কোনি উপন্যাস অবলম্বনে সাঁতার প্রশিক্ষক ক্ষিতীশ সিংহের চরিত্র সংক্ষেপে আলোচনা করো।

“কোনি উপন্যাস অবলম্বনে সাঁতার প্রশিক্ষক ক্ষিতীশ সিংহের চরিত্র সংক্ষেপে আলোচনা করো।” এই প্রশ্নটি দশম বাংলা সহায়ক পাঠ কোনি উপন্যাস থেকে নেওয়া হয়েছে। “কোনি উপন্যাস অবলম্বনে সাঁতার প্রশিক্ষক ক্ষিতীশ সিংহের চরিত্র সংক্ষেপে আলোচনা করো।” এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষার জন্য অত্যান্ত গুরুত্তপূর্ণ। কোনি উপন্যাসের এই রচনাধর্মী প্রশ্নটি তৈরী করে গেলে মাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষায় একটি ৫ নম্বরের পাওয়া যেতে পারে।

মতি নন্দীর ‘কোনি’ উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র হলেন ক্ষিতীশ সিংহ। পঞ্চাশোত্তর বয়সী, নিঃসন্তান এই সাঁতার প্রশিক্ষক অভিজ্ঞ, বিচক্ষণ এবং রসিক। গঙ্গার ঘাটে বিষ্টুচরণ ধরের সাথে কথোপকথনে তিনি তার বুদ্ধিমত্তা ও রসবোধের পরিচয় দিয়েছেন।

ক্ষিতীশ একজন প্রতিবাদী, লড়াকু এবং আপসহীন ব্যক্তিত্ব। পঁয়ত্রিশ বছর ধরে জুপিটার ক্লাবের সাথে যুক্ত থাকলেও দলাদলি ও স্বার্থপর মানুষদের চক্রান্তে তাকে ট্রেনারের পদ থেকে পদত্যাগ করতে হয়। কিন্তু তিনি হাল ছাড়েন না। কোনিকে সাঁতার শেখানো শুরু করেন এবং পারিবারিক, সামাজিক ও আর্থিক প্রতিবন্ধকতা উপেক্ষা করে তাকে একজন চ্যাম্পিয়নে পরিণত করেন।

সাঁতার-অন্তপ্রাণ ক্ষিতীশ এই খেলার জন্য নিজের সংসারকে তুচ্ছ করেছেন। নিজের নিষ্ঠা ও পরিশ্রমের মাধ্যমে তিনি কোনিকে একজন চ্যাম্পিয়ন তৈরি করেছেন। তার মতে, একজন শিক্ষককে শিষ্যের কাছে শ্রদ্ধেয় হতে হবে এবং মনস্তাত্ত্বিকের মতো শিষ্যের সাথে মিশে কথা, কাজ ও উদাহরণের মাধ্যমে তার মনে আকাঙ্ক্ষা ও বাসনা জাগিয়ে তুলতে হবে। এই মূলমন্ত্রকে ধারণ করেই তিনি কোনির মধ্যে দিয়ে তার স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করেছিলেন। ক্ষিতীশের মধ্যে থাকা দার্শনিক চেতনা তাকে লক্ষ্যে পৌঁছাতে ক্রমাগত অনুপ্রাণিত করে তুলেছিল।

কোনি উপন্যাস অবলম্বনে সাঁতার প্রশিক্ষক ক্ষিতীশ সিংহের চরিত্র সংক্ষেপে আলোচনা করো।

কোনি উপন্যাস অবলম্বনে সাঁতার প্রশিক্ষক ক্ষিতীশ সিংহের চরিত্র সংক্ষেপে আলোচনা করো।

অথবা, ক্ষিতীশ সিংহ চরিত্রটি বিশ্লেষণ করো।

  • কথামুখ – মতি নন্দীর কোনি উপন্যাসটির কাহিনি যে মানুষটিকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়েছে তিনি হলেন নিঃসন্তান, পঞ্চাশ থেকে পঞ্চান্ন বছরের মধ্যবর্তী সাঁতার প্রশিক্ষক ক্ষিতীশ সিংহ।
  • অভিজ্ঞ, বিচক্ষণ ও রসিক – ক্ষিতীশ গঙ্গার ঘাটে সাড়ে তিন মন দেহের অধিকারী বিষ্টুচরণ ধরের সঙ্গে কথাবার্তায় তাঁর বিচক্ষণতার আর রসবোধের পরিচয় দিয়েছেন। গঙ্গার ঘাটে কোনিকে এক ঝলক দেখে বিচক্ষণ ও অভিজ্ঞ প্রশিক্ষক ক্ষিতীশ সিংহ বুঝতে পেরেছিলেন কোনির মধ্যে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
  • প্রতিবাদী, লড়াকু ও আপসহীন – দীর্ঘ পঁয়ত্রিশ বছর জুপিটার ক্লাবের সঙ্গে থেকেও দলাদলি এবং স্বার্থপর কিছু মানুষের চক্রান্তে তাঁকে ক্লাবের ট্রেনারের পদ ছাড়তে হয়। কিন্তু তাঁর লড়াই থেমে থাকে না। তিনি কোনিকে সাঁতার শেখাতে শুরু করেন এবং পারিবারিক, সামাজিক, আর্থিক সকল প্রতিবন্ধকতার বিরুদ্ধে লড়াই করে কোনিকে চ্যাম্পিয়নে পরিণত করেন।
  • নিষ্ঠাবান ও পরিশ্রমী – সাঁতার-অন্তপ্রাণ মানুষটি সাঁতারের জন্য নিজের সংসারকে তুচ্ছ করেছেন। নিজের নিষ্ঠা, পরিশ্রম দিয়ে তিনি কোনিকে চ্যাম্পিয়ন করে গড়ে তুলেছেন।
  • দৃঢ়চেতা ও আদর্শবান – গুরুকে শ্রদ্ধেয় হতে হবে শিষ্যের কাছে এবং মনস্তাত্ত্বিকের মতো শিষ্যের সঙ্গে মিশে কথা, কাজ, উদাহরণ দিয়ে মনের মধ্যে আকাঙ্ক্ষা বাসনা জাগিয়ে তুলতে হবে – এটাই ছিল তাঁর মূলমন্ত্র। কোনির মধ্যে দিয়ে এই স্বপ্নকেই রূপ দিয়েছিলেন ক্ষিতীশ সিংহ। তাঁর মধ্যে থাকা দার্শনিক সত্তাই যেন তাঁকে লক্ষ্যে পৌঁছতে ক্রমাগত উদবুদ্ধ করে তুলতে থাকে। এভাবেই ক্ষিতীশ হয়ে ওঠে উপন্যাসের মূল চরিত্র।

মতি নন্দীর ‘কোনি’ উপন্যাস ক্ষিতীশ সিংহ নামক একজন সাঁতার প্রশিক্ষকের জীবন ও সংগ্রামের কাহিনী। নিঃসন্তান, পঞ্চাশোত্তর বয়সী এই ব্যক্তি একজন অভিজ্ঞ, বিচক্ষণ, রসিক এবং প্রতিবাদী মানুষ। দীর্ঘদিন ধরে জুপিটার ক্লাবে প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করলেও ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে তাকে পদত্যাগ করতে হয়।

কিন্তু হাল ছাড়েন না তিনি। গঙ্গার ঘাটে একদিন কোনিকে দেখে তার মধ্যে একজন চ্যাম্পিয়নের সম্ভাবনা অনুধাবন করেন। কোনিকে প্রশিক্ষণ দিতে শুরু করেন এবং পারিবারিক, সামাজিক ও আর্থিক প্রতিবন্ধকতা উপেক্ষা করে তাকে একজন সফল সাঁতারুতে পরিণত করেন।

ক্ষিতীশের নিষ্ঠা, পরিশ্রম, দার্শনিক চিন্তাভাবনা এবং শিক্ষক হিসেবে তার গুণাবলীই তাকে উপন্যাসের মূল চরিত্র হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে। কোনিকে চ্যাম্পিয়ন করে তোলার ক্ষেত্রে তার ভূমিকা অনস্বীকার্য।

‘কোনি’ কেবল একটি খেলাধুলার উপন্যাস নয়, এটি একজন মানুষের সংগ্রাম, লড়াই ও বিজয়ের কাহিনী। ক্ষিতীশ সিংহ এই কাহিনীর মূল চালিকাশক্তি।

Share via:

মন্তব্য করুন