এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “লোহায় মরচে পড়াকে ‘মৃদু দহন প্রক্রিয়া’ বলে কেন?” — নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “ধাতুবিদ্যা” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

লোহায় মরচে পড়াকে ‘মৃদু দহন প্রক্রিয়া’ বলে কেন?
লোহা বা লোহার তৈরি কোনো দ্রব্যকে সাধারণ উষ্ণতায় আর্দ্র বায়ুতে রেখে দিলে লোহা জারিত হয়ে তার উপর লালচে-বাদামি বর্ণের সোদক ফেরিক অক্সাইডের (Fe2O3, xH2O) আস্তরণ পড়ে। একে মরচে বলে। মরচে পড়ার সময় সামান্য তাপ উৎপন্ন হলেও আলো উৎপন্ন হয় না। সেই কারণে মরচে পড়াকে ‘মৃদু দহন’ প্রক্রিয়া বলে।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
দহন বলতে সাধারণত কী বোঝায়? আর মৃদু দহন বলতে কী বোঝায়?
সাধারণ দহন একটি দ্রুত রাসায়নিক প্রক্রিয়া যেখানে কোনো পদার্থ অক্সিজেনের সাথে বিক্রিয়া করে তাপ ও আলো উৎপন্ন করে। যেমন- কাঠ বা মোমবাতি জ্বলা। অন্যদিকে, মৃদু দহন একটি অত্যন্ত ধীর গতির দহন প্রক্রিয়া, যেখানে অক্সিজেনের সাথে বিক্রিয়া ঘটে কিন্তু আলো উৎপন্ন হয় না, শুধুমাত্র সামান্য তাপ উৎপন্ন হয়। লোহায় মরচে পড়া এই দ্বিতীয় প্রকারের দহনের একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ।
মরচে পড়ার রাসায়নিক বিক্রিয়াটি কী?
মরচে পড়ার রাসায়নিক বিক্রিয়াটি হলো লোহার (Fe) জারণ। এটি একটি জটিল প্রক্রিয়া, কিন্তু সরলভাবে বলতে গেলে লোহা, অক্সিজেন (বাতাস থেকে) এবং জল (আর্দ্রতা থেকে) একত্রিত হয়ে হাইড্রেটেড ফেরিক অক্সাইড গঠন করে। এর রাসায়নিক সংকেত হলো Fe₂O₃·xH₂O, যা আমরা মরচে নামে চিনি।
মরচে পড়ার সাথে সাধারণ দহনের মৌলিক সাদৃশ্য কী?
মৌলিক সাদৃশ্য হলো উভয় ক্ষেত্রেই অক্সিজেনের সাথে বিক্রিয়া হয়ে নতুন যৌগ (অক্সাইড) তৈরি হয় এবং তাপশক্তি নির্গত হয়।
1. সাধারণ দহন – কার্বন + অক্সিজেন → কার্বন-ডাই-অক্সাইড + তাপ + আলো
2. মৃদু দহন (মরচে) – লোহা + অক্সিজেন + জল → হাইড্রেটেড ফেরিক অক্সাইড + অল্প তাপ
মরচে পড়া রোধে লোহায় তেল বা রং লাগানো হয় কেন?
মরচে পড়ার জন্য অক্সিজেন ও জলের (আর্দ্রতা) সরাসরি সংস্পর্শ প্রয়োজন। লোহার জিনিসে তেল বা রং লাগালে তা লোহার পৃষ্ঠে একটি সুরক্ষামূলক আস্তরণ তৈরি করে, যা লোহাকে বাতাসের অক্সিজেন ও আর্দ্রতা থেকে বিচ্ছিন্ন রাখে। ফলে জারণ প্রক্রিয়া বা “মৃদু দহন” ঘটতে পারে না এবং মরচে পড়া বন্ধ হয়।
লোহায় মরচে পড়াকে রাসায়নিকভাবে কী বলে?
লোহায় মরচে পড়াকে বলা হয় জারণ প্রক্রিয়া, যেখানে লোহা, অক্সিজেন ও জলীয় বাষ্পের সংস্পর্শে এসে ফেরিক অক্সাইড গঠন করে।
মৃদু দহন বলতে কী বোঝায়?
মৃদু দহন হলো এক ধরনের জারণ প্রক্রিয়া, যাতে তাপ উৎপন্ন হলেও আলো বা শিখা দেখা যায় না। মরচে পড়ার সময়ও তাপ উৎপন্ন হয় কিন্তু আলো উৎপন্ন হয় না, তাই একে মৃদু দহন বলা হয়।
মরচে কী দিয়ে তৈরি?
মরচে হলো সোদক ফেরিক অক্সাইড, যার রাসায়নিক সংকেত Fe₂O₃·xH₂O। এটি লালচে-বাদামি বর্ণের এবং ভঙ্গুর প্রকৃতির।
মরচে পড়ার জন্য কোন উপাদানগুলো দায়ী?
লোহা, অক্সিজেন এবং জল (বা বাতাসের আর্দ্রতা) — এই তিনটি উপাদান একত্রিত হলে মরচে তৈরি হয়।
মরচে পড়া ও সাধারণ পোড়ার মধ্যে পার্থক্য কী?
সাধারণ পোড়া বা দহন প্রক্রিয়ায় তাপ ও আলো উভয়ই উৎপন্ন হয়, কিন্তু মরচে পড়ার সময় কেবল অল্প পরিমাণ তাপ উৎপন্ন হয়, আলো উৎপন্ন হয় না।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “লোহায় মরচে পড়াকে ‘মৃদু দহন প্রক্রিয়া’ বলে কেন?” — নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “ধাতুবিদ্যা” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন