীভাবে তড়িৎ পরিবহন করে?
গ্রাফাইট কার্বনের একটি রূপ। এর স্ফটিক গঠনে মুক্ত ইলেকট্রন থাকায় এটি তড়িৎ পরিবহন করতে পারে। এ কারণেই গ্রাফাইটকে “অধাতব পরিবাহী” হিসেবে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়।
তড়িৎ পরিবাহিতায় “উষ্ণতার পরিবর্তন” বলতে কী বোঝায়?
যখন ধাতব পরিবাহীর মধ্য দিয়ে তড়িৎপ্রবাহ চলে, তখন পরিবাহীর রোধের জন্য কিছু শক্তি তাপশক্তিতে রূপান্তরিত হয়। এর ফলে পরিবাহীর উষ্ণতা বৃদ্ধি পায়। একে জুলের তাপীয় ক্রিয়া বলে।
কোন ধাতুটি সবচেয়ে ভালো তড়িৎ পরিবাহী?
রূপা (Silver) হলো পরিচিত সবচেয়ে ভালো ধাতব পরিবাহী। তবে এর উচ্চ মূল্যের কারণে সাধারণত তামা (Copper) এবং অ্যালুমিনিয়াম (Aluminium) ব্যবহার করা হয়।
“গ্যাস কার্বন” কী এবং এটি কিভাবে কাজ করে?
গ্যাস কার্বন বা কার্বন হলো কার্বনের একটি রূপ, যা নির্দিষ্ট ধরনের বৈদ্যুতিক সেল, ব্যাটারি বা আর্ক ল্যাম্পে ইলেকট্রোড হিসেবে ব্যবহৃত হয়। গ্রাফাইটের মতোই এর গঠনে মুক্ত ইলেকট্রন থাকে বলে এটি বিদ্যুৎ পরিবহন করতে সক্ষম।
পরিবাহীর রোধ কী? ধাতব পরিবাহীর রোধ কি স্থির?
পরিবাহীর রোধ হলো তড়িৎ প্রবাহের বিরুদ্ধে বাধা। ধাতব পরিবাহীর রোধ স্থির নয়; এটি পরিবাহীর উপাদান, দৈর্ঘ্য, প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফল এবং তাপমাত্রার উপর নির্ভর করে। সাধারণত তাপমাত্রা বৃদ্ধির সাথে ধাতুর রোধও বৃদ্ধি পায়।
দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহৃত কিছু সাধারণ ধাতব পরিবাহীর উদাহরণ দাও।
দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহৃত কিছু সাধারণ ধাতব পরিবাহীর উদাহরণ হল –
1. বৈদ্যুতিক তার – তামা ও অ্যালুমিনিয়াম।
2. বৈদ্যুতিক প্লাগ ও সকেটের অংশ – পিতল।
3. বৈদ্যুতিক মোটরের কয়েল – তামা।
4. রান্নার পাত্র (হিটার কয়েল) – নাইক্রোম (নিকেল-ক্রোমিয়ামের মিশ্র ধাতু)।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “ধাতব পরিবাহী কাকে বলে? দুটি ধাতব পরিবাহী এবং দুটি অধাতব পরিবাহীর নাম লেখো।” — নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “তড়িৎপ্রবাহ ও রাসায়নিক বিক্রিয়া” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন