এখনই আমাদের Telegram Community গ্রুপে যোগ দিন। এখানে WBBSE বোর্ডের পঞ্চম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণির যেকোনো বিষয়ভিত্তিক সমস্যা শেয়ার করতে পারেন এবং একে অপরের সাহায্য করতে পারবেন। এছাড়া, কোনও সমস্যা হলে আমাদের শিক্ষকরা তা সমাধান করে দেবেন।

Telegram Logo Join Our Telegram Community

কোল বিদ্রোহ সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করো। কোল বিদ্রোহকে ‘কোল বিপ্লব’ বললে কেন ভুল বলা হবে?

এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “কোল বিদ্রোহ (1831 – 1832 খ্রিস্টাব্দ) সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করো। কোল বিদ্রোহকে ‘কোল বিপ্লব’ বললে কেন ভুল বলা হবে? নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাস পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “কোল বিদ্রোহ (1831 – 1832 খ্রিস্টাব্দ) সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করো। কোল বিদ্রোহকে ‘কোল বিপ্লব’ বললে কেন ভুল বলা হবে?“ প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের তৃতীয় অধ্যায় “প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ – বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

কোল বিদ্রোহ (1831 - 1832 খ্রিস্টাব্দ) সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করো। কোল বিদ্রোহকে 'কোল বিপ্লব' বললে কেন ভুল বলা হবে?
Contents Show

কোল বিদ্রোহ (1831 – 1832 খ্রিস্টাব্দ) সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করো।

অথবা, কোল বিদ্রোহ – টীকা লেখো।

কোল বিদ্রোহ – কোলরা হল বিহারের ছোটোনাগপুর অঞ্চলে বসবাসকারী উপজাতি। তারা ইংরেজ, দেশীয় মহাজন, জমিদার বা বহিরাগত ‘দিকু’ -দের বিরুদ্ধে যে সংগ্রাম করেছিল, তা ইতিহাসে কোল বিদ্রোহ নামে পরিচিত। 1820 খ্রিস্টাব্দে কোলরা প্রথম বিদ্রোহ করে। 1831 – 1832 খ্রিস্টাব্দে কোল বিদ্রোহ ব্যাপক আকার ধারণ করে।

কোল বিদ্রোহের কারণ –

এই বিদ্রোহের কারণগুলি হল –

  • অত্যধিক রাজস্ব আদায় – ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ছোটোনাগপুর অঞ্চলের শাসনভার গ্রহণের পর এই অঞ্চলে বসবাসকারী কোলদের উপর নতুন হারে অতিরিক্ত ভূমিরাজস্ব দাবি করে। এর ফলে কোলরা ক্ষুব্ধ হয়।
  • জমিদার ও মহাজনদের শোষণ ও অত্যাচার – ছোটোনাগপুর অঞ্চলে জমিদার ও মহাজনরা বিভিন্নভাবে কোলদের উপর শোষণ ও অত্যাচার চালায়। কোলরা অত্যাচারের হাত থেকে মুক্তির জন্য বিদ্রোহ ঘোষণা করে।

বিদ্রোহ –

1831 খ্রিস্টাব্দে রাঁচি অঞ্চলে কোল সম্প্রদায়ের কৃষকরা বিদ্রোহ ঘোষণা করে। এই বিদ্রোহ ক্রমে রাঁচি, সিংভূম, হাজারিবাগ, পালামৌ ও মানভূম -এর পশ্চিম অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে।

বিদ্রোহী কোলরা তিরধনুক, বর্শা, বল্লম, কুড়ুল ইত্যাদি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ইংরেজ বাহিনীর মুখোমুখি বুখে দাঁড়ায়। তারা ওই অঞ্চলের ইংরেজ কর্মচারী, জমিদার, মহাজন ও অত্যাচারী দিকু ব্যবসায়ীদের আক্রমণ করে। বিদ্রোহীরা তাদের হত্যা করে ঘরবাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়।

বিদ্রোহের নেতা –

এই বিদ্রোহের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন বুদ্ধু ভগত, জোয়া ভগত, সুই মুণ্ডা ও ঝিন্দরাই মানকি প্রমুখ।

বিদ্রোহ দমন –

ব্রিটিশ সরকার বিদ্রোহ দমন করার জন্য কলকাতা, পাটনা, দানাপুর, সম্বলপুর থেকে সৈন্য এনে এই অঞ্চলের বিদ্রোহ দমনের জন্য মোতায়েন করে। আধুনিক অস্ত্রসজ্জায় সজ্জিত ব্রিটিশ গোলন্দাজ বাহিনীর সঙ্গে অসম লড়াইতে কোলরা পরাজিত হয়। নরনারী ও শিশু-সহ অসংখ্য কোল নিহত হয় এবং কোল বিদ্রোহ দমিত হয়।

উপসংহার –

কোল বিদ্রোহ ব্যর্থ হলেও ব্রিটিশ সরকার ছোটোনাগপুর অঞ্চলে দক্ষিণ-পশ্চিম সীমান্ত এজেন্সি নামে একটি নতুন অঞ্চল গঠন করে। এই অঞ্চলে জমিদারদের হাত থেকে জমি গ্রামপ্রধানদের হাতে ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করে। ব্রিটিশ সরকার এই অঞ্চলে তাদের আইনকানুন কার্যকর না করার সিদ্ধান্ত নেয়।

কোল বিদ্রোহকে ‘কোল বিপ্লব’ বললে কেন ভুল বলা হবে?

বিপ্লব শব্দটি যে দ্রুত, আমূল ও স্থায়ী পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়, 1831 – 1833 খ্রিস্টাব্দের মধ্যে সংঘটিত কোলদের সংগ্রামে তা অনুপস্থিত। কোলদের সংগ্রাম তাদের জীবন ধারায় কোনো মৌলিক পরিবর্তন আনতে পারেনি এবং শেষ পর্যন্ত তা নিষ্ঠুর ভাবে দমিত হয়। বিদ্রোহের পর সরকার ‘দক্ষিণ-পশ্চিম সীমান্ত এজেন্সি’ নামে পৃথক প্রসাসনিক অঞ্চল গঠন করে কোলদের স্বার্থ সংরক্ষণের উদ্যোগ নিলেও কোলদের বাসভূমি বহিরাগত ‘দিকু’দের হাত থেকে রেহাই পায়নি এবং তাদের ‘স্বাধীন কোল রাজ্য’ প্রতিষ্ঠার স্বপ্নও বাস্তবায়িত হয়নি। তাই কোলদের সংগ্রামকে ‘বিপ্লব’ না বলে ‘বিদ্রোহ’ বলাই অধিকতর যুক্তিসংগত।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর

কোল বিদ্রোহ কী?

কোল বিদ্রোহ ছিল বিহারের ছোটোনাগপুর অঞ্চলের কোল উপজাতিদের ব্রিটিশ শাসক, জমিদার, মহাজন ও বহিরাগত ‘দিকু’দের বিরুদ্ধে সংগঠিত একটি বিদ্রোহ (1831 – 1832 খ্রিস্টাব্দ)।

কোল বিদ্রোহের প্রধান কারণ কী ছিল?

কোল বিদ্রোহের প্রধান কারণ –
1. ব্রিটিশদের অত্যধিক রাজস্ব আদায়।
2. জমিদার ও মহাজনদের শোষণ ও অত্যাচার।
3. কোলদের জমি থেকে উচ্ছেদ।

কোল বিদ্রোহ কোথায় সংঘটিত হয়েছিল?

রাঁচি, সিংভূম, হাজারিবাগ, পালামৌ ও মানভূম অঞ্চলে।

কোল বিদ্রোহের নেতৃত্ব কারা দিয়েছিলেন?

বুদ্ধু ভগত, জোয়া ভগত, সুই মুণ্ডা ও ঝিন্দরাই মানকি প্রমুখ।

কোল বিদ্রোহের ফলাফল কী ছিল?

কোল বিদ্রোহের ফলাফল –
1. ব্রিটিশ সেনাবাহিনী বিদ্রোহ দমন করে।
2. অসংখ্য কোল নিহত হয়।
3. ব্রিটিশ সরকার “দক্ষিণ-পশ্চিম সীমান্ত এজেন্সি” গঠন করে কোলদের কিছু সুবিধা দেয়।

কোল বিদ্রোহকে ‘কোল বিপ্লব’ বলা যায় কি?

না, কারণ এটি কোনো স্থায়ী বা আমূল পরিবর্তন আনতে পারেনি। এটি ছিল একটি বিদ্রোহ, যা দমন করা হয়েছিল।

কোল বিদ্রোহের ঐতিহাসিক গুরুত্ব কী?

এটি ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে আদিবাসী সংগ্রামের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় এবং ভারতের উপজাতি বিদ্রোহগুলির মধ্যে অন্যতম।

কোলরা কোন অস্ত্র ব্যবহার করেছিল?

তিরধনুক, বর্শা, বল্লম ও কুড়ুল।

ব্রিটিশরা কীভাবে বিদ্রোহ দমন করেছিল?

আধুনিক অস্ত্রসজ্জিত সেনাবাহিনী পাঠিয়ে নিষ্ঠুরভাবে দমন করা হয়।

কোল বিদ্রোহের পর ব্রিটিশ সরকার কী ব্যবস্থা নেয়?

কোল বিদ্রোহের পর ব্রিটিশ সরকার যে ব্যবস্থাগুলি নেয় সেগুলি হল –
1. দক্ষিণ-পশ্চিম সীমান্ত এজেন্সি” গঠন করে।
2. কিছু জমি গ্রামপ্রধানদের ফেরত দেওয়া হয়।
3. তবে দিকুদের অনুপ্রবেশ বন্ধ করা যায়নি।


এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “কোল বিদ্রোহ (1831 – 1832 খ্রিস্টাব্দ) সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করো। কোল বিদ্রোহকে ‘কোল বিপ্লব’ বললে কেন ভুল বলা হবে?” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই “কোল বিদ্রোহ (1831 – 1832 খ্রিস্টাব্দ) সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করো। কোল বিদ্রোহকে ‘কোল বিপ্লব’ বললে কেন ভুল বলা হবে?” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের তৃতীয় অধ্যায় “প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ – বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।

Share via:

মন্তব্য করুন