কোনি উপন্যাসের কাহিনি অবলম্বনে স্বামীর যোগ্য সহধর্মিণী রূপে লীলাবতীর পরিচয় দাও।

“কোনি উপন্যাসের কাহিনি অবলম্বনে স্বামীর যোগ্য সহধর্মিণী রূপে লীলাবতীর পরিচয় দাও” এই প্রশ্নটি দশম বাংলা সহায়ক পাঠ কোনি উপন্যাস থেকে নেওয়া হয়েছে। “কোনি উপন্যাসের কাহিনি অবলম্বনে স্বামীর যোগ্য সহধর্মিণী রূপে লীলাবতীর পরিচয় দাও এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষার জন্য অত্যান্ত গুরুত্তপূর্ণ। কোনি উপন্যাসের এই রচনাধর্মী প্রশ্নটি তৈরী করে গেলে মাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষায় একটি ৫ নম্বরের পাওয়া যেতে পারে।

মতি নন্দীর বিখ্যাত উপন্যাস “কোনি”-তে লীলাবতী একটি গুরুত্বপূর্ণ পার্শ্বচরিত্র। ক্ষিতীশ সিংহের স্ত্রী লীলাবতী একজন কর্মঠা, সংসারী এবং স্বামী-ভক্ত নারী। “সিনহা টেলারিং” লোকসানের মুখে পড়লে লীলাবতী নিজের গয়না বন্ধক রেখে নতুন ধরনের কাজ শুরু করেন এবং দোকানের নাম “প্রজাপতি” রাখেন। অদম্য পরিশ্রম ও কর্মতৎপরতার মাধ্যমে তিনি মাত্র চার বছরের মধ্যে “প্রজাপতি”-কে ব্যাপক উন্নতির দিকে ধাবিত করেন।

বাস্তববুদ্ধির পরিচয় দিয়ে তিনি পুরুষদের পোশাক তৈরি বন্ধ করে দুজন মহিলা কর্মচারীকে নিয়োগ করে শুধু মেয়ে ও শিশুদের পোশাক তৈরি শুরু করেন। তার নেতৃত্বে “প্রজাপতি” ক্রমশ বড়ো হয়ে ওঠে এবং আরও বড়ো স্থানের প্রয়োজন হয়ে পড়ে।

গম্ভীর স্বভাবের হলেও লীলাবতী স্বামীর প্রতি যথেষ্ট শ্রদ্ধাশীলা ছিলেন। স্বামীর সাঁতারপ্রীতির কথা জানতেন বলেই তিনি সাংসারিক সমস্ত কাজ নিজেই করতেন। স্বামীর প্রতি শ্রদ্ধা থেকেই তিনি কোনির সাঁতার দেখতে হাজির হয়েছিলেন এবং সাফল্যের জন্য কোনিকে ফ্রক করে দেবেন বলেছেন। শুধু তাই নয়, ইন্ডিয়া রেকর্ড করলে সিল্কের শাড়ি দেওয়ারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এই ঘটনাগুলিতে গম্ভীর স্বভাবের আড়ালে কোথাও যেন মাতৃত্ব উঁকি দিয়ে গেছে লীলাবতীর মধ্যে।

স্বল্প পরিসরেও তাঁর কর্মপ্রাণা, সংসারী এবং পরোক্ষে স্বামী অনুরাগী চরিত্রটি উপন্যাসে স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে।

কোনি উপন্যাসের কাহিনি অবলম্বনে স্বামীর যোগ্য সহধর্মিণী রূপে লীলাবতীর পরিচয় দাও।

কোনি উপন্যাসের কাহিনি অবলম্বনে স্বামীর যোগ্য সহধর্মিণী রূপে লীলাবতীর পরিচয় দাও

অথবা, লীলাবতী চরিত্রটি তোমার কেমন লেগেছে লেখো।

  • কথামুখ – মতি নন্দী রচিত কোনি উপন্যাসে ক্ষিতীশ সিংহের স্ত্রী লীলাবতী অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পার্শ্বচরিত্র।
  • পরিশ্রমী ও কর্মপটু – লীলাবতীর পরিশ্রমেই তাঁদের সংসার চলত। ‘সিনহা টেলারিং’ যখন লোকসানের মুখে সেইসময় লীলাবতী নিজের গয়না বন্ধক রেখে নতুন ধরনের কাজ শুরু করেন। এসময় তিনি দোকানের নাম পালটে ‘প্রজাপতি’ রেখে অসম্ভব পরিশ্রম ও কর্মতৎপরতার মাধ্যমে চার বছরের মধ্যেই ‘প্রজাপতি’-র উন্নতি ঘটান।
  • তীক্ষ্ণবুদ্ধি ও বাস্তববোধ – বাস্তববুদ্ধির পরিচয় দিয়ে তিনি পুরুষদের পোশাক তৈরি বন্ধ করে দুজন মহিলা কর্মচারীকে দোকানে রেখে শুধু মেয়ে ও শিশুদের পোশাক তৈরি শুরু করেন। তাঁর নেতৃত্বেই ব্যাবসা ক্রমশ বড়ো হয়ে ওঠে এবং আরও বড়ো স্থানের প্রয়োজন হয়ে পড়ে।
  • যোগ্য সহধর্মিণী – গম্ভীর স্বভাবের হলেও লীলাবতী স্বামীর প্রতি যথেষ্ট শ্রদ্ধাশীলা ছিলেন। স্বামীর সাঁতারপ্রীতির কথা জানতেন বলেই সাংসারিক সমস্ত কাজ নিজেই করতেন। স্বামীর প্রতি শ্রদ্ধা থেকেই তিনি কোনির সাঁতার দেখতে হাজির হয়েছিলেন। সাফল্যের জন্য কোনিকে ফ্রক করে দেবেন বলেছেন। শুধু তাই নয় ইন্ডিয়া রেকর্ড করলে সিল্কের শাড়ি দেওয়ারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এই ঘটনাগুলিতে গম্ভীর স্বভাবের আড়ালে কোথাও যেন মাতৃত্ব উঁকি দিয়ে গেছে লীলাবতীর মধ্যে।
  • শেষের কথা – স্বল্প পরিসরেও তাঁর কর্মপ্রাণা, সংসারী এবং পরোক্ষে স্বামী অনুরাগী চরিত্রটি উপন্যাসে ধরা পড়েছে।

আরও পড়ুন, কোনি রচনার নামকরণ কতদূর সার্থক হয়েছে বিচার করো।

মতি নন্দীর “কোনি” উপন্যাসে লীলাবতী একটি গুরুত্বপূর্ণ পার্শ্বচরিত্র। একজন কর্মঠা, সংসারী এবং স্বামী-ভক্ত নারী হিসেবে তিনি পাঠকদের মনে সুস্পষ্ট ছাপ রেখে যান। “সিনহা টেলারিং”-এর লোকসানের মুখে পড়ে তিনি যেভাবে “প্রজাপতি”-কে নতুন করে গড়ে তোলেন তা তার দৃঢ়তা ও কর্মদক্ষতার পরিচয় বহন করে।

বাস্তববুদ্ধির পরিচয় দিয়ে তিনি পুরুষদের পোশাক তৈরি বন্ধ করে মেয়ে ও শিশুদের পোশাক তৈরির দিকে মনোনিবেশ করেন এবং ব্যবসাকে নতুন দিকে ধাবিত করেন। গম্ভীর স্বভাবের হলেও স্বামীর প্রতি তার শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা অতুলনীয়। কোনির প্রতি তার মাতৃস্নেহও উপন্যাসে স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে।

স্বল্প পরিসরেও লীলাবতীর কর্মপ্রাণতা, সংসারপ্রেম এবং স্বামী-ভক্তি পাঠকদের মনে গভীর ছাপ রেখে যায়।

লীলাবতী চরিত্রটি মতি নন্দীর সৃষ্ট একটি অসাধারণ সৃষ্টি। একজন নারীর সকল গুণাবলী সমন্বিত এই চরিত্রটি বাংলা সাহিত্যের এক অমূল্য সম্পদ।

Share via:

মন্তব্য করুন