এখনই আমাদের Telegram Community গ্রুপে যোগ দিন। এখানে WBBSE বোর্ডের পঞ্চম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণির যেকোনো বিষয়ভিত্তিক সমস্যা শেয়ার করতে পারেন এবং একে অপরের সাহায্য করতে পারবেন। এছাড়া, কোনও সমস্যা হলে আমাদের শিক্ষকরা তা সমাধান করে দেবেন।

Telegram Logo Join Our Telegram Community

জমিদার সভা – টীকা লেখো।

এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “জমিদার সভা – টীকা লেখো।” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাস পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “জমিদার সভা – টীকা লেখো।“ প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের চতুর্থ অধ্যায় “সংঘবদ্ধতার গোড়ার কথা“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

জমিদার সভা - টীকা লেখো।

জমিদার সভা – টীকা লেখো।

উনিশ শতকে ভারতবাসীর রাজনৈতিক চেতনার বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে ভারতবর্ষের নানা প্রান্তে যে অসংখ্যা রাজনৈতিক সভা-সমিতি গড়ে উঠেছিল, ‘জমিদার সভা’ ছিল সেগুলির মধ্যে অন্যতম।

জমিদার সভার প্রতিষ্ঠা –

1838 খ্রিস্টাব্দে দ্বারকানাথ ঠাকুরের উদ্যোগে এবং রাজা রাধাকান্তদেবের সভাপতিত্বে জমিদার সভা প্রতিষ্ঠিত হয়। সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক ছিলেন প্রসন্ন কুমার ঠাকুর এবং উইলিয়াম হ্যারি।

জমিদার সভার রাজনৈতিক তাৎপর্য –

ডঃ রাজেন্দ্রলাল মিত্র মনে করেন যে, জমিদার সভাই ছিল ভারতের স্বাধীনতার অগ্রদূত। জমিদার সভার সঙ্গে প্রজার স্বার্থ জড়িত থাকায় এই প্রতিষ্ঠান উভয় শ্রেণির দাবি আদায়েই যত্নবান ছিল। ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে শাখা স্থাপন এবং বিভিন্ন অঞ্চলের অধিবাসীদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের মাধ্যমে জাতীয়তাবাদের প্রসারে অগ্রণী হয় এই প্রতিষ্ঠান।

ভারতীয়দের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতি সহানুভূতিশীল ইংরেজদের সমর্থন ও সহযোগিতা লাভেও জমিদার সভা সাফল্য লাভ করে। ভারতবাসীর কল্যাণার্থে ইংরেজ সমাজকে ভারতের প্রকৃত অবস্থা জানানোর জন্য রামমোহন-সুহৃদ উইলিয়াম অ্যাডাম 1839 খ্রিস্টাব্দে লন্ডনে যে ‘ব্রিটিশ ইন্ডিয়া সোসাইটি’ প্রতিষ্ঠা করেন, জমিদার সভা, তার সঙ্গে নিরন্তর যোগাযোগ রেখে চলত। শেষ পর্যন্ত একটি বড়ো রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে আত্মপ্রকাশের উদ্দেশ্যে জমিদার সভা ব্রিটিশ ইন্ডিয়া সোসাইটির সঙ্গ যুক্ত হয়ে 1851 খ্রিস্টাব্দে ‘ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন’ গড়ে তোলে। রাধাকান্ত দেব এই সংগঠনের প্রথম সভাপতি এবং দ্বারকানাথ ঠাকুর প্রথম সম্পাদক নিযুক্ত হন।

জমিদার সভার প্রধান লক্ষ ছিল – বাংলা, বিহার ও ওড়িশার জমিদারদের স্বার্থ রক্ষা করা; ব্রিটিশ আমলাতন্ত্রকে জমিদারদের সপক্ষে আনা; ভারতের সর্বত্র চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের প্রসার ঘটানো; পুলিশ, বিচার ও রাজস্ব বিভাগের সংস্কার সাধন প্রভৃতি। এই সভার আবেদনে সরকার 10 বিঘা পর্যন্ত ব্রহ্মোত্তর জমির খাজনা মুকুব করে।

জমিদার সভার মন্তব্য –

জমিদার সভাই ছিল প্রকৃত অর্থে ভারতবাসীর প্রথম রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠান থেকেই ভারতীয়রা সর্বপ্রথম নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে রাজনৈতিক দাবি-দাওয়া আদায়ের শিক্ষা লাভ করেছিল।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর

জমিদার সভা কী?

জমিদার সভা ছিল উনিশ শতকের একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক সংগঠন, যা বাংলার জমিদার ও অভিজাত শ্রেণির স্বার্থ রক্ষা এবং ব্রিটিশ সরকারের কাছে ভারতীয়দের দাবি পেশ করার জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।

জমিদার সভা কখন এবং কাদের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয়?

1838 খ্রিস্টাব্দে দ্বারকানাথ ঠাকুরের উদ্যোগে এবং রাজা রাধাকান্ত দেবের সভাপতিত্বে জমিদার সভা প্রতিষ্ঠিত হয়।

জমিদার সভার উদ্দেশ্য কী ছিল?

জমিদার সভার প্রধান উদ্দেশ্যগুলি ছিল –
1. বাংলা, বিহার ও ওড়িশার জমিদারদের স্বার্থ রক্ষা করা।
2. ব্রিটিশ সরকারের কাছে জমিদারদের দাবি পেশ করা।
3. চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের প্রসার ঘটানো।
4. রাজস্ব, পুলিশ ও বিচার বিভাগের সংস্কার করা।

জমিদার সভার রাজনৈতিক গুরুত্ব কী?

জমিদার সভার রাজনৈতিক গুরুত্ব ছিল –
1. এটি ভারতের প্রথম রাজনৈতিক সংগঠনগুলির মধ্যে একটি ছিল।
2. এটি জাতীয়তাবাদের প্রসারে ভূমিকা রাখে।
3. ব্রিটিশ সরকারের কাছে ভারতীয়দের দাবি পেশ করতে শেখায়।
4. পরবর্তীতে এটি ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশনে (1851) রূপান্তরিত হয়।

জমিদার সভা ও ব্রিটিশ ইন্ডিয়া সোসাইটির সম্পর্ক কী?

জমিদার সভা উইলিয়াম অ্যাডামের প্রতিষ্ঠিত ব্রিটিশ ইন্ডিয়া সোসাইটির (1839) সঙ্গে যুক্ত ছিল। পরে 1851 সালে এই দুটি সংগঠন মিলে ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন গঠন করে।

জমিদার সভার প্রধান সাফল্য কী ছিল?

জমিদার সভার প্রধান সাফল্য ছিল –
1. ব্রিটিশ সরকার 10 বিঘা পর্যন্ত ব্রহ্মোত্তর জমির খাজনা মওকুফ করে।
2. জমিদার ও প্রজাদের স্বার্থ রক্ষায় সরকারকে নীতিনির্ধারণে প্রভাবিত করে।

জমিদার সভাকে ভারতের প্রথম রাজনৈতিক সংগঠন বলা হয় কেন?

জমিদার সভাকে ভারতের প্রথম রাজনৈতিক সংগঠন বলা হয় কারণ এটি ছিল প্রথম সংগঠন যা নিয়মতান্ত্রিকভাবে ব্রিটিশ সরকারের কাছে ভারতীয়দের দাবি পেশ করেছিল এবং রাজনৈতিক আন্দোলনের ভিত্তি তৈরি করেছিল।

জমিদার সভার প্রধান নেতারা কারা ছিলেন?

জমিদার সভার প্রধান নেতারা ছিলেন – দ্বারকানাথ ঠাকুর (প্রতিষ্ঠাতা), রাজা রাধাকান্ত দেব (প্রথম সভাপতি), প্রসন্নকুমার ঠাকুর (যুগ্ম সম্পাদক), উইলিয়াম হ্যারি (যুগ্ম সম্পাদক)।

জমিদার সভার সমালোচনা কী ছিল?

সমালোচকরা মনে করেন, এটি মূলত জমিদার শ্রেণির স্বার্থরক্ষাকারী সংগঠন ছিল এবং সাধারণ কৃষক বা মধ্যবিত্তদের সমস্যা নিয়ে তেমন কাজ করেনি।

জমিদার সভার অবসান কীভাবে হয়?

1851 সালে এটি ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশনে রূপান্তরিত হয়, যা পরবর্তীতে ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের পথপ্রদর্শক হিসেবে কাজ করে।


এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “জমিদার সভা – টীকা লেখো।” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই “জমিদার সভা – টীকা লেখো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের চতুর্থ অধ্যায় “সংঘবদ্ধতার গোড়ার কথা” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।

Share via:

মন্তব্য করুন