এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “খুন্তকাঠি বা খুঁৎকাঠি কী? খুঁৎকাঠি প্রথা বলতে কী বোঝো?” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাস পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “খুন্তকাঠি বা খুঁৎকাঠি কী? খুঁৎকাঠি প্রথা বলতে কী বোঝো?“ প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের তৃতীয় অধ্যায় “প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ – বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

খুন্তকাঠি বা খুঁৎকাঠি কী?
খুন্তকাঠি বা ‘খুঁৎকাঠি’ কথার অর্থ ‘জমির যৌথ মালিকানা’। মুণ্ডা উপজাতির পূর্বপুরুষেরা বা খুন্তকাঠিদার’রা জঙ্গল পরিষ্কার করে যে নিষ্কর খেতখামার ও বসতভিটা তৈরি করেছিল তাকে ‘খুঁৎকাঠি’ বলা হত। মুণ্ডা উপজাতির মানুষেরা দীর্ঘদিন ধরে এই খুঁৎকাঠি বা গোষ্ঠীবদ্ধভাবে জমির মালিকানা ভোগ করতো এবং জমিতে যৌথভাবে চাষ করে উৎপাদিত ফসল সবাই মিলে ভাগ করে নিত। ব্রিটিশ সরকার মুণ্ডা অধ্যষিত এলাকায় এই খুঁৎকাঠি প্রথার অবসান ঘটিয়ে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যে ব্যক্তি মালিকানা ব্যবস্থা চালু করায় মুণ্ডা উপজাতির মানুষেরা ক্ষুব্ধ হয়।
খুঁৎকাঠি প্রথা বলতে কী বোঝো?
মুণ্ডাদের কৃষিব্যবস্থার প্রধান বৈশিষ্ট্য ছিল জমির যৌথ মালিকানা বা ‘খুঁৎকাঠি প্রথা’। কিন্তু ব্রিটিশ সৃষ্ট নব্য ভূমিরাজস্ব ব্যবস্থাদি মুণ্ডাদের এই চিরন্তন ভূমি ব্যবস্থায় ভাঙন ধরায় এবং তাদের জমিতে বহিরাগত জমিদার, মহাজন বা ‘দিকু’রা আধিপত্য কায়েম করে। এই অনাচারের বিরুদ্ধে জমিতে পুরোনো ‘খুঁৎকাঠি প্রথা’ ফিরিয়ে আনার জন্য মুণ্ডারা লড়াই করে।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
খুঁৎকাঠি প্রথার মূল বৈশিষ্ট্য কী ছিল?
খুঁৎকাঠি প্রথার মূল বৈশিষ্ট্য হল –
1. জমির যৌথ মালিকানা।
2. গোষ্ঠীবদ্ধভাবে চাষাবাদ ও ফসল বণ্টন।
3. ব্রিটিশ আমলে এই প্রথা ভেঙে ব্যক্তিগত মালিকানা চালু করা হয়।
ব্রিটিশরা খুঁৎকাঠি প্রথা কেন বন্ধ করেছিল?
ব্রিটিশ সরকার রাজস্ব আদায়ের সুবিধার্থে ব্যক্তিগত জমি মালিকানা চালু করে, যার ফলে মুণ্ডাদের ঐতিহ্যবাহী যৌথ মালিকানা প্রথা ভেঙে পড়ে।
খুঁৎকাঠি প্রথার অবসানের ফলে মুণ্ডাদের কী সমস্যা হয়েছিল?
খুঁৎকাঠি প্রথার অবসানের ফলে মুণ্ডাদের যে সমস্যা হয়েছিল সেগুলি হল –
1. বহিরাগত জমিদার ও মহাজনরা (দিকু) মুণ্ডাদের জমি দখল করে নেয়।
2. মুণ্ডারা নিজেদের জমি থেকে উচ্ছেদ হয় ও অর্থনৈতিক সংকটে পড়ে।
3. এর বিরুদ্ধে মুণ্ডারা বিদ্রোহ করে (যেমন – মুণ্ডা বিদ্রোহ)।
মুণ্ডারা কেন খুঁৎকাঠি প্রথা ফিরিয়ে আনতে চেয়েছিল?
এই প্রথা ছিল তাদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তার ভিত্তি। যৌথ মালিকানায় জমি রক্ষা পেত এবং সম্প্রদায়ের সবার মধ্যে সমতা বজায় থাকত।
মুণ্ডা বিদ্রোহের সাথে খুঁৎকাঠি প্রথার কী সম্পর্ক?
ব্রিটিশ ও জমিদারদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে মুণ্ডা নেতা বিরসা মুণ্ডা নেতৃত্ব দেন এবং তাদের প্রাচীন খুঁৎকাঠি প্রথা ফিরিয়ে আনার দাবি জানান।
খুঁৎকাঠি প্রথা বর্তমানে কি প্রচলিত আছে?
ব্রিটিশ আমলে এই প্রথা প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গেলেও কিছু মুণ্ডা সম্প্রদায় এখনও যৌথ চাষাবাদের ঐতিহ্য ধরে রেখেছে।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “খুন্তকাঠি বা খুঁৎকাঠি কী? খুঁৎকাঠি প্রথা বলতে কী বোঝো?” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই “খুন্তকাঠি বা খুঁৎকাঠি কী? খুঁৎকাঠি প্রথা বলতে কী বোঝো?” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের তৃতীয় অধ্যায় “প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ – বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।