এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “খনিজ মল কাকে বলে? উদাহরণ দাও।” — নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “ধাতুবিদ্যা” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

খনিজ মল কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
আকরিকের মধ্যে আসল ধাতব পদার্থের সঙ্গে মিশ্রিত মাটি, বালি, সালফেট প্রভৃতি অশুদ্ধি বা অপদ্রব্যকে খনিজ মল বলে।
যেমন – কপার পাইরাইটিস আকরিকের (Cu2S⋅Fe2S3) মধ্যে বালি, আয়রন সালফাইড, মাটি, সালফার, আর্সেনিক প্রভৃতি খনিজ মলরূপে উপস্থিত থাকে।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
খনিজ মল কী?
খনিজ দ্রব্য বা আকরিকের মধ্যে প্রকৃতিগতভাবে মিশে থাকা অন্যান্য অপ্রয়োজনীয় ও অনাকাঙ্ক্ষিত পদার্থসমূহকে একত্রে খনিজ মল বলে। এগুলো সাধারণত মাটি, বালি, চুনাপাথর, সালফাইড, আর্সেনিক ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের অশুদ্ধি হয়ে থাকে।
খনিজ মল কেন গুরুত্বপূর্ণ?
খনিজ মল গুরুত্বপূর্ণ কারণ –
1. এগুলো ধাতু নিষ্কাশনের প্রক্রিয়াকে জটিল ও ব্যয়বহুল করে তোলে।
2. ধাতু গলানোর সময় এগুলো থেকে ক্ষতিকর গ্যাস (যেমন – SO₂) নির্গত হতে পারে যা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর।
3. এগুলো থেকে স্ল্যাগ (slag) তৈরি হয়।
4. খনিজ মল অপসারণের পদ্ধতি (সান্দ্রীকরণ) আকরিকের অর্থনৈতিক মূল্য নির্ধারণে ভূমিকা রাখে।
খনিজ মল এবং গ্যাং মিনারেল (Gangue Mineral) কি একই জিনিস?
হ্যাঁ, খনিজ মল-ই ইংরেজিতে গ্যাং মিনারেল (Gangue Mineral) বা শুধু গ্যাং (Gangue) নামে পরিচিত।
সান্দ্রীকরণ (Beneficiation) কি এবং এটি কেন করা হয়?
সান্দ্রীকরণ হল খনিজ থেকে খনিজ মল বা গ্যাং আলাদা করার প্রক্রিয়া। আকরিক উত্তোলনের পরই সাধারণত এই প্রক্রিয়া করা হয় যাতে ধাতব অংশের ঘনত্ব বেড়ে যায় এবং পরবর্তীতে গলিয়ে ধাতু নিষ্কাশনের খরচ ও জটিলতা কমে।
খনিজ মল অপসারণের পর কী হয়?
খনিজ মল অপসারণের পর যে সমৃদ্ধ আকরিক পাওয়া যায়, তাকে সাধারণত গলিয়ে (Smelting) বা রাসায়নিকভাবে প্রক্রিয়া করে খাঁটি ধাতু নিষ্কাশন করা হয়। গলানোর সময় যে অবশিষ্টাংশ পড়ে থাকে তাকে স্ল্যাগ (Slag) বলে, যা মূলত গলিত খনিজ মল।
খনিজ মল কি সবসময় অপদ্রব্য হিসেবেই বিবেচিত হয়?
না, সবসময় নয়। কিছু ক্ষেত্রে, খনিজ মল হিসাবে উপস্থিত কোনো পদার্থ অন্য একটি শিল্পের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। যেমন, তামার আকরিক প্রক্রিয়াকরণের সময় পাওয়া গ্যাং থেকে কখনো কখনো সোনা বা রূপার মতো মূল্যবান ধাতু পুনরুদ্ধার করা যায়। আবার, কিছু গ্যাং নির্মাণ শিল্পেও কাজে লাগে।
লোহার আকরিক (হেমাটাইট)-এর একটি সাধারণ খনিজ মল কী কী?
হেমাটাইট (Fe₂O₃) আকরিকের সাধারণ খনিজ মল বা গ্যাং -এর মধ্যে রয়েছে সিলিকা (SiO₂), অ্যালুমিনা (Al₂O₃), ফসফরাস (P) এবং সালফার (S) যৌগ।
খনিজ মল পরিবেশের উপর কী প্রভাব ফেলে?
খনিজ মল পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে, বিশেষ করে যদি এতে ভারী ধাতু (যেমন – সীসা, আর্সেনিক, ক্যাডমিয়াম ইত্যাদি) থাকে। খনির বর্জ্য হিসেবে জমে থাকা গ্যাং বৃষ্টির জলের সাথে মিশে মাটি ও ভূগর্ভস্থ জল দূষিত করতে পারে। এছাড়াও, সালফারযুক্ত গ্যাং গলানোর সময় সালফার ডাই-অক্সাইড গ্যাস নির্গত হয়ে বায়ু দূষণ ও অম্ল বৃষ্টির সৃষ্টি করে।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “খনিজ মল কাকে বলে? উদাহরণ দাও।” — নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “ধাতুবিদ্যা” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন