এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “ম্যাগনেশিয়াম ধাতুকে নাইট্রোজেন গ্যাসের মধ্যে উত্তপ্ত করা হল। বিক্রিয়ার শেষে প্রাপ্ত অবক্ষেপে জল যোগ করে ফোটানো হল। – কী ঘটে সমীকরণসহ লেখো।” — নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “পরীক্ষাগার ও রাসায়নিক শিল্পে অজৈব রসায়ন” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

ম্যাগনেশিয়াম ধাতুকে নাইট্রোজেন গ্যাসের মধ্যে উত্তপ্ত করা হল। বিক্রিয়ার শেষে প্রাপ্ত অবক্ষেপে জল যোগ করে ফোটানো হল। – কী ঘটে সমীকরণসহ লেখো।
ম্যাগনেশিয়াম ধাতুকে নাইট্রোজেন গ্যাসের মধ্যে উত্তপ্ত করা হলে ম্যাগনেশিয়াম নাইট্রাইডের সাদা অধঃক্ষেপ উৎপন্ন হয়। প্রাপ্ত অধঃক্ষেপের সঙ্গে জল যোগ করে ফোটানো হলে ঝাঁজালো গন্ধযুক্ত অ্যামোনিয়া গ্যাস এবং ম্যাগনেশিয়াম হাইড্রক্সাইড উৎপন্ন হয়।
3Mg + N₂ → Mg₃N₂ (সাদা অধঃক্ষেপ)
Mg₃N₂ + 6H₂O → 3Mg(OH)₂ + 2NH₃
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
ম্যাগনেশিয়াম নাইট্রাইড (Mg₃N₂) জলের সাথে বিক্রিয়া করে কী উৎপন্ন করে?
ম্যাগনেশিয়াম নাইট্রাইড জলের সাথে প্রবলভাবে বিক্রিয়া করে ম্যাগনেশিয়াম হাইড্রক্সাইড [Mg(OH)₂] এবং অ্যামোনিয়া গ্যাস (NH₃) উৎপন্ন করে।
রাসায়নিক সমীকরণ – Mg₃N₂ + 6H₂O → 3Mg(OH)₂ + 2NH₃
ম্যাগনেশিয়াম নাইট্রাইড জলের সাথে বিক্রিয়া করে ক্ষারকীয় দ্রবণ তৈরি করে কেন?
কারণ এই বিক্রিয়ায় উৎপন্ন উভয় যৌগই ক্ষারকীয় ধর্মযুক্ত —
1. ম্যাগনেশিয়াম হাইড্রক্সাইড [Mg(OH)₂] একটি দুর্বল ক্ষার।
2. অ্যামোনিয়া গ্যাস (NH₃) জলে দ্রবীভূত হয়ে ক্ষারকীয় অ্যামোনিয়াম হাইড্রক্সাইড (NH₄OH) তৈরি করে।
সুতরাং, পুরো বিক্রিয়া মিশ্রণটি ক্ষারকীয় প্রকৃতির হয়ে ওঠে।
ম্যাগনেশিয়াম নাইট্রোজেনের সাথে বিক্রিয়া করে, কিন্তু লোহা বাতাসে জারিত হয়ে মরিচা ধরে — এদের মধ্যে পার্থক্য কী?
পার্থক্যটি বাতাসের উপাদানগুলোর সাথে বিক্রিয়ার প্রবণতা-র ওপর নির্ভর করে।
1. ম্যাগনেশিয়াম (Mg) – এটি অক্সিজেন (O₂) ও নাইট্রোজেন (N₂) উভয়ের সাথেই খুব সক্রিয়ভাবে বিক্রিয়া করে। বাতাসে পোড়ালে এটি প্রধানত ম্যাগনেশিয়াম অক্সাইড (MgO) তৈরি করে, তবে কিছু পরিমাণে ম্যাগনেশিয়াম নাইট্রাইড (Mg₃N₂)-ও গঠন করে।
2. লোহা (Fe) – লোহা মূলত বাতাসের অক্সিজেন ও জলীয় বাষ্পের সঙ্গে বিক্রিয়া করে হাইড্রেটেড আয়রন অক্সাইড (Fe₂O₃·xH₂O) বা মরিচা তৈরি করে। এটি নাইট্রোজেন গ্যাসের সঙ্গে সাধারণ তাপমাত্রায় বিক্রিয়া করে না।
Mg₃N₂ + H₂O বিক্রিয়াটি কি জারণ-বিজারণ বিক্রিয়া?
না, Mg₃N₂ -এর জলের সাথে বিক্রিয়াটি জারণ-বিজারণ বিক্রিয়া নয়। এখানে কোনো পরমাণুর জারণ সংখ্যা (oxidation number) পরিবর্তিত হয় না। এটি একটি দ্বৈত স্থানচ্যুতি (double displacement) বা হাইড্রোলাইসিস (hydrolysis) বিক্রিয়া, যেখানে যৌগটি জলের সাথে বিক্রিয়া করে দুটি নতুন যৌগ উৎপন্ন করে।
ম্যাগনেশিয়াম নাইট্রাইডের সাথে জল যোগ করলে কোন গ্যাসের গন্ধ পাওয়া যায় এবং কেন?
অ্যামোনিয়া (NH₃) গ্যাসের ঝাঁজালো গন্ধ পাওয়া যায়। কারণ ম্যাগনেশিয়াম নাইট্রাইড জলের সাথে বিক্রিয়া করে এই গ্যাস নির্গত করে।
ম্যাগনেশিয়াম ও নাইট্রোজেনের বিক্রিয়ায় কী উৎপন্ন হয়?
ম্যাগনেশিয়াম ও নাইট্রোজেনের বিক্রিয়ায় ম্যাগনেশিয়াম নাইট্রাইড (Mg₃N₂) এর সাদা অধঃক্ষেপ উৎপন্ন হয়।
সমীকরণ – 3Mg + N₂ → Mg₃N₂
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “ম্যাগনেশিয়াম ধাতুকে নাইট্রোজেন গ্যাসের মধ্যে উত্তপ্ত করা হল। বিক্রিয়ার শেষে প্রাপ্ত অবক্ষেপে জল যোগ করে ফোটানো হল। – কী ঘটে সমীকরণসহ লেখো।” — নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “পরীক্ষাগার ও রাসায়নিক শিল্পে অজৈব রসায়ন” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন