এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “γ-রশ্মির ধর্মগুলি লেখো।” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “γ-রশ্মির ধর্মগুলি লেখো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের সপ্তম অধ্যায় “পরমাণুর নিউক্লিয়াস“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

γ-রশ্মির ধর্মগুলি লেখো।
γ-রশ্মির ধর্ম –
- γ-রশ্মির প্রকৃতি – γ-রশ্মি, প্রকৃতপক্ষে তেজস্ক্রিয় মৌলের নিউক্লিয়াস থেকে নির্গত খুব ক্ষুদ্র তড়িৎচুম্বকীয় তরঙ্গ, যার মধ্যে উচ্চশক্তিসম্পন্ন ফোটোন কণা বর্তমান।
- γ-রশ্মির ভর – γ-রশ্মি তড়িৎচুম্বকীয় তরঙ্গ। এইজন্য এটি ভরহীন।
- γ-রশ্মির আধান – γ-রশ্মি তড়িৎ ও চৌম্বকক্ষেত্র দ্বারা বিক্ষিপ্ত হয় না। সুতরাং, এটি নিস্তড়িৎ।
- γ-রশ্মির বেগ – γ-রশ্মির বেগ আলোর গতিবেগের সমান।
- γ-রশ্মির আয়নন ক্ষমতা – নিস্তড়িৎ হওয়ায় γ-রশ্মির গ্যাস আয়নন ক্ষমতা খুব কম।
- γ-রশ্মির ভেদন ক্ষমতা – γ-রশ্মির বেগ সর্বোচ্চ হওয়ায় এর ভেদন ক্ষমতা α, β-রশ্মির থেকে অনেক বেশি। γ-রশ্মি 100 cm পুরু পর্যন্ত অ্যালুমিনিয়াম পাত ভেদ করতে পারে, আবার 8 cm পুরু সিসার পাত ভেদ করতেও সক্ষম।
- γ-রশ্মির প্রতিপ্রভা সৃষ্টি – বেরিয়াম প্ল্যাটিনোসায়ানাইড বা জিংক সালফাইড নির্মিত পর্দায় γ-রশ্মি প্রতিপ্রভা সৃষ্টি করে।
- γ-রশ্মির ফোটোগ্রাফিক প্লেটের ওপর ক্রিয়া – γ-রশ্মি ফোটোগ্রাফিক প্লেটকে নষ্ট করে।
- γ-রশ্মির জীবদেহে ক্রিয়া – γ-রশ্মি জীবন্ত কোশ ধ্বংস করে এবং জীবদেহে গভীর ক্ষতের সৃষ্টি করে।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
γ-রশ্মির প্রকৃতি কী? এটি কি কণা না তরঙ্গ?
γ-রশ্মির একটি দ্বৈত প্রকৃতি রয়েছে। এটি একদিকে তড়িৎচুম্বকীয় তরঙ্গ, আবার অন্যদিকে এটি উচ্চশক্তিসম্পন্ন ফোটন কণা (শক্তি-প্যাকেট) হিসেবেও আচরণ করে।
γ-রশ্মির ভর ও আধান কত?
γ-রশ্মি সম্পূর্ণরূপে ভরহীন এবং নিস্তড়িৎ (আধানহীন)।
α, β, এবং γ-রশ্মির মধ্যে ভেদন ক্ষমতা সবচেয়ে বেশি কার?
α, β, এবং γ-রশ্মি তিনটির মধ্যে γ-রশ্মির ভেদন ক্ষমতা সবচেয়ে বেশি। এটি α ও β-রশ্মির তুলনায় অনেক বেশি ঘন পদার্থ ভেদ করতে সক্ষম, যেমন 8 সেমি পুরু সিসার পাত।
γ-রশ্মির আয়নীকরণ ক্ষমতা কেমন?
γ-রশ্মির আয়নীকরণ ক্ষমতা α ও β-রশ্মির তুলনায় খুবই কম। কারণ এটি আধানহীন, তাই সহজে পরমাণুর সাথে মিথস্ক্রিয়া করে ইলেকট্রন ছিনিয়ে নিতে পারে না।
γ-রশ্মির বেগ কত?
γ-রশ্মি তড়িৎচুম্বকীয় তরঙ্গ হওয়ায় শূন্য মাধ্যমে এর বেগ আলোর বেগের সমান, অর্থাৎ প্রতি সেকেন্ডে প্রায় 3 লক্ষ কিলোমিটার (3 × 10⁸ m/s)।
γ-রশ্মি কীভাবে সনাক্ত করা যায়?
γ-রশ্মি সনাক্ত করার প্রধান উপায়গুলো হলো –
1. এটি বিশেষ ফসফর (যেমন, জিঙ্ক সালফাইড) দিয়ে তৈরি পর্দায় প্রতিপ্রভা (fluorescence) সৃষ্টি করে।
2. এটি গাইগার-মুলার কাউন্টারের মতো যন্ত্রে আয়নীকরণের মাধ্যমে সংকেত তৈরি করে।
γ-রশ্মির জীবদেহের উপর কী প্রভাব আছে?
γ-রশ্মি অত্যন্ত ক্ষতিকর। এটি জীবন্ত কোষ ধ্বংস করে, ডিএনএ-র ক্ষতি করে এবং ত্বকে গভীর পোড়া ও ক্ষত সৃষ্টি করতে পারে। উচ্চমাত্রার সংস্পর্শে ক্যান্সার এমনকি মৃত্যুও ঘটতে পারে।
γ-রশ্মির উৎস কী?
γ-রশ্মির প্রাকৃতিক উৎস হলো তেজস্ক্রিয় মৌলের নিউক্লিয়াস (যেমন, ইউরেনিয়াম, রেডিয়াম)। এছাড়াও মহাজাগতিক উৎস, পারমাণবিক বিস্ফোরণ এবং মহাকাশে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন উচ্চ-শক্তির প্রক্রিয়ায় γ-রশ্মি উৎপন্ন হয়।
γ-রশ্মির কোনো উপকারী ব্যবহার আছে কি?
হ্যাঁ, সতর্কতার সাথে ব্যবহার করলে γ-রশ্মির অনেক উপকারী দিক রয়েছে —
1. চিকিৎসা ক্ষেত্রে – ক্যান্সার রোগের রেডিওথেরাপিতে ক্যান্সার কোষ ধ্বংস করতে।
2. শিল্প ক্ষেত্রে – ধাতব বস্তুর মধ্যে ফাটল বা ত্রুটি সনাক্ত করতে (গামা রেডিওগ্রাফি)।
3. খাদ্য সংরক্ষণে – ব্যাকটেরিয়া ও অনুজীব ধ্বংস করে খাদ্য দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করতে।
4. স্টেরিলাইজেশনে – চিকিৎসা সরঞ্জাম জীবাণুমুক্ত করতে।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “γ-রশ্মির ধর্মগুলি লেখো।” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “γ-রশ্মির ধর্মগুলি লেখো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের সপ্তম অধ্যায় “পরমাণুর নিউক্লিয়াস“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন