এখনই আমাদের Telegram Community গ্রুপে যোগ দিন। এখানে WBBSE বোর্ডের পঞ্চম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণির যেকোনো বিষয়ভিত্তিক সমস্যা শেয়ার করতে পারেন এবং একে অপরের সাহায্য করতে পারবেন। এছাড়া, কোনও সমস্যা হলে আমাদের শিক্ষকরা তা সমাধান করে দেবেন।

Telegram Logo Join Our Telegram Community

গ্রামবার্তা প্রকাশিকায় উনিশ শতকের বাংলার গ্রামীন সমাজের কীরূপ ছবি ফুটে উঠেছে?

এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “গ্রামবার্তা প্রকাশিকায় উনিশ শতকের বাংলার গ্রামীন সমাজের কীরূপ ছবি ফুটে উঠেছে? নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাস পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “গ্রামবার্তা প্রকাশিকায় উনিশ শতকের বাংলার গ্রামীন সমাজের কীরূপ ছবি ফুটে উঠেছে?“ প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের দ্বিতীয় অধ্যায় “সংস্কার – বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

গ্রামবার্তা প্রকাশিকায় উনিশ শতকের বাংলার গ্রামীন সমাজের কীরূপ ছবি ফুটে উঠেছে?
Contents Show

গ্রামবার্তা প্রকাশিকায় উনিশ শতকের বাংলার গ্রামীন সমাজের কীরূপ ছবি ফুটে উঠেছে?

বঙ্গীয় জাতীয় জাগরণ ও গ্রামীণ সাংবাদিকতার ইতিহাসে ‘গ্রামবার্তা প্রকাশিকা’ এক উল্লেখযোগ্য নাম।

প্রকাশ –

1863 খ্রিস্টাব্দে বর্তমান বাংলাদেশের কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালি গ্রাম থেকে প্রকাশিত হয় মাসিক পত্র ‘গ্রামবার্তা প্রকাশিকা’।

নামকরণ –

গ্রাম ও গ্রামবাসীদের অবস্থা তুলে ধরার জন্যই এই পত্রিকার এইরূপ নামকরণ।

সম্পাদনা –

এর সম্পাদনার দায়িত্ব নেন কুমারখালির পাঠশালার পণ্ডিত হরিনাথ মজুমদার, যিনি ‘কাঙাল হরিনাথ’ নামেই সমধিক পরিচিত।

গ্রামীণ সাংবাদিকতা –

গ্রামবার্ত্তা প্রকাশিকা যথার্থ অর্থেই সমকালীন বাংলার গ্রাম সমাজের দর্পণ। জাতীয় জাগরণের ওই দিনগুলিতে হরিনাথ বেছে নিয়েছিলেন শহর কলকাতা নয়, দরিদ্র্য ও সমস্যা-জর্জরিত গ্রাম বাংলাকে। পত্রিকার প্রতিটি সংখ্যা জুড়েই জমি, জমিদার, কৃষক, মহাজন, নীলকর এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ের আলোচনা থাকত। জমিদারি নিপীড়ন, পুলিশের অসাধুতা, বিচারের নামে অবিচার, সাধারণ মানুষের অসহায়তার খবর দিনের পর দিন তিনি ছেপেছেন অসীম সাহসে। হরিনাথ ইংরেজ ম্যাজিস্ট্রেটদের অত্যাচার সম্পর্কেও সজাগ ছিলেন। একবার মিস্টার হার্ম ফ্রি নামে পাবনার এক ম্যাজিস্ট্রেট গ্রাম পরিদর্শনে এসে এক দরিদ্র বিধবার একমাত্র সম্বল একটি দুগ্ধবতী গাভীকে হস্তগত করলে হরিনাথ ‘গরুচোর ম্যাজিস্ট্রেট’ শিরোনামে তীব্র প্রতিবাদ জানান। সামাজিক অত্যাচার ও নিত্য-নিপীড়ন থেকে প্রজাদের মুক্তির জন্য হরিনাথ নিজে সংগ্রামীর ভূমিকা নিয়েছেন। ফলত, জমিদারের প্রলোভন ও আক্রমণের লক্ষ হয়েছেন বারংবার। সর্বস্ব খুইয়েও প্রজাস্বার্থের আদর্শ থেকে তিনি কোনোদিন বিচ্যুত হননি।

গ্রামবার্তা প্রকাশিকায় উনিশ শতকের বাংলার গ্রামীন সমাজের কীরূপ ছবি ফুটে উঠেছে?

পরিণতি –

আর্থিক সংকট ছিল গ্রামবার্ত্তার চিরসঙ্গী সংকট ও সমাদরের মধ্য দিয়ে দীর্ঘ 22 বছরের উজ্জ্বল অস্তিত্ব বিকিরণের পর 1884 খ্রিঃ নাগাদ -এর প্রকাশনা বন্ধ হয়ে যায়।

মন্তব্য –

নিরপেক্ষতা ও স্বৈরাচার বিরোধিতার এক মূর্ত প্রতীক ‘গ্রামবার্তা প্রকাশিকা’। প্রলোভন ও ভীতির ঊর্ধ্বে উঠে নিরপেক্ষ সংবাদ পরিবেশনের যে দৃষ্টান্ত ‘গ্রামবার্তা প্রকাশিকা’ স্থাপন করেছিল, বর্তমানে তা বড়োই দুর্লভ।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর

গ্রামবার্তা প্রকাশিকা কী?

গ্রামবার্তা প্রকাশিকা ছিল একটি মাসিক পত্রিকা, যা উনিশ শতকে বাংলার গ্রামীণ সমাজের অবস্থা, সমস্যা ও সংগ্রামকে তুলে ধরার জন্য প্রকাশিত হতো। এটি বাংলার গ্রামীণ সাংবাদিকতার ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

গ্রামবার্তা প্রকাশিকা কবে এবং কোথা থেকে প্রকাশিত হয়?

গ্রামবার্তা প্রকাশিকা 1863 খ্রিস্টাব্দে বর্তমান বাংলাদেশের কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালি গ্রাম থেকে প্রকাশিত হয়।

গ্রামবার্তা প্রকাশিকার সম্পাদক কে ছিলেন?

গ্রামবার্তা প্রকাশিকার সম্পাদক ছিলেন হরিনাথ মজুমদার, যিনি ‘কাঙাল হরিনাথ’ নামে পরিচিত। তিনি কুমারখালির পাঠশালার পণ্ডিত ছিলেন।

গ্রামবার্তা প্রকাশিকা কেন গুরুত্বপূর্ণ?

গ্রামবার্তা প্রকাশিকা গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি উনিশ শতকের বাংলার গ্রামীণ সমাজের বাস্তব চিত্র তুলে ধরেছিল। জমিদারি নিপীড়ন, পুলিশের অসাধুতা, নীলকরদের অত্যাচার এবং সাধারণ মানুষের দুঃখ-দুর্দশার খবর এই পত্রিকায় প্রকাশিত হতো। এটি জাতীয় জাগরণের সময়ে গ্রামীণ সাংবাদিকতার একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে।

গ্রামবার্তা প্রকাশিকা কী ধরনের বিষয়বস্তু প্রকাশ করত?

গ্রামবার্তা প্রকাশিকায় জমি, জমিদার, কৃষক, মহাজন, নীলকর এবং তাদের অত্যাচার সম্পর্কিত বিষয়বস্তু প্রকাশিত হতো। এছাড়াও সামাজিক অবিচার, পুলিশের দুর্নীতি এবং সাধারণ মানুষের অসহায়ত্বের খবরও প্রকাশিত হতো।

হরিনাথ মজুমদার কেন বিখ্যাত?

হরিনাথ মজুমদার বিখ্যাত কারণ তিনি গ্রামীণ সমাজের পক্ষে সংগ্রাম করেছিলেন এবং গ্রামবার্তা প্রকাশিকার মাধ্যমে গ্রামবাসীদের সমস্যা ও অত্যাচারের কথা প্রকাশ করেছিলেন। তিনি জমিদার ও ব্রিটিশ ম্যাজিস্ট্রেটদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন।

গ্রামবার্তা প্রকাশিকা কত বছর চলেছিল?

গ্রামবার্তা প্রকাশিকা প্রায় 22 বছর ধরে প্রকাশিত হয়েছিল। 1863 সালে এর প্রকাশনা শুরু হয় এবং 1884 সালে এর প্রকাশনা বন্ধ হয়ে যায়।

গ্রামবার্তা প্রকাশিকা বন্ধ হওয়ার কারণ কী?

গ্রামবার্তা প্রকাশিকা বন্ধ হওয়ার প্রধান কারণ ছিল আর্থিক সংকট। দীর্ঘদিন ধরে আর্থিক সমস্যার সম্মুখীন হওয়ার পর 1884 সালে এর প্রকাশনা বন্ধ হয়ে যায়।

গ্রামবার্তা প্রকাশিকার ঐতিহাসিক গুরুত্ব কী?

গ্রামবার্তা প্রকাশিকার ঐতিহাসিক গুরুত্ব হলো এটি বাংলার গ্রামীণ সমাজের বাস্তব চিত্র ও সমস্যাগুলোকে তুলে ধরেছিল। এটি নিরপেক্ষ ও সাহসী সাংবাদিকতার একটি উজ্জ্বল উদাহরণ হিসেবে বিবেচিত হয়।

গ্রামবার্তা প্রকাশিকা বর্তমান সাংবাদিকতার জন্য কী বার্তা রাখে?

গ্রামবার্তা প্রকাশিকা বর্তমান সাংবাদিকতার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা রাখে, তা হলো সাংবাদিকতা হওয়া উচিত নিরপেক্ষ, সাহসী ও জনগণের পক্ষে। প্রলোভন ও ভীতির ঊর্ধ্বে উঠে সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়ানোই সাংবাদিকতার প্রকৃত দায়িত্ব।


এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “গ্রামবার্তা প্রকাশিকায় উনিশ শতকের বাংলার গ্রামীন সমাজের কীরূপ ছবি ফুটে উঠেছে?” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই “গ্রামবার্তা প্রকাশিকায় উনিশ শতকের বাংলার গ্রামীন সমাজের কীরূপ ছবি ফুটে উঠেছে?” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের দ্বিতীয় অধ্যায় “সংস্কার – বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।

Share via:

মন্তব্য করুন