এখনই আমাদের Telegram Community গ্রুপে যোগ দিন। এখানে WBBSE বোর্ডের পঞ্চম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণির যেকোনো বিষয়ভিত্তিক সমস্যা শেয়ার করতে পারেন এবং একে অপরের সাহায্য করতে পারবেন। এছাড়া, কোনও সমস্যা হলে আমাদের শিক্ষকরা তা সমাধান করে দেবেন।

Telegram Logo Join Our Telegram Community

হিন্দুমেলার উদ্দেশ্য কী ছিল?

এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “হিন্দুমেলার উদ্দেশ্য কী ছিল? অথবা, হিন্দুমেলা – টীকা লেখো।” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাস পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “হিন্দুমেলার উদ্দেশ্য কী ছিল? অথবা, হিন্দুমেলা – টীকা লেখো।“ প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের চতুর্থ অধ্যায় “সংঘবদ্ধতার গোড়ার কথা“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

হিন্দুমেলার উদ্দেশ্য কী ছিল? অথবা, হিন্দুমেলা - টীকা লেখো।

হিন্দুমেলার উদ্দেশ্য কী ছিল? অথবা, হিন্দুমেলা – টীকা লেখো।

1867 খ্রিস্টাব্দের 14 এপ্রিল চৈত্র সংক্রান্তির দিন নবগোপাল মিত্র, রাজনারায়ণ বসু প্রমুখের উদ্যোগে এবং ঠাকুরবাড়ির অর্থানুকূল্যে কলকাতায় প্রতিষ্ঠিত হয় ‘চৈত্র মেলা’, যা পরবর্তীকালে ‘হিন্দুমেলা’ নামে পরিচিত হয়ে জাতীয়তাবাদী চেতনার বিকাশে এক উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে।

হিন্দুমেলার উদ্দেশ্য কী ছিল? অথবা, হিন্দুমেলা - টীকা লেখো।

হিন্দুমেলার উদ্দেশ্য –

ঐতিহাসিক রমেশচন্দ্র মজুমদার হিন্দুমেলার তিনটি প্রধান উদ্দেশ্য ছিল বলে উল্লেখ করেছেন। যথা – জাতীয়তাবাদের প্রসার ঘটানো, দেশাত্মবোধের জাগরণ এবং হিন্দুদের মধ্যে এক আত্মনির্ভরশীল মনোভাব গঠন করা। হিন্দুমেলার উদ্দেশ্য প্রসঙ্গে এর প্রথম সম্পাদক স্বয়ং গণেন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছেন – ‘আমাদের এই মিলন সাধারণ ধর্ম-কর্মের জন্য নহে, কোনো বিষয় সুখের জন্য নহে, কোনো আমোদ-প্রমোদের জন্যও নহে, এটি স্বদেশের জন্য, এটি ভারতভূমির জন্য।’

হিন্দুমেলার প্রধান উদ্দেশ্যগুলি ছিল – সাধারণ মানুষ বিশেষ করে শিক্ষিত যুবকদের মধ্যে হিন্দুধর্মের অতীত গৌরবগাথা ছড়িয়ে দেওয়া, দেশীয় ভাষাচর্চা করা, জাতীয় প্রতীকগুলিকে মর্যাদা দেওয়া, প্রাচীন হিন্দুধর্মের মর্যাদা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা, দেশপ্রেম ও স্বাধীনতার আদর্শে সবাইকে অনুপ্রাণিত করা, গোপনে হিন্দু যুবকদের মধ্যে বৈপ্লবিক ভাবধারা জাগিয়ে তোলা, হিন্দু জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করা এবং আত্মনির্ভরশীল ভারতবর্ষ প্রতিষ্ঠা করা।

হিন্দুমেলা শরীরচর্চা, অশ্বচালনার প্রশিক্ষণ এবং শিক্ষা-সাহিত্য-শিল্প-সংগীত-স্বাস্থ্য প্রভৃতির উন্নতি ঘটিয়ে আত্মনির্ভরতা ও ঐক্যবদ্ধতার মাধ্যমে যুবসমাজকে ভারতের রাষ্ট্রীয় স্বাধীনতা অর্জনের উপযোগী করে গড়ে তুলতে চেয়েছিল। তবে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে প্রত্যক্ষভাবে প্রবেশ না করে ‘হিন্দুমেলা’ দেশাত্মবোধের প্রচারকেই অধিক প্রাধান্য দিয়েছিল।

সর্বোপরি, দেশীয় জিনিসের প্রদর্শনী, দেশাত্মবোধক সঙ্গীত, বক্তৃতার আয়োজন প্রভৃতিতেও হিন্দুমেলার সদস্যরা অগ্রণী ছিলেন। হিন্দুমেলার অধিবেশনে সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরের রচিত ও গীত ‘মিলে সবে ভারত সন্তান’ গানটি বিপুল উদ্দীপনার সৃষ্টি করেছিল। হিন্দুমেলা দেশীয় বিদ্যাশিক্ষার উন্নতি ও প্রসারে নিয়োজিত স্বদেশবাসীদের সম্মান জানানো এবং তাদের লক্ষ ও উদ্দেশ্যগুলিকে জনসমক্ষে প্রচারের জন্য ‘ন্যাশনাল পেপার’ নামে একটি পত্রিকা প্রকাশ করে।

হিন্দুমেলার মন্তব্য –

নামমাহাত্ম্যে অনেকে এই প্রতিষ্ঠানকে ‘সাম্প্রদায়িক’ আখ্যা দিলেও বাস্তবে তা যথার্থ নয়। বস্তুতপক্ষে, সেদিন ভারতবাসীর জাতীয়চেতনা ছিল অস্পষ্ট, তখন ‘হিন্দু’ ও ‘জাতীয়’ শব্দ দুটি ছিল সমার্থক। ‘হিন্দু’ শব্দের সঙ্গে সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প তখনও যুক্ত হয়নি। তাই হিন্দুমেলাকে জাতীয়তাবোধের উদ্বোধনের অন্যতম সহায়ক উপাদানরূপে বিচার করাই ইতিহাস সম্মত।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর

হিন্দুমেলা কী?

হিন্দুমেলা ছিল ঊনিশ শতকের একটি জাতীয়তাবাদী সংগঠন, যা 1867 সালে কলকাতায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এটি প্রথমে ‘চৈত্র মেলা’ নামে পরিচিত ছিল এবং পরে ‘হিন্দুমেলা’ নামে জনপ্রিয় হয়।

হিন্দুমেলা কে প্রতিষ্ঠা করেন?

নবগোপাল মিত্র, রাজনারায়ণ বসু এবং ঠাকুর পরিবারের সদস্যদের উদ্যোগে হিন্দুমেলা প্রতিষ্ঠিত হয়।

হিন্দুমেলার প্রধান উদ্দেশ্য কী ছিল?

হিন্দুমেলার প্রধান উদ্দেশ্য ছিল –
1. জাতীয়তাবাদের প্রসার,
2. দেশাত্মবোধ জাগরণ,
3. হিন্দুদের মধ্যে আত্মনির্ভরশীলতা গড়ে তোলা,
4. হিন্দুধর্মের অতীত গৌরব স্মরণ করিয়ে দেওয়া,
5. দেশীয় ভাষা, সংস্কৃতি ও শিল্পের উন্নতি,
6. স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য যুবসমাজকে প্রস্তুত করা।

হিন্দুমেলা কীভাবে জাতীয়তাবাদী চেতনা ছড়িয়েছিল?

1. দেশাত্মবোধক গান (যেমন – “মিলে সবে ভারত সন্তান”),
2. বক্তৃতা, সাহিত্য ও শিল্পের মাধ্যমে স্বদেশপ্রেমের প্রচার,
3. শরীরচর্চা ও যুবশক্তিকে সংগঠিত করা,
4. ‘ন্যাশনাল পেপার’ নামে পত্রিকা প্রকাশ।

হিন্দুমেলাকে কি সাম্প্রদায়িক বলা যায়?

না, হিন্দুমেলা সাম্প্রদায়িক ছিল না। তখন ‘হিন্দু’ শব্দটি জাতীয় পরিচয়ের প্রতীক ছিল। এটি সকল ভারতীয়কে ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা করেছিল।

হিন্দুমেলার অবদান কী?

এটি ভারতীয় জাতীয়তাবাদের ভিত্তি রচনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং পরবর্তীতে স্বাধীনতা আন্দোলনে অনুপ্রেরণা দেয়।

হিন্দুমেলা কতদিন স্থায়ী ছিল?

1867 সালে প্রতিষ্ঠিত হয়ে এটি কয়েক দশক ধরে সক্রিয় ছিল, তবে সময়ের সঙ্গে এর প্রভাব হ্রাস পায়।


এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “হিন্দুমেলার উদ্দেশ্য কী ছিল? অথবা, হিন্দুমেলা – টীকা লেখো।” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই “হিন্দুমেলার উদ্দেশ্য কী ছিল? অথবা, হিন্দুমেলা – টীকা লেখো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের চতুর্থ অধ্যায় “সংঘবদ্ধতার গোড়ার কথা” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।

Share via:

মন্তব্য করুন