এখনই আমাদের Telegram Community গ্রুপে যোগ দিন। এখানে WBBSE বোর্ডের পঞ্চম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণির যেকোনো বিষয়ভিত্তিক সমস্যা শেয়ার করতে পারেন এবং একে অপরের সাহায্য করতে পারবেন। এছাড়া, কোনও সমস্যা হলে আমাদের শিক্ষকরা তা সমাধান করে দেবেন।

Telegram Logo Join Our Telegram Community

হরিনাথ মজুমদার কে ছিলেন? হরিনাথ মজুমদার স্মরণীয় কেন?

এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “হরিনাথ মজুমদার কে ছিলেন? হরিনাথ মজুমদার স্মরণীয় কেন? নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাস পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “হরিনাথ মজুমদার কে ছিলেন? হরিনাথ মজুমদার স্মরণীয় কেন?“ প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের দ্বিতীয় অধ্যায় “সংস্কার – বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

হরিনাথ মজুমদার কে ছিলেন? হরিনাথ মজুমদার স্মরণীয় কেন?

হরিনাথ মজুমদার কে ছিলেন?

কাঙাল হরিনাথ ছিলেন একাধারে ছিলেন একধারে সাহিত্যশিল্পী, সংবাদ-সাময়িকপত্র পরিচালক, শিক্ষাব্রতী, সমাজসংস্কারক, সাধক ও ধর্মবেত্তা। হরিনাথ বর্তমান বাংলাদেশের কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালি গ্রামে 1833 খ্রিস্টাব্দে জন্মগ্রহন করেছিলেন। দারিদ্রের কারণে হরিনাথ পড়াশুনা বেশিদূর চালিয়ে নিয়ে যেতে পারেননি। কিন্তু শিক্ষার প্রসারে তিনি ছিলেন সদা সচেষ্ট। 1855 খ্রিঃ হরিনাথ তার কয়েকজন বন্ধুর সাহায্যে কুমারখালি গ্রামে দেশীয় বিদ্যালয় স্থাপন করেন, পরে তিনি গ্রামে মেয়েদের জন্য বিদ্যালয় স্থাপন করেন।

তিনি সাংবাদিক-জীবন শুরু করেছিলেন ঈশ্বরগুপ্তের ‘সংবাদ প্রভাকর’ পত্রিকায়। 1863 খ্রিঃ তিনি নিজের পত্রিকা গ্রামবার্ত্তা প্রকাশিকা প্রকাশ করেন। মূলত গ্রাম এবং গ্রামবাসীদের অবস্থা প্রকাশের জন্য এর নাম হয় গ্রামবার্ত্তা প্রকাশিকা। তবে মূল লক্ষ্য ছিল কৃষকদের ওপর নীলকর সাহেব ও জমিদারদের অত্যাচারের কাহিনী প্রকাশ করা। তবে এই পত্রিকায় দর্শন, সাহিত্য ও অন্য সংবাদ প্রকাশিত হতো। লালন ফকিরের গান প্রকাশ করেছিল গ্রামবার্ত্তা প্রকাশিকা।

1863 খ্রিস্টাব্দে এপ্রিল মাসে গ্রামবার্ত্তা প্রকাশিকা প্রকাশিত হয়েছিল। প্রথমে এই পত্রিকা ছিল মাসিক। প্রথম নয় বছর এটি ছাপা হতো কলকাতার 23 নং আপার সার্কুলার রোডের মির্জাপুরের গিরিশচন্দ্র বিদ্যারত্নের ‘বিদ্যারত্ন প্রেস’ থেকে এবং পরে এটি বর্তমান বাংলাদেশের কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালি গ্রামের মথুরানাথ প্রেস থেকে মুদ্রিত হয়। এই পত্রিকাটি প্রায় 22 বছর টিকে ছিল। প্রথমে এই পত্রিকাটি ছিল মাসিক, 1864 খ্রিঃ এটি পাক্ষিক এবং 1871 খ্রিঃ এটি সাপ্তাহিকে পরিণত হয়। 1884 খ্রিঃ নাগাদ পত্রিকাটি বন্ধ হয়ে যায়। যখন পত্রিকাটি মাসিক ছিল তখন এর দাম ছিল পাঁচ আনা।

সাংবাদিকতার পাশাপাশি তিনি প্রায় 18টি বই লিখেছিলেন মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল ‘বিজয় বসন্ত’, ‘কবিতা কৌমুদী’। কাঙাল হরিনাথ ছিলেন লালন ফকিরের অনুগামী। তিনি ‘কাঙাল ফকির চাঁদের দল’ নামে একটি বাউল দল তৈরি করেন। ‘কাঙাল ফকিরচাঁদ ফকিরের জীবনী’ নামে একটি বাউল গানের সংকলন প্রকাশ করেন। হরিনাথের একটি বহুশ্রুত গান হলো –

‘হরি দিন তো গেল সন্ধ্যা হলো,
পার করো আমারে…’

কাঙাল হরিনাথ মৃত্যুবরণ করেন 1896 খ্রিস্টাব্দে 16ই এপ্রিল।

হরিনাথ মজুমদার স্মরণীয় কেন?

বঙ্গীয় জাতীয় জাগরণ ও গ্রামীণ সংবাদিকতার ইতিহাসে কুমারখালির পাঠশালার পণ্ডিত হরিনাথ মজুমদার এক উল্লেখযোগ্য নাম, যিনি ‘কাঙাল হরিনাথ’ নামেই সমধিক পরিচিত। জাতীয় জাগরণের ওই দিনগুলিতে হরিনাথ বেছে নিয়েছিলেন শহর কলকাতা নয়, দারিদ্র্য ও সমস্যা-জর্জরিত গ্রাম বাংলাকে। জমিদারি নিপীড়ন, পুলিশের অসাধুতা, বিচারের নামে অবিচার, সাধারণ মানুষের অসহায়তার খবর দিনের পর দিন তিনি ছেপেছেন অসীম সাহসে। ফলতঃ জমিদারের প্রলোভন ও আক্রমণের লক্ষ্য হয়েছেন বারংবার। সর্বস্ব খুইয়েও প্রজাস্বার্থের আদর্শ থেকে বিচ্যুত হননি। তিনি ‘কাঙাল ফকিরচাঁদ’ ছদ্মনামে বাউল গানও রচনা করেন।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর

হরিনাথ মজুমদারের প্রধান অবদান কী ছিল?

তিনি গ্রামীণ জনগণের সমস্যা, বিশেষ করে নীলকর সাহেব ও জমিদারদের অত্যাচারের কথা তুলে ধরার জন্য 1863 সালে “গ্রামবার্ত্তা প্রকাশিকা” নামে একটি পত্রিকা প্রকাশ করেন। এছাড়াও তিনি শিক্ষার প্রসারে গ্রামে বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন এবং সমাজ সংস্কারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন।

গ্রামবার্ত্তা প্রকাশিকা কী?

গ্রামবার্ত্তা প্রকাশিকা ছিল হরিনাথ মজুমদার কর্তৃক প্রকাশিত একটি পত্রিকা, যা গ্রামীণ জনগণের সমস্যা, কৃষকদের ওপর অত্যাচার, এবং সমাজের বিভিন্ন অসঙ্গতি তুলে ধরত। এটি প্রথমে মাসিক, পরে পাক্ষিক এবং শেষে সাপ্তাহিক পত্রিকা হিসেবে প্রকাশিত হতো।

হরিনাথ মজুমদারের সাহিত্যিক অবদান কী?

তিনি প্রায় 18টি বই লিখেছিলেন, যার মধ্যে “বিজয় বসন্ত” এবং “কবিতা কৌমুদী” উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও তিনি বাউল গান রচনা করতেন এবং লালন ফকিরের গান প্রচারে ভূমিকা রাখেন।

হরিনাথ মজুমদার কেন “কাঙাল হরিনাথ” নামে পরিচিত?

তিনি “কাঙাল ফকিরচাঁদ” ছদ্মনামে বাউল গান রচনা করতেন এবং সমাজের দরিদ্র ও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতেন। তার এই নিঃস্বার্থ সমাজসেবা ও আধ্যাত্মিক চিন্তাধারার কারণে তিনি “কাঙাল হরিনাথ” নামে পরিচিত হন।

হরিনাথ মজুমদারের মৃত্যু কবে হয়?

হরিনাথ মজুমদার 1896 সালের 16ই এপ্রিল মৃত্যুবরণ করেন।

হরিনাথ মজুমদার লালন ফকিরের সাথে কীভাবে যুক্ত ছিলেন?

হরিনাথ মজুমদার লালন ফকিরের অনুগামী ছিলেন এবং তার গান প্রচারে ভূমিকা রাখেন। তিনি “কাঙাল ফকিরচাঁদ” নামে একটি বাউল দল গঠন করেন এবং লালন ফকিরের জীবনী ও গান সংকলন প্রকাশ করেন।

হরিনাথ মজুমদারের একটি বিখ্যাত গান কী?

তার একটি বিখ্যাত গান হলো –
“হরি দিন তো গেল সন্ধ্যা হলো,
পার করো আমারে…”

হরিনাথ মজুমদারের শিক্ষা ও সমাজ সংস্কারে ভূমিকা কী ছিল?

তিনি দারিদ্র্যের কারণে নিজে বেশি পড়াশুনা করতে না পারলেও শিক্ষার প্রসারে সচেষ্ট ছিলেন। তিনি কুমারখালি গ্রামে দেশীয় বিদ্যালয় এবং মেয়েদের জন্য বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন, যা গ্রামীণ শিক্ষার প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।


এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “হরিনাথ মজুমদার কে ছিলেন? হরিনাথ মজুমদার স্মরণীয় কেন?” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই “হরিনাথ মজুমদার কে ছিলেন? হরিনাথ মজুমদার স্মরণীয় কেন?” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের দ্বিতীয় অধ্যায় “সংস্কার – বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।

Share via:

মন্তব্য করুন