আজকে আমরা আমাদের আর্টিকেলে মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞানের প্রথম অধ্যায় “জীবজগতে নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয়” অধ্যায়ের ‘প্রাণীদের সাড়াপ্রদান ও ভৌত সমন্বয়‘ বিভাগের উপ-অধ্যায় ‘স্নায়ুতন্ত্র‘ -এর সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা করবো। এই প্রশ্নগুলো মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য বা আপনি যদি প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি নেন, তাহলে আপনার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই প্রশ্নগুলি মাধ্যমিক পরীক্ষা বা চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি যে এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হবে।

স্নায়বিক নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয়; স্নায়বিক পথ; স্নায়ুকোশ, নিউরোগ্লিয়া এবং স্নায়ু; স্নায়ুর প্রকারভেদ; স্নায়ুগ্রন্থি; স্নায়ুসন্নিধি
স্নায়ুতন্ত্র কাকে বলে?
স্নায়ুকোশ বা নিউরোন দিয়ে গঠিত যে তন্ত্র প্রাণীদেহে উদ্দীপনা গ্রহণ ও উদ্দীপনায় সাড়াপ্রদানের মাধ্যমে পারিপার্শ্বিক পরিবেশের পরিবর্তনের সাপেক্ষে দেহের জৈবিক কার্যাবলির সামঞ্জস্য রক্ষা এবং দেহের বিভিন্ন অঙ্গ ও তন্ত্রের মধ্যে সমন্বয়সাধন করে, তাকে স্নায়ুতন্ত্র বা নার্ভতন্ত্র বলে।
সমন্বয় বা কোঅরডিনেশন বলতে কী বোঝ? একটি করে ভৌত ও রাসায়নিক সমন্বায়কের নাম লেখো।
সমন্বয় – বদেহের নানান অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ও বিভিন্ন তন্ত্রের পারস্পরিক কার্যাবলি নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে দেহের বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ পরিবেশের সমতাবিধানকে সমন্বয় বা কোঅরডিনেশন বলে।
ভৌত ও রাসায়নিক সমন্বায়ক – প্রাণীদের ক্ষেত্রে স্নায়ুতন্ত্র হল ভৌত সমন্বায়ক ও হরমোন হল রাসায়নিক সমন্বয়ক।
স্নায়ুতন্ত্রকে ভৌত সমন্বায়ক বলে কেন?
স্নায়ু, মস্তিষ্ক, সুষুম্নাকাণ্ড জ্ঞানেন্দ্রিয় প্রভৃতি কতকগুলি ভৌত গঠন দ্বারা দেহের নানা কাজের সমন্বয় ঘটায় স্নায়ুতন্ত্র। তা ছাড়া বাইরের পরিবেশের সঙ্গেও তা দেহকে মানিয়ে চলতে সাহায্য করে। এজন্য স্নায়ুতন্ত্রকে ভৌত সমন্বায়ক বলা হয়।
বহুকোশী উন্নত প্রাণীদের স্নায়ুতন্ত্র না থাকলে কী হত?
বহুকোশী জীবের দেহ বিভিন্ন অঙ্গ ও তন্ত্র নিয়ে গঠিত। বিভিন্ন অঙ্গের ও তন্ত্রের মধ্যে কার্যগত সমন্বয়সাধন নিয়ন্ত্রণ করে স্নায়ুতন্ত্র। ফলে এই তন্ত্র পরিবেশ ও দেহের মধ্যে সমন্বয়সাধনে সাহায্য করে। যদি স্নায়ুতন্ত্র না থাকত তাহলে দেহের বিভিন্ন অঙ্গের ও তন্ত্রের মধ্যে কার্যগত সমন্বয়সাধন ঘটত না এবং দেহতন্ত্র বিনষ্ট হত।
স্নায়বিক পথ কী? একটি শব্দচিত্র দ্বারা দেখাও।
স্নায়বিক পথ –
স্নায়ুতন্ত্রের যে নির্দিষ্ট পথে উদ্দীপনা গ্রহণ, বিশ্লেষণ ও সাড়াপ্রদান ঘটে থাকে, তাকে স্নায়বিক পথ বলে।
স্নায়বিক পথের শব্দচিত্র –
এই পথটি হল –
উদ্দীপক → গ্রাহক → স্নায়ুকেন্দ্র → কারক → সাড়াপ্রদান
গ্রাহক বা রিসেপটর কাকে বলে?
স্নায়ুতন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত যেসব কোশ বা অঙ্গসমূহ বাহ্যিক বা অভ্যন্তরীণ উদ্দীপক দ্বারা প্রভাবিত হয়ে উদ্দীপনা গ্রহণ করে, তাদের গ্রাহক বলে।
কারক কাকে বলে?
দেহের যেসব অঙ্গ (যেমন – পেশি, গ্রন্থি) উদ্দীপকের প্রভাবে উদ্দীপিত হয় এবং নির্দিষ্ট প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে, তাদের কারক (effector) বলে।
বাড়িতে কেউ ডোরবেল বাজালে আমাদের সাড়াপ্রদান পদ্ধতিটি কীভাবে ঘটে?
অথবা, দরজায় ঘণ্টা বাজার শব্দ শুনে তুমি যেভাবে দরজা খুলবে, সেই স্নায়বিক পথটি একটি শব্দছকের মাধ্যমে দেখাও।
বাড়িতে দরজায় কেউ বেল বাজালে তা কান দিয়ে অনুভব করি ও তারপর দরজা খুলে দিই। এক্ষেত্রে কানে উপস্থিত গ্রাহক শব্দের উদ্দীপনা গ্রহণ করে স্নায়ুর দ্বারা স্নায়ুকেন্দ্রে পাঠায়। স্নায়ুকেন্দ্র তা বিশ্লেষণ করে দেহে (হাত, পা -এর পেশি) তার প্রতিক্রিয়া পাঠায় ও আমরা দরজা খুলি।

দৌড়োনোর সময় স্নায়ুতন্ত্রের সমন্বয় কীভাবে ঘটে?
দৌড়োনোর সময়ে স্নায়তন্ত্রের দ্বারা বিভিন্ন উদ্দীপনা ও প্রতিক্রিয়ার মধ্যে সমন্বয়সাধন ঘটে। যথা –
- দৌড়োনোর মানসিক প্রস্তুতি নেওয়ার সময়ই আমাদের স্নায়ুতন্ত্র সক্রিয় হয়ে হৃৎস্পন্দন, রক্তচাপ প্রাথমিকভাবে বাড়িয়ে দেয়, ফলে পায়ের পেশিতে প্রাথমিকভাবে O2 ও গ্লুকোজ সরবরাহ বৃদ্ধি পায়।
- দৌড়ের সময় মস্তিষ্ক নির্দিষ্ট ছন্দে দেহপেশির চলন নিয়ন্ত্রণ করে।
- এই সময় মস্তিষ্ক, রক্তের O2 -এর মাত্রা হ্রাস ও CO2 -এর মাত্রা বৃদ্ধি শনাক্ত করে এবং মস্তিষ্ক ফুসফুস, পঞ্জরাস্থি পেশি ও মধ্যচ্ছদাতে আজ্ঞাবহ স্নায়ু উদ্দীপনা পৌঁছে দেয়। ফলে ফুসফুস দ্রুত সংকুচিত ও প্রসারিত হয়ে গভীরভাবে শ্বাসগ্রহণে সাহায্য করে। পঞ্জরাস্থি পেশি ও মধ্যচ্ছদা, ফুসফুসের সংকোচন-প্রসারণে সহায়তা করে।
- স্নায়ুতন্ত্র হৃৎপিণ্ডেরও স্পন্দন বৃদ্ধি করে, ফলে দ্রুত পেশিতে O2 ও গ্লুকোজ পৌঁছোয়।
নিউরোনকে স্নায়ুতন্ত্রের গঠনগত ও কার্যগত একক কেন বলা হয়?
স্নায়ুতন্ত্রের বিভিন্ন অংশ, যেমন – মস্তিষ্ক ও সুষুম্নাকাণ্ড নিউরোন দ্বারা গঠিত হয়, তাই এটি গঠনগত একক। আবার, স্নায়ুতন্ত্রের প্রধান কাজ, অর্থাৎ উদ্দীপনা প্রেরণ ও বিভিন্ন কাজের সমন্বয়সাধনও নিউরোনের মাধ্যমেই সম্পন্ন হয়। তাই এটি কার্যগত একক।
অ্যাক্সন কী? এর দুটি গঠনগত বৈশিষ্ট্য লেখো।
অ্যাক্সন –
নিউরোন বা স্নায়ুকোশের লম্বা বহির্বাহী প্রবর্ধককে অ্যাক্সন বলে।
অ্যাক্সনের গঠনগত বৈশিষ্ট্য –
- অ্যাক্সনের সাইটোপ্লাজমকে অ্যাক্সোপ্লাজম বলে।
- অ্যাক্সনের বাইরে মায়েলিন আবরণী থাকে ও অ্যাক্সন প্রান্তে এন্ডব্রাশ গঠন দেখা যায়।
ডেনড্রন কী? এর দুটি গঠনগত বৈশিষ্ট্য লেখো।
ডেনড্রন –
নিউরোন বা স্নায়ুকোশের ছোটো অন্তর্বাহী প্রবর্ধককে ডেনড্রন বলে।
ডেনড্রনের গঠনগত বৈশিষ্ট্য –
- ডেনড্রনে নিউরোপ্লাজম ও নিসল দানা থাকে।
- এদের সংখ্যা সাধারণত 3-5 টি হয় ও ডেনড্রনে মায়েলিন পর্দা থাকে না।
অ্যাক্সনের দুটি গঠনগত বৈশিষ্ট্য লেখো যা ডেনড্রনে অনুপস্থিত।
- অ্যাক্সনের বাইরে মায়েলিন আবরণী থাকে যা ডেনড্রনে থাকে না।
- ডেনড্রন ক্ষুদ্র ও শাখাযুক্ত হয়, অ্যাক্সন লম্বা ও সাধারণত শাখাবিহীন হয়।
নিসল দানা কী? এটি কেন প্রয়োজনীয়?
নিসল দানা –
স্নায়ুকোশের কোশদেহের ও ডেনড্রনে সাইটোপ্লাজমে অমসৃণ এন্ডোপ্লাজমীয় জালিকা নির্মিত যে বৃহৎ দানাগুলি ছড়িয়ে থাকে তাদের নিসল দানা (nissl granule) বলে।
নিসল দানার প্রয়োজনীয়তা –
নিসল দানায় প্রোটিন, উৎসেচক, নিউরোট্রান্সমিটার ইত্যাদি সংশ্লেষ ঘটে থাকে।
নিউরোফাইব্রিল কী? এটি কেন প্রয়োজনীয়?
নিউরোফাইব্রিল –
নিউরোনের কোশদেহ, ডেনড্রন ও অ্যাক্সনে যে সূক্ষ্ম সুতোর মতো গঠন বিন্যস্ত থাকে, তাদের নিউরোফিলামেন্ট বলে। এই নিউরোফিলামেন্ট গুচ্ছকে একত্রে নিউরোফাইব্রিল বলে।
নিউরোফাইব্রিলের প্রয়োজনীয়তা –
এগুলি স্নায়ুকোশের গঠন বজায় রাখে, অ্যাক্সনের ব্যাসও পরিবর্তন করে থাকে।
স্নায়ুকোশ কেন বিভাজিত হতে পারে না?
কোশ বিভাজনের একটি অন্যতম প্রয়োজনীয় অঙ্গাণু হল সেন্ট্রোজোম। স্নায়ুকোশে সেন্ট্রোজোম থাকলেও তা নিষ্ক্রিয় হয়। এই কারণে স্নায়ুকোশ বা নিউরোন বিভাজিত হতে পারে না।
মায়েলিন পর্দা কী? এটি কেন প্রয়োজনীয়?
মায়েলিন পর্দা –
নিউরোন কোশের অ্যাক্সনের বাইরে সোয়ান কোশ অথবা অলিগোডেনড্রাইট কোশ নির্মিত ফ্যাট-জাতীয় পর্দাকে বলে মায়েলিন পর্দা বা মায়েলিন আবরণী।
মায়েলিন পর্দার প্রয়োজনীয়তা –
এটি অন্তরক আবরকরূপে কাজ করে এবং স্নায়ু উদ্দীপনার দ্রুত ও কার্যকরী পরিবহণে সাহায্য করে।
র্যানভিয়ারের পর্ব কাকে বলে? এর গুরুত্ব লেখো।
অথবা, অ্যাক্সন বরাবর খাঁজগুলিকে কী বলে? এদের প্রয়োজন সংক্ষেপে লেখা।
র্যানভিয়ারের পর্ব –
অ্যাক্সনের বাইরে মায়েলিন আবরণহীন অংশে নিউরিলেমা ও অ্যাক্সোলেমা যুক্ত হয়ে যে খাঁজ সৃষ্টি করে, তাকে র্যানভিয়ারের পর্ব বলে। এই স্থানে প্রচুর আয়ন চ্যানেল থাকে।
র্যানভিয়ারের পর্বের গুরুত্ব –
মায়েলিনযুক্ত, নিউরোনে উদ্দীপনা পরিবহণ লম্ফন দ্বারা ঘটে। র্যানভিয়ারের পর্বগুলি দিয়ে লাফিয়ে লাফিয়ে এই সলটেটরি পরিবহণ ঘটতে পারে। ফলে দ্রুত উদ্দীপনা পরিবহণ ঘটতে পারে।
নিউরোগ্লিয়া কাকে বলে?
নিউরোগ্লিয়া ধারক কোশ হিসেবে স্নায়ুতন্ত্রে উপস্থিত থাকে। কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রে স্নায়ুকোশের তুলনায় অধিক সংখ্যক নিউরোগ্লিয়া থাকে এবং প্রান্তীয় স্নায়ুতন্ত্রেও নিউরোগ্লিয়া বা গ্লিয়াল কোশ বর্তমান। নিউরোগ্লিয়া বিভিন্ন প্রকারের হয়। যথা – মাইক্রোগ্লিয়া, অলিগোডেনড্রোগ্লিয়া, অ্যাস্ট্রোসাইট। নিউরোগ্লিয়া উদ্দীপনা বা স্নায়ু-স্পন্দন পরিবহণে অক্ষম।
নিউরোগ্লিয়ার দুটি কাজ লেখো।
নিউরোগ্লিয়ার দুটি কাজ হল –
- সোয়ান কোশ নামক নিউরোগ্লিয়া মায়েলিন আবরণ তৈরি করে স্নায়ু উদ্দীপনার দ্রুত প্রবাহে সাহায্য করে।
- মাইক্রোগ্লিয়া নামক নিউরোগ্লিয়া রোগজীবাণুর আক্রমণ থেকে দেহকে রক্ষা করে।
সংজ্ঞাবহ বা অন্তর্বাহী নিউরোন কাকে বলে?
যে নিউরোন গ্রাহক থেকে উদ্দীপনা বা স্নায়ুস্পন্দন বহন করে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রে অর্থাৎ মস্তিষ্ক এবং সুষুম্নাকাণ্ডে প্রেরণ করে, তাকে সংজ্ঞাবহ বা অন্তর্বাহী নিউরোন বলে।
চেষ্টীয় নিউরোন বা বহির্বাহী নিউরোন কাকে বলে?
যে নিউরোন কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র, অর্থাৎ মস্তিষ্ক ও সুষুম্নাকাণ্ড থেকে স্নায়ু উদ্দীপনা বা স্নায়ুস্পন্দন পেশি ও গ্রন্থি, অর্থাৎ কারক অংশে প্রেরণ করে, তাকে চেষ্টীয় নিউরোন বা বহির্বাহী নিউরোন বলে।
অন্তর্বর্তী বা সংযোগকারী বা রিলে নিউরোন কাকে বলে?
যে বিশেষ প্রকার নিউরোন মস্তিষ্ক ও সুষুম্নাকাণ্ডে অবস্থিত থেকে সাধারণত সংজ্ঞাবহ ও চেষ্টীয় নিউরোনের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে, তাকে অন্তর্বর্তী নিউরোন বা রিলে নিউরোন বা সংযোগকারী নিউরোন বলে।
স্নায়ুতন্তু কাকে বলে?
নিউরোনের মায়েলিন আবৃত বা অনাবৃত অ্যাক্সনকে স্নায়ুতন্তু বলে। স্নায়ুগঠনকালে স্নায়ুতন্তুগুলির প্রত্যেকে পৃথকভাবে প্রথমে এন্ডোনিউরিয়াম দ্বারা ও পরে গুচ্ছরূপে পেরিনিউরিয়াম দ্বারা আবৃত হয়। এ ধরনের একাধিক গুচ্ছ পরিশেষে এপিনিউরিয়াম দ্বারা আবৃত হয়ে এক একটি স্নায়ু গঠন করে।
স্নায়ুর কাজ কী?
স্নায়ুর কাজগুলি হল –
- অন্তর্বাহী স্নায়ু রিসেপটর বা গ্রাহক থেকে উদ্দীপনা কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রে বহন করে এবং।
- বহির্বাহী স্নায়ু, কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র থেকে উদ্দীপনা ইফেকটরে বা কারকে বহন করে।
অ্যাফারেন্ট বা অন্তর্বাহী বা সংজ্ঞাবহ স্নায়ু কী?
যেসব স্নায়ু বিভিন্ন গ্রাহক থেকে উদ্দীপনা বহন করে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রে প্রেরণ করে, তাদের অন্তর্বাহী স্নায়ু বা সংজ্ঞাবহ স্নায়ু বা অ্যাফারেন্ট নার্ভ বলে। যেমন – অলফ্যাক্টরি, অপটিক, অডিটরি ইত্যাদি স্নায়ু।
অন্তর্বাহী বা সংজ্ঞাবহ স্নায়ুর বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো উদাহরণ দাও।
অন্তর্বাহী বা সংজ্ঞাবহ স্নায়ুর বৈশিষ্ট্য –
- অন্তর্বাহী স্নায়ু সেনসরি নিউরোন নিয়ে গঠিত।
- অন্তর্বাহী স্নায়ু রিসেপটর বা গ্রাহক থেকে উদ্দীপনা বহন করে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রে নিয়ে যায়।
অন্তর্বাহী বা সংজ্ঞাবহ স্নায়ুর উদাহরণ –
অপটিক স্নায়ু, অডিটরি স্নায়ু।
ইফারেন্ট বা বহির্বাহী বা চেষ্টীয় স্নায়ু কী?
যেসব স্নায়ু কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র থেকে পেশি, গ্রন্থি ইত্যাদি কারক অঙ্গে প্রয়োজনীয় নির্দেশ বা আজ্ঞা বহন করে, তাদের বহির্বাহী বা আজ্ঞাবহ বা চেষ্টীয় বা ইফারেন্ট নার্ভ বলে। যেমন – ট্রকলিয়ার এবং হাইপোগ্লসাল নার্ভ।
বহির্বাহী বা চেষ্টীয় স্নায়ুর বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো। উদাহরণ দাও।
বহির্বাহী বা চেষ্টীয় স্নায়ুর বৈশিষ্ট্য –
- বহির্বাহী স্নায়ু মোটর নিউরোন নিয়ে গঠিত।
- বহির্বাহী স্নায়ু কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র থেকে ইফেকটরে স্নায়ুস্পন্দন বহন করে নিয়ে যায়।
বহির্বাহী বা চেষ্টীয় স্নায়ুর উদাহরণ –
ট্রকলিয়ার ও হাইপোগ্লসাল স্নায়ু।
মিশ্র স্নায়ু বা মিক্সড নার্ভ কাকে বলে?
যেসব স্নায়ু সংজ্ঞাবহ এবং আজ্ঞাবহ দুই প্রকার নিউরোন দিয়ে গঠিত এবং উভয় দিকেই স্নায়ুর উদ্দীপনা বহন করতে পারে, তাদের মিশ্র স্নায়ু বা মিক্সড নার্ভ বলে। যেমন – ফেসিয়াল ও ভেগাস স্নায়ু।
মিশ্র স্নায়ুর বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো। উদাহরণ দাও।
মিশ্র স্নায়ুর বৈশিষ্ট্য –
- অন্তর্বাহী ও বহির্বাহী উভয় প্রকার স্নায়ুতন্তু দ্বারা গঠিত।
- এটি গ্রাহক থেকে উদ্দীপনা বহন করে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রে নিয়ে যায়, আবার কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র থেকে কারক অঙ্গে স্নায়ুস্পন্দন বহন করে নিয়ে যায়।
মিশ্র স্নায়ুর উদাহরণ –
ভেগাস নার্ভ, ফেসিয়াল নার্ভ।
নার্ভ গ্যাংলিয়ন বা স্নায়ুগ্রন্থি কাকে বলে?
স্নায়ুকোশের কোশদেহগুলি মিলিত হয়ে যোগকলা পরিবৃত যে গ্রন্থির সৃষ্টি করে, তাকে স্নায়ুগ্রন্থি বা নার্ভ গ্যাংলিয়ন বলে। অনেকগুলি কোশদেহ একত্রিত হওয়ায় এগুলি কিছুটা স্ফীত হয়।
স্নায়ুগ্রন্থির কাজগুলি লেখো।
স্নায়ুগ্রন্থির কাজগুলি হল –
- গ্যাংলিয়নগুলি গ্রাসনালী, পাচকগ্রন্থি, অশ্রুগ্রন্থি ইত্যাদির কাজ নিয়ন্ত্রণ করে।
- অমেরুদণ্ডী প্রাণীদের ক্ষেত্রে গ্যাংলিয়ন থেকে নিউরোহরমোন ক্ষরিত হয়।
নার্ভ ইমপালস্ বা স্নায়ুস্পন্দন কাকে বলে?
স্নায়ুকোশের ঝিল্লির উভয় পার্শ্বে আয়নের ঘনত্বের পরিবর্তন ঘটিয়ে যে বিশেষ তরঙ্গ এক স্নায়ুকোশ থেকে অন্য স্নায়ুকোশে প্রবাহিত হয়, তাকে নার্ভ ইমপালস্ বা স্নায়ুস্পন্দন বলে।
প্রান্তসন্নিকর্ষ বা সাইন্যাপস্ কী?
দুটি নিউরোনের মধ্যবর্তী ফাঁকযুক্ত যে সংযোগস্থলে একটি নিউরোন থেকে পরবর্তী নিউরোনে উদ্দীপনা বা স্নায়ুস্পন্দন প্রেরিত হয়, তাকে প্রান্তসন্নিকর্ষ বা সাইন্যাপস্ বা স্নায়ুসন্নিধি বলে। সাইন্যাপসের বার্তা প্রেরণকারী নিউরোনটিকে প্রিসাইন্যাপটিক নিউরোন ও বার্তা গ্রহণকারী নিউরোনটিকে পোস্টসাইন্যাপটিক নিউরোন বলে।
সাইন্যাপসের কার্যপদ্ধতি লেখো।
একটি নিউরোনের কোশদেহ থেকে উদ্দীপনা অ্যাক্সন দ্বারা অ্যাক্সনপ্রান্তে এসে পৌঁছোয়। সাইন্যাপটিক নবে ভেসিকল থেকে নির্গত নিউরোট্রান্সমিটার (যেমন – অ্যাসিটাইলকোলিন) সাইন্যাপসে অবস্থিত পরবর্তী নিউরোনের ডেনড্রনের গ্রাহক প্রান্তে আবদ্ধ হয় ও স্নায়ু উদ্দীপনা প্রেরণ করে।

সাইন্যাপসের গঠন লেখো।
সাইন্যাপস্ গঠনে সাধারণত একটি নিউরোনের অ্যাক্সনপ্রান্ত ও পরবর্তী নিউরোনের ডেনড্রনপ্রান্ত অংশ নেয়। প্রথমটি বা বার্তা প্রেরণকারী নিউরোনকে প্রি-সাইন্যাপটিক নিউরোন ও পরবর্তী বা বার্তা গ্রহণকারী নিউরোনকে পোস্ট-সাইন্যাপটিক নিউরোন বলে। প্রি-সাইন্যাপটিক নব ও পোস্ট-সাইন্যাপটিক ডেনড্রনপ্রান্ত মধ্যবর্তী ফাঁকা স্থানকে সাইন্যাপটিক ক্লেফট বলে।
প্রান্তসন্নিকর্ষ বিলম্ব কী?
সাইন্যাপস্ অংশে একটি নিউরোন থেকে পরবর্তী নিউরোনে স্নায়ু উদ্দীপনা প্রবাহিত হতে যে সময় প্রয়োজন তাকে প্রান্তসন্নিকর্ষ বিলম্ব বা সাইন্যাপটিক ডিলে বলে।
নিউরোট্রান্সমিটার কী? উদাহরণ দাও।
নিউরোট্রান্সমিটার –
স্নায়ুকোশের অ্যাক্সন প্রান্ত থেকে নির্গত যে উপাদান স্নায়ু উদ্দীপনাকে পরবর্তী স্নায়ুকোশে পৌঁছে দেয়, তাকে নিউরোট্রান্সমিটার বলে। এরা একপ্রকার রাসায়নিক বার্তাবাহক যা প্রান্তসন্নিধি পার হয়ে পরবর্তী নিউরোনের ডেনড্রনে গিয়ে কাজ করে থাকে।
নিউরোট্রান্সমিটারের উদাহরণ –
অ্যাসিটাইলকোলিন, ডোপামিন, নরএপিনেফ্রিন প্রভৃতি।
অ্যাসিটাইলকোলিনের কাজ লেখো।
অ্যাসিটাইলকোলিনের কাজ হল –
- এটি একটি স্নায়ু থেকে পরবর্তী স্নায়ুতে উদ্দীপনা প্রেরণ করে থাকে।
- এটি স্নায়ু পেশি সন্ধিতে নির্গত হলে পেশির সংকোচন প্রসারণ নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।
নিউরোন ও নিউরোগ্লিয়ার দুটি পার্থক্য উল্লেখ করো।
নিউরোন ও নিউরোগ্লিয়া -এর মধ্যে পার্থক্যগুলি হল –
বিষয় | নিউরোন | নিউরোগ্লিয়া |
স্নায়ুস্পন্দন পরিবহণ | সক্ষম। | অক্ষম। |
কাজ | স্নায়ুস্পন্দনের পরিবহণ ও দেহের বিভিন্ন অংশের মধ্যে সমন্বয়সাধন। | স্নায়ুতন্ত্রের ধারক কোশ হিসেবে কাজ করে। |
বিভাজন ক্ষমতা | নেই। | আছে। |
হরমোন ও স্নায়ুতন্ত্রের কার্যপদ্ধতির দুটি পার্থক্য লেখো।
হরমোন ও স্নায়ুতন্ত্রের মধ্যে কার্যগত পার্থক্যগুলি হল –
বিষয় | হরমোন | স্নায়ুতন্ত্র |
ক্রিয়ার গতি | মন্থর। | দ্রুত। |
ক্রিয়ার প্রকৃতি | রাসায়নিক সমন্বয় সাধন করে। | ভৌত সমন্বয়সাধন করে। |
ডেনড্রন এবং অ্যাক্সন -এর মধ্যে দুটি গঠনগত এবং একটি কার্যগত পার্থক্য লেখো।
ডেনড্রন এবং অ্যাক্সন -এর মধ্যে দুটি গঠনগত এবং একটি কার্যগত পার্থক্য হল –
বিষয় | অ্যাক্সন | ডেনড্রন |
গঠনগত পার্থক্য | এগুলি শাখাবিহীন, নিসল দানা থাকে না। | শাখাপ্রশাখাযুক্ত, নিসল দানা থাকে। |
কার্যগত পার্থক্য | এটি স্নায়ুস্পন্দন প্রেরণ করে। | এটি স্নায়ুস্পন্দন গ্রহণ করে। |
সংজ্ঞাবহ নিউরোন এবং আজ্ঞাবহ নিউরোন -এর মধ্যে পার্থক্য লেখো।
সংজ্ঞাবহ নিউরোন ও আজ্ঞাবহ নিউরোন -এর মধ্যে পার্থক্যগুলি হল –
বিষয় | সংজ্ঞাবহ নিউরোন | আজ্ঞাবহ নিউরোন |
স্নায়ু উদ্দীপনা পরিবহণের অভিমুখ | গ্রাহক থেকে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের দিকে। | কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র থেকে কারকের দিকে। |
অ্যাক্সন -এর দৈর্ঘ্য | তুলনামূলকভাবে স্বল্প দীর্ঘ। | তুলনামূলকভাবে অধিক দীর্ঘ। |
ডেনড্রন -এর সংযুক্তি | গ্রাহকের সঙ্গে যুক্ত। | কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত। |
অ্যাক্সন -এর সংযুক্তি | কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত। | কারকের সঙ্গে যুক্ত। |
সংজ্ঞাবহ, আজ্ঞাবহ এবং মিশ্র স্নায়ুর মধ্যে পার্থক্য লেখো।
সংজ্ঞাবহ, আজ্ঞাবহ এবং মিশ্র স্নায়ুর মধ্যে পার্থক্যগুলি হল –
বিষয় | সংজ্ঞাবহ স্নায়ু | আজ্ঞাবহ স্নায়ু | মিশ্র স্নায়ু |
সংগঠক স্নায়ুর প্রকৃতি | অন্তর্মুখী। | বহির্মুখী। | উভমুখী। |
উদ্দীপনা পরিবহণের অভিমুখ | গ্রাহক থেকে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের দিকে। | কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র থেকে কারকের দিকে। | উভয় দিকে। |
উদাহরণ | অলফ্যাক্টরি, অপটিক, অডিটরি ইত্যাদি। | হাইপোগ্লসাল, ট্রক্লিয়ার ইত্যাদি। | ট্রাইজেমিনাল, ফেসিয়াল, ভেগাস ইত্যাদি। |
নিউরোট্রান্সমিটার ও নিউরোহরমোনের পার্থক্য লেখো।
নিউরোট্রান্সমিটার ও নিউরোহরমোনের মধ্যে পার্থক্যগুলি হল –
বিষয় | নিউরোট্রান্সমিটার | নিউরোহরমোন |
ক্ষরণ স্থান | নিউরোনের অ্যাক্সন প্রান্ত থেকে সাইন্যাপসে অর্থাৎ পরবর্তী নিউরোনের সঙ্গে সংযোগস্থলে ক্ষরিত হয়। | নিউরোনের অ্যাক্সন প্রান্ত থেকে রক্তপ্রবাহে ক্ষরিত হয়। |
কার্য পদ্ধতি | দ্রুত কাজ করে থাকে। | কাজের গতি মন্থর হয়। |
উদাহরণ | অ্যাসিটাইলকোলিন। | ভ্যাসোপ্রেসিন বা ADH |
স্নায়ুতন্ত্রের প্রকারভেদ; মস্তিষ্ক এবং সুষুম্নাকাণ্ড; প্রতিবর্ত ক্রিয়া ও প্রতিবর্ত পথ
মানুষের স্নায়ুতন্ত্র কয়প্রকার ও কী কী?
মানুষের স্নায়ুতন্ত্র প্রধানত তিনপ্রকার। স্নায়ুতন্ত্রের ভাগগুলি হল –
- কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র।
- প্রান্তীয় স্নায়ুতন্ত্র।
- স্বয়ংক্রিয় স্নায়ুতন্ত্র।
মেরুদণ্ডী ও অমেরুদণ্ডী প্রাণীর স্নায়ুতন্ত্রের প্রধান গঠনগত পার্থক্য কী?
মেরুদণ্ডী ও অমেরুদণ্ডী প্রাণীর স্নায়ুতন্ত্রের প্রধান গঠনগত পার্থক্য হল – মেরুদণ্ডী প্রাণীর কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র ফাঁপা এবং অমেরুদণ্ডী প্রাণীর কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র নিরেট।
প্রান্তীয় স্নায়ুতন্ত্র কাকে বলে?
মস্তিষ্ক এবং সুষুম্নাকাণ্ড অর্থাৎ কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র থেকে সারা দেহে বিন্যস্ত সমস্ত স্নায়ুকে একত্রে প্রান্তীয় স্নায়ুতন্ত্র বা পেরিফেরাল নার্ভাস সিস্টেম বা PNS বলে।
স্বয়ংক্রিয় স্নায়ুতন্ত্র কাকে বলে?
যে সকল স্নায়ু দেহের আন্তরযন্ত্র, গ্রন্থি এবং অনৈচ্ছিক পেশিতে বিন্যস্ত থেকে তাদের কার্যকারিতাকে নিয়ন্ত্রণ করে, তাদের একত্রে স্বয়ংক্রিয় স্নায়ুতন্ত্র বা অটোনমিক নার্ভাস সিস্টেম বা ANS বলে।
কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র কাকে বলে?
মস্তিষ্ক এবং সুষুম্নাকাণ্ড সহযোগে গঠিত স্নায়ুতন্ত্রের প্রধান নিয়ন্ত্রণকারী অংশকে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র বা সেন্ট্রাল নার্ভাস সিস্টেম বা CNS বলে।

কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র ও প্রান্তীয় স্নায়ুতন্ত্রের অংশগুলি লেখো।
মস্তিষ্ক ও সুষুম্নাকাণ্ড নিয়ে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র গঠিত। প্রান্তীয় স্নায়ুতন্ত্র প্রধানত কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র থেকে সারাদেহে বিন্যস্ত স্নায়ুগুলি নিয়ে গঠিত। মোট 12 জোড়া করোটি স্নায়ু ও 31 জোড়া সুষুম্না স্নায়ু নিয়ে প্রান্তীয় স্নায়ুতন্ত্র গঠিত।
সমবেদী স্নায়ুতন্ত্র কাকে বলে?
স্বয়ংক্রিয় স্নায়ুতন্ত্রের অন্তর্গত যে অংশ থোরাসিক ও লাম্বার সুষুম্না-খণ্ডক থেকে উৎপন্ন হয় ও দেহের আন্তরযন্ত্রীয় কাজ নিয়ন্ত্রণ করে তাকে সমবেদী বা সিমপ্যাথেটিক স্নায়ুতন্ত্র বলে।
সমবেদী স্নায়ুতন্ত্রের দুটি কাজ লেখো।
সমবেদী স্নায়ুতন্ত্রের দুটি কাজ হল –
- তারারন্ধ্রের প্রসারণ ঘটানো।
- হৃৎস্পন্দন হার বৃদ্ধি করা।
পরাসমবেদী স্নায়ুতন্ত্র কাকে বলে?
স্বয়ংক্রিয় স্নায়ুতন্ত্রের অন্তর্গত যে অংশ করোটি ও সুষুম্নাকাণ্ডের স্যাক্রাল অংশ থেকে উৎপন্ন হয় ও দেহের আন্তরযন্ত্রীয় কাজ নিয়ন্ত্রণ করে, তাকে পরাসমবেদী বা প্যারাসিমপ্যাথেটিক স্নায়ুতন্ত্র বলে।
পরাসমবেদী স্নায়ুতন্ত্রের দুটি কাজ লেখো।
পরাসমবেদী স্নায়ুতন্ত্রের দুটি কাজ হল –
- তারারন্ধ্রের সংকোচন ঘটানো।
- হৃৎস্পন্দন হার হ্রাস করা। অধিকাংশ ক্ষেত্রে পরাসমবেদী ও সমবেদী স্নায়ুতন্ত্রের কাজ বিপরীতমুখী হয়ে থাকে।
মস্তিষ্ক কী?
সুষুম্নাকাণ্ডের অগ্রভাগে অবস্থিত কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের সর্বাপেক্ষা স্ফীত যে অংশটি প্রাণীর বিচারবুদ্ধি, ইচ্ছাশক্তি, স্মৃতিশক্তি প্রভৃতি এবং বিভিন্ন শারীরবৃত্তীয় কাজ নিয়ন্ত্রণ করে, তাকে মস্তিষ্ক বলে।
গুরুমস্তিষ্কের দুটি কাজ লেখো।
গুরুমস্তিষ্কের কাজ হল –
- গুরুমস্তিষ্কের সেরিব্রাল কর্টেক্স স্মৃতিশক্তি, বিচারবুদ্ধি, ইচ্ছাশক্তি, চিন্তা-শক্তি প্রভৃতি উন্নত মানসিক ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র হিসেবে কাজ করে।
- দর্শন, স্বাদ, ঘ্রাণ, গরম, ঠান্ডা, স্পর্শ, ব্যথা প্রভৃতির নিয়ন্ত্রক হিসেবে কাজ করে।
সেরিব্রাল কর্টেক্স কী?
সেরিব্রামের মেনিনজেস -এর ঠিক নীচে অবস্থিত ধূসর বর্ণের বহিস্তর যা বুদ্ধি, স্মৃতি, ইন্দ্রিয়কার্য নিয়ন্ত্রণ করে, তাকে সেরিব্রাল কর্টেক্স বলে। এটি গুরুমস্তিষ্কের সব থেকে বাইরে উপস্থিত।

করপাস ক্যালোসাম কী? এর কাজ কী?
করপাস ক্যালোসাম –
সেরিব্রাম বা গুরুমস্তিষ্কের ডান এবং বাম গোলার্ধ (সেরিব্রাল হেমিস্ফিয়ার) দুটি, একটি অনুপ্রস্থ স্নায়ুতন্তুগুচ্ছ দ্বারা পরস্পর যুক্ত থাকে, এই স্নায়ুতন্তুগুচ্ছকেই করপাস ক্যালোসাম বলে।
করপাস ক্যালোসামের কাজ –
এটি দুটি সেরিব্রাল হেমিস্ফিয়ারের সংজ্ঞাবহ ও আজ্ঞাবহ কাজের সমন্বয় ঘটায়।
থ্যালামাস কী?
মানবমস্তিষ্কের তৃতীয় ভেন্ট্রিকলের দু-পাশে সেরিব্রাম (গুরুমস্তিষ্ক) -এর নীচে এবং মধ্যমস্তিষ্কের ওপরে যে দুটি ধূসর বর্ণের ডিম্বাকার অংশ লক্ষ করা যায়, তাদের থ্যালামাস বলে।
থ্যালামাসের দুটি কাজ লেখো।
থ্যালামাসের দুটি কাজ হল –
- থ্যালামাস তাপ, চাপ, স্পর্শ, যন্ত্রণা, টান, ঠান্ডা-গরম এবং তীব্র বেদনা প্রভৃতি অনুভূতির পুনঃসম্প্রচার স্থান বা রিলে কেন্দ্র হিসেবে কাজ করে।
- নিদ্রা ও জাগরণ নিয়ন্ত্রণের কেন্দ্র হিসেবে কাজ করে।
হাইপোথ্যালামাস কী?
মস্তিষ্কের তৃতীয় প্রকোষ্ঠ এবং থ্যালামাসের তলদেশে অবস্থিত অগ্রমস্তিষ্কের যে অংশ ক্ষুধা, তৃষ্ণা, আবেগ ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণ করে, তাকে হাইপোথ্যালামাস বলে। এটি থ্যালামাসের নীচে অবস্থিত থাকায়, এই অংশটির এইরূপ নামকরণ হয়েছে।
হাইপোথ্যালামাস -এর দুটি কাজ লেখো।
হাইপোথ্যালামাস -এর দুটি কাজ হল –
- হাইপোথ্যালামাস খাদ্যগ্রহণ, খিদে, তৃষ্ণা, নিদ্রা, মানসিক উত্তেজনা, সচেতনতা ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণ করে।
- এটি স্বয়ংক্রিয় স্নায়ুতন্ত্রের উচ্চতম কেন্দ্র রূপেও কাজ করে।
মধ্যমস্তিষ্ক কী?
অগ্র ও পশ্চাদমস্তিষ্কের সংযোগকারী অংশকে মধ্যমস্তিষ্ক বা মেসেনসেফালন বলে। এটি মস্তিষ্কের সর্বাপেক্ষা ক্ষুদ্র অঞ্চল। এই অংশটি মিডব্রেন নামেও পরিচিত। এটি দুটি অংশ নিয়ে গঠিত – টেকটাম ও সেরিব্রাল পেডাংকল।
মধ্যমস্তিষ্কের দুটি কাজ লেখো।
মধ্যমস্তিষ্কের গুরুত্বপূর্ণ দুটি কাজ হল –
- অগ্রমস্তিষ্ক ও পশ্চাদমস্তিষ্কের কাজের মধ্যে সমন্বয়সাধন করা।
- এটি দেহের ভারসাম্য রক্ষা এবং পেশিটান নিয়ন্ত্রণ।

পশ্চাদমস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশের অবস্থান লেখো।
পশ্চাদমস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশের অবস্থান হল –
- লঘুমস্তিষ্ক – চতুর্থ মস্তিষ্ক নিলয়ের পৃষ্ঠদেশে, গুরুমস্তিষ্কের নীচে অবস্থিত।
- পনস্ – মধ্যমস্তিষ্কের নীচে চতুর্থ মস্তিষ্ক নিলয়ের অঙ্কদেশে সুষুম্নাশীর্ষকের ওপরে অবস্থিত।
- মেডালা অবলংগাটা বা সুষুম্নাশীর্ষক – পনস্ -এর নীচে ও সুষুম্নাকাণ্ডের ঠিক ওপরে অবস্থিত।
পনস্ বা সেতুমস্তিষ্ক কী?
পশ্চাদমস্তিষ্কের যে অংশটি মধ্যমস্তিষ্কের নীচে চতুর্থ মস্তিষ্ক নিলয়ের অঙ্কদেশে এবং মেডালা অবলংগাটার ওপরে অবস্থিত, তাকে পনস্ বা সেতুমস্তিষ্ক বলে। পনস্ একদিকে মধ্যমস্তিষ্ক এবং অন্যদিকে সুষুম্নাশীর্ষকের মধ্যে সেতুর মতো যোগাযোগ স্থাপন করে বলে একে সেতুমস্তিষ্ক বলে।
পনস্ -এর দুটি কাজ লেখো।
- পনস্ লালাক্ষরণ, মূত্রত্যাগ, শ্বাসকার্য, চোয়াল ও অক্ষিগোলকের বিচলন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
- এটি গুরুমস্তিষ্ক ও লঘুমস্তিষ্কের মধ্যে কার্যগত সমন্বয়সাধন করে।
সুষুম্নাশীর্ষক বা মেডালা অবলংগাটা কী?
পনস্ -এর নীচে সুষুম্নাকাণ্ডের ওপরে অবস্থিত মস্তিষ্কের সর্বশেষ অংশকে সুষুম্নাশীর্ষক বা মেডালা অবলংগাটা বলা হয়। এই অংশটি সুষুম্নাকাণ্ডের শীর্ষে অবস্থিত বলে এই অংশের এইরূপ নামকরণ হয়েছে।
মেনিনজেস কী? এর গঠনগত স্তরগুলির নাম বলো।
মেনিনজেস –
কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের প্রধান অংশ দুটি (মস্তিষ্ক ও সুষুম্নাকাণ্ড) যে তিনস্তরবিশিষ্ট তন্তুময় আবরক দ্বারা আবৃত থাকে, তাকে মেনিনজেস বলে।
মেনিনজেসের স্তরসমূহ –
মেনিনজেস -এর তিনটি স্তর হল –
- ডুরামেটার।
- অ্যারাকনয়েড মেটার।
- পিয়ামেটার।
মেনিনজেস ও CSF -এর অবস্থান বিবৃত করো।
মস্তিষ্ক ও সুষুম্নাকাণ্ডের বাইরের দিকে তন্তুময় পর্দারূপে মেনিনজেস অবস্থিত।
CSF বা সেরিব্রোস্পাইনাল ফ্লুইড মস্তিষ্কের বিভিন্ন প্রকোষ্ঠে, মেনিনজেস -এর সাব-অ্যারাকনয়েড স্পেস এবং সুষুম্নাকাণ্ডের কেন্দ্রীয় নালীর ভিতরে অবস্থিত।
মেনিনজেসের কাজ লেখো।
মেনিনজেসের কাজ হল –
- মস্তিষ্ক ও সুষুম্নাকাণ্ডকে আঘাত ও সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে।
- মেনিনজেস করোটি এবং মস্তিষ্কের গোলার্ধ্বদ্বয়ে রক্ত সরবরাহে সাহায্য করে।
লঘুমস্তিষ্ক বা সেরিবেলাম কী?
চতুর্থ মস্তিষ্ক নিলয়ের পৃষ্ঠদেশে অবস্থিত পশ্চাদমস্তিষ্কের সর্বাপেক্ষা বৃহৎ ও গুরুত্বপূর্ণ অংশকে লঘুমস্তিষ্ক বলা হয়। এই অংশটি দেহের ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
লঘুমস্তিষ্কের দুটি কাজ লেখো।
লঘুমস্তিষ্কের কাজগুলি হল –
- দেহের ভারসাম্য রক্ষা করা।
- দেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ঐচ্ছিক সঞ্চালনে সহায়তা করা।

ভারমিস কী? এর কাজ কী?
ভারমিস –
দুটি সেরিবেলার হেমিস্ফিয়ার (লঘুমস্তিষ্কের খণ্ডকদ্বয়) যে তন্তুময় যোজক অংশ দ্বারা যুক্ত থাকে তাকে ভারমিস বলে।
ভারমিস -এর কাজ –
এটি দেহের সোজা দেহভঙ্গি (upright posture) বজায় রাখতে সাহায্য করে।
সুষুম্নাকাণ্ড কী?
সুষুম্নাশীর্ষকের পশ্চাদভাগ থেকে শুরু করে প্রথম বা দ্বিতীয় লাম্বার কশেরুকা পর্যন্ত বিস্তৃত ও CSF পূর্ণ যে ফাঁপা নলাকার স্নায়ুরজ্জু মেরুদণ্ডের দৈর্ঘ্য বরাবর বিস্তৃত থাকে, তাকে সুষুম্নাকাণ্ড বলে। এই অংশটি দেহের প্রতিবর্ত ক্রিয়া নিয়ন্ত্রণে অংশগ্রহণ করে।
সুষুম্নাকাণ্ডের যে-কোনো দুটি কাজ লেখো।
সুষুম্নাকাণ্ডের দুটি কাজ হল –
- সুষুম্নাকাণ্ড বিভিন্ন প্রকার প্রতিবর্ত ক্রিয়ার প্রধান কেন্দ্র হিসেবে কাজ করে।
- এটি দেহের প্রায় সমস্ত অংশের সঙ্গে মস্তিষ্কের যোগসূত্র স্থাপন করে।
CSF কাকে বলে?
মস্তিষ্কের বিভিন্ন প্রকোষ্ঠে, সাব-অ্যারাকনয়েড স্থানে, সাব-ডুরাল স্থানে এবং সুষুম্নাকাণ্ডের কেন্দ্রীয় নালীর মধ্যে যে স্বচ্ছ, স্বল্প ক্ষারীয় পরিবর্তিত কলারস থাকে, তাকে CSF বা সেরিব্রোস্পাইনাল ফ্লুইড বা মস্তিষ্ক-সুষুম্নারস বলে।
CSF -এর কাজ কী?
CSF -এর প্রধান কাজ হল –
- কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের অন্তর্গত স্নায়ুকোশসমূহকে পুষ্টি উপাদান এবং অক্সিজেন সরবরাহ করা।
- কুশনের মতো কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রকে যান্ত্রিক আঘাত থেকে রক্ষা করা।
উদাহরণসহ প্রতিবর্ত ক্রিয়া ব্যাখ্যা করো।
অথবা, প্রতিবর্ত ক্রিয়া কাকে বলে?
কোনো বাহ্যিক বা অভ্যন্তরীণ উদ্দীপনার প্রভাবে প্রাণীদেহের তাৎক্ষণিক, স্বতঃস্ফূর্ত ও অনৈচ্ছিক স্নায়বিক প্রতিক্রিয়াকে প্রতিবর্ত ক্রিয়া বলে। যেমন – চোখে আলো পড়লে আমরা দ্রুত চোখ বুজে ফেলি।
প্রাত্যহিক জীবনে প্রতিবর্ত ক্রিয়ার দুটি উদাহরণ দাও।
প্রাত্যহিক জীবনে প্রতিবর্ত ক্রিয়ার দুটি উদাহরণ হল –
- দ্রুত চোখের পলক পড়া – তীব্র আলো বা ধুলো-বালি পড়লে আমরা তৎক্ষণাৎ চোখ বুজে ফেলি ও চোখের প্রতিরক্ষা অজান্তেই করে থাকি।
- হাঁচি – বাইরের ধুলো-বালি, ধোঁয়া, গ্যাস প্রভৃতির সংস্পর্শে এলে আমরা হাঁচি ও দেহের প্রতিরক্ষা করি।
সহজাত বা শর্তনিরপেক্ষ প্রতিবর্ত ক্রিয়া কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
সহজাত প্রতিবর্ত ক্রিয়া –
যেসব প্রতিবর্ত ক্রিয়া জন্মগত এবং কোনো শর্তাধীন নয়, তাদের সহজাত বা জন্মগত বা শর্তনিরপেক্ষ প্রতিবর্ত ক্রিয়া বলে।
সহজাত প্রতিবর্ত ক্রিয়ার উদাহরণ –
শিশুর জন্মের পর স্তন্যদুগ্ধ পান করা, সুস্বাদু খাদ্যের গন্ধে লালা নিঃসৃত হওয়া ইত্যাদি।
সহজাত প্রতিবর্ত ক্রিয়ার দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো।
সহজাত প্রতিবর্ত ক্রিয়ার দুটি বৈশিষ্ট্য হল –
- এই প্রতিবর্ত ক্রিয়া শর্ত-নিরপেক্ষ এবং এর জন্য কোনো পূর্ব অভিজ্ঞতার প্রয়োজন হয় না।
- এই প্রতিবর্ত ক্রিয়া জন্মগতভাবে বংশপরম্পরায় উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত।
অর্জিত বা শর্তাধীন প্রতিবর্ত ক্রিয়া কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
অর্জিত প্রতিবর্ত ক্রিয়া –
যেসব প্রতিবর্ত ক্রিয়া জন্মগত নয়, কেবল বারবার অভ্যাসের ফলে বা অভিজ্ঞতার দ্বারা অর্জিত হয় এবং যা শর্তসাপেক্ষ, তাদের অর্জিত প্রতিবর্ত ক্রিয়া বলে।
অর্জিত প্রতিবর্ত ক্রিয়ার উদাহরণ –
সাঁতার কাটা, সাইকেল চালানো ইত্যাদি।
অর্জিত প্রতিবর্ত ক্রিয়ার দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো।
অর্জিত প্রতিবর্ত ক্রিয়ার দুটি বৈশিষ্ট্য হল –
- এই জাতীয় প্রতিবর্ত ক্রিয়া অভ্যাস, প্রশিক্ষণ ও অভিজ্ঞতা সঞ্চয়ের মাধ্যমে অর্জিত হয়।
- চর্চার অভাবে এই প্রতিবর্ত ক্রিয়া পরিবর্তিত হয় বা লোপ পায়।
নিম্নলিখিত ক্রিয়াগুলির মধ্যে কোনগুলি সহজাত বা কোনগুলি অর্জিত প্রতিবর্ত ক্রিয়া তা তালিকাভুক্ত করো। (1) সদ্যজাতের স্তন্যপানের ইচ্ছা, (2) সাইকেল চালানো, (3) হাঁচি, (4) ক্ষিপ্রতার সঙ্গে উইকেট কিপারের বল ধরা।
- (1) সহজাত প্রতিবর্ত ক্রিয়া।
- (2) অর্জিত প্রতিবর্ত ক্রিয়া।
- (3) সহজাত প্রতিবর্ত ক্রিয়া।
- (4) অর্জিত প্রতিবর্ত ক্রিয়া।
প্রতিবর্ত চাপ বা প্রতিবর্ত পথের অংশগুলি তীর চিহ্ন দিয়ে দেখাও।
প্রতিবর্ত পথের প্রধানত পাঁচটি অংশ। যথা –
গ্রাহক → অন্তর্বাহী স্নায়ু → স্নায়ুকেন্দ্র → বহির্বাহী স্নায়ু → কারক অঙ্গ।
প্রতিবর্ত ক্রিয়ায় মস্তিষ্কের ভূমিকা কী?
প্রতিবর্ত ক্রিয়া একটি তাৎক্ষণিক, স্বতঃস্ফূর্ত প্রক্রিয়া যা সুষুম্নাকাণ্ডের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। এটি রিফ্লেক্স আর্ক বা প্রতিবর্ত চাপ দ্বারা ঘটে থাকে বলে মস্তিষ্কের সরাসরি কোনো ভূমিকা থাকে না। তবে প্রতিবর্ত ক্রিয়া সংঘটনের উদ্দীপনা পরবর্তী ধাপে মস্তিষ্কে পৌঁছোয় (যেমন – আগুনে হাত পুড়লে আমরা ‘উফ্’ বলে প্রতিক্রিয়া দেখাই)।
সহজাত বা জন্মগত এবং অর্জিত শর্তাধীন প্রতিবর্ত ক্রিয়ার মধ্যে পার্থক্য লেখো।
সহজাত ও অর্জিত প্রতিবর্ত ক্রিয়ার মধ্যে পার্থক্যগুলি হল –
বিষয় | সহজাত প্রতিবর্ত ক্রিয়া | অর্জিত প্রতিবর্ত ক্রিয়া |
প্রকৃতি | সহজাত বা জন্মগত। | ধারাবাহিক অভ্যাসের মাধ্যমে অর্জিত। |
স্থায়িত্ব | স্থায়ী। | অস্থায়ী। |
শর্তাধীনতা | শর্ত নিরপেক্ষ। | শর্তাধীন। |
উদাহরণ | শিশুর স্তন্যদুগ্ধ পান করা। | সাইকেল চালানো। |
পার্থক্য লেখো – মস্তিষ্ক ও সুষুম্নাকাণ্ড।
মস্তিষ্ক ও সুষুম্নাকাণ্ডের মধ্যে পার্থক্যগুলি হল –
বিষয় | মস্তিষ্ক | সুষুম্নাকাণ্ড |
অবস্থান | কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের অগ্রবর্তী স্ফীত অংশ যা করোটির ভিতরে অবস্থান করে। | কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের মস্তিষ্ক পরবর্তী সরু রজ্জুর মতো অংশ যা মেরুদণ্ড গহ্বরে অবস্থান করে। |
গঠন উপাদান | মস্তিষ্কের বাইরে ধূসর বস্তু ও ভিতরের দিকে শ্বেত বস্তু বিন্যস্ত থাকে। | সুষুম্নাকাণ্ডের বাইরে শ্বেত বস্তু ও ভিতরের দিকে ধূসর বস্তু বিদ্যমান। |
স্নায়ুসংখ্যা | মস্তিষ্ক থেকে 12 জোড়া করোটি স্নায়ু নির্গত হয়। | সুষুম্নাকান্ড থেকে 31 জোড়া সুষুম্না স্নায়ু নির্গত হয়। |
কাজ | বুদ্ধি, আবেগ, দেহ ভারসাম্য প্রভৃতি কাজের নিয়ন্ত্রক। | পরিবেশগত সমন্বয় ও প্রতিবর্ত ক্রিয়ায় অংশ নেয়। |
গ্রাহক ও কারকের পার্থক্য লেখো।
গ্রাহক ও কারকের মধ্যে পার্থক্যগুলি হল –
বিষয় | গ্রাহক | কারক |
কাজ | বাহ্যিক উদ্দীপনা গ্রহণ করে তা অন্তর্বাহী স্নায়ুতে প্রেরণ করে। | বহির্বাহী স্নায়ুর নির্দেশ অনুযায়ী সাড়াপ্রদানে দেহকে সাহায্য করে। |
গঠনগত উপাদান | নানাপ্রকার আকৃতির বিশেষ গঠন। যেমন – চাপ গ্রাহক, তাপগ্রাহক। | পেশি ও গ্রন্থি। |
স্নায়ু সংলগ্ন অংশ | এগুলি ডেনড্রন সংলগ্ন থাকে। | এগুলি অ্যাক্সন প্রান্ত সংলগ্ন থাকে। |
সেরিব্রাম বা গুরুমস্তিষ্ক ও সেরিবেলাম বা লঘুমস্তিষ্কের পার্থক্য লেখো।
সেরিব্রাম বা গুরুমস্তিষ্ক ও সেরিবেলাম বা লঘুমস্তিষ্কের মধ্যে পার্থক্যগুলি হল –
বিষয় | সেরিব্রাম/গুরুমস্তিষ্ক | সেরিবেলাম/লঘুমস্তিষ্ক |
আকার | মস্তিষ্কের সর্ববৃহৎ অংশ। | পশ্চাদমস্তিষ্কের সর্ববৃহৎ অংশ। |
যোজক | এর দুটি গোলার্ধ বা সেরিব্রাল হেমিস্ফিয়ার, করপাস ক্যালোসাম নামক যোজক দ্বারা সংযুক্ত থাকে। | এর দুটি অংশ ভারমিস নামক যোজক দ্বারা সংযুক্ত থাকে। |
অবস্থান | অগ্রমস্তিষ্ক। | পশ্চাদমস্তিষ্ক। |
কাজ | স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি ও বিভিন্ন চেষ্টীয় অনুভূতি নিয়ন্ত্রণ করে। | দেহের ভারসাম্য রক্ষা, পেশিটান নিয়ন্ত্রণ করে। |
কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র ও প্রান্তীয় স্নায়ুতন্ত্র -এর মধ্যে পার্থক্য লেখো।
কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র ও প্রান্তীয় স্নায়ুতন্ত্র -এর মধ্যে পার্থক্যগুলি হল –
বিষয় | কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র | প্রান্তীয় স্নায়ুতন্ত্র |
গঠনগত উপাদান | মস্তিষ্ক ও সুষুম্নাকাণ্ড নিয়ে গঠিত। | করোটি স্নায়ু, সুষুম্না স্নায়ু নিয়ে গঠিত। |
অবস্থান | দেহের কেন্দ্রভাগে অবস্থিত। | দেহের প্রান্তীয় অংশে বিন্যস্ত। |
কাজ | যাবতীয় স্নায়বিক কার্যকারিতার নিয়ন্ত্রক কেন্দ্র হিসেবে কাজ করে। | বিভিন্ন আন্তরযন্ত্র ও CNS -এর মধ্যে কার্যগত সমন্বয় সাধন করে। |
সমবেদী বা সিমপ্যাথেটিক স্নায়ুতন্ত্র ও পরাসমবেদী বা প্যারাসিমপ্যাথেটিক স্নায়ুতন্ত্র -এর পার্থক্য লেখো।
সমবেদী বা সিমপ্যাথেটিক স্নায়ুতন্ত্র ও পরাসমবেদী বা প্যারাসিমপ্যাথেটিক স্নায়ুতন্ত্র -এর মধ্যে পার্থক্যগুলি হল –
বিষয় | সমবেদী বা সিমপ্যাথেটিক স্নায়ুতন্ত্র | পরাসমবেদী বা প্যারাসিমপ্যাথেটিক স্নায়ুতন্ত্র |
কাজের প্রকৃতি | জরুরি অবস্থায় (ভয়, উদ্বেগ) কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায়। | বিশ্রামরত ও শান্ত অবস্থায় কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায়, ফলে দেহে সক্রিয়তা দেখা যায়। |
নিউরোন পথ | এই জাতীয় স্নায়ুতন্ত্রের নিউরোন পথ ক্ষুদ্র। | এই জাতীয় স্নায়ুতন্ত্রের নিউরোন পথ দীর্ঘ। |
স্নায়ুর উৎপত্তি | সুষুম্নাকাণ্ডের থোরাসিক ও লাম্বার অংশে স্নায়ুর উৎপত্তি হয়। | সুষুম্নাকাণ্ডের স্যাক্রাল ও ক্রেনিয়াল অংশে স্নায়ুর উৎপত্তি হয়। |
প্রান্তীয় স্নায়ুতন্ত্র ও স্বয়ংক্রিয় স্নায়ুতন্ত্র -এর মধ্যে পার্থক্য লেখো।
প্রান্তীয় স্নায়ুতন্ত্র ও স্বয়ংক্রিয় স্নায়ুতন্ত্র -এর মধ্যে পার্থক্যগুলি হল –
বিষয় | প্রান্তীয় স্নায়ুতন্ত্র | স্বয়ংক্রিয় স্নায়ুতন্ত্র |
গঠনগত উপাদান | করোটিয় স্নায়ু ও সুষুম্না স্নায়ু নিয়ে গঠিত। | সুষুম্নাকাণ্ড ও গ্যাংলিয়ন থেকে উৎপন্ন সমবেদী ও পরাসমবেদী স্নায়ু নিয়ে গঠিত। |
বিস্তার | হাত, পা ও নানা দেহপেশিতে বিন্যস্ত। | হৃৎপিণ্ড, ফুসফুস, পাকস্থলী প্রভৃতি নানা আন্তরযন্ত্রে বিন্যস্ত। |
কাজ | কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের নিয়ন্ত্রণাধীন থেকে হাত, পা ও অন্যান্য দেহাংশের কাজ নিয়ন্ত্রণ করে। | অনৈচ্ছিকভাবে দেহের নানা আন্তরযন্ত্রের কাজের নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয় সাধন করে। |
চোখ-মানুষের জ্ঞানেন্দ্রিয়; উপযোজন; দৃষ্টির ত্রুটি এবং সংশোধন পদ্ধতি
জ্ঞানেন্দ্রিয় কাকে বলে?
বিশেষ ধরনের কিছু গ্রাহক অঙ্গ পরিবেশ থেকে উদ্দীপনা গ্রহণ করে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রে প্রেরণ করে, এদের জ্ঞানেন্দ্রিয় বলা হয়। যেমন – চোখ, কান ইত্যাদি।
মানুষের চোখের প্রধান অংশগুলি কী কী?
চোখের প্রধান অংশগুলি হল – অক্ষিগোলক (আবরক ও প্রতিসারক মাধ্যম), রক্ষণমূলক অংশ ও অক্ষিপেশি।
স্ক্লেরা কী? এর কাজ লেখো।
স্ক্লেরা – অক্ষিগোলকের বাইরের তন্তুময় আবরণটিকে ফাইব্রাস কোট বলে। এর পিছন দিকের \(\frac56\) অংশকে শ্বেতমণ্ডল বা স্ক্লেরা বলে। এই স্তরটি সাদা বর্ণের কোলাজেন তন্তু দ্বারা গঠিত।
স্ক্লেরার কাজ – এটি অক্ষিগোলককে নির্দিষ্ট আকৃতি দান করে এবং চোখের অন্যান্য স্তরকে রক্ষা করে।
কর্নিয়া কী? এর কাজ লেখো।
কর্নিয়া – কর্নিয়া হল অক্ষিগোলকের সম্মুখভাগে বিন্যস্ত ও তন্তুময় বহিঃস্তরের \(\frac16\) অংশ। এটি একটি উত্তল স্বচ্ছ প্রতিসারক স্তর।
কর্নিয়ার কাজ – কর্নিয়া অক্ষিগোলকে আলো প্রবেশের প্রথম প্রতিসারক মাধ্যমরূপে কাজ করে। প্রকৃতপক্ষে এটি আলোকরশ্মিকে প্রতিসৃত করে লেন্সে কেন্দ্রীভূত করে।
কোরয়েড বা কৃষ্ণমণ্ডল বলতে কী বোঝ? এর কাজ কী?
কৃষ্ণমণ্ডল –
অক্ষিগোলকের তিনস্তরবিশিষ্ট প্রাচীরে মধ্যভাগের মেলানিন সমৃদ্ধ স্তরটি হল কোরয়েড বা কৃষ্ণমণ্ডল।
কৃষ্ণমণ্ডলের কাজ –
কোরয়েডের কাজ হল চোখের আবরণী স্তরগুলির পুষ্টি জোগানো এবং অক্ষিগোলকের ভিতরে আলোর প্রতিফলনে বাধা দেওয়া ও অবাঞ্ছিত আলোকে শোষণ করা।
আইরিস বা কনীনিকা কী? এর কাজ কী?
আইরিস বা কনীনিকা –
লেন্সের সামনে ও কর্নিয়ার ঠিক পিছনে অবস্থিত বৃত্তাকার রঙ্গকযুক্ত গঠনকে আইরিস বলে।
আইরিস বা কনীনিকার কাজ –
গোলাকার আইরিস, পেশি সংকোচনের দ্বারা তারারন্ধ্রকে ছোটো ও বড়ো, করে। ফলে চোখে আলোর প্রবেশ নিয়ন্ত্রিত হয়।
রেটিনা কোথায় অবস্থিত এবং এর কাজ কী?
রেটিনার অবস্থান –
রেটিনা অক্ষিগোলকের পশ্চাদভাগে অবস্থিত।
রেটিনার কাজ –
রেটিনা বস্তুর প্রতিবিম্ব গঠন করে এবং গঠিত প্রতিবিম্বকে স্নায়ু উদ্দীপনায় পরিবর্তিত করে অপটিক স্নায়ুতে প্রেরণ করে।
রেটিনায় কী কী গ্রাহক কোশ থাকে? এদের কাজ উল্লেখ করো।
রেটিনায় উপস্থিত গ্রাহক কোশ –
রেটিনায় গ্রাহক কোশরূপে রড কোশ ও কোন কোশ থাকে।
রেটিনায় উপস্থিত গ্রাহক কোশের কাজ –
রড কোশ মৃদু আলো শোষণ করে এবং কোন কোশ উজ্জ্বল রঙীন আলো শোষণ করে। উভয়েই দৃষ্টি সংবেদ উৎপাদন করে।

পীতবিন্দু বা ম্যাকুলা লুটিয়া কাকে বলে? এর কাজ উল্লেখ করো।
পীতবিন্দু বা ম্যাকুলা লুটিয়া –
চোখে পিউপিল বা তারারন্ধ্রের বিপরীত দিকে রেটিনার ওপরে অবস্থিত যে হালকা হলদে বর্ণের বিন্দুতে বস্তুর প্রতিবিম্ব সর্বাপেক্ষা সুস্পষ্টভাবে গঠিত হয়, তাকে পীতবিন্দু বা ম্যাকুলা লুটিয়া বলে।
পীতবিন্দু বা ম্যাকুলা লুটিয়ার কাজ –
পীতবিন্দু রেটিনার সর্বাধিক আলোকসুবেদী অংশ। এখানে সবচেয়ে স্পষ্ট প্রতিবিম্ব গঠিত হয়।
ফোভিয়া সেন্ট্রালিস কী? এর গুরুত্ব কী?
ফোভিয়া সেন্ট্রালিস –
তারারন্ধ্রের বিপরীতে রেটিনাতে পীতবিন্দুর কেন্দ্রে যে সামান্য অবতল স্থানে কেবলমাত্র কোন কোশ থাকে, সেই স্থানকে ফোভিয়া সেন্ট্রালিস বলে।
ফোভিয়া সেন্ট্রালিসের গুরুত্ব –
গাড়ি চালানো, পড়াশুনোর সময় প্রখর দৃষ্টি এই অঞ্চলেই তৈরি হয়।
অন্ধবিন্দু বা ব্লাইন্ড স্পট কাকে বলে?
রেটিনার যে স্থানে সমস্ত নার্ভগুলি গুচ্ছাকারে অপটিক স্নায়ুরূপে নির্গত হয়, সেইস্থানে কোনো আলোকসুবেদী কোশ না থাকায় প্রতিবিম্ব গঠিত হয় না। এই স্থানটিকে অন্ধবিন্দু (blind spot) বলে। এর অপর নাম অপটিক ডিস্ক।
চক্ষুর লেন্স অংশের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দাও ও কাজ লেখো।
চক্ষুর লেন্স অংশের বিবরণ –
চোখের লেন্সটি আইরিসের পিছনে অবস্থিত, স্থিতিস্থাপক ও দ্বি-উত্তল। এটি সাসপেনসরি লিগামেন্টের সাহায্যে চোখের পিউপিলের পিছনে দৃঢ়ভাবে আটকে থাকে।
চক্ষুর লেন্স অংশের কাজ –
চোখের লেন্স আলোর প্রতিসরণ ঘটিয়ে রেটিনাতে প্রতিবিম্ব গঠন করতে সাহায্য করে।
অক্ষিগোলকের বিভিন্ন প্রতিসারক মাধ্যমগুলির নাম ক্রমানুসারে লেখো।
অথবা, চোখের প্রতিসারক মাধ্যমগুলির নাম লেখো।
অক্ষিগোলকের বাইরে থেকে ভিতরের দিকে বিভিন্ন প্রতিসারক মাধ্যমগুলি হল –
- কর্নিয়া।
- অ্যাকুয়াস হিউমর।
- লেন্স।
- ভিট্রিয়াস হিউমর বা ভিট্রিয়াস বডি।
অ্যাকুয়াস হিউমর কাকে বলে? এর কাজ কী?
অ্যাকুয়াস হিউমর – লেন্স এবং কর্নিয়ার মাঝখানে অবস্থিত গহ্বরটি যে জলীয় পদার্থ দ্বারা পূর্ণ থাকে, তাকে অ্যাকুয়াস হিউমর বলে।
কাজ – এটি আলোর প্রতিসারক মাধ্যম হিসেবে কাজ করে এবং চোখের বিভিন্ন অংশের পরিপোষকরূপে কাজ করে।
ভিট্রিয়াস হিউমর কাকে বলে? এর কাজ কী?
ভিট্রিয়াস হিউমর –
লেন্সের ঠিক পশ্চাৎ অংশে অবস্থিত গহ্বরটি যে স্বচ্ছ, সান্দ্র পদার্থ দ্বারা পূর্ণ থাকে তাকে ভিট্রিয়াস হিউমর বা ভিট্রিয়াস বডি বলে।
ভিট্রিয়াস হিউমরের কাজ –
এটি আলোর প্রতিসারক মাধ্যম হিসেবে কাজ করে এবং অক্ষিগোলকের আকৃতি ও চাপ নিয়ন্ত্রণ করে।
চোখের আনুষঙ্গিক অংশগুলি কী কী?
চোখের আনুষঙ্গিক অংশগুলি হল –
- অক্ষিকোটর।
- অক্ষিপেশি।
- অক্ষিপল্লব।
- অক্ষিপক্ষ।
- কনজাংটিভা।
- অশ্রুগ্রন্থি বা ল্যাক্রিমাল গ্রন্থি।
অক্ষিপেশি বা চক্ষুপেশি কাকে বলে?
বিভিন্ন অনৈচ্ছিক পেশি দ্বারা অক্ষিগোলক অক্ষিকোটরের প্রাচীরের সঙ্গে যুক্ত থাকে, তাদের অক্ষিপেশি বা চক্ষুপেশি বলে। যেমন – রেকটাস পেশি।
চক্ষুর রক্ষণমূলক অংশগুলি কী কী? এদের মধ্যে কোনটি অক্ষিগোলকের সাথে যুক্ত?
চক্ষুর রক্ষণমূলক অংশগুলি হল – কনজাংটিভা বা নেত্রবাকলা, অক্ষিপল্লব ও অশ্রুগ্রন্থি।
নেত্রবর্ত্মকলা অক্ষিগোলকের সাথে যুক্ত থাকে।
অশ্রুগ্রন্থির অবস্থান উল্লেখ করো।
প্রতিটি চোখের ওপরের দিকে এবং ঊর্ধ্ব নেত্রপল্লবের নীচে অশ্রুগ্রন্থি অবস্থিত। অশ্রুগ্রন্থি থেকে বেরিয়ে আসা সূক্ষ্ম নালী দিয়ে অক্ষিগোলকের ওপর অশ্রু ছড়িয়ে পড়ে।

অশ্রুর কাজগুলি লেখো।
অশ্রুর কাজগুলি হল –
- অক্ষিগোলক সিক্ত রাখা এবং তার চলন স্বাভাবিক রাখে।
- অক্ষিগোলকের উন্মুক্ত অংশকে ধুলোবালি থেকে মুক্ত রাখে।
- লাইসোজাইম উৎসেচক ও অ্যান্টিবডি দ্বারা জীবাণু নাশ করে।
অশ্রুগ্রন্থির ক্ষরণ বন্ধ হয়ে গেলে কী ঘটবে?
অশ্রুগ্রন্থি থেকে অশ্রু ক্ষরিত হয়। চোখকে আর্দ্র রাখা অশ্রুর প্রধান কাজ। অক্ষিগোলকের উপরিভাগে ধুলোবালি পড়লে অশ্রু সঙ্গে সঙ্গে তা ধুয়ে পরিষ্কার করে দেয়। এ ছাড়াও অশ্রু জীবাণুনাশক হিসেবেও কাজ করে। অশ্রুগ্রন্থির ক্ষরণ হঠাৎ বন্ধ হলে উপরিলিখিত কাজগুলি বন্ধ হয়ে যাবে।
নেত্রবর্ত্মকলা (কনজাংটিভা)-র অবস্থান ও কাজ লেখো।
কর্নিয়ার বাইরে স্বচ্ছ পাতলা পর্দা নেত্রবর্ত্মকলা বা কনজাংটিভা অবস্থিত।
কনজাংটিভা কর্নিয়াকে ধুলোবালির হাত থেকে ও ঘর্ষণজনিত আঘাত থেকে রক্ষা করে।
উপযোজন কাকে বলে?
যে বিশেষ প্রক্রিয়ার দ্বারা স্থান পরিবর্তন না করে চক্ষু পেশির সাহায্যে লেন্সের বক্রতার পরিবর্তন করে বস্তুর সঠিক দর্শন সম্ভব হয়, তাকে উপযোজন বলে।
উপযোজন বা অ্যাকোমোডেশন কেন দরকারি?
- বাস্তবে নানা বাধা, ট্রাফিক সিগনাল, পথনির্দেশ নানা দূরত্বে থাকে, তাকে ঠিকমতো দেখে চলাচল বা গাড়ি চালানোয় উপযোজন অত্যন্ত দরকারি।
- শ্রেণিকক্ষে বোর্ড বা শিক্ষকের দিকে তাকিয়ে (দূরবস্তু) খাতায় লিখতে (নিকটবস্তু) উপযোজন প্রয়োজনীয়।
একনেত্র দৃষ্টি কাকে বলে? কোন্ কোন্ প্রাণীর দৃষ্টি এই প্রকারের হয়?
একনেত্র দৃষ্টি –
একই সঙ্গে দুটি চোখে দুটি পৃথক বস্তুর প্রতিবিম্ব গঠিত হলে, অর্থাৎ দুটি চোখে দুটি আলাদা বস্তুকে দেখা গেলে, সেই ধরনের দৃষ্টিকে একনেত্র দৃষ্টি বলে।
একনেত্র দৃষ্টির উদাহরণ –
ব্যাং, মাছ, গোরু প্রভৃতি প্রাণীর দৃষ্টি।
দ্বিনেত্র দৃষ্টি কাকে বলে? কোন্ প্রাণীদের তা দেখা যায়?
দ্বিনেত্র দৃষ্টি –
একই সঙ্গে দুটি চোখে একই বস্তুর প্রতিবিম্ব গঠিত হলে, অর্থাৎ দুটি চোখের সাহায্যে একই বস্তুকে সুস্পষ্টভাবে দেখা গেলে, সেই ধরনের দৃষ্টিকে দ্বিনেত্র দৃষ্টি বলে।
দ্বিনেত্র দৃষ্টির উদাহরণ –
মানুষ, বানর, বাঘ, প্যাঁচা প্রভৃতি প্রাণীর দৃষ্টি।
একনেত্র দৃষ্টি শিকার হওয়া প্রাণীতে ও দ্বিনেত্র দৃষ্টি শিকারি প্রাণীতে দেখা যায় – ব্যাখ্যা করো।
একনেত্র দৃষ্টি বৃহত্তর দৃষ্টিক্ষেত্র দেখতে সাহায্য করে, তাই শিকারি প্রাণীর উপস্থিতি বুঝতে তা সাহায্য করে। এজন্য শিকার হওয়া প্রাণীতে (prey) যেমন – গোরু, ছাগল, হরিণ, পায়রা, খরগোশ, মহিষ প্রভৃতিতে একনেত্র দৃষ্টি দেখা যায়। পক্ষান্তরে, দ্বিনেত্র দৃষ্টিতে দৃষ্টিক্ষেত্র কম হলেও তা তীক্ষ্ণ ও গভীরতা (স্টিরিয়পসিস) বুঝতে সাহায্য করে। তাই তা সচরাচর শিকারি প্রাণী (predator) যেমন – ইগল, সাপ, নেকড়ে, বাঘ, সিংহ প্রভৃতি প্রাণীতে দ্বিনেত্র দৃষ্টি দেখা যায়।

চোখের কোন্ কোন্ দৃষ্টিজনিত ত্রুটি সংশোধনের জন্য অবতল লেন্সযুক্ত এবং উত্তল লেন্সযুক্ত চশমা ব্যবহার করা হয়?
অবতল লেন্সযুক্ত চশমা ব্যবহার করে মায়োপিয়া নামক চোখের দৃষ্টিজনিত ত্রুটি এবং উত্তল লেন্সযুক্ত চশমা ব্যবহার করে হাইপারমেট্রোপিয়া এবং প্রেসবায়োপিয়া নামক চোখের দৃষ্টিজনিত ত্রুটিগুলি সংশোধন করা হয়।
মায়োপিয়া কী? কীভাবে এর সংশোধন সম্ভব?
মায়োপিয়া –
চোখের যে ত্রুটির কারণে নিকটের দৃষ্টি ঠিক থাকলেও দূরের দৃষ্টি ব্যাহত হয়, তাকে মায়োপিয়া বলে। এক্ষেত্রে, অক্ষিগোলকের আকার বড় হওয়ায় বা লেন্সের ত্রুটির জন্য দূরবর্তী বস্তু থেকে আগত আলোকরশ্মি রেটিনার সামনে প্রতিবিম্ব গঠন করে। ফলে দূরদৃষ্টি অস্পষ্ট হয়।
মায়োপিয়ার সংশোধন –
অবতল লেন্সযুক্ত চশমা বা অবতল কনট্যাক্ট লেন্স ব্যবহার করে মায়োপিয়ার সংশোধন সম্ভব।
হাইপারমেট্রোপিয়া কাকে বলে? এটি কীভাবে সংশোধন করা যায়?
হাইপারমেট্রোপিয়া –
চোখের যে ত্রুটির জন্য দূরের দৃষ্টি অব্যাহত থাকলেও কাছের দৃষ্টি ব্যাহত হয়, তাকে হাইপারমেট্রোপিয়া বলে। এক্ষেত্রে অক্ষিগোলকের আকার স্বাভাবিকের তুলনায় ছোটো হওয়ায় বা লেন্সের ত্রুটির জন্য রেটিনার পশ্চাতে প্রতিবিম্ব গঠিত হয়।
হাইপারমেট্রোপিয়ার সংশোধন –
উত্তল লেন্সযুক্ত চশমা বা উত্তল কনট্যাক্ট লেন্স ব্যবহার করে হাইপারমেট্রোপিয়া সংশোধন করা যায়।
প্রেসবায়োপিয়া কাকে বলে? এটি কীভাবে সংশোধন করা সম্ভব?
প্রেসবায়োপিয়া –
বয়সজনিত কারণে চোখের উপযোজন ক্ষমতা কমে যাওয়ায় যে রোগে নিকটের দৃষ্টি ব্যাহত হয়, তাকে প্রেসবায়োপিয়া বলা হয়। সাধারণত 40-45 বছর বয়সে এই ত্রুটি ধরা পড়ে।
প্রেসবায়োপিয়ার সংশোধন –
উত্তল লেন্সযুক্ত চশমা বা উত্তল প্রকৃতির কনট্যাক্ট লেন্স ব্যবহার করে প্রেসবায়োপিয়া সংশোধন করা যায়।
চল্লিশ বছরের বেশি বয়সি লোকেদের লেন্সের স্থিতিস্থাপকতা নষ্ট হয়ে গেলে কোন্ ধরনের লেন্স ব্যবহার করতে হয়?
- এটি প্রেসবায়োপিয়া, যার জন্য উত্তল লেন্স (‘+’ ডায়োপ্টার পাওয়ার) চশমায় ব্যবহৃত হয়।
- ব্যক্তির একই সঙ্গে মায়োপিয়া থাকলে ওই একই চশমার লেন্সে অবতল অংশও রাখা হয়। অর্থাৎ, এইক্ষেত্রে বাইফোকাল লেন্স (‘+’ ও ‘−’ পাওয়ার যুক্ত) ব্যবহার করা হয়।
তোমার কাকার ছোটোবেলায় মায়োপিয়া সমস্যা দেখা দেয়। পরবর্তীকালে প্রায় 41 বছর বয়সে তাঁর বই পড়ার সময়ও অসুবিধা দেখা দিল। তিনি কোন্ ধরনের লেন্স চশমায় ব্যবহার করবেন?
কাকার মায়োপিয়া থাকায় অবতল (‘−’ পাওয়ার) লেন্স -এর সঙ্গে প্রেসবায়োপিয়ার জন্য উত্তল (‘+’ পাওয়ার) লেন্স ব্যবহার করতে হবে। অর্থাৎ, তাঁকে দুই ধরনের পাওয়ারযুক্ত বাইফোকাল লেন্স (লেন্সের উপরের দিকে মাইনাস ও নিচের দিকে প্লাস পাওয়ার) ব্যবহার করতে হবে।

ডায়োপ্টার (dioptre) কী? এর গুরুত্ব কী?
ডায়োপ্টার –
চোখের লেন্সের পাওয়ার যে একক দ্বারা পরিমাপ করা হয়, তাকে ডায়োপ্টার বলে।
1 ডায়োপ্টার হল মিটারে ফোকাস দৈর্ঘ্যের ব্যাস্তানুপাতের সমান।
অর্থাৎ, 1 ডায়োপ্টার =ডায়োপ্টারের গুরুত্ব –
চশমার উত্তল লেন্স ব্যবহৃত হলে তা ধনাত্মক ডায়োপ্টার (+ পাওয়ার) যুক্ত হয়। চশমার উত্তল লেন্স ব্যবহৃত হলে তা ঋণাত্মক ডায়োপ্টার (− পাওয়ার) যুক্ত হয়।
ছানি বা ক্যাটার্যাক্ট (cataract) কী?
অনেক সময় মানুষের চোখের লেন্সের ওপর অস্বচ্ছ ঘোলাটে পর্দা সৃষ্টি হলে মানুষের দৃষ্টিকে ব্যাহত করে, সেই ঘোলাটে পর্দাকে ছানি বা ক্যাটার্যাক্ট বলে। সাধারণত বেশি বয়সে চোখে ছানি দেখা যায়।

ছানি সৃষ্টির কারণ কী?
বয়সজনিত কারণে লেন্সের ক্ষতি, অতিবেগুনি বা X রশ্মির সংস্পর্শে, ধূমপান, ডায়াবেটিস, চোখের শল্য চিকিৎসার পরবর্তী সময়ে ছানি তৈরি হয়।
চোখের ছানি সমস্যার লক্ষণগুলি লেখো।
চোখের ছানি সমস্যার লক্ষণগুলি হল –
- আবছা দৃষ্টি।
- আলোর চারিপাশে আলোর আভা দেখা।
- রাতে দেখতে অসুবিধা।
- উচ্চ আলোতে দেখতে অসুবিধা।
- রং অস্পষ্ট দেখা প্রভৃতি।
চোখের ছানি কীভাবে ঠিক করা সম্ভব?
বর্তমানে ফেকোইমালসিফিকেশন পদ্ধতিতে শল্য চিকিৎসার দ্বারা ছানি সমস্যা সমাধান করা হয়। এক্ষেত্রে কর্নিয়াতে ছিদ্র করে আল্ট্রাসনিক যন্ত্র (প্রোব) প্রবেশ করিয়ে পুরোনো বিনষ্ট লেন্স ভাঙ্গা হয় ও তা সাকশন পদ্ধতিতে বের করে দেওয়া হয়। পরে ওই স্থানে কৃত্রিম লেন্স বসিয়ে দেওয়া হয়।

পীতবিন্দু এবং অন্ধবিন্দুর মধ্যে পার্থক্য লেখো।
পীতবিন্দু এবং অন্ধবিন্দুর মধ্যে পার্থক্যগুলি হল –
বিষয় | পীতবিন্দু | অন্ধবিন্দু |
অবস্থান | তারারন্ধ্রের বিপরীত দিকে রেটিনার অবতল অংশ বিশেষ। | রেটিনার যে অঞ্চল থেকে অপটিক স্নায়ু নির্গত হয় সেই অংশটিকে বলে অন্ধবিন্দু। |
গঠনগত বৈশিষ্ট্য | কোন কোশ দ্বারা গঠিত অংশ। | আলোকসুবেদী কোশ থাকে না। |
বৈশিষ্ট্য | বস্তুর উত্তর প্রতিবিম্ব তৈরি হয়। | প্রতিবিম্ব গঠিত হয় না। |
অ্যাকুয়াস হিউমর ও ভিট্রিয়াস হিউমরের মধ্যে পার্থক্য লেখো।
অ্যাকুয়াস ও ভিট্রিয়াস হিউমরের মধ্যে পার্থক্যগুলি হল –
বিষয় | অ্যাকুয়াস হিউমর | ভিট্রিয়াস হিউমর |
অবস্থান | অক্ষিগোলকের অগ্র প্রকোষ্ঠের তরল। | অক্ষিগোলকের পশ্চাৎ প্রকোষ্ঠের তরল। |
গঠনগত বৈশিষ্ট্য | জলীয় তরল। | সান্দ্র (ঘন) তরল। |
কাজ | কর্নিয়া ও লেন্সকে পুষ্টি জোগায় ও প্রতিসারক মাধ্যমরূপে কাজ করে। | প্রতিসারক মাধ্যমরূপে কাজ করে ও চোখের আকৃতি বজায় রাখে। |
দ্বিনেত্র দৃষ্টি এবং একনেত্র দৃষ্টির মধ্যে পার্থক্য লেখো।
দ্বিনেত্র দৃষ্টি এবং একনেত্র দৃষ্টির মধ্যে পার্থক্যগুলি হল –
বিষয় | দ্বিনেত্র দৃষ্টি | একনেত্র দৃষ্টি |
প্রতিবিম্ব গঠনের ধরন | একই সঙ্গে দুটি চোখে একই বস্তুর প্রতিবিম্ব গঠিত হয়। | একই সঙ্গে দুটি চোখে দুটি আলাদা বস্তুর প্রতিবিম্ব গঠিত হয়। |
প্রতিবিম্বের সংখ্যা | একই সঙ্গে একটি। | একই সঙ্গে দুটি। |
মায়োপিয়া এবং হাইপেরোপিয়ার মধ্যে পার্থক্য লেখো।
মায়োপিয়া ও হাইপেরোপিয়ার মধ্যে পার্থক্যগুলি হল –
বিষয় | মায়োপিয়া | হাইপারোপিয়া |
নিকট বস্তু | স্পষ্ট দৃশ্যমান। | অস্পষ্ট দৃশ্যমান। |
দূরের বস্তু | অস্পষ্ট দৃশ্যমান। | স্পষ্ট দৃশ্যমান। |
সমস্যার কারণ | অক্ষিগোলকের আকার বৃদ্ধি। | অক্ষিগোলকের আকার হ্রাস। |
ত্রুটি সংশোধন | অবতল লেন্স বা মাইনাস পাওয়ার যুক্ত কাচ ব্যবহার। | উত্তল লেন্স বা প্লাস পাওয়ার যুক্ত কাচ ব্যবহার। |
মায়োপিয়া এবং প্রেসবায়োপিয়ার মধ্যে পার্থক্য লেখো।
মায়োপিয়া ও প্রেসবায়োপিয়ার মধ্যে পার্থক্যগুলি হল –
বিষয় | মায়োপিয়া | প্রেসবায়োপিয়া |
সমস্যার কারণ | অক্ষিগোলকের আকার বৃদ্ধি। | লেন্সের সংকোচন প্রসারণ ক্ষমতা হ্রাস। |
দৃষ্টি | নিকটে অবস্থিত বস্তু স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান কিন্তু দূরের বস্তু অস্পষ্টভাবে দৃশ্যমান। | দূরের বস্তু স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান কিন্তু নিকটে অবস্থিত বস্তু অস্পষ্টভাবে দৃশ্যমান। |
রোগের প্রকাশ সময়কাল | সাধারণত অল্প বয়সিদের ক্ষেত্রে এইপ্রকার সমস্যা দেখা যায়। | সাধারণত চল্লিশ বছর বয়সি ব্যক্তিদের এইপ্রকার সমস্যা দেখা যায়। |
ত্রুটি সংশোধন | অবতল লেন্স বা মাইনাস পাওয়ার যুক্ত কাচ ব্যবহার। | উত্তল লেন্স বা প্লাস পাওয়ার যুক্ত কাচ ব্যবহার। |
আজকে আমরা আমাদের আর্টিকেলে মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞানের প্রথম অধ্যায় “জীবজগতে নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয়” অধ্যায়ের ‘প্রাণীদের সাড়াপ্রদান ও ভৌত সমন্বয়‘ বিভাগের উপ-অধ্যায় ‘স্নায়ুতন্ত্র‘ -এর সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নগুলো মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য বা আপনি যদি প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি নেন তাহলে আপনার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই প্রশ্নগুলি মাধ্যমিক পরীক্ষা বা চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি যে এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা হলে আপনারা আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবো। তাছাড়া, আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জন যার এটি প্রয়োজন হবে তার সাথে শেয়ার করুন। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন