এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “কলকাতা বন্দরের সমস্যাগুলি লেখো।” — নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের পঞ্চম অধ্যায় “ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ” -এর “ভারতের পরিবহণ ও যোগাযোগ ব্যবস্থা” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

কলকাতা বন্দরের সমস্যাগুলি লেখো।
- গভীরতা হ্রাস – হুগলি নদীগর্ভে পলি জমায় এই নদীর গভীরতা দাঁড়িয়েছে মাত্র 6.5 মিটার।
- বালুচড়া – মোহানা থেকে বন্দর পর্যন্ত প্রায় 14টি অগভীর বালুচড়া থাকায় জাহাজ চলাচলে অসুবিধার সৃষ্টি হয়।
- বানডাকা – বর্ষাকালে নদীর বানডাকায় বন্দরের স্বাভাবিক কাজকর্মের অসুবিধা হয়।
- বক্র গতিপথ – হুগলি নদীর আঁকাবাঁকা গতিপথের জন্য বড়ো বড়ো জাহাজ প্রবেশ করতে অসুবিধার সৃষ্টি হয়।
- ক্রমহ্রাসমান পশ্চাদ্ভূমি – বহু পণ্য বর্তমানে হলদিয়া ও পারাদ্বীপ বন্দর মারফত আমদানি-রপ্তানি হওয়ায় কলকাতা বন্দরের পশ্চাদ্ভূমি সংকুচিত হয়েছে।
- স্থানাভাব – কৃত্রিম পোতাশ্রয়ের জন্য একসঙ্গে অনেক জাহাজ নোঙর করতে পারে না।
- নিস্তেজ পশ্চাদ্ভূমি – চা ও পাট শিল্পের অবস্থা খারাপ হওয়ায় বন্দরের পশ্চাদ্ভূমি ক্রমশ নিস্তেজ হয়ে পড়ছে।
- অত্যধিক শুল্ক – ভারতের অন্যান্য বন্দরের তুলনায় শুষ্ক হার বেশি হওয়ায় বিদেশি জাহাজ কলকাতা বন্দরে প্রবেশ করতে আগ্রহ দেখায় না।
- অধিক পরিচালন ব্যয় – ড্রেজিং -এর খরচ বেড়ে যাওয়ায় পরিচালন ব্যয়ও বেশি হয়।
- অন্যান্য সমস্যা – শ্রমিক অসন্তোষ, পরিচালন ত্রুটি এবং আধুনিক পদ্ধতিতে রক্ষণাবেক্ষণের অভাব।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
কলকাতা বন্দরের প্রধান সমস্যাগুলি কী কী?
কলকাতা বন্দরের প্রধান সমস্যাগুলির মধ্যে রয়েছে হুগলি নদীর গভীরতা হ্রাস, বালুচড়ার সমস্যা, বানডাকা, নদীর বক্র গতিপথ, পশ্চাদ্ভূমির সংকোচন, স্থানাভাব, শুল্কের উচ্চ হার এবং পরিচালন ব্যয় বৃদ্ধি।
হুগলি নদীর গভীরতা হ্রাসের কারণ কী?
হুগলি নদীর গভীরতা হ্রাসের মূল কারণ হলো নদীগর্ভে পলি জমা হওয়া, যার ফলে বর্তমানে গভীরতা মাত্র 6.5 মিটার রয়েছে।
বালুচড়া কীভাবে কলকাতা বন্দরের জন্য সমস্যা সৃষ্টি করে?
হুগলি নদীর মোহানা থেকে বন্দর পর্যন্ত প্রায় 14টি অগভীর বালুচড়া রয়েছে, যা জাহাজ চলাচলে বাধা সৃষ্টি করে এবং নৌপরিবহনকে জটিল করে তোলে।
বানডাকা কী এবং এটি কীভাবে বন্দরের কাজকর্মে প্রভাব ফেলে?
বর্ষাকালে হুগলি নদীতে বানডাকা (জোয়ারের ঢেউ) তৈরি হয়, যার ফলে বন্দরের স্বাভাবিক কার্যক্রম বিঘ্নিত হয় এবং জাহাজ চলাচলে সমস্যা দেখা দেয়।
কলকাতা বন্দরের পশ্চাদ্ভূমি সংকুচিত হওয়ার কারণ কী?
অন্যান্য বন্দর যেমন হলদিয়া ও পারাদ্বীপের মাধ্যমে পণ্য আমদানি-রপ্তানি বেড়ে যাওয়ায় কলকাতা বন্দরের পশ্চাদ্ভূমি ক্রমশ সংকুচিত হচ্ছে।
কলকাতা বন্দরে স্থানাভাবের সমস্যা কেন দেখা দিয়েছে?
কৃত্রিম পোতাশ্রয়ের সীমিত ধারণক্ষমতার কারণে একসাথে অনেক জাহাজ নোঙর করতে পারে না, ফলে স্থানাভাবের সমস্যা দেখা দেয়।
কলকাতা বন্দরের শুল্ক হার বেশি হওয়ার ফলাফল কী?
অন্যান্য ভারতীয় বন্দরের তুলনায় শুল্ক হার বেশি থাকায় বিদেশি জাহাজগুলি কলকাতা বন্দর এড়িয়ে চলে, ফলে বন্দরের আয় কমে যায়।
কলকাতা বন্দরের পরিচালন ব্যয় বেশি হওয়ার কারণ কী?
নদীর নাব্যতা বজায় রাখতে নিয়মিত ড্রেজিং প্রয়োজন, যা অত্যন্ত ব্যয়বহুল হওয়ায় বন্দরের পরিচালন ব্যয় বৃদ্ধি পায়।
কলকাতা বন্দরের অন্যান্য সমস্যাগুলি কী কী?
শ্রমিক অসন্তোষ, পরিচালনগত ত্রুটি এবং আধুনিক রক্ষণাবেক্ষণ পদ্ধতির অভাবও কলকাতা বন্দরের উন্নয়নে বাধা সৃষ্টি করছে।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “কলকাতা বন্দরের সমস্যাগুলি লেখো।” — নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের পঞ্চম অধ্যায় “ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ” -এর “ভারতের পরিবহণ ও যোগাযোগ ব্যবস্থা” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন