আজকে আমরা আমাদের আর্টিকেলে দেখবো যে কেম ও বদ্বীপ কি? কেম ও বদ্বীপের মধ্যে পার্থক্য লিখ। এই প্রশ্ন দশম শ্রেণীর পরীক্ষার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ, কেম ও বদ্বীপ কি? কেম ও বদ্বীপের মধ্যে পার্থক্য প্রশ্নটি আপনি পরীক্ষার জন্য তৈরী করে গেলে আপনি লিখে আস্তে পারবেন।
কেম
হিমবাহ ও জলধারার মিলিত প্রভাবে বিভিন্ন ধরণের ভূমিরূপ তৈরি হয়, যার মধ্যে কেম (Kames) অন্যতম। পার্বত্য হিমবাহের শেষ প্রান্তে, যেখানে বরফ গলতে শুরু করে, সেখানে কাদা, বালি, নুড়ি, পাথর, কাঁকর ইত্যাদি স্তূপাকারে জমা হয়ে ত্রিকোণাকার বদ্বীপের মতো ভূমিরূপ তৈরি করে, যা কেম নামে পরিচিত। এগুলি উপত্যকার পার্শ্বদেশের সাথে মিশে ধাপ তৈরি করে।
যখন হিমবাহ উপত্যকার দু’পাশে স্তরে স্তরে বা একের ওপরে আরেকটি কেম গঠিত হয়, তখন তাকে কেম সোপান (Kame Terrace) বলা হয়।
উদাহরণ: ব্রিটিশ দ্বীপপুঞ্জের নরফেকের গ্লাভেন উপত্যকায় কেম ও কেম সোপান দেখা যায়।
বদ্বীপ (Delta)
নদীর নিম্নগতিতে অবক্ষেপণ বা সঞ্চয় হলো নদীর প্রধান কাজ। এই অংশে ভূমির ঢাল ও নদীর গতিবেগ একেবারে কমে যায়। এর ফলে নদীবাহিত পলি, বালি, নুড়ি, কাঁকর, কাদা প্রভৃতি বোঝা নদী আর বহন করতে পারে না। ফলে নদীবাহিত পদার্থসমূহ মোহানার কাছে অগভীর সমুদ্রবক্ষে সঞ্চিত হয়। সমুদ্রের লবণাক্ত জলের সংস্পর্শে এই সঞ্চয় ক্রমশ জোটবদ্ধ হয়ে উঁচু হতে থাকে। ফলে নদী শাখা-প্রশাখায় বিভক্ত হয়ে প্রবাহিত হয়।
দুটি শাখার মধ্যবর্তী সঞ্চয়জাত ভূমি তখন মাত্রাহীন ‘ব’ বা গ্রিক অক্ষর ‘Δ’ -র মতো আকারের ভূমিরূপ গড়ে তোলে। এই ভূমিরূপকেই বদ্বীপ বলা হয়।
কেম ও বদ্বীপের মধ্যে পার্থক্য লিখ।
কেম ও বদ্বীপের মধ্যে পার্থক্যগুলি হল —
বিষয় | কেম | বদ্বীপ |
গঠনকারী শক্তি | হিমবাহ সঞ্চিত ত্রিকোণাকৃতি ভূমিরূপ। | নদী গঠিত ত্রিকোণাকৃতি ভূমিরূপ। |
গঠনস্থল | পর্বতের পাদদেশে কেম গঠিত হয়। | নদীর মোহানায় বদ্বীপ গঠিত হয়। |
দানার আকার | কেম গঠিত ভূমিরূপের দানার আকার অপেক্ষাকৃত মোটা হয়। | বদ্বীপ অঞ্চলে মাটি সাধারণত সূক্ষ্ম হয়। |
আকৃতি | কেম আকৃতিতে ছোটো হয়। | বদ্বীপ সাধারণত বৃহৎ হয়। |
এই আর্টিকেলে আমরা কেম ও বদ্বীপের সংজ্ঞা, বৈশিষ্ট্য এবং তাদের মধ্যে পার্থক্য আলোচনা করেছি।
আরও পড়ুন – পললশঙ্কু ও বদ্বীপের মধ্যে পার্থক্য
আশা করি, এই আলোচনা আপনাদের কেম ও বদ্বীপ সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা দিতে সাহায্য করেছে। এই ধারণা দশম শ্রেণীর পরীক্ষার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।