ক্ষিতীশ কথাটা বলেই মনে মনে ব্যথিত হল। — ক্ষিতীশ কাকে, কী কথা বলেছিলেন? তাঁর ব্যথিত হবার কারণ কী?

“ক্ষিতীশ কথাটা বলেই মনে মনে ব্যথিত হল।” এই উক্তিটি দশম বাংলা সহায়ক পাঠ কোনি উপন্যাস থেকে নেওয়া হয়েছে। “ক্ষিতীশ কথাটা বলেই মনে মনে ব্যথিত হল।” — ক্ষিতীশ কাকে, কী কথা বলেছিলেন? তাঁর ব্যথিত হবার কারণ কী? এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষার জন্য অত্যান্ত গুরুত্তপূর্ণ। কোনি উপন্যাসের এই রচনাধর্মী প্রশ্নটি তৈরী করে গেলে মাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষায় একটি ৫ নম্বরের পাওয়া যেতে পারে।


মতি নন্দীর কোনি উপন্যাসের সপ্তম পরিচ্ছেদে ক্ষিতীশ কোনিকে প্রতিদিন দুটো ডিম, দুটো কলা আর দুটো টোস্টের লোভ দেখিয়ে আরও এক ঘণ্টা জলে থাকার প্রস্তাব দেন। ক্ষিতীশ একজন নিবেদিতপ্রাণ প্রশিক্ষক, যিনি কোনিকে একজন দক্ষ সাঁতারু হিসেবে গড়ে তুলতে চান। তাই তিনি কঠোর পরিশ্রমের উপর জোর দেন। কোনিও গুরুর নির্দেশ মেনে চলে, নানা রকম ফরমাশ পালন করে। জলের ধারে দাঁড়িয়ে ক্ষিতীশ তাকে নির্দেশ দেন।

কিন্তু এক সময় ক্ষিতীশ বুঝতে পারেন কোনি বিরক্ত ও পরিশ্রান্ত হয়ে পড়েছে। তার খিদেও পেয়েছে। তাই তিনি ডিম, কলা আর টোস্টের লোভ দেখিয়ে তাকে আরও এক ঘণ্টা জলে থাকার প্রস্তাব দেন। কোনি লোভে পড়ে রাজি হয়ে যায়। ক্ষিতীশ মনে মনে ব্যথিত হন। কারণ তিনি জানেন, লোভ দেখিয়ে খিদেয় অবসন্ন কোনিকে আরও পরিশ্রম করানো অমানবিক।

তবুও সাঁতারু গড়ে তোলার লক্ষ্যে অবিচল ক্ষিতীশ এই ভাবনাকে উপেক্ষা করে। এই দৃশ্যটি ক্ষিতীশের চরিত্রের দুটি দিক তুলে ধরে। একদিকে একজন নিবেদিতপ্রাণ প্রশিক্ষকের কঠোরতা, অন্যদিকে একজন মানুষের সহানুভূতি ও দরদ।

ক্ষিতীশ কথাটা বলেই মনে মনে ব্যথিত হল। — ক্ষিতীশ কাকে, কী কথা বলেছিলেন? তাঁর ব্যথিত হবার কারণ কী?

“ক্ষিতীশ কথাটা বলেই মনে মনে ব্যথিত হল।” — ক্ষিতীশ কাকে, কী কথা বলেছিলেন? তাঁর ব্যথিত হবার কারণ কী?

উদ্দিষ্ট জন ও তার প্রতি ক্ষিতীশের বক্তব্য – মতি নন্দীর কোনি উপন্যাসের সপ্তম পরিচ্ছেদে ক্ষিতীশ কোনিকে বলেছিলেন যে, তিনি ওকে প্রতিদিন দুটো ডিম, দুটো কলা আর দুটো টোস্টের ব্যবস্থা করে দেবেন; কিন্তু তার বদলে কোনিকে আরও এক ঘণ্টা জলে থাকতে হবে।

ব্যথিত হবার কারণ –

  • কোনির অক্লান্ত পরিশ্রম – ক্ষিতীশ কোনিকে অ্যাপোলো ক্লাবে সাঁতার শেখাচ্ছিলেন। কঠিন ট্রেনিংয়ের মধ্য দিয়ে কোনিকে গড়ে তোলার জন্যই ক্ষিতীশের আপ্রাণ চেষ্টা কোনিও গুরুর নির্দেশ মেনে অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছিল। নানারকম ফরমাশ তাকে পালন করতে হচ্ছিল। জলের ধারে সিমেন্ট বাঁধানো সরু পাড়ে দাঁড়িয়ে ক্ষিতীশ সমানে নির্দেশ দিয়ে চলেছিলেন।
  • কোনির অসহায়তার সুযোগ – কোনি শেষপর্যন্ত বিরক্ত ও পরিশ্রান্ত হয়ে জল থেকে উঠে আসে। ক্ষিতীশ বুঝতে পারেন কোনির খিদে পেয়েছে। তিনি ওকে ডিম, কলা আর টোস্টের লোভ দেখান। কোনি তাতে রাজি হয়ে যায়। ক্ষিতীশ বলেন, তাহলে তাকে আরও এক ঘণ্টা জলে থাকতে হবে। এই কথাটা বলেই ক্ষিতীশ মনে মনে ব্যথিত হন। কারণ তিনি জানেন, লোভ দেখিয়ে খিদেয় অবসন্ন কোনিকে আরও পরিশ্রম করানো আসলে অমানবিক। কোনির অসহায়তার সুযোগ নিয়ে তাকে অতিরিক্ত খাটিয়ে নেওয়া, তার শরীরের ওপর অত্যাচার ছাড়া আর কিছুই নয়। এই উপলব্ধিই ক্ষিতীশকে কষ্ট দেয়। কিন্তু সাঁতারু গড়ে তোলার লক্ষ্যে অবিচল ক্ষিতীশ এই ভাবনাকে উপেক্ষা করে।

আরও পড়ুন, ক্ষিতীশের একটা হাত তোলা। চোয়াল শক্ত। পুরু লেন্সে ভেঙে চোখ দুটো যেন বেরিয়ে আসবে। — কোন্ ঘটনায়, কেন ক্ষিতীশের এরূপ অবস্থা হয়েছিল লেখো।

মতি নন্দীর কোনি উপন্যাসের সপ্তম পরিচ্ছেদে ক্ষিতীশের চরিত্রের দুটি দিক ফুটে উঠেছে। একদিকে একজন নিবেদিতপ্রাণ প্রশিক্ষকের কঠোরতা, অন্যদিকে একজন মানুষের সহানুভূতি ও দরদ।

ক্ষিতীশ কোনিকে একজন দক্ষ সাঁতারু হিসেবে গড়ে তুলতে চান। তাই তিনি তাকে কঠোর পরিশ্রমের নির্দেশ দেন। কোনির খিদে পেয়েছে জেনেও তিনি তাকে লোভ দেখিয়ে আরও এক ঘণ্টা জলে থাকার প্রস্তাব দেন। এখানে ক্ষিতীশের কঠোর প্রশিক্ষকের মুখোমুখি হই।

কিন্তু একই সাথে ক্ষিতীশের মনের মধ্যে কোনির প্রতি সহানুভূতিও কাজ করে। তিনি জানেন, খিদেয় অবসন্ন কোনিকে আরও পরিশ্রম করানো অমানবিক। তবুও লক্ষ্য পূরণের জন্য তিনি তিক্ত সত্য উপেক্ষা করেন।

এই দৃশ্যটি ক্ষিতীশের চরিত্রের জটিলতা ও বহুমুখিতা তুলে ধরে। একজন নিবেদিতপ্রাণ প্রশিক্ষকের পাশাপাশি তিনি একজন সহানুভূতিশীল মানুষও।

Share via:

মন্তব্য করুন