এখনই আমাদের Telegram Community গ্রুপে যোগ দিন।। এখানে WBBSE বোর্ডের পঞ্চম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণির যেকোনো বিষয়ভিত্তিক সমস্যা শেয়ার করতে পারেন এবং একে অপরের সাহায্য করতে পারবেন। এছাড়া, কোনও সমস্যা হলে আমাদের শিক্ষকরা তা সমাধান করে দেবেন।

Telegram Logo Join Our Telegram Community

মাধ্যমিক ভূগোল – ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ – ভারতের পরিবহণ ও যোগাযোগ ব্যবস্থা – ব্যাখ্যামূলক উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন ও উত্তর

আজকের আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের ষষ্ঠ অধ্যায় “ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ”-এর ‘ভারতের পরিবহণ ও যোগাযোগ ব্যবস্থা’ অংশের কিছু গুরুত্বপূর্ণ ব্যাখ্যামূলক প্রশ্ন-উত্তর নিয়ে আলোচনা করবো। এই প্রশ্নগুলি মাধ্যমিক এবং বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য অত্যন্ত সহায়ক, কারণ এ ধরনের প্রশ্ন প্রায়ই এসব পরীক্ষায় আসে। আশা করি, এই আর্টিকেলটি আপনার পরীক্ষার প্রস্তুতিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।

Table of Contents

মাধ্যমিক ভূগোল – ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ – ভারতের পরিবহণ ও যোগাযোগ ব্যবস্থা – ব্যাখ্যামূলক উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন ও উত্তর

সড়কপথে পরিবহণের সুবিধাগুলি কী কী?

সড়কপথে পরিবহণের বিভিন্ন সুবিধা রয়েছে —

  1. দ্রুত পরিবহণ – সড়কপথে যে-কোনো হালকা পণ্য দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়া যায়।
  2. যে-কোনো সময় পরিবহণ – সড়কপথে দিনরাত, সর্বসময় পরিবহণ করা যায়। রেল বা বিমানপথের মতো নির্দিষ্ট সময়সূচি মেনে চলতে হয় না।
  3. প্রতিরক্ষা কাজে ব্যবহার – দুর্গম স্থানে বা প্রতিরক্ষার কাজে সেনাবাহিনীর জন্য রসদ, অস্ত্রশস্ত্র, ওষুধ ইত্যাদি পাঠানো সড়কপথে সুবিধাজনক।
  4. বিভিন্ন ধরনের যানবাহন ব্যবহার – সড়কপথে বিভিন্ন আকারের যানবাহন ব্যবহার করা যায়, যা ইচ্ছেমতো পণ্য পরিবহণের জন্য সহায়ক।
  5. সহজে পরিবহণ – সড়কপথে উৎপাদক অঞ্চল থেকে বাজারে দ্রব্য সহজে পরিবহণ করা যায়।

সোনালি চতুর্ভুজ ও পূর্ব-পশ্চিম, উত্তর-দক্ষিণ করিডোর কী?

সোনালি চতুর্ভুজ –

ভারতের চারটি মহানগর—কলকাতা, দিল্লি, মুম্বাই, এবং চেন্নাই—এর মধ্যে সংযোগ রক্ষা করছে এই বিশাল জাতীয় সড়ক প্রকল্প। এটি ভারতের দীর্ঘতম জাতীয় সড়ক প্রকল্প এবং বিশ্বের পঞ্চম দীর্ঘতম সড়ক প্রকল্প। জাতীয় সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের (NHDP) অধীনে 5,846 কিমি দীর্ঘ এই জাতীয় সড়কটি 4-6 লেন বিশিষ্ট। এর মধ্যে:

  • দিল্লি-কলকাতা সড়ক: 1,453 কিমি
  • চেন্নাই-মুম্বাই সড়ক: 1,290 কিমি
  • কলকাতা-চেন্নাই জাতীয় সড়কপথ: 1,684 কিমি
  • মুম্বাই-দিল্লি সড়ক: 1,419 কিমি [সূত্র: NHAI]।
  • মালয়েশিয়ার সংস্থা উন্নত যন্ত্রপাতি ও আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে এই প্রকল্পের রাস্তা নির্মাণের কাজ সম্পন্ন করেছে।

উত্তর-দক্ষিণ ও পূর্ব-পশ্চিম করিডোর –

উত্তর-দক্ষিণ করিডোর – ভারতের উত্তরে জম্মু ও কাশ্মীরের শ্রীনগর থেকে দক্ষিণে তামিলনাড়ুর কন্যাকুমারী পর্যন্ত বিস্তৃত। এটি প্রায় 4,000 কিমি দীর্ঘ।
পূর্ব-পশ্চিম করিডোর – পূর্বে আসামের শিলচর থেকে পশ্চিমে গুজরাটের পোরবন্দর পর্যন্ত বিস্তৃত। এর মোট দৈর্ঘ্য প্রায় 3,300 কিমি। এটি বর্তমান ভারতের চলমান জাতীয় সড়ক প্রকল্পগুলোর মধ্যে অন্যতম বড় প্রকল্প।

ভারতের পরিবহন ব্যবস্থা

সড়কপথে পরিবহণের অসুবিধাগুলি কী কী?

সড়কপথে অনেক সুবিধা থাকলেও নানা অসুবিধাও দেখা যায় —

  • নির্মাণ ব্যয় বেশি – সড়কপথ নির্মাণ অত্যন্ত ব্যয়বহুল এবং সময়সাপেক্ষ। তাই দেশের অর্থনীতি উন্নত না হলে সড়ক ব্যবস্থা উন্নত হয় না।
  • রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় বেশি – বৃষ্টি, বন্যা, তুষারপাত প্রভৃতি রাস্তা নষ্ট করে দেয়। এছাড়া, ভারী যানবাহন চলাচলের ফলে রাস্তা দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই সড়কপথের রক্ষণাবেক্ষণ সবসময় করতে হয়।
  • সেতুর অভাবে পরিবহণে ঘাটতি – নদীবহুল অঞ্চলে যথেষ্ট সংখ্যক সেতু না থাকায় সড়ক পরিবহণে অসুবিধার সৃষ্টি হয়।
  • পরিবহণ ব্যয় বেশি – রেল ও জলপথ পরিবহণের তুলনায় সড়কপথের পরিবহণ ব্যয় বেশি। এজন্য মালপত্র পরিবহণে রেল ও জলপথ এখনও এগিয়ে।
  • যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্য কম – সড়কপথে দীর্ঘ দূরত্ব অতিক্রম করা কষ্টসাধ্য। যাত্রীদের শারীরিক স্বাচ্ছন্দ্য নিশ্চিত করা সড়ক পরিবহণে সম্ভব হয় না।

ভারতের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সড়কপথের গুরুত্ব কতখানি?

ভারতের মতো উন্নয়নশীল দেশে অর্থনৈতিক উন্নয়নে সড়কপথের গুরুত্ব অত্যন্ত বেশি —

  • গ্রামীণ উন্নতিতে – ভারতের প্রায় ৬৯ শতাংশ মানুষ গ্রামে বাস করে। কৃষিজ ফসল বিক্রয়, শহর থেকে সার, কীটনাশক, কৃষিযন্ত্রপাতি আনা এবং অন্যান্য বাণিজ্যিক কার্যক্রমে সড়কপথের গুরুত্ব অপরিসীম।
  • কাঁচামাল সংগ্রহ – শিল্পের প্রয়োজনের জন্য গ্রাম থেকে কৃষিজ কাঁচামাল আনা, খনি থেকে কয়লা ও খনিজ পদার্থ শিল্পকেন্দ্রে পাঠানোর জন্য সড়কপথই উপযুক্ত। যেমন, রানিগঞ্জ ও আসানসোল থেকে ২ নম্বর জাতীয় সড়কপথের মাধ্যমে কয়লা হুগলি শিল্পাঞ্চলে পৌঁছায়।
  • পার্বত্য অঞ্চলের উন্নয়নে – উত্তর ভারত, উত্তর-পূর্ব ভারত ও দক্ষিণ ভারতের পার্বত্য অঞ্চলে, যেখানে রেল পরিবহণ সম্ভব নয়, সড়কপথই আঞ্চলিক উন্নয়নের মাধ্যম। তাই ওইসব অঞ্চলে সড়কপথ নির্মাণ অত্যন্ত জরুরি।
  • নির্মাণ ব্যয় কম – রেলপথের তুলনায় সড়কপথের নির্মাণ ব্যয় কম। তাই ভারতের মতো উন্নয়নশীল দেশে সড়কপথের বিকাশ অর্থনীতির ওপর কম চাপ ফেলে।
  • সীমান্তরক্ষা – ভারতের সীমান্ত অঞ্চলের দুর্গম স্থানে রেলপথ নির্মাণ সম্ভব নয়। দেশের নিরাপত্তার জন্য ওইসব স্থানে সড়কপথ নির্মাণ অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
  • ছোটো শিল্পকেন্দ্রের সাথে সংযোগ – বড়ো শিল্পকেন্দ্রগুলি রেলপথের সাথে সংযুক্ত থাকলেও, ছোট ছোট অসংখ্য শিল্পকেন্দ্র রয়েছে যেগুলির পণ্য পরিবহণের জন্য সড়কপথই একমাত্র ভরসা।

জাতীয় সড়কের গুরুত্ব কতখানি?

বর্তমানে ভারতের জাতীয় সড়কের মোট দৈর্ঘ্য প্রায় 96,261 কিমি। জাতীয় সড়কগুলি বিভিন্ন রাজ্যের মধ্যে দিয়ে প্রসারিত হয়েছে এবং ভারতের মোট সড়কপথের মাত্র 1.7 শতাংশ জুড়ে রয়েছে। ভারতের সড়কপথে পরিবহণের প্রায় 40 শতাংশ জাতীয় সড়কগুলি বহন করে। জাতীয় সড়কে প্রতি বছর গড়ে 10 শতাংশ হারে যানবাহনের চলাচল বাড়ছে। জাতীয় সড়কের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব কেন্দ্রীয় সরকারের। পণ্য ও যানবাহনের চলাচলে জাতীয় সড়কের গুরুত্ব অত্যন্ত বেশি।

উদাহরণ –

  • কলকাতা থেকে দিল্লি পর্যন্ত প্রসারিত জাতীয় সড়কটির নম্বর 2
  • কলকাতা থেকে মুম্বাই পর্যন্ত জাতীয় সড়কটির নম্বর 6
  • ভারতের দীর্ঘতম জাতীয় সড়ক (বর্তমানে NH44) উত্তরে শ্রীনগর থেকে দক্ষিণে কন্যাকুমারী পর্যন্ত বিস্তৃত।

রাজ্য সড়কপথ সম্পর্কে কী জান?

জাতীয় সড়কগুলি বিভিন্ন রাজ্যকে সংযুক্ত করে প্রসারিত থাকে, তবে রাজ্য সড়ক বা প্রাদেশিক রাজপথগুলি শুধুমাত্র রাজ্যের সীমানার মধ্যে বিস্তৃত থাকে। এই পথগুলির নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণ সম্পূর্ণরূপে রাজ্য সরকারের দায়িত্ব। কেন্দ্রীয় সরকার এই বিষয়ে কোনো সহায়তা করে না। রাজ্য সড়কগুলি মূলত রাজ্যের রাজধানীর সাথে জেলা শহরকে সংযুক্ত করে এবং জাতীয় সড়কের সাথে সংযুক্ত থাকে। এই পথগুলি রাজ্যের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। রাজ্যের পণ্য পরিবহণ ও বাণিজ্য দ্রব্য পরিবহণে এর গুরুত্ব অপরিসীম। ভারতের মোট রাজ্য সড়কের দৈর্ঘ্য 131,899 কিমি। বি টি রোড একটি রাজ্য সড়কপথের উদাহরণ।

সীমান্ত সড়কপথ কী?

স্বাধীনতা লাভের পর দেশের প্রতিরক্ষা ও সীমান্ত অঞ্চলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সড়কপথ নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণের উদ্দেশ্যে ১৯৬০ সালে ‘সীমান্ত সড়ক উন্নয়ন সংস্থা’ (Border Roads Organisation) প্রতিষ্ঠিত হয়। এই সংস্থার দ্বারা নির্মিত সড়কপথগুলোকে সীমান্ত সড়ক বলা হয়। বর্তমানে এই সড়কপথগুলির মোট দৈর্ঘ্য প্রায় ৩২,৮৮৫ কিমি। এই সংস্থার উল্লেখযোগ্য অর্জন হলো পৃথিবীর অন্যতম উচ্চ সড়ক নির্মাণ। এটি লেহ থেকে তিব্বত সীমান্ত পর্যন্ত বিস্তৃত। অন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কপথ হিমাচল প্রদেশের মানালি থেকে লাদাখের লেহ শহর পর্যন্ত প্রসারিত। এটি পৃথিবীর দ্বিতীয় উচ্চতম সড়কপথ।

আন্তর্জাতিক সড়কপথ কী? এর গুরুত্ব কতখানি?

যেসব সড়কপথ একাধিক দেশের মধ্যে দিয়ে বিস্তৃত হয়, তাদের আন্তর্জাতিক সড়কপথ (International Roadways) বলা হয়।

উদাহরণ –

ভারতে মোট ৬টি আন্তর্জাতিক সড়কপথ রয়েছে। এগুলো এশিয়ান হাইওয়ে বা গ্রেট এশিয়ান হাইওয়ে নামে পরিচিত।

  • AH 42 – চিনের ল্যানঝু থেকে ভারতের বারহি
  • AH 43 – ভারতের আগ্রা থেকে শ্রীলঙ্কার মাতারা
  • AH 45 – কলকাতা থেকে বেঙ্গালুরু
  • AH 46 – হাজিরা থেকে হাওড়া
  • AH 47 – গোয়ালিয়র থেকে বেঙ্গালুরু
  • AH 48 – ভুটানের ফুন্টশোলিং থেকে ভারতের চ্যাংরাবান্ধা পর্যন্ত বিস্তৃত

গুরুত্ব –

  • আন্তর্জাতিক সড়কপথগুলি বিভিন্ন দেশের মধ্যে সম্পর্ক উন্নত করতে সহায়তা করে।
  • এসব সড়কপথের মাধ্যমে প্রতিবেশী দেশগুলির মধ্যে সাংস্কৃতিক আদান-প্রদান বৃদ্ধি পায়।
  • পণ্য ও যাত্রী পরিবহণের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়, যা দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।
  • এসব সড়কপথ বিভিন্ন দেশের শিল্পোন্নতির জন্য সহায়ক হতে পারে।

ভারতীয় রেলপথের শ্রেণিবিভাগ করো।

দুটি লাইনের মধ্যে দূরত্ব সব রেলপথে সমান নয়। এই দূরত্বের পার্থক্য অনুযায়ী ভারতের রেলপথকে তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায় –

  • ব্রড গেজ (Broad Gauge) – এক্ষেত্রে লাইনের মধ্যে দূরত্ব হয় 1.68 মিটার। ব্রড গেজ দিয়েই সর্বাধিক পরিবহণ করা হয়। বর্তমানে 108,000 কিমি রেলপথ ব্রড গেজের অন্তর্ভুক্ত, যা প্রায় 56,000 কিমি দীর্ঘ।
  • মিটার গেজ (Metre Gauge) – এক্ষেত্রে দুটি লাইনের মধ্যে ব্যবধান হয় 1 মিটার। বর্তমানে প্রায় 4,000 কিমি রেলপথ মিটার গেজের অন্তর্ভুক্ত, এবং এর পরিমাণ দিন দিন কমছে।
  • ন্যারো গেজ (Narrow Gauge) – এই পথে দুটি রেল লাইনের মধ্যে দূরত্ব থাকে প্রায় 0.76 মিটার থেকে 0.61 মিটার। ভারতে বর্তমানে ন্যারো গেজ রেলপথ রয়েছে প্রায় 5,000 কিমি।

ভারতের রেলপথকে কী কী আঞ্চলিক ভাগে ভাগ করা হয়েছে?

পরিচালনার সুবিধার জন্য ভারতীয় রেলপথকে 17টি অঞ্চলে ভাগ করা হয়েছে। এর মধ্যে 9টি রেলপথ ব্যবস্থা গুরুত্বপূর্ণ। ভারতীয় রেলের এই আঞ্চলিক বিভাগ ও সদর দপ্তরগুলি হল –

  • পূর্ব রেলপথ (কলকাতা)
  • দক্ষিণ-পূর্ব রেলপথ (কলকাতা)
  • উত্তর-পূর্ব রেলপথ (গোরক্ষপুর)
  • উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলপথ (গুয়াহাটি)
  • পশ্চিম রেলপথ (মুম্বাই)
  • উত্তর রেলপথ (নতুন দিল্লি)
  • দক্ষিণ রেলপথ (চেন্নাই)
  • মধ্য রেলপথ (মুম্বাই)
  • দক্ষিণ-মধ্য রেলপথ (সেকেন্দ্রাবাদ)
  • পূর্ব-মধ্য রেলপথ (হাজিপুর)
  • পূর্ব উপকূলীয় রেলপথ (ভুবনেশ্বর)
  • উত্তর-মধ্য রেলপথ (এলাহাবাদ)
  • উত্তর-পশ্চিম রেলপথ (জয়পুর)
  • দক্ষিণ-পূর্ব-মধ্য রেলপথ (বিলাসপুর)
  • দক্ষিণ-পশ্চিম রেলপথ (হুবলি)
  • পশ্চিম-মধ্য রেলপথ (জব্বলপুর)
  • মেট্রো রেলপথ (কলকাতা)

ভারতীয় রেলপথের সমস্যাগুলি কী কী?

ভারতীয় রেলপথ দেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করলেও, এর কিছু মূল সমস্যা রয়েছে –

  • পরিবহণ সময়সাপেক্ষ – দেশে বিভিন্ন ধরনের গেজ ব্যবহৃত হওয়ার কারণে পণ্য এবং যাত্রী পরিবহণে অতিরিক্ত সময় লাগে এবং পরিবহণ খরচও বৃদ্ধি পায়।
  • উন্নত প্রযুক্তির অভাব – ভারতীয় রেলপথ এখনও আধুনিক প্রযুক্তি গ্রহণে পিছিয়ে রয়েছে। উন্নত সিগন্যালিং ব্যবস্থা, মুখোমুখি সংঘর্ষ এড়ানোর প্রযুক্তি ইত্যাদির অভাব রয়েছে।
  • ওয়াগনের অভাব – পণ্য পরিবহণের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক ওয়াগন যথেষ্ট পরিমাণে পাওয়া যায় না। এই কারণে ব্যবসায়ীরা রেলপথের পরিবর্তে সড়কপথ ব্যবহার করতে বাধ্য হন।
  • ভাড়া ফাঁকি – ভারতীয় যাত্রীদের মাঝে রেলের ভাড়া ফাঁকি দেওয়ার প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। ফলে, যাত্রী পরিবহণের ক্ষেত্রে রেলের আয় সঠিকভাবে অর্জিত হয় না। পণ্য পরিবহণেও দুর্নীতি ঘটে, যা রেলের প্রকৃত আয় কমিয়ে দেয়।
  • জীবন ও সম্পত্তি সুরক্ষার অভাব – রেল দুর্ঘটনা, ট্রেনে ছিনতাই এবং ডাকাতির মতো ঘটনা প্রমাণ করে যে ভারতীয় রেলপথে যাত্রী সুরক্ষার অভাব রয়েছে, যা একটি গুরুতর সমস্যা।
  • রেলকর্মীর অভাব – ভারতীয় রেলপথে কর্মীসংখ্যার অভাব রয়েছে। একই কর্মীকে অতিরিক্ত সময় ধরে কাজ করানোর কারণে তাদের কর্মদক্ষতা হ্রাস পাচ্ছে এবং মনোবলে ঘাটতি দেখা যাচ্ছে।

জলপথের প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব কতখানি?

ভারতের রেলপথ ও সড়কপথের পাশাপাশি জলপথের গুরুত্বও অপরিসীম –

  • কম খরচ – জলপথ নির্মাণে তুলনামূলকভাবে কম খরচ হয়। লঞ্চঘাট বা বন্দর নির্মাণের জন্য এবং জলপথ পরিচালনার খরচ ছাড়া জলপথ সংরক্ষণে তেমন কোনো খরচ নেই। তাই জলপথ সবচেয়ে সস্তা পরিবহণ মাধ্যম।
  • মালপত্র এবং যাত্রী পরিবহণ – রেল ও সড়কপথের মতো জলপথেও ব্যাপক পরিমাণে পণ্য এবং যাত্রী পরিবহণ করা যায়। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবহণ মাধ্যম।
  • প্রতিরক্ষার কাজে – ভারতের উপকূলের দৈর্ঘ্য ৭৫১৬ কিমি। এই দীর্ঘ উপকূলভাগকে সুরক্ষিত রাখতে জলপথ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
  • জাতীয় আয়ে ভূমিকা – যাত্রী পরিবহণ, মালপত্র পরিবহণ, সম্পদ পরিবহণ এবং দেশি-বিদেশি পণ্য পরিবহণের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়, যা দেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করে।
  • ত্রাণ সরবরাহে – সুন্দরবন ও কেরলের ব্যাকওয়াটার অঞ্চলে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সময় (যেমন — আয়লা) জলপথে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ এবং উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। এভাবে জলপথের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ভারতের জলপথের শ্রেণিবিভাগ করো।

ভারতের জলপথকে দুটি ভাগে ভাগ করা যায় –

  • অভ্যন্তরীণ
  • সামুদ্রিক

অভ্যন্তরীণ জলপথ –

ভারতের নদী ও খালপথ নিয়ে অভ্যন্তরীণ জলপথ গড়ে উঠেছে। এর মোট দৈর্ঘ্য প্রায় 14,500 কিমি। এর মধ্যে প্রায় 5,200 কিমি নদীপথ এবং 4,000 কিমি খালপথে নৌ চলাচল করে। ছোটো বড়ো নৌকাও সব জলপথেই চলাচল করে।

নদীপথ –

ভারতের অভ্যন্তরীণ জলপথে নদনদীর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

  • গঙ্গা – গঙ্গা নদী মোহনা থেকে উত্তরপ্রদেশের কানপুর পর্যন্ত নৌ-পরিবহণযোগ্য। মোহনা থেকে পাটনা পর্যন্ত স্টিমার চলাচল করে।
  • ব্রহ্মপুত্র – এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ জলপথ।
  • অন্যান্য নদী – গোদাবরী, কৃষ্ণা, কাবেরী নদীগুলির সমভূমি প্রবাহ জলপথ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। গোয়ার জুয়ারি নদী ও মান্ডভি নদী দুটি নাব্য নদী এবং এই নদীগুলি জলপথ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

খালপথ –

গঙ্গার খাল (হরিদ্বার ও কানপুরের মধ্যে), কৃষ্ণা ও কাবেরীর মধ্যে বাকিংহাম খাল, ওডিশা ও কেরলের উপকূলীয় খাল, এবং সুন্দরবনের ইস্টার্ন ও সার্কুলার খাল বিখ্যাত।

সামুদ্রিক জলপথ –

উপকূলীয় ও সামুদ্রিক জলপথ এই শ্রেণীতে পড়ে। মূলত উপকূলীয় সুরক্ষা এবং বৈদেশিক বাণিজ্যের জন্য এই জলপথের গুরুত্ব খুব বেশি।

ভারতের জাতীয় জলপথ সম্পর্কে আলোচনা করো।

ভারতে বিভিন্ন জাতীয় জলপথ রয়েছে –

  • ১ নং জাতীয় জলপথ – গঙ্গা নদীর প্রবাহ পথকে ১ নম্বর জাতীয় জলপথের মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। এটি এলাহাবাদ থেকে হলদিয়া পর্যন্ত বিস্তৃত এবং এর দৈর্ঘ্য 1,620 কিমি।
  • ২ নং জাতীয় জলপথ – ব্রহ্মপুত্র নদীর ওপর সদিয়া থেকে বাংলাদেশ সীমান্ত পর্যন্ত প্রসারিত। এই জলপথের দৈর্ঘ্য 891 কিমি।
  • ৩ নং জাতীয় জলপথ – কেরলের কোট্টাপুরম থেকে কোল্লাম পর্যন্ত বিস্তৃত। এই জলপথের দৈর্ঘ্য 168 কিমি।
  • ৪ নং জাতীয় জলপথ – কাকিনাড়া থেকে পুদুচেরি পর্যন্ত প্রায় 1,095 কিমি দৈর্ঘ্য।
  • ৫ নং জাতীয় জলপথ – ওডিশা ও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে ব্রাহ্মণী নদী, পূর্ব উপকূলীয় খানা, মাতাই নদী ও মহানদী জলপথে 623 কিমি দীর্ঘ।
  • ৬ নং জাতীয় জলপথ – অসমের বরাক নদীর লখিমপুর থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত 121 কিমি দীর্ঘ।
ভারতের জলপথে পরিবহন ব্যবস্থা

ভারতের কয়েকটি খালপথের পরিচয় দাও।

ভারতে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ খালপথ রয়েছে, যা সেচ, যোগাযোগ এবং বাণিজ্যের জন্য ব্যবহৃত হয়। কিছু উল্লেখযোগ্য খালপথ হলো –

  • বাকিংহাম খাল – অন্ধ্রপ্রদেশ ও তামিলনাড়ুর মধ্যে অবস্থিত এই খালটি অন্ধ্রপ্রদেশের কৃষ্ণা বদ্বীপ অঞ্চলের কোম্মাম্বাকম খালপথের সাথে যুক্ত।
  • কাদাপ্পা-কুর্নুল খাল – এটি অন্ধ্রপ্রদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ খালপথ।
  • মেদিনীপুর খাল – পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুর জেলায় অবস্থিত।
  • দুর্গাপুর-ত্রিবেণী খাল – দামোদর উপত্যকায় অবস্থিত এই খালটি সেচ এবং শিল্পের জন্য ব্যবহৃত হয়।
  • সোন খাল – বিহারে অবস্থিত এবং প্রধানত সেচের জন্য ব্যবহৃত হয়।
  • গঙ্গা নদীর খাল – হরিদ্বার থেকে কানপুর পর্যন্ত বিস্তৃত।
  • ইস্টার্ন ও সার্কুলার খাল – সুন্দরবনে অবস্থিত, যা নৌপথের জন্য ব্যবহৃত হয়।
  • মালাবার উপকূলের খাল – মালাবার উপকূলে বিভিন্ন প্রাকৃতিক খাল রয়েছে, যেমন — আলাপুঝা থেকে কোচি পর্যন্ত ভেম্বনাদ কয়াল, যেখানে স্টিমার চলাচল করে।

ভারতের সামুদ্রিক জলপথের উল্লেখ করো।

ভারতে সামুদ্রিক জলপথ দুটি প্রধান ভাগে বিভক্ত –

  • উপকূলীয় জলপথ – ভারতের উপকূলভাগের দৈর্ঘ্য প্রায় 7516 কিমি। বঙ্গোপসাগর এবং আরব সাগরের উপকূলরেখা বরাবর এই দীর্ঘ জলপথে নৌকা, স্টিমার, এবং জাহাজ চলাচল করে। এই জলপথে প্রধানত পণ্য পরিবহন করা হয়। মুম্বাই থেকে গোয়া পর্যন্ত যাত্রীবাহী জাহাজ ও স্টিমার চলাচল করে। উপকূলীয় জলপথ ধরেই গুজরাট থেকে নুন পশ্চিমবঙ্গে আসে এবং ঝাড়খণ্ড, পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশার কয়লা দক্ষিণ ভারতে পাঠানো হয়।
  • আন্তর্জাতিক সামুদ্রিক জলপথ – ভারতের তিনটি দিক সমুদ্রবেষ্টিত হওয়ার কারণে, প্রাচীনকাল থেকেই আফ্রিকা, ইউরোপ, এবং পশ্চিম এশিয়ার সাথে ভারতের সমুদ্রপথে বাণিজ্য চলে আসছে। বর্তমানে ভারতের 13টি প্রধান বন্দর এবং 200টি মাঝারি ও ছোট বন্দর দ্বারা আন্তর্জাতিক জলপথে ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালিত হয়। এই 13টি প্রধান বন্দরের মাধ্যমে ভারতের জলপথের বহির্বাণিজ্যের 90 শতাংশ সম্পন্ন হয়। বছরে প্রায় 16,000 মালবাহী জাহাজ এই বন্দরগুলোতে যাতায়াত করে। 2013-14 সালে এই 13টি প্রধান বন্দর আন্তর্জাতিক জলপথে 55.54 কোটি টন পণ্য ওঠানো-নামানো করেছিল।

ভারতের জলপথের সুবিধাগুলি লেখো।

ভারতের জলপথের অনেকগুলি সুবিধা রয়েছে –

  • সুলভ পরিবহণ – জলপথ নির্মাণে তুলনামূলকভাবে কম খরচ হয় এবং এটি পণ্য পরিবহণের জন্য সুবিধাজনক। ফলে পৃথিবীর বহু স্থানে জলপথ পরিবহণ জনপ্রিয়।
  • অবাধ চলাচলের সুযোগ – সমুদ্র উপকূলবর্তী অঞ্চল ছাড়া উন্মুক্ত সমুদ্রে জাহাজগুলি অবাধে চলাচল করতে পারে।
  • পরিবহণ ব্যয় কম – জলপথ পৃথিবীর অন্যতম সস্তা পরিবহণ মাধ্যম। এজন্য মানুষ জলপথকে আরও বেশি করে পরিবহণের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করতে আগ্রহী।
  • বৈদেশিক বাণিজ্যের সুবিধা – সমুদ্রতীরবর্তী যে-কোনো দেশের সঙ্গে ভারতের জলপথের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সহজে পরিচালিত হয়। তাই, জলপথ আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে সর্বাধিক সুবিধা প্রদান করে।
  • ভারী পণ্য পরিবহণের সুবিধা – ইউনিট প্রতি পরিবহণ খরচ কম হওয়ায় ভারী পণ্য, যেমন লোহা ও ইস্পাত, সিমেন্ট প্রভৃতি জলপথে পরিবহণ করা সুবিধাজনক।

ভারতের জলপথের অসুবিধাগুলি কী কী?

ভারতের জলপথে পরিবহণের বেশ কিছু অসুবিধা রয়েছে –

  • ধীরগামিতা – জলপথে পরিবহণ খুব ধীর গতিতে হয়, তাই জরুরি ভিত্তিতে পণ্য বা যাত্রী পরিবহণের জন্য এটি উপযুক্ত নয়।
  • প্রতিকূল আবহাওয়া – ঘূর্ণিঝড়, প্রবল বৃষ্টিপাত ইত্যাদি কারণে জলপথ পরিবহণে বাধা সৃষ্টি হয়। জলোচ্ছ্বাসের সময় জাহাজ ডুবে গেলে প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা থাকে।
  • নাব্যতার সমস্যা – গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্রের মতো নদীগুলিতে পলি জমে নাব্যতা কমে যায়, যা জাহাজ চলাচলে অসুবিধা সৃষ্টি করে।
  • নিরাপত্তার সমস্যা – সামুদ্রিক জলপথে জাহাজগুলিকে একা চলতে হয়, যা জলদস্যুদের আক্রমণের ঝুঁকি বাড়ায়।

ভারতে বিমানপথের গুরুত্ব কতখানি?

ভারতে বিমানপথের গুরুত্ব অত্যন্ত বিশাল। নিচে এর কিছু প্রধান দিক আলোচনা করা হলো –

  • যাত্রী পরিবহণে – ভারতে বিমানপথ যাত্রীদের জন্য দ্রুততম পরিবহণের মাধ্যম। এর মাধ্যমে যাত্রীরা খুব দ্রুত এক স্থান থেকে অন্য স্থানে পৌঁছাতে পারেন, যা রেলপথ বা সড়কপথের তুলনায় অনেক কম সময়ে সম্ভব।
  • পণ্য পরিবহণে – হালকা এবং মূল্যবান পণ্য দ্রুত পরিবহণের জন্য বিমানপথের বিকল্প নেই। যেমন, ইলেকট্রনিক্স, ওষুধ, পচনশীল দ্রব্য ইত্যাদি পণ্য সহজেই বিমানে পরিবাহিত হয়। তবে, ভারী ও কম দামি পণ্য সাধারণত বিমানপথে পরিবাহিত হয় না।
  • বৈদেশিক বাণিজ্যে – বিমানপথ বৈদেশিক বাণিজ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। দামি ও হালকা পণ্য, যেমন রত্ন ও অলংকার, ঔষধ, পচনশীল দ্রব্য ইত্যাদি আমদানি ও রপ্তানি করতে বিমানপথ ব্যবহার করা হয়। এছাড়া, বিদেশে যাতায়াতের জন্যও বিমানপথ অত্যাবশ্যক।
  • ত্রাণ পরিবহণে – ভূমিকম্প, বন্যা, ঘূর্ণিঝড়ের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় দুর্গম এলাকায় ত্রাণ সামগ্রী দ্রুত পাঠানোর জন্য বিমানপথ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া, জরুরি চিকিৎসা, উদ্ধার কাজ এবং স্থানীয় জরিপে বিমানপথ ব্যবহৃত হয়।
  • প্রতিরক্ষার কাজে – ভারতের সুদীর্ঘ সীমান্তবর্তী অঞ্চলে বিমানপথের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। সীমান্তে নজরদারি, সেনা ও রসদ পাঠানো, জরুরি অবস্থা মোকাবিলা করা, এবং যুদ্ধের জন্য বিমানপথ ব্যবহৃত হয়।

বিমানপথের অসুবিধাগুলি কী কী?

বিমানপথের কিছু অসুবিধা রয়েছে, যা নিচে দেওয়া হলো –

  • ব্যয়বহুল – বিমানপথের পরিবহণ ব্যয় অত্যন্ত বেশি, যা সাধারণ মানুষের জন্য অনেক সময় ব্যয়বহুল হয়ে দাঁড়ায়।
  • ভারী পণ্য পরিবহণে অসুবিধা – বিমানপথে খুব ভারী পণ্য পরিবহণ করা কঠিন। সাধারণত হালকা ও উচ্চ মূল্যের পণ্যই বিমানপথে পরিবাহিত হয়।
  • ঝুঁকিপূর্ণ – যান্ত্রিক ত্রুটি, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, কুয়াশা, মেঘ, এবং ঘূর্ণিঝড়ের কারণে বিমান দুর্ঘটনার ঝুঁকি রয়েছে।
  • আবহাওয়ার প্রতিকূলতা – মেঘাচ্ছন্ন আকাশ, বৃষ্টিপাত, কুয়াশা, ধোঁয়াশা, এবং আগ্নেয়গিরির ছাই বিমান যাত্রায় বাধার সৃষ্টি করে, যা যাত্রা বিলম্বিত করে।

ভারতের পূর্ব উপকূলের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বন্দরের নাম করো।

ভারতের পূর্ব উপকূলের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বন্দর —

বন্দরকলকাতা-হলদিয়াপারাদীপবিশাখাপত্তনমএন্নোরচেন্নাইনিউ তুতিকোরিন
রাজ্যপশ্চিমবঙ্গওডিশাঅন্ধ্রপ্রদেশতামিলনাডুতামিলনাড়ুতামিলনাড়ু
পোতাশ্রয়কৃত্রিমস্বাভাবিকস্বাভাবিকস্বাভাবিককৃত্রিমকৃত্রিম
আমদানিকাগজ, অশোধিত তেল, লবণ, ওষুধ, কাঠ, রাসায়নিক দ্রব্যরাসায়নিক সার, ইস্পাত, খাদ্যশস্য, যন্ত্রপাতিঅশোধিত তেল, যন্ত্রপাতি, দীর্ঘ আঁশযুক্ত তুলো খাদ্যশস্য, সারঅশোধিত তেল, সার, কাগজঅশোধিত তেল, খাদ্যশস্য, নিউজপ্রিন্টরাসায়নিক দ্রব্য, অশোধিত তেল
রপ্তানিচা, পাটজাত দ্রব্য, লোহা ও ইস্পাত, চামড়াআকরিক লোহা, ম্যাঙ্গানিজ, কয়লা, কাঠআকরিক লোহা, সিমেন্ট, সুতিবস্ত্র, তৈলবীজ, মশলাকফি, মাছ, ম্যাঙ্গানিজচা, কফি, সুতিবস্ত্র, চর্মজাত দ্রব্য, আকরিক লোহাতুলো, সুতিবস্ত্র, মশলা, মাছ, কফি

ভারতের পশ্চিম উপকূলের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বন্দরের নাম করো।

ভারতের পশ্চিম উপকূলের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বন্দর —

বন্দরজওহরলাল নেহরুকান্ডলামুম্বাইমর্মাগাওনিউ ম্যাঙ্গালোরকোচি
রাজ্যমহারাষ্ট্রগুজরাতগোয়াকর্ণাটককেরল
পোতাশ্রয়স্বাভাবিকস্বাভাবিকস্বাভাবিকস্বাভাবিকস্বাভাবিকস্বাভাবিক
আমদানিঅশোধিত তেল, ভোজ্য তেল, দীর্ঘ আঁশযুক্ত তুলো, রাসায়নিক দ্রব্যঅশোধিত তেল, তরল অ্যামোনিয়া সার, দস্তা, লোহা ও ইস্পাতঅশোধিত তেল, দীর্ঘ আঁশযুক্ত তুলো, যন্ত্রপাতি, রাসায়নিক দ্রব্য, ওষুধ, নিউজপ্রিন্ট অশোধিত তেল, রাসায়নিক সার, লোহা ও ইস্পাত, ফসফোরিক অ্যাসিডঅশোধিত তেল, রাসায়নিক সার, তরল অ্যামোনিয়া অশোধিত তেল, কয়লা,রাসায়নিক সার, লোহা ও ইস্পাত, নিউজপ্রিন্ট
রপ্তানিসুতিবস্ত্ৰ, চিনি, মশলা, ম্যাঙ্গানিজচাল, বার্লি, লবণসুতিবস্ত্র, চামড়া, মশলা, অভ্র, আকরিক লোহাআকরিক লোহা, চিনি, লবণ,  চিংড়িমাছআকরিক লোহা, কফি, গ্র্যানাইট, কাঠচা, কাজুবাদাম, কফি, মশলা, মাছ

ভারতে আকাশপথে পরিবহণের ধারণা দাও।

ভারতে বিমান চলাচল শুরু হয় 1911 সালে। আকাশপথ বা বিমানপথ বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত, দ্রুতগতির এবং আরামদায়ক পরিবহণ ব্যবস্থা। ভারতে দুই ধরনের বিমানপথ রয়েছে –

  • অন্তর্দেশীয় বা জাতীয় বিমানপথ।
  • আন্তর্জাতিক বিমানপথ। বর্তমানে ভারতে ছোট-বড় প্রায় 450টি বিমানবন্দর রয়েছে, যার মধ্যে 28টি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। অন্তর্দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক উভয় বিমানপথকে নিয়ন্ত্রণ করে এয়ারপোর্ট অথরিটি অব ইন্ডিয়া। 2014-15 সালে বিমান পরিবহণে 19.01 কোটি যাত্রী যাতায়াত করেছে।

ভারতের আন্তর্জাতিক বিমান পরিবহণ সম্পর্কে লেখো।

বর্তমানে ভারতের সাথে শতাধিক দেশের দ্বিপাক্ষিক চুক্তি রয়েছে। ভারত থেকে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যেমন সৌদি আরব, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস, কানাডা, ব্রাজিল, যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, মিশর, বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটান প্রভৃতি দেশের সাথে আন্তর্জাতিক বিমানপথে যোগাযোগ রয়েছে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বিমান সংস্থার বিমান ভারতে যাত্রী পরিবহণ করে, যেমন — বিমান বাংলাদেশ, ডুক এয়ার, জাপান এয়ারলাইন্স, ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ, এয়ার ফ্রান্স প্রভৃতি সংস্থা ভারতে যাত্রী নিয়ে আসে এবং এখান থেকে যাত্রী নিয়ে যায়।

অন্তর্দেশীয় বিমানপথের ধারণা দাও।

ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের মধ্যে এবং প্রতিবেশী দেশগুলির মধ্যে যাত্রী ও পণ্য পরিবহণ করে এয়ার ইন্ডিয়া, জেট এয়ারওয়েজ, স্পাইসজেট, ইন্ডিগো, গো এয়ার, এবং ব্লু ডার্ট এভিয়েশন প্রভৃতি সংস্থা। এছাড়া, সরকারি ‘পবন হংস’ সংস্থাটি বিভিন্ন জায়গায় হেলিকপ্টার পরিসেবা প্রদান করে।

ভারতে রজ্জুপথের গুরুত্ব লেখো।

ভারতে রজ্জুপথের গুরুত্ব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষত দুর্গম ও পার্বত্য অঞ্চলে। এর মাধ্যমে যোগাযোগের পাশাপাশি বিভিন্ন কার্যক্রমও সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হয়। প্রধান কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক নিচে তুলে ধরা হলো –

  • যোগাযোগ ব্যবস্থা – দুর্গম ও পার্বত্য অঞ্চলে সড়ক ও রেলপথের অপ্রাপ্যতায় রজ্জুপথের মাধ্যমে যোগাযোগ বজায় রাখা হয়।
  • কয়লা পরিবহণ – কয়লাখনি অঞ্চল থেকে কয়লা উত্তোলন করে রজ্জুপথের মাধ্যমে অন্যান্য স্থানে পাঠানো হয়।
  • পণ্য ও যাত্রী পরিবহণ – যেসব অঞ্চলে সড়ক বা রেল যোগাযোগ নেই, সেসব এলাকায় পণ্য ও যাত্রী পরিবহণে রজ্জুপথ অত্যন্ত কার্যকর।
  • পর্যটন ক্ষেত্রে – পার্বত্য পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে বিনোদনমূলক ভ্রমণের জন্য রজ্জুপথের ব্যবহার দেখা যায়।
  • ত্রাণ সরবরাহ – দুর্গম অঞ্চলে দুর্যোগ বা বিপর্যয়ের সময় ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছাতে রজ্জুপথ ব্যবহার করা হয়।
  • জরুরি সামগ্রী পরিবহণ – রজ্জুপথের সাহায্যে দুর্গম অঞ্চলে খাদ্য, ওষুধ, ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী সহজে পাঠানো যায়।

ভারতের কয়েকটি রজ্জুপথের নাম করো।

ভারতে প্রায় 100টিরও বেশি রজ্জুপথ রয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য রজ্জুপথ হলো –

  • ঝরিয়া কয়লাখনি রজ্জুপথ – পৃথিবীর অন্যতম দ্রুতগতির রজ্জুপথটি ঝাড়খণ্ডের ঝরিয়া কয়লাখনি অঞ্চলে অবস্থিত, যার দৈর্ঘ্য প্রায় 30 কিমি।
  • দার্জিলিং রজ্জুপথ – 1968 সালে দার্জিলিং – এ 4 কিমি দীর্ঘ রজ্জুপথ নির্মাণ করা হয়, যা যাত্রী ও পণ্য পরিবহণে ব্যবহৃত হয়।
  • চেরাপুঞ্জি-শিলং রজ্জুপথ – মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জি ও শিলং অঞ্চলে রজ্জুপথের মাধ্যমে যোগাযোগ করা হয়।
  • তাওয়াং রজ্জুপথ – অরুণাচল প্রদেশের তাওয়াং-এ 1.2 কিমি দীর্ঘ একটি রজ্জুপথ সম্প্রতি চালু হয়েছে।
  • অন্যান্য রজ্জুপথ – রাজগির, মুসৌরি, সিমলা, নৈনিতাল, দক্ষিণ ভারতের আনাইমালাই পার্বত্য অঞ্চল এবং মধ্যপ্রদেশের অমরকণ্টক পাহাড়েও রজ্জুপথের ব্যবহার দেখা যায়।
ভারতের কয়েকটি রজ্জুপথের নাম করো।

পাইপলাইন বা নলপথ সম্পর্কে কী জান?

পাইপলাইন বা নলপথ হল একটি ব্যবস্থাপনা যা প্রধানত গ্যাস এবং তরল পদার্থ পরিবহণের জন্য ব্যবহৃত হয়। একবার স্থাপিত হলে পাইপলাইনের রক্ষণাবেক্ষণ খরচ সাধারণত কম হয়। শহরাঞ্চলে জল ও গ্যাস পরিবহণে এটি অত্যন্ত কার্যকর। ভারতে প্রথম পাইপলাইন চালু হয় 1956 সালে ডিগবয় থেকে তিনসুকিয়া পর্যন্ত 28 কিমি দীর্ঘ একটি নলপথের মাধ্যমে। বর্তমানে ভারতের সক্রিয় পাইপলাইনগুলি হল —

  • নাহারকাটিয়া-নুনমাটি-বারাউনি নলপথ – 1167 কিমি দীর্ঘ এই পাইপলাইন নাহারকাটিয়া থেকে বিহারের বারাউনি পর্যন্ত অশোধিত খনিজ তেল পরিবহণের জন্য ব্যবহৃত হয়। বর্তমানে এটি কানপুর ও হলদিয়া পর্যন্ত প্রসারিত।
  • বম্বে হাই-মুম্বাই-আংক্লেশ্বর-কয়ালি নলপথ – এই পাইপলাইন বম্বে হাই থেকে মুম্বাই এবং আংক্লেশ্বর থেকে কয়ালি শোধনাগারে খনিজ তেল পরিবহণ করে।
  • সালারা-কয়ালি-মথুরা নলপথ – 1256 কিমি দীর্ঘ এই পাইপলাইন গুজরাটের সালারা থেকে উত্তরপ্রদেশের মথুরা পর্যন্ত খনিজ তেল পরিবহণ করে।
  • হাজিরা-বিজাপুর-জগদীশপুর গ্যাস নলপথ – 1750 কিমি দীর্ঘ এই গ্যাস পাইপলাইনের মাধ্যমে GAIL গ্যাস সরবরাহ করে।
  • জামনগর-লোনি এলপিজি নলপথ – GAIL – এর 1269 কিমি দীর্ঘ এই পাইপলাইনে তরল পেট্রোলিয়াম গ্যাস সরবরাহ করা হয়।

পাতালরেলের গুরুত্ব কতখানি?

পাতালরেল হল ভূগর্ভ দিয়ে চলা রেল। এটি মহানগর জীবনে গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি যানজট মুক্ত এবং পরিবেশবান্ধব একটি পরিবহণ ব্যবস্থা। পাতালরেলের প্রধান সুবিধাগুলি হল —

  • যানজট মুক্ত – পাতালরেল নিজস্ব রেলপথে চলে, তাই যানজটের কোনো প্রশ্নই আসে না।
  • দূষণহীন – বিদ্যুৎচালিত হওয়ায় পাতালরেল দূষণ মুক্ত।
  • জমি অধিগ্রহণের প্রয়োজন কম – অধিকাংশ পাতালরেল মাটির নিচ দিয়ে চলে, তাই জমি অধিগ্রহণের প্রয়োজন হয় না।
  • নির্ধারিত সময় মেনে চলা – পাতালরেল অত্যন্ত নির্দিষ্ট সময় মেনে চলে, যা সড়ক পরিবহণের তুলনায় অনেক বেশি সুশৃঙ্খল।
  • আরামদায়ক – পাতালরেলের অধিকাংশ স্টেশন এবং কোচগুলি বাতানুকূল, ফলে যাত্রীদের জন্য আরামদায়ক যাতায়াতের সুযোগ থাকে।
ভারতের পাতালরেল

ভারতের কয়েকটি পাতাল রেলের পরিচয় দাও।

ভারতের কয়েকটি পাতাল রেলের পরিচয় –

  • কলকাতা মেট্রো রেল – ১৯৮৪ সালে কলকাতায় প্রথম মেট্রো রেল চালু হয়। বর্তমানে নোয়াপাড়া থেকে গড়িয়ার কাছে কবি সুভাস পর্যন্ত ২৭ কিমি পথে এই রেল চলাচল করছে। এই রেলপথে ২৪টি স্টেশন রয়েছে। প্রতিদিন প্রায় সাড়ে ৬ লক্ষ যাত্রী বহন করে।
  • দিল্লি মেট্রো রেল – ২০০২ সালের ২৪ ডিসেম্বর থেকে দিল্লি মেট্রো চালু হয়। এই রেলের দৈর্ঘ্য ১৯৪ কিমি এবং এতে ১৩২টি স্টেশন রয়েছে। ২০১৪ সালের ৪ সেপ্টেম্বর দিল্লি মেট্রো প্রায় ২৮.৮৭ লক্ষ যাত্রী বহন করেছিল।
  • বেঙ্গালুরু মেট্রো রেল – স্থানীয়ভাবে এই রেলকে নাম্মা (Namma) মেট্রো বলা হয়। ২০১১ সালের ২০ অক্টোবর এই রেল চালু হয়। প্রথম পর্যায়ে বেঙ্গালুরু মেট্রো রেল ১৯ কিমি দীর্ঘ পথে প্রতিদিন প্রায় ৫০,০০০ যাত্রী পরিবহণ করে। এছাড়া, জয়পুর, গুরগাঁও, চেন্নাই ও মুম্বাই শহরেও মেট্রো পরিষেবা চালু হয়েছে।

যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে মোবাইল ফোনের গুরুত্ব কতখানি?

আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থায় মোবাইল ফোন একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম।

  • মোবাইল ফোন মানুষ সর্বত্র বহন করতে পারে, তাই এর গুরুত্ব অনেক বেশি।
  • মোবাইল ফোনের মাধ্যমে যে – কোনো সময়, প্রায় যে – কোনো স্থান থেকে কথা বলা বা যোগাযোগ করা যায়।
  • মোবাইল ফোনের মাধ্যমে মোবাইল ব্যাংকিং, রেলের টিকিট কাটা, ছবি ও তথ্যের আদান-প্রদান করা হয়।
  • মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ইন্টারনেট সংযোগ রাখা যায়, যা যে – কোনো মুহূর্তে যে – কোনো তথ্য গ্রহণের সুবিধা দেয়।
  • মোবাইল ফোন ব্যবহার করে পৃথিবীপৃষ্ঠে নিজের অবস্থান দেখা যায়, যা GPS হিসেবে পরিচিত।
  • বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সঙ্গে আলাপ-আলোচনা, ইত্যাদি করার জন্য মোবাইলে SMS, হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুক, টুইটার ইত্যাদি ব্যবহার করা যায়, যা এর ব্যবহারযোগ্যতা আরও বাড়িয়েছে।

ইন্টারনেট কী? এর ব্যাবহারিক গুরুত্ব কতখানি?

সমগ্র পৃথিবীর কম্পিউটার, ল্যাপটপ, পামটপ, মোবাইল ফোন যেগুলি যে ব্যবস্থার মাধ্যমে পরস্পর যুক্ত থাকে, তাকে ইন্টারনেট বা অন্তর্জাল বলা হয়।

ব্যবহারিক গুরুত্ব –

  • এর মাধ্যমে পৃথিবীর যে – কোনো প্রান্ত থেকে অত্যন্ত দ্রুত তথ্যের আদান-প্রদান করা যায়।
  • এর মাধ্যমে নেট ব্যাংকিং, ইমেল, চ্যাটিং, তথ্য সংগ্রহ, প্রেরণ, তথ্য অনুসন্ধান প্রভৃতি কাজ করা যায়।
  • দূরশিক্ষা এবং টেলিমেডিসিন ইন্টারনেটের মাধ্যমে সম্ভব।
  • বর্তমানে সারা পৃথিবীর মানুষ ফেসবুক, টুইটার, হোয়াটসঅ্যাপ, গুগল প্লাস, ইনস্টাগ্রাম প্রভৃতি সোশ্যাল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করছে।

ভারতে মোবাইল ফোনের ব্যবহার খুব বেশি হলেও ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা কিছুটা কম। ২০১৫ সালে ভারতে প্রায় ৩০০ মিলিয়ন ইন্টারনেট সংযোগ ছিল। আগামী দুবছরে এই সংখ্যা ৫০০ মিলিয়নে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে সৌরবিদ্যুৎ চালিত Wi-Fi ব্যবস্থা এবং উন্নত ফাইবার কেবল ব্যবহার করা হচ্ছে।

পরিবহণ ও যোগাযোগ ব্যবস্থার পার্থক্য লেখো।

পরিবহণ ও যোগাযোগ ব্যবস্থার পার্থক্যগুলি হল –

বিষয়পরিবহণ ব্যবস্থাযোগাযোগ ব্যবস্থা
প্রকৃতিযাত্রী বা পণ্য চলাচলের মাধ্যমকে পরিবহণ বলে।স্থান পরিবর্তন না করে সংবাদ, তথ্য প্রযুক্তির আদানপ্রদান হল যোগাযোগ।
মাধ্যমরেলগাড়ি, মোটরগাড়ি, জাহাজ, স্টিমার, বিমান, সাইকেল প্রভৃতি হল পরিবংশের মাধ্যম।টেলিফোন, রেডিয়ো, ইনটারনেট, মোবাইল ফোন, সংবাদপত্র হল যোগাযোগের মাধ্যম।
সময়পরিবহণে সময় বেশি লাগে।এই যোগাযোগ মুহূর্তের মধ্যে করা সম্ভব।
খরচপরিবহণের খরচ বেশি হয়।তুলনামূলকভাবে কম খরচে করা সম্ভব।

সড়কপথ ও রেলপথের পার্থক্য লেখো।

সড়কপথ ও রেলপথের পার্থক্যগুলি হল –

বিষয়সড়কপথরেলপথ
নির্মাণ ব্যয়নির্মাণ ব্যয় রেলপথ থেকে কম।নির্মাণ ব্যয় সড়কপথ থেকে বেশি।
দ্রুততাসড়কপথ মাঝারি দ্রুতগামী।রেলপথ দ্রুতগামী।
পরিবহণের প্রকৃতিসড়কপথের মাধ্যমে হালকা এবং মাঝারি পণ্য দ্রব্য পরিবাহিত হয়।রেলপথের মাধ্যমে মাঝারি থেকে ভারী দ্রব্য বাহিত হয়।
পরিমাণসড়কপথের মাধ্যমে একসাথে স্বল্প পণ্য পরিবহণ করা যায়।রেলপথের সাহায্যে একসাথে প্রচুর পণ্য পরিবাহিত হয়।
পরিবহণ ব্যয়সড়কপথে পরিবহণ ব্যয় যথেষ্ট বেশি।রেলপথে পরিবহণ ব্যয় যথেষ্ট কম।

জলপথ ও আকাশপথের পার্থক্য লেখো।

জলপথ ও আকাশপথের পার্থক্যগুলি হল –

বিষয়জলপথআকাশপথ
নির্মাণ ব্যয়জলপথ নির্মাণে ব্যয় নেই, কিন্তু বন্দর নির্মাণে খরচ যথেষ্ট।আকাশপথ নির্মাণে ব্যয় নেই, কিন্তু বিমানবন্দর নির্মাণ ব্যয় বহুল।
দ্রুততাপরিবহণ মাধ্যমের মধ্যে সবচেয়ে ধীর গতির।পরিবহণ মাধ্যমের মধ্যে সবচেয়ে দ্রুত গতির।
পরিবহণের প্রকৃতিপৃথিবীর সর্বাধিক ভারী দ্রব্য জলপথের মাধ্যমে পরিবাহিত হয়।পৃথিবীর সবচেয়ে দামি, হালকা, পচনশীল দ্রব্য বাহিত হয়।
পরিবহণ ব্যয়সব ধরনের পরিবহণের মধ্যে জলপথে পরিবহণ ব্যয় সবচেয়ে কম।সব ধরনের পরিবহণের মধ্যে আকাশপথে পরিবহণ ব্যয় সবচেয়ে বেশি।

এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের ষষ্ঠ অধ্যায় “ভারতের অর্থনৈতিক পরিবেশ”-এর ‘ভারতের জনসংখ্যা’ অংশ থেকে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাখ্যামূলক প্রশ্ন-উত্তর নিয়ে আলোচনা করেছি। এসব প্রশ্ন মাধ্যমিক ও প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য অত্যন্ত সহায়ক হতে পারে, কারণ এ ধরনের প্রশ্ন প্রায়ই পরীক্ষায় আসে। আশা করি, এই পোস্টটি আপনার পড়াশোনার প্রস্তুতিতে সহায়ক হয়েছে। যদি কোনো প্রশ্ন থাকে বা কোনো বিষয় পরিষ্কার না হয়, টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমি উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবো। এছাড়া, আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্টটি শেয়ার করতে ভুলবেন না, যাদের এটি কাজে লাগতে পারে। ধন্যবাদ!

Share via:

মন্তব্য করুন