যদিও K+ আয়নের এবং Cl- আয়নে সমসংখ্যক ইলেকট্রন বর্তমান। K+ আয়নের আকার Cl–এর থেকে ছোটো। ব্যাখ্যা করো।

Souvick

এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “যদিও K+ আয়নের এবং Cl আয়নে সমসংখ্যক ইলেকট্রন বর্তমান। K+ আয়নের আকার Cl -এর থেকে ছোটো। ব্যাখ্যা করো।” — নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “পর্যায়-সারণি এবং মৌলদের ধর্মের পর্যাবৃত্ততা” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

যদিও K+ আয়নের এবং Cl- আয়নে সমসংখ্যক ইলেকট্রন বর্তমান। K+ আয়নের আকার Cl- -এর থেকে ছোটো। ব্যাখ্যা করো।

যদিও K+ আয়নের এবং Cl আয়নে সমসংখ্যক ইলেকট্রন বর্তমান। K+ আয়নের আকার Cl -এর থেকে ছোটো। ব্যাখ্যা করো।

K ও CI মৌলের পারমাণবিক সংখ্যা যথাক্রমে 19 ও 17 অর্থাৎ K+ ও CI -এর নিউক্লিয়াসে মোট প্রোটন সংখ্যা যথাক্রমে 19 ও 17 কিন্তু উভয়েরই ইলেকট্রন সংখ্যা 18 অর্থাৎ সমান।

K+ আয়নের প্রোটন সংখ্যা (19) ইলেকট্রন সংখ্যার চেয়ে বেশি হওয়ায় নিউক্লিয়াসের কার্যকারী আধান খুবই বেশি হয়। তাই বাইরের কক্ষের ওপর আকর্ষণ বেশি হয়। ফলে K+ আকারে ছোটো হয়। অপরপক্ষে Cl আয়নের প্রোটন সংখ্যা (17) ইলেকট্রন সংখ্যার চেয়ে কম। তাই বাইরের কক্ষের ওপর আকর্ষণ কম হয়। ফলে Cl -এর আকার বড়ো হয়।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর

K⁺ এবং Cl⁻ উভয়েরই 18টি ইলেকট্রন আছে, কিন্তু তাদের আকার সমান নয় কেন?

আকার শুধু ইলেকট্রন সংখ্যার উপর নির্ভর করে না, বরং নিউক্লিয়াসের কার্যকরী নিউক্লীয় আধানের (Effective Nuclear Charge) উপর নির্ভর করে। K⁺ আয়নে প্রোটন বেশি (19) এবং Cl⁻ আয়নে প্রোটন কম (17) হওয়ায় তাদের নিউক্লিয়াসের ইলেকট্রনগুলিকে আকর্ষণের ক্ষমতা ভিন্ন হয়, যা আকার নির্ধারণ করে।

K⁺ আয়নটি ছোট হওয়ার পেছনে মূল কারণ কী?

K⁺ আয়নে প্রোটন সংখ্যা (19) ইলেকট্রন সংখ্যা (18) -এর চেয়ে বেশি। এই অতিরিক্ত ধনাত্মক আধান নিউক্লিয়াসকে খুব শক্তিশালী করে তোলে। শক্তিশালী নিউক্লিয়াস ইলেকট্রন কক্ষকে জোরে নিজের দিকে টানে, ফলে সমস্ত ইলেকট্রন নিউক্লিয়াসের কাছাকাছি সরে আসে এবং আয়নটি ছোট হয়ে যায়।

Cl⁻ আয়নটি বড় হওয়ার কারণ কী?

Cl⁻ আয়নে প্রোটন সংখ্যা (17) ইলেকট্রন সংখ্যা (18) -এর চেয়ে কম। ফলে নিউক্লিয়াসের ধনাত্মক আধান ইলেকট্রনের তুলনায় অপেক্ষাকৃত দুর্বল হয়। তাই নিউক্লিয়াস ইলেকট্রন কক্ষকে শক্তভাবে টানতে পারে না। ইলেকট্রন মেঘ কিছুটা ছড়িয়ে থাকে, ফলে আয়নটির আকার তুলনামূলকভাবে বড় হয়।

K⁺ এবং Cl⁻ আয়ন তৈরি হয় কীভাবে?

K⁺ এবং Cl⁻ আয়ন তৈরি হয় –
1. পটাশিয়াম (K) পরমাণু (e⁻ = 19) তার সর্ববহিস্থ একটি ইলেকট্রন ত্যাগ করে K⁺ (e⁻ = 18) আয়নে পরিণত হয়।
2. ক্লোরিন (Cl) পরমাণু (e⁻ = 17) একটি ইলেকট্রন গ্রহণ করে Cl⁻ (e⁻ = 18) আয়নে পরিণত হয়।

নিরপেক্ষ K পরমাণু এবং K⁺ আয়নের আকার কী একই?

না, একেবারেই না। নিরপেক্ষ K পরমাণুর (e⁻ = 19) আকার K⁺ আয়নের (e⁻ = 18) -এর চেয়ে বড়। কারণ K পরমাণু যখন একটি ইলেকট্রন হারায়, তখন নিউক্লিয়াসের আকর্ষণ একই থাকে, কিন্তু ইলেকট্রন সংখ্যা কমে যাওয়ায় বাকি 18টি ইলেকট্রন আরও জোরে আকর্ষিত হয় এবং আয়নটির আকার সংকুচিত হয়।

আয়নের আকারের পার্থক্যের গুরুত্ব কী?

আয়নের আকার তাদের অনেক ভৌত ও রাসায়নিক ধর্ম নির্ধারণ করে, যেমন –
1. স্ফটিক গঠন – আয়নগুলি কীভাবে স্ফটিক জালে (crystal lattice) সাজবে তা আকারের উপর নির্ভর করে (যেমন – KCl লবণে)।
2. গলনাঙ্ক ও স্ফুটনাঙ্ক – ছোট আয়ন দিয়ে গঠিত যৌগে সাধারণত আয়নিক বন্ধন শক্তিশালী হয়, ফলে গলনাঙ্ক ও স্ফুটনাঙ্ক বেশি হয়।
3. দ্রাব্যতা – আয়নের আকার জলে দ্রবণীয়তার উপর প্রভাব ফেলে।
4. পরিবাহিতা – দ্রবণে ছোট আয়ন অনেক সময় দ্রুত গতি করতে পারে, ফলে পরিবাহিতা প্রভাবিত হয়।


এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “যদিও K+ আয়নের এবং Cl আয়নে সমসংখ্যক ইলেকট্রন বর্তমান। K+ আয়নের আকার Cl -এর থেকে ছোটো। ব্যাখ্যা করো।” — নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “পর্যায়-সারণি এবং মৌলদের ধর্মের পর্যাবৃত্ততা” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।

Please Share This Article

Related Posts

ব্রোমিনের সঙ্গে অ্যাসিটিলিনের যুত বিক্রিয়াটি উল্লেখ করো।

ব্রোমিনের সঙ্গে অ্যাসিটিলিনের যুত বিক্রিয়াটি উল্লেখ করো।

কার্যকরী মূলক বা ক্রিয়াশীল গ্রুপ কাকে বলে? কার্যকরী মূলক ও জৈব মূলকের পার্থক্য বুঝিয়ে দাও।

কার্যকরী মূলক বা ক্রিয়াশীল গ্রুপ কাকে বলে? কার্যকরী মূলক ও জৈব মূলকের পার্থক্য বুঝিয়ে দাও।

একটি জৈব যৌগের আণবিক সংকেত C₂H₄O₂। যৌগটি জলে দ্রাব্য এবং যৌগটির জলীয় দ্রবণে NaHCO₃ যোগ করলে CO₂ নির্গত হয়। জৈব যৌগটিকে শনাক্ত করো। জৈব যৌগটির সঙ্গে ইথানলের বিক্রিয়া শর্ত ও সমিত রাসায়নিক সমীকরণসহ লেখো।

C₂H₄O₂ সংকেতের একটি জৈব যৌগ NaHCO₃-এর সাথে CO₂ গ্যাস দেয়। যৌগটি শনাক্ত করো ও ইথানলের সাথে এর বিক্রিয়ার শর্তসহ সমীকরণ দাও।

About The Author

Souvick

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

"SolutionWbbse" শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনলাইন অধ্যয়ন প্ল্যাটফর্ম। এখানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য গাইডলাইন, এবং বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনার সাহায্য প্রদান করা হয়। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকল বিষয়ের শিক্ষণীয় উপকরণ সহজেই সকল শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়া।

Editor Picks

ইস্ট্রোজেন হরমোনের ক্ষরণস্থল উল্লেখ করে এর প্রধান কাজগুলি সংক্ষেপে বর্ণনা করো।

ইনসুলিন হরমোনের প্রধান কাজগুলির সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও।

হরমোনের ফিডব্যাক নিয়ন্ত্রণ কাকে বলে? উদাহরণসহ হরমোনের ফিডব্যাক নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি

প্রাণীদেহের বিভিন্ন কাজ নিয়ন্ত্রণে হরমোনের ভূমিকা সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখো।

প্রাণী হরমোনের উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্যগুলি সংক্ষেপে বর্ণনা করো।