এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “সমকালীন পত্র-পত্রিকা কীভাবে নীলকরদের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলে? কাদের ‘নীলকর’ বলা হতো?” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাস পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “সমকালীন পত্র-পত্রিকা কীভাবে নীলকরদের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলে? কাদের ‘নীলকর’ বলা হতো?“ প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের তৃতীয় অধ্যায় “প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ – বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

কাদের ‘নীলকর’ বলা হতো?
ইংল্যান্ডের বস্ত্রশিল্পের প্রয়োজনে নীলের চাহিদা মেটানোর জন্য বৃটিশ ব্যবসায়ীগন বাংলায় আসে। এখানে তারা নীলকুঠি স্থাপন করে নীলের উৎপাদন, প্রক্রিয়াকরণ এবং ইংল্যান্ডে রপ্তানি করে প্রচুর অর্থ আয় করতো। এদেরকেই নীলকর বলা হতো।
সমকালীন পত্র-পত্রিকা কীভাবে নীলকরদের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলে?
নীলচাষিদের প্রতি নীলকরদের অবর্ণনীয় অত্যাচার, দাঁদন প্রথা, উর্বর জমিতে বলপূর্বক নীলচাষে কৃষকদের বাধ্য করা প্রভৃতি বিষয়ে নিয়মিত সংবাদ পরিবেশন করে সমকালীন পত্র-পত্রিকাগুলি জনমত গঠনে সহায়ক হয়। এপ্রসঙ্গে ‘সমাচার চন্দ্রিকা’, ‘তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা’, ‘সোমপ্রকাশ’, ‘হিন্দু প্যাট্রিয়ট’ প্রভৃতির কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করা যায়। হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের ‘হিন্দু প্যাট্রিয়ট’ নীলচাষিদের প্রায় মুখপত্রে পরিণত হয়েছিল।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
নীলকররা কেন বাংলায় নীলচাষ করত?
ব্রিটিশ শিল্প বিপ্লবের সময় ইংল্যান্ডের বস্ত্রশিল্পে নীলের ব্যাপক চাহিদা ছিল। বাংলার উর্বর জমি ও সস্তা শ্রমের সুযোগ নিয়ে ব্রিটিশ ব্যবসায়ীরা এখানে নীলের চাষ ও রপ্তানি করে বিপুল মুনাফা অর্জন করত।
নীলকররা কৃষকদের কীভাবে শোষণ করত?
1. জোরপূর্বক নীলচাষ – কৃষকদের খাদ্য শস্যের জমিতে নীলচাষ করতে বাধ্য করা হত।
2. দাদন প্রথা – অগ্রিম টাকা দিয়ে কৃষকদের ঋণে বাঁধা হত, পরে কম দামে নীল কিনে শোষণ করা হত।
3. অত্যাচার – নীলকরদের লাঠিয়াল বাহিনী কৃষকদের ওপর নির্যাতন চালাত।
নীল বিদ্রোহ কী?
নীলকরদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে 1859-1860 সালে বাংলার কৃষকরা ব্যাপক প্রতিরোধ গড়ে তোলে, যা নীল বিদ্রোহ নামে পরিচিত। এই আন্দোলনের ফলে নীলচাষ প্রায় বন্ধ হয়ে যায়।
নীল বিদ্রোহে পত্র-পত্রিকার ভূমিকা কী ছিল?
সমকালীন সংবাদপত্র যেমন –
1. হিন্দু প্যাট্রিয়ট (সম্পাদক – হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়),
2. সোমপ্রকাশ,
3. তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা,
4. নীলকরদের অত্যাচারের খবর প্রকাশ করে জনমত গঠন করে এবং ব্রিটিশ সরকারকে নীল কমিশন গঠনে বাধ্য করে।
নীল কমিশন কী?
নীল বিদ্রোহের পর 1860 সালে ব্রিটিশ সরকার নীল কমিশন গঠন করে। এর রিপোর্টে নীলকরদের শোষণের কথা স্বীকার করা হয়, ফলে নীলচাষ ধীরে ধীরে কমে যায়।
নীল বিদ্রোহের গুরুত্ব কী?
এটি ছিল বাংলার প্রথম সফল কৃষক বিদ্রোহ, যা পরবর্তীতে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে অনুপ্রেরণা দেয়। এছাড়া, এটি সাংবাদিকতার শক্তিকে প্রকাশ করে।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “সমকালীন পত্র-পত্রিকা কীভাবে নীলকরদের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলে? কাদের ‘নীলকর’ বলা হতো?” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই “সমকালীন পত্র-পত্রিকা কীভাবে নীলকরদের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলে? কাদের ‘নীলকর’ বলা হতো?” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের তৃতীয় অধ্যায় “প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ – বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন