দশম শ্রেণি – বাংলা – সিন্ধুতীরে – অতিসংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন ও উত্তর


সিন্ধুতীরে কবিতাটি সৈয়দ আলাওল রচিত একটি জনপ্রিয় কবিতা। এটি একটি রোমান্টিক কবিতা, যাতে একজন রাজকন্যার প্রেম ও বিরহের কাহিনী বর্ণিত হয়েছে।

Table of Contents

দশম শ্রেণি – বাংলা – সিন্ধুতীরে – অতিসংক্ষিপ্ত উত্তর ভিত্তিক প্রশ্ন ও উত্তর

সিন্ধুতীরে কাব্যাংশটি কার রচনা?

‘সিন্ধুতীরে’ কাব্যাংশটি সপ্তদশ শতাব্দীর কবি সৈয়দ আলাওলের রচনা।

কবি সৈয়দ আলাওল কোন্ রাজসভার পৃষ্ঠপোষকতা লাভ করেন?

কবি সৈয়দ আলাওল আরাকান রাজসভার পৃষ্ঠপোষকতা লাভ করেন।

সিন্ধুতীরে কাব্যাংশটি কোন্ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত?

কবি সৈয়দ আলাওল রচিত ‘সিন্ধুতীরে’ কাব্যাংশটি পদ্মাবতী কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত।

সিন্ধুতীরে কাব্যাংশটি পদ্মাবতী কাব্যের কোন্ খণ্ডের অংশ?

কবি সৈয়দ আলাওল রচিত ‘সিন্ধুতীরে’ কাব্যাংশটি পদ্মাবতী কাব্যের ‘পদ্মা-সমুদ্রখণ্ড’-র অংশ।

পদ্মাবতী কাব্যগ্রন্থটি কোন্ সময়ে রচিত?

কবি সৈয়দ আলাওলের লেখা পদ্মাবতী কাব্যগ্রন্থটি ১৬৪৫ থেকে ১৬৫২ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে রচিত।

পদ্মাবতী কাব্যগ্রন্থটি কোন্ কাব্যগ্রন্থের অনুসরণে রচিত?

পদ্মাবতী কাব্যগ্রন্থটি হিন্দি কবি মালিক মহম্মদ জায়সী রচিত পদুমাবৎ কাব্যগ্রন্থের অনুসরণে রচিত।

জায়সীর পদুমাবৎ কাব্য রচনাকালে দিল্লির সুলতান কে ছিলেন?

জাইস নগরে বসবাসকারী সিদ্দিকি বংশোদ্ভূত কবি মালিক মহম্মদ জায়সীর পদুমাবৎ কাব্য রচনাকালে দিল্লির সুলতান ছিলেন শেরশাহ্।

পদুমাবৎ কাব্যটি কোন্ সময়ের রচনা?

কবি মালিক মহম্মদ জায়সী রচিত পদুমাবৎ কাব্যটি ‘সন নব সৈ সেতাঁলিস অহা’ অর্থাৎ ৯৪৭ হিজরি বা ১৫৪০ খ্রিস্টাব্দের রচনা।

পদ্মাবতী কাব্যে চিতোর দুর্গের অধিপতি কে ছিলেন?

পদ্মাবতী কাব্যে চিতোর দুর্গের অধিপতি ছিলেন রাজা রত্নসেন।

রাজা রত্নসেন কার মুখে পদ্মাবতীর রূপের কথা শুনেছিলেন?

চিতোরের রাজা রত্নসেন এক শুকপাখির মুখে পদ্মাবতীর রূপের কথা শুনেছিলেন।

রাজা রত্নসেন কীভাবে পদ্মাবতীর কাছে পৌঁছোন?

শুকপাখির মুখে পদ্মাবতীর রূপের প্রশস্তি শুনে চিতোররাজ রত্নসেন ষোলোশো রাজকুমারকে সঙ্গে নিয়ে যোগীবেশে সিংহল-রাজকন্যা পদ্মাবতীর কাছে পৌঁছোন।

সিংহলে যাত্রাকালে কে রত্নসেনকে সাহায্য করেছিলেন?

ষোলোশো রাজকুমার-সহ চিতোররাজ রত্নসেন সিন্ধুতীরে পৌঁছোলে রাজা গজপতি তাঁকে সিংহলে যাবার জন্য নৌকো দিয়ে সাহায্য করেছিলেন।

চিতোররাজ রত্নসেনের প্রথমা স্ত্রীর নাম কী?

চিতোররাজ রত্নসেনের প্রথমা স্ত্রীর নাম নাগমতী।

আরাকান রাজ্যটি কোথায় অবস্থিত?

আরাকান রাজ্যটি ব্রহ্মদেশের উত্তর-পশ্চিম সীমায় এবং বাংলাদেশের পূর্বে চট্টগ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলে অবস্থিত একটি সমুদ্রতীরবর্তী স্থান।

আরাকান রাজ্যের প্রাচীন নাম কী?

আরাকান রাজ্যের প্রাচীন নাম রক্ষতুঙ্গ বা রোসাঙ। আইন-ই-আকবরী- তে একে ‘আখরও’ বলা হয়েছে। বাহারিস্তান গারী-তে মীর্জা নাথান এই দেশকে বলেছেন ‘আর খণ্ড’-এর থেকেই ‘আরাকান’ নামটি এসেছে।

আরাকানের অধিবাসী মগেরা কোন্ ধর্মাবলম্বী ছিলেন?

আরাকানের অধিবাসী মগেরা বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী ছিলেন।

আলাওল কোন্ কোন্ রাজার রাজত্বকালে আরাকানে ছিলেন?

সপ্তদশ শতাব্দীর কবি সৈয়দ আলাওল থদো-মিনতারের পুত্র সান্দ্-যু- ধম্মা বা চন্দ্রসুধর্মার রাজত্বকালে আরাকানে ছিলেন।

আরাকানে কার রাজত্বকালে আলাওল তাঁর পদ্মাবতী কাব্যটি রচনা করেন?

আরাকানে থদো-মিনতারের রাজত্বকালে কবি সৈয়দ আলাওল তাঁর পদ্মাবতী কাব্যটি রচনা করেন।

আলাওলের পদ্মাবতী কাব্যের মূল কাহিনি কয়টি?

কবি সৈয়দ আলাওলের পদ্মাবর্তী কাব্যের মূল কাহিনি দুটি-একটি নাগমতী-পদ্মাবতী রত্নসেনের মিলনান্তক কাহিনি, আর অন্যটি হল রত্নসেন-আলাউদ্দিন-পদ্মাবতীর ত্রিভুজপ্রেমের কাহিনি, যাতে যুদ্ধের উত্তেজনাই প্রধান।

পদ্মাবতী কাব্যে সিংহল-রাজকন্যা পদ্মাবতীর প্রিয় শুকপাখিটির নাম কী ছিল?

পদ্মাবতী কাব্যে সিংহল-রাজকন্যা পদ্মাবতীর প্রিয় শুকপাখিটির নাম ছিল হীরামন।

পদ্মাবতীর পিতার নাম কী?

পদ্মাবতী কাব্যে পদ্মাবতীর পিতার নাম গন্ধর্বসেন।

পদ্মাবতীকে বিবাহ করে দেশে ফেরার সময় রত্নসেন কীভাবে বিপর্যস্ত হন?

পদ্মাবতীকে বিবাহ করে স্বদেশে ফেরার সময় নিজ অহংকারের জন্য রাজা রত্নসেন সমুদ্রের দ্বারা বিপর্যস্ত হন এবং অবশেষে বহু দুর্যোগ ও দুর্বিপাক পেরিয়ে দেশে ফেরেন।

পদ্মাবতী কাব্যে অলৌকিকতা কীভাবে স্থান পেয়েছে?

পদ্মাবতী কাব্যে ব্রাহ্মণের ছদ্মবেশধারী সমুদ্রের রত্নসেনকে পরীক্ষা, সমুদ্রে নৌকাডুবি, পদ্মাবতীর পাতালপুরীতে যাওয়া এবং সমুদ্রের কৃপায় আবার ধনরত্ন-সহ রত্নসেনকে ফিরে পেয়ে চিতোরে পৌঁছোনো-প্রভৃতি অলৌকিক বা রূপকথাধর্মী বিবরণ রয়েছে।

পদ্মাবতী কাব্যের ‘পদ্মা-সমুদ্রখণ্ড’ মূল পদুমাবৎ কাব্যে কোন্ নামে ছিল?

কবি সৈয়দ আলাওল রচিত পদ্মাবতী কাব্যের ‘পদ্মা-সমুদ্রখণ্ড’ মালিক মহম্মদ জায়সী রচিত পদুমাবৎ কাব্যে ‘লক্ষ্মী-সমুদ্রখণ্ড’ নামে ছিল।

জায়সীর কাব্যে সমুদ্রকন্যার নাম কী ছিল?

মালিক মহম্মদ জায়সী রচিত পদুমাবৎ কাব্যে সমুদ্রকন্যার নাম ছিল লক্ষ্মী, যা আলাওলের কাব্যে হয়েছে পদ্মা।

পদ্মা-সমুদ্রখণ্ড-টির অন্তর্গত ‘সিন্ধুতীরে’ কাব্যাংশটি কোন ছন্দে রচিত?

পদ্মা-সমুদ্রখণ্ড-টির অন্তর্গত ‘সিন্ধুতীরে’ কাব্যাংশটি ত্রিপদী ছন্দে রচিত।

কন্যারে ফেলিল যথা – কন্যাটি এক্ষেত্রে কে?

কবি সৈয়দ আলাওল রচিত পদ্মাবতী কাব্যের অন্তর্গত ‘পদ্মা-সমুদ্রখণ্ড’ থেকে নেওয়া ‘সিন্ধুতীরে’ শীর্ষক কাব্যাংশে উল্লিখিত ‘কন্যা’-টি হলেন সিংহলরাজ গন্ধর্বসেনের কন্যা তথা চিতোররাজ রত্নসেনের দ্বিতীয়া স্ত্রী পদ্মাবতী।

দিব্য পুরী সমুদ্র মাঝার – ‘দিব্য পুরী’-র অর্থ কী?

কবি সৈয়দ আলাওল রচিত ‘সিন্ধুতীরে’ কাব্যাংশ থেকে নেওয়া আলোচ্য অংশে ‘দিব্য পুরী’-র অর্থ অলৌকিক স্বর্গীয় নগরী।

সমুদ্রনৃপতি সুতা কে?

কবি সৈয়দ আলাওল রচিত ‘সিন্ধুতীরে’ কাব্যাংশ থেকে নেওয়া আলোচ্য অংশে ‘সমুদ্রনৃপতি সুতা’ হলেন পদ্মা।

তথা কন্যা থাকে সর্বক্ষণ – কার, কোথায় থাকার কথা বলা হয়েছে?

সিন্ধুতীরে কাব্যাংশে সমুদ্ররাজকন্যা পদ্মার পাহাড়ের পাশে ফুল-ফলে ভরা, বিচিত্র প্রাসাদময় এক বাগানে থাকার কথা বলা হয়েছে।

যদি হৈল সময় প্রত্যুষ – সকাল হতে পদ্মা কী দেখলেন?

সিন্ধুতীরে কাব্যাংশে বর্ণিত কাহিনি অনুযায়ী সকাল হতে পদ্মা দেখলেন সমুদ্রের ধারে একটি মান্দাস রয়েছে।

কন্যারে ফেলিল যথা – কন্যাকে কোথায় ফেলা হল?

কন্যা অর্থাৎ সিংহল রাজকন্যা পদ্মাবতীকে সমুদ্র মধ্যে এক দিব্যপুরীতে ফেলা হয়।

সিন্ধুতীরে রহিছে মাঞ্জস – কে এই মাঞ্জস দেখেছিলেন?

সমুদ্রকন্যা পদ্মা এই মাঞ্জস দেখেছিলেন।

মধ্যেতে যে কন্যাখানি রূপে অতি রম্ভা জিনি – রম্ভানিন্দিত রূপটি কার?

সিন্ধুতীরে কাব্যাংশ থেকে নেওয়া আলোচ্য অংশে রম্ভানিন্দিত রূপটি হল চিতোররাজ রত্নসেনের দ্বিতীয় স্ত্রী পদ্মাবতীর।

বিস্মিত হইল বালা – বিস্মিত হওয়ার কারণ কী?

সমুদ্রতীরে অচেতন কন্যার সৌন্দর্য দেখে সমুদ্রকন্যা পদ্মা বিস্মিত হয়েছিলেন।

অনুমান করে নিজ চিতে – পদ্মা কী অনুমান করলেন?
অথবা, দেখিয়া রূপের কলা/বিস্মিত হইল বালা/অনুমান করে নিজ চিতে। – ‘বালা’ কী অনুমান করেছিল?

সমুদ্রের তীরে অপূর্ব সুন্দরী পদ্মাবতীকে দেখে সমুদ্ররাজকন্যা পদ্মা অনুমান করলেন ইন্দ্রের অভিশাপে স্বর্গের অপ্সরা বিদ্যাধরি স্বর্গভ্রষ্ট হয়ে অচেতন অবস্থায় সেখানে পড়ে রয়েছেন।

বেথানিত হৈছে কেশ বেশ – ‘বেথানিত’ শব্দের অর্থ কী?

কবি সৈয়দ আলাওল রচিত ‘সিন্ধুতীরে’ শীর্ষক কাব্যাংশ থেকে নেওয়া আলোচ্য অংশে ‘বেথানিত’ শব্দের অর্থ অসম্বৃত বা বিস্থানিত, আলুথালু।

ভাঙ্গিল প্রবল বাও – প্রবল বাতাস কী ভেঙে দিয়েছে?

আলোচ্য অংশে প্রবল বাতাস পদ্মাবতীর মান্দাস ভেঙে দিয়েছে।

পদ্মাবতী কীভাবে মূর্ছিত হয়ে পড়েছেন?

সিন্ধুতীরে কাব্যাংশ থেকে নেওয়া আলোচ্য অংশে চিতোররাজ রত্নসেনের দ্বিতীয় স্ত্রী পদ্মাবতী সমুদ্রে প্রবল বাতাসে মান্দাস ভেঙে পড়ায় ভয়ে, কষ্টে মূর্ছিত হয়ে পড়েছেন।

কিঞ্চিৎ আছয় মাত্র শ্বাস – কার কথা বলা হয়েছে?

সমুদ্রতীরে অচেতন পদ্মাবতীর কথা বলা হয়েছে।

বিধি মোরে না কর নৈরাশ। – বক্তা কোন্ বিষয়ে নিরাশ হতে চান না?

সমুদ্রকষ্টে মূর্ছিতা পদ্মাবতীর প্রাণ ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে বস্তা সমুদ্রের রাজকন্যা পদ্মা নিরাশ হতে চান না।

বাহুরক কন্যার জীবন – বক্তা কীভাবে কন্যার প্রাণরক্ষার চেষ্টা করেছেন?

আলোচ্য অংশে বক্তা সমুদ্রকন্যা পদ্মা তাঁর সখীদের নিয়ে আগুন জ্বেলে পদ্মাবতীর শরীরে সেঁক দিয়ে, মন্ত্রতন্ত্র মহৌষধ দিয়ে চার দণ্ড ধরে সেবাযত্ন করে তাঁর প্রাণরক্ষার চেষ্টা করেছেন।

কৃপা কর – পদ্মাবতীর প্রাণরক্ষায় পদ্মা কার কৃপা প্রার্থনা করেছেন?

কবি সৈয়দ আলাওল রচিত ‘সিন্ধুতীরে’ কাব্যাংশে পদ্মাবতীর প্রাণরক্ষার জন্য পদ্মা নিরঞ্জনের কৃপা প্রার্থনা করেছেন।

সখী সবে আজ্ঞা দিল – বক্তা তার সখীদের কী আজ্ঞা দিয়েছিলেন?
অথবা, সখী সবে আজ্ঞা দিল – তাঁর সখীদের কী আজ্ঞা দিয়েছিলেন?

কবি সৈয়দ আলাওল রচিত ‘সিন্ধুতীরে’ কাব্যাংশে সমুদ্রকন্যা পদ্মা তাঁর সখীদের পদ্মাবতীকে বস্ত্রে ঢেকে উদ্যানে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসার ও শুশ্রূষা’র আজ্ঞা দিয়েছিলেন।

পঞ্চকন্যা পাইলা চেতন – ‘পঞ্চকন্যা’ কে কে?

কবি সৈয়দ আলাওল রচিত ‘সিন্ধুতীরে’ কাব্যাংশ থেকে নেওয়া আলোচ্য অংশে ‘পঞ্চকন্যা’ হলেন চিতোররাজ রত্নসেনের দ্বিতীয়া স্ত্রী পদ্মাবতী এবং তাঁর চার সখী-চন্দ্রপ্রভা, রোহিণী, বিজয়া ও বিধুন্নলা।

পঞ্চকন্যা পাইলা চেতন। – পঞ্চকন্যা কীভাবে চেতনা ফিরে পেল?

সমুদ্রকন্যা পদ্মার সখীদের সেবাশুশ্রূষায় পঞ্চকন্যা চেতনা ফিরে পেল।

শ্রীযুত মাগন গুণী – মাগন গুণীর পরিচয় দাও।

মাগন গুণী ছিলেন আরাকানরাজ থদো-মিনতারের অমাত্যপ্রধান। যিনি আলাত্তলকে গ্রন্থ রচনায় উৎসাহ দেন।

সিন্ধুতীরে কবিতাটি বাংলা সাহিত্যের একটি অমূল্য সম্পদ। এটি একটি চিরন্তন প্রেমের কাহিনী, যা পাঠকদের মনে চিরকাল ভাস্বর হয়ে থাকবে। কবিতাটি থেকে আমরা শিক্ষা পাই যে, প্রেম হলো মানুষের জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ। প্রেম মানুষের জীবনকে সুন্দর ও আনন্দময় করে তোলে। কিন্তু প্রেম ছাড়া জীবন অপূর্ণ।

Share via:

মন্তব্য করুন