এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “‘I’ ও ‘V’ আকৃতির নদী উপত্যকার বৈশিষ্ট্য লিখো? ‘I’ ও ‘V’ আকৃতির নদী উপত্যকার মধ্যে তুলনা করো।” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোল পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। “‘I’ ও ‘V’ আকৃতির নদী উপত্যকার বৈশিষ্ট্য লিখো? ‘I’ ও ‘V’ আকৃতির নদী উপত্যকার মধ্যে তুলনা করো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের প্রথম অধ্যায় “বহির্জাত প্রক্রিয়া ও তার দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপ – নদীর বিভিন্ন কাজ ও তাদের সংশ্লিষ্ট ভূমিরূপ” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

‘I’ ও ‘V’ আকৃতির নদী উপত্যকা বৈশিষ্ট্য লিখো?
‘I’ আকৃতির নদী উপত্যকা বৈশিষ্ট্য –
- বৃষ্টিবিরল মরুপ্রায় শুষ্ক পার্বত্য অঞ্চল বা উচ্চভূমি অঞ্চলে ক্যানিয়ন সৃষ্টি হয়।
- নিম্নক্ষয়বেশি হয় পার্শ্বক্ষয় হয় না বললেই চলে।
- ইংরাজী আকৃতির উপত্যকার সৃষ্টি হয়।
উদাহরণ – আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডো নদীর গ্রান্ড ক্যানিয়ন পৃথিবীর বৃহত্তম ক্যানিয়ন।
‘V’ আকৃতির নদী উপত্যকা বৈশিষ্ট্য –
- আর্দ্র জলবায়ুর পার্বত্য অঞ্চলে গিরিখাত গড়ে ওঠে।
- পার্শ্বক্ষয় অপেক্ষা নিম্মক্ষয়ের পরিমাণ বেশি হয়।
- গিরিখাত V আকৃতির হয়।
উদাহরণ – সিন্ধু, গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র প্রভৃতি নদীর গতিপথে অসংখ্য গিরিপথ লক্ষ্য করা যায়। চিনের ইয়াং-সিকিয়াং নদীর ইচাং পৃথিবীর বৃহত্তম গিরিখাত।
‘I’ ও ‘V’ আকৃতির নদী উপত্যকার মধ্যে তুলনা করো।
‘I’ ও ‘V’ আকৃতির নদী উপত্যকার পার্থক্য –
পার্থক্যের বিষয় | ‘I’ আকৃতির নদী উপত্যকা | ‘V’ আকৃতির নদী উপত্যকা |
নামকরণ | নদীর উচ্চগতিতে পার্বত্য প্রবাহে নদীর নিম্ন ক্ষয়ের ফলে ‘I’ আকৃতির উপত্যকা গঠন করে। | নদী নিম্নক্ষয়ের সঙ্গে পার্শ্বক্ষয়ের ফলে ‘I’ আকৃতির উপত্যকা আরও চওড়া হয়ে ‘V’ আকৃতির উপত্যকা সৃষ্টি হয়। |
গভীরতা | ‘I’ আকৃতির উপত্যকা অত্যন্ত গভীর হয়। | ‘V’ আকৃতির উপত্যকা তুলনামূলক কম গভীর হয়। |
অপর নাম | শুষ্ক মরুপ্রায় অঞ্চলে ‘I’ আকৃতির নদী উপত্যকাকে বলে ক্যানিয়ন। | ‘V’ আকৃতির উপত্যকা অত্যন্ত সংকীর্ণ ও গিরিখাত হওয়ায় একে গিরিখাত বলে। |
ক্ষয়কাজের প্রকৃতি | ‘I’ আকৃতির নদী উপত্যকা নদীর নিম্নক্ষয়ের ফলে সৃষ্টি হয়। | ‘V’ আকৃতির উপত্যকা নদীর নিম্নক্ষয় ও পার্শ্বক্ষয়ের উভয়ের ফলে সৃষ্টি হয়। |
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
‘I’ আকৃতির নদী উপত্যকা কী?
‘I’ আকৃতির নদী উপত্যকা হলো নদীর উচ্চগতিতে পার্বত্য অঞ্চলে নদীর নিম্নক্ষয়ের ফলে সৃষ্ট একটি গভীর ও সরু উপত্যকা। এটি সাধারণত শুষ্ক মরুপ্রায় অঞ্চলে দেখা যায় এবং একে ক্যানিয়নও বলা হয়।
‘V’ আকৃতির নদী উপত্যকা কী?
‘V’ আকৃতির নদী উপত্যকা হলো নদীর নিম্নক্ষয় ও পার্শ্বক্ষয়ের সমন্বয়ে গঠিত একটি উপত্যকা। এটি তুলনামূলক কম গভীর কিন্তু চওড়া হয় এবং একে গিরিখাতও বলা হয়।
‘I’ ও ‘V’ আকৃতির নদী উপত্যকার মধ্যে প্রধান পার্থক্য কী?
1. গভীরতা – ‘I’ আকৃতির উপত্যকা অত্যন্ত গভীর, অন্যদিকে ‘V’ আকৃতির উপত্যকা তুলনামূলক কম গভীর।
2. ক্ষয়কার্যের প্রকৃতি – ‘I’ আকৃতির উপত্যকা শুধুমাত্র নদীর নিম্নক্ষয়ের ফলে সৃষ্টি হয়, কিন্তু ‘V’ আকৃতির উপত্যকা নিম্নক্ষয় ও পার্শ্বক্ষয় উভয়ের ফলে গঠিত হয়।
3. আকৃতি – ‘I’ আকৃতির উপত্যকা সরু ও গভীর, আর ‘V’ আকৃতির উপত্যকা চওড়া ও কম গভীর।
‘I’ আকৃতির নদী উপত্যকা কোথায় বেশি দেখা যায়?
‘I’ আকৃতির নদী উপত্যকা সাধারণত শুষ্ক মরুপ্রায় অঞ্চলে দেখা যায়, যেখানে নদীর নিম্নক্ষয় বেশি হয় এবং পার্শ্বক্ষয় কম হয়।
‘V’ আকৃতির নদী উপত্যকা কেন গিরিখাত নামে পরিচিত?
‘V’ আকৃতির উপত্যকা অত্যন্ত সংকীর্ণ ও গভীর হওয়ায় একে গিরিখাত বলা হয়। এটি সাধারণত পার্বত্য অঞ্চলে নদীর ক্ষয়কার্যের ফলে গঠিত হয়।
‘I’ ও ‘V’ আকৃতির নদী উপত্যকার গঠন প্রক্রিয়া কী?
1. ‘I’ আকৃতির উপত্যকা – নদীর উচ্চগতিতে নিম্নক্ষয়ের ফলে গঠিত হয়।
2. ‘V’ আকৃতির উপত্যকা – নদীর নিম্নক্ষয় ও পার্শ্বক্ষয়ের সমন্বয়ে গঠিত হয়।
কোন উপত্যকা বেশি গভীর – ‘I’ নাকি ‘V’ আকৃতির?
‘I’ আকৃতির উপত্যকা ‘V’ আকৃতির উপত্যকার তুলনায় বেশি গভীর।
‘I’ আকৃতির উপত্যকাকে ক্যানিয়ন বলা হয় কেন?
‘I’ আকৃতির উপত্যকা অত্যন্ত গভীর ও সরু হওয়ায় এবং শুষ্ক মরুপ্রায় অঞ্চলে দেখা যাওয়ায় একে ক্যানিয়ন বলা হয়।
‘V’ আকৃতির উপত্যকা কীভাবে গঠিত হয়?
‘V’ আকৃতির উপত্যকা নদীর নিম্নক্ষয় ও পার্শ্বক্ষয়ের সমন্বয়ে গঠিত হয়। নদীর প্রবাহ পার্শ্ববর্তী ভূমিকে ক্ষয় করে চওড়া ও কম গভীর উপত্যকা সৃষ্টি করে।
‘I’ ও ‘V’ আকৃতির উপত্যকার উদাহরণ দাও।
1. ‘I’ আকৃতির উপত্যকা – গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন (যুক্তরাষ্ট্র)।
2. ‘V’ আকৃতির উপত্যকা – হিমালয় অঞ্চলের গিরিখাত (যেমন – ব্রহ্মপুত্র নদের গিরিখাত)।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “‘I’ ও ‘V’ আকৃতির নদী উপত্যকার বৈশিষ্ট্য লিখো? ‘I’ ও ‘V’ আকৃতির নদী উপত্যকার মধ্যে তুলনা করো।” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই “‘I’ ও ‘V’ আকৃতির নদী উপত্যকার বৈশিষ্ট্য লিখো? ‘I’ ও ‘V’ আকৃতির নদী উপত্যকার মধ্যে তুলনা করো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের প্রথম অধ্যায় “বহির্জাত প্রক্রিয়া ও তার দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপ – নদীর বিভিন্ন কাজ ও তাদের সংশ্লিষ্ট ভূমিরূপ” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।