এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “হর্টিকালচার বা উদ্যানকৃষি সম্পর্কে টীকা লেখো।” — নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের পঞ্চম অধ্যায় “ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ” -এর “ভারতের কৃষি” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

হর্টিকালচার বা উদ্যানকৃষি সম্পর্কে টীকা লেখো।
ধারণা – যে আধুনিক কৃষি পদ্ধতিতে ফুল, শাকসবজি উৎপাদনকারী উদ্ভিদ, ভেষজ উদ্ভিদ, সোন্দর্যবর্ধক ও আনন্দ প্রদায়ক উদ্ভিদের চাষ, প্রতিপালন, সংরক্ষণ করা হয় তাকে হর্টিকালচার বা উদ্যানকৃষি বলা হয়।
অর্থ – ‘Horticulture’ একটি লাতিন শব্দ যা Hortus (উদ্যান) ও Culture (কর্ষণ) এই দুটি শব্দ থেকে এসেছে।
শ্রেণিবিভাগ – উদ্যানপালনের অনেকগুলি ভাগ –
- ফ্লোরিকালচার – গোলাপ, গাঁদা, চন্দ্রমল্লিকা, সূর্যমুখী চাষ করা হয়।
- পোমামকালচার – কলা, পেয়ারা, আপেল, আনারস, কমলালেবুর চাষ করা হয়।
- ওলেরিকালচার – পালংশাক, বেগুন, কুমড়ো, ফুলকপির চাষ করা হয়।
কর্মক্ষেত্র সৃষ্টি ও গ্রামীণ অর্থনীতিতে উদ্যানপালনের ভূমিকা – হর্টিকালচার গ্রামীণ অর্থনীতির বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। ভারতের গ্রামীণ জনসংখ্যার কথা মাথায় রেখে উদ্যান পালনের পরিমাণ বাড়ালে গ্রামীণ দারিদ্র্য দূর করা যাবে এবং নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।
শহরাঞ্চলে উদ্যানপালন – শহরাঞ্চলে বাসগৃহে কিচেন গার্ডেন, টেরেস বা রুফটপ গার্ডেনের মাধ্যমে হর্টিকালচার পদ্ধতিতে চাষ করা যায়। সবজি উৎপাদনকারী উদ্ভিদ, ভেষজ উদ্ভিদ, সৌন্দর্যবর্ধক উদ্ভিদ হর্টিকালচারের মাধ্যমে উৎপাদন করা যায়।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
হর্টিকালচার বা উদ্যানকৃষি কী?
হর্টিকালচার বা উদ্যানকৃষি হল কৃষির একটি শাখা যেখানে ফুল, ফল, শাকসবজি, ভেষজ উদ্ভিদ এবং সৌন্দর্যবর্ধক গাছের চাষ, প্রতিপালন ও সংরক্ষণ করা হয়।
হর্টিকালচার শব্দের উৎপত্তি কীভাবে হয়েছে?
“Horticulture” শব্দটি লাতিন শব্দ Hortus (উদ্যান) ও Culture (কর্ষণ) থেকে এসেছে, যার অর্থ “উদ্যান চাষ”।
হর্টিকালচারের প্রধান শাখাগুলি কী কী?
হর্টিকালচারের প্রধান শাখাগুলি নিম্নরূপ –
1. ফ্লোরিকালচার (ফুলের চাষ, যেমন – গোলাপ, গাঁদা)।
2. পোমোলজি/ফ্রুটিকালচার (ফলের চাষ, যেমন – আম, আপেল, কলা)।
3. ওলেরিকালচার (শাকসবজির চাষ, যেমন – বেগুন, ফুলকপি)।
4. ল্যান্ডস্কেপ হর্টিকালচার (সৌন্দর্যবর্ধক উদ্যান নকশা)।
হর্টিকালচার গ্রামীণ অর্থনীতিতে কীভাবে সাহায্য করে?
শহরাঞ্চলে হর্টিকালচারের গুরুত্ব অপরিসীম, যা নিম্নরূপ –
1. কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে।
2. কৃষকদের আয় বৃদ্ধি করে।
3. ফসলের বৈচিত্র্য বাড়ায় এবং খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।
শহরাঞ্চলে হর্টিকালচারের গুরুত্ব কী?
শহরাঞ্চলে হর্টিকালচারের গুরুত্ব অপরিসীম, কারণ –
1. শহরে সবুজায়ন ও বায়ুদূষণ কমাতে সাহায্য করে।
2. টেরেস গার্ডেনিং, রুফটপ গার্ডেনিং এবং ভার্টিকাল গার্ডেনিং -এর মাধ্যমে শাকসবজি ও ফুল চাষ করা যায়।
3. মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করে।
হর্টিকালচারের সুবিধাগুলি কী?
হর্টিকালচারের প্রধান সুবিধাগুলি হলো –
1. উচ্চমূল্যের ফসল উৎপাদন।
2. কম জমিতে অধিক উৎপাদন সম্ভব।
3. পরিবেশবান্ধব ও টেকসই চাষ পদ্ধতি।
ভারতে হর্টিকালচারের ভবিষ্যৎ কী?
জলবায়ু পরিবর্তন ও জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে হর্টিকালচারের গুরুত্ব বাড়ছে। অর্গানিক ফার্মিং, হাইড্রোপনিক্স এবং প্রিসিশন ফার্মিং -এর মতো আধুনিক পদ্ধতিগুলি উদ্যানকৃষিকে আরও উন্নত করছে।
হর্টিকালচার চাষের জন্য কী কী বিষয় জানা প্রয়োজন?
হর্টিকালচার চাষ সফলভাবে পরিচালনার জন্য নিম্নলিখিত বিষয়গুলির জ্ঞান অপরিহার্য –
1. মাটি ও জলবায়ুর ধরন।
2. সেচ ও সার ব্যবস্থাপনা।
3. রোগ ও পোকামাকড় নিয়ন্ত্রণ।
4. আধুনিক চাষ পদ্ধতি (যেমন – গ্রিনহাউস ফার্মিং)।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “হর্টিকালচার বা উদ্যানকৃষি সম্পর্কে টীকা লেখো।” — নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের পঞ্চম অধ্যায় “ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ” -এর “ভারতের কৃষি” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন