এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “চিত্রসহ মানুষের চোখের বিভিন্ন অংশের বর্ণনা দাও ও প্রতিবিম্ব গঠনের রেখাচিত্র প্রদর্শন করো।” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “চিত্রসহ মানুষের চোখের বিভিন্ন অংশের বর্ণনা দাও ও প্রতিবিম্ব গঠনের রেখাচিত্র প্রদর্শন করো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের পঞ্চম অধ্যায় “আলো“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

চিত্রসহ মানুষের চোখের বিভিন্ন অংশের বর্ণনা দাও ও প্রতিবিম্ব গঠনের রেখাচিত্র প্রদর্শন করো।
মানুষের চোখ (Human eye) –
মানুষের দ্বারা সৃষ্ট সমস্ত আলোকযন্ত্রের চেয়ে মানুষের চোখ অনেক বেশি জটিল যন্ত্র। নীচে এর গঠন বিবৃত করা হল –

মানুষের চোখের বিভিন্ন অংশ –
- অক্ষিগোলক – মানুষের চোখের আকার গোলাকার – একেই অক্ষিগোলক বলে যা একটি শক্ত কোটরের মধ্যে বসানো থাকে এবং মাংসপেশির সাহায্যে বিভিন্ন দিকে ঘোরানো যায়।
- স্ক্লেরা এবং কর্নিয়া – অক্ষিগোলকটি যে সাদা ও অস্বচ্ছ আবরণ দিয়ে আবৃত থাকে তাকে স্ক্লেরা বলে এবং এটি চোখকে বিভিন্ন বাহ্যিক আঘাত থেকে রক্ষা করে। স্ক্লেরার সামনের স্বচ্ছ ও অধিক বক্রতা ব্যাসার্ধ অংশটি হল কর্নিয়া যার মধ্য দিয়ে আলো চোখে প্রবেশ করে।
- করয়েড – স্ক্লেরার নীচের কালো রঙের আস্তরণ যা চোখের মধ্যে আলোর অভ্যন্তরীণ প্রতিফলনে বাধা দেয় তাকে করয়েড বলে।
- অক্ষিলেন্স – চোখের তারারন্ধ্র বা পিউপিলের পিছনেই থাকে একটি স্বচ্ছ নমনীয় পদার্থের তৈরি উভোত্তল লেন্স যা অক্ষিগোলকের সঙ্গে সিলিয়ারি ও সাসপেনসরি মাংসপেশির মাধ্যমে অক্ষিগোলকের সঙ্গে যুক্ত থাকে।
- রেটিনা – অক্ষিগোলকের পিছনের দিকের ভিতরের স্তরটিকে রেটিনা বলে যা কতকগুলি আলোকসুবেদী কোশ, নার্ভতন্ত্র ও রক্তবাহী নালি দিয়ে গঠিত আলোক সুবেদী পর্দা এবং চোখের লেন্স কর্তৃক সৃষ্ট বস্তুর প্রতিবিম্ব এর ওপরে পড়ে। রেটিনা চক্ষুনার্ভের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত হওয়ায় এতে সৃষ্ট প্রতিবিম্ব চক্ষুনার্ভের মাধ্যমে মস্তিষ্কে গিয়ে আমাদের দর্শনানুভূতি জন্মায়।
- অন্ধবিন্দু – রেটিনার যে স্থানে চক্ষুনার্ভ অক্ষিগোলকে প্রবেশ করে সেই স্থানে আলোর অনুভূতি থাকে না, ফলে এই স্থানে বস্তুর প্রতিবিম্ব গঠিত হলে তাকে দেখা যায় না-একেই অন্ধবিন্দু বলে।
- অ্যাকুয়াস হিউমার ও ভিট্রিয়াস হিউমার – রেটিনা ও লেন্সের অন্তর্বর্তী প্রকোষ্ঠে যে স্বচ্ছ বর্ণহীন জেলির মতো পদার্থ বর্তমান তাকে ভিট্রিয়াস হিউমার বলে। আবার, কর্নিয়ার পিছনের পাতলা প্রকোষ্ঠে যে স্বচ্ছ লবণাক্ত পদার্থ বর্তমান তাকে অ্যাকুয়াস হিউমার বলে।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
মানুষের চোখের প্রধান অংশগুলি কী কী?
মানুষের চোখের প্রধান অংশগুলি হল –
1. অক্ষিগোলক (গোলাকার কাঠামো),
2. স্ক্লেরা (সাদা, শক্ত আবরণ),
3. কর্নিয়া (স্বচ্ছ সামনের অংশ),
4. করয়েড (কালো রঙের আস্তরণ),
5. অক্ষিলেন্স (উভোত্তল লেন্স),
6. রেটিনা (আলোকসংবেদী পর্দা),
7. অন্ধবিন্দু (চক্ষুনার্ভের সংযোগস্থল),
8. অ্যাকুয়াস হিউমার ও ভিট্রিয়াস হিউমার (স্বচ্ছ তরল ও জেলি)।
কর্নিয়ার কাজ কী?
কর্নিয়া চোখের সামনের স্বচ্ছ অংশ যা আলোকে প্রতিসরণ করে এবং চোখের ভিতরে প্রবেশ করতে সাহায্য করে। এটি চোখকে ধুলো ও সংক্রমণ থেকে রক্ষাও করে।
মানুষের চোখে রেটিনা কীভাবে কাজ করে?
রেটিনা আলোকসংবেদী কোষ (রড ও কোণ কোষ) দিয়ে গঠিত। এটি চোখের লেন্স দ্বারা গঠিত প্রতিবিম্বকে বৈদ্যুতিক সংকেতে রূপান্তরিত করে এবং চক্ষুনার্ভের মাধ্যমে মস্তিষ্কে প্রেরণ করে।
অন্ধবিন্দু কী? এটি কেন গুরুত্বপূর্ণ?
অন্ধবিন্দু হল রেটিনার সেই অংশ যেখানে চক্ষুনার্ভ অক্ষিগোলকের সাথে যুক্ত হয়। এখানে কোনো আলোকসংবেদী কোষ নেই, তাই এই স্থানে পড়া বস্তুর প্রতিবিম্ব দেখা যায় না। এটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি চোখের স্নায়বিক সংযোগ স্থাপন করে।
অক্ষিলেন্স কীভাবে ফোকাস নিয়ন্ত্রণ করে?
অক্ষিলেন্স সিলিয়ারি পেশির সাহায্যে তার বক্রতা পরিবর্তন করে (সমতল বা উত্তল হয়ে) দূরের ও কাছের বস্তুর ফোকাস সামঞ্জস্য করে। একে সমঞ্জসতা (Accommodation) বলে।
স্ক্লেরা ও করয়েডের ভূমিকা কী?
স্ক্লেরা ও করয়েডের ভূমিকা হল –
1. স্ক্লেরা – চোখের সাদা, শক্ত আবরণ যা অক্ষিগোলককে রক্ষা করে।
2. করয়েড – কালো রঙের স্তর যা আলোর অভ্যন্তরীণ প্রতিফলন কমায় ও রেটিনাকে পুষ্টি দেয়।
রড ও কোণ কোষের মধ্যে পার্থক্য কী?
রড ও কোণ কোষের মধ্যে পার্থক্য হল –
1. রড কোষ – কম আলোতে কাজ করে, কালো-সাদা দর্শনের জন্য দায়ী।
2. কোণ কোষ – উজ্জ্বল আলোতে কাজ করে, রং চিনতে সাহায্য করে।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “চিত্রসহ মানুষের চোখের বিভিন্ন অংশের বর্ণনা দাও ও প্রতিবিম্ব গঠনের রেখাচিত্র প্রদর্শন করো।” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “চিত্রসহ মানুষের চোখের বিভিন্ন অংশের বর্ণনা দাও ও প্রতিবিম্ব গঠনের রেখাচিত্র প্রদর্শন করো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের পঞ্চম অধ্যায় “আলো“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন