এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “মহারানির ঘোষণাপত্র বলতে কী বোঝো? মহারানির ঘোষণাপত্রের (1858) মূল উদ্দেশ্য কী ছিল?” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাস পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “মহারানির ঘোষণাপত্র বলতে কী বোঝো? মহারানির ঘোষণাপত্রের (1858) মূল উদ্দেশ্য কী ছিল?“ প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের চতুর্থ অধ্যায় “সংঘবদ্ধতার গোড়ার কথা“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

মহারানির ঘোষণাপত্র বলতে কী বোঝো?
1858 খ্রিস্টাব্দের 1 নভেম্বর এলাহাবাদে অনুষ্ঠিত এক দরবারে মহারানি ভিক্টোরিয়ার এক ঘোষণাপত্রের দ্বারা ভারত শাসন সম্পর্কিত কয়েকটি নীতির কথা বলা হয়। এগুলি মহারানির ঘোষণাপত্র নামে পরিচিত। এতে ভারতীয় রাজন্যবর্গের সঙ্গে স্বাক্ষরিত পূর্বতন সকল সন্ধির শর্তাদি রক্ষা, স্বত্ত্ববিলোপ নীতি পরিত্যাগ, সাম্রাজ্যবাদী নীতি পরিত্যাগ, জাতি-ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে সকল ভারতবাসীর যোগ্যতানুসারে সরকারি চাকুরি প্রাপ্তি প্রভৃতির কথা বলা হয়।
মহারানির ঘোষণাপত্রের মূল উদ্দেশ্য কী ছিল?
1857 খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহের পরিপ্রেক্ষিতে 1858 খ্রিস্টাব্দে ঘোষিত মহারানির ঘোষণাপত্রের মূল উদ্দেশ্য ছিল-কোম্পানির অপশাসনের অবসান ঘটিয়ে ব্রিটিশ রাজশক্তি কর্তৃক ভারতের প্রত্যক্ষ শাসনভার গ্রহণ করা। দ্বিতীয়ত, ভারতীয় শাসন ব্যবস্থায় নতুন নীতি ও আদর্শ প্রবর্তনের কথা ঘোষণা করে জনসাধারণকে আশ্বস্ত করা।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
মহারানির ঘোষণাপত্র কী?
1858 খ্রিস্টাব্দের 1 লা নভেম্বর এলাহাবাদে এক দরবারে ব্রিটিশ মহারানি ভিক্টোরিয়া ভারত শাসন সংক্রান্ত নতুন নীতিগুলি ঘোষণা করেন, যা “মহারানির ঘোষণাপত্র” নামে পরিচিত।
মহারানির ঘোষণাপত্র কেন জারি করা হয়?
1857 সালের সিপাহি বিদ্রোহ (মহাবিদ্রোহ) এর পর ব্রিটিশ সরকার ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসনের অবসান ঘটিয়ে সরাসরি ব্রিটিশ রাজতন্ত্রের অধীনে ভারত শাসন শুরু করে। এই ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে ব্রিটিশ সরকার ভারতীয়দের মধ্যে আস্থা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করে।
মহারানির ঘোষণাপত্রের মূল উদ্দেশ্য কী ছিল?
মহারানির ঘোষণাপত্রের মূল উদ্দেশ্য ছিল –
1. ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসন শেষ করে ব্রিটিশ রাজশক্তির সরাসরি শাসন প্রতিষ্ঠা করা।
2. ভারতীয় রাজন্যবর্গ ও জনগণকে ব্রিটিশ শাসনের প্রতি অনুগত রাখা।
3. স্বত্ববিলোপ নীতি (Doctrine of Lapse) বাতিল করা।
4. ধর্ম, বর্ণ ও জাতি নির্বিশেষে সকলকে সরকারি চাকরির সুযোগ দেওয়া।
মহারানির ঘোষণাপত্রে কী কী প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল?
মহারানির ঘোষণাপত্রের প্রতিশ্রুতি গুলি হল –
1. ভারতীয় রাজাদের সাথে পূর্বে স্বাক্ষরিত চুক্তিগুলি মেনে চলা হবে।
2. স্বত্ববিলোপ নীতি বাতিল করা হবে (রাজ্যগুলি দত্তক পুত্র গ্রহণের মাধ্যমে বজায় রাখতে পারবে)।
3. ভারতীয়দের ধর্মীয় স্বাধীনতা দেওয়া হবে।
4. সরকারি চাকরিতে যোগ্যতা অনুযায়ী নিয়োগ দেওয়া হবে।
মহারানির ঘোষণাপত্রের ঘোষণাপত্রের গুরুত্ব কী?
মহারানির ঘোষণাপত্রের ঘোষণাপত্রের গুরুত্ব –
1. এটি ভারতে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের সরাসরি শাসনের সূচনা করে।
2. ভারতীয় রাজন্যবর্গ ও সাধারণ মানুষকে ব্রিটিশ শাসনের প্রতি অনুগত রাখার চেষ্টা করা হয়।
3. এটি ভারতের শাসনব্যবস্থায় নতুন নীতির সূচনা করে।
মহারানির ঘোষণাপত্র কে পাঠ করেছিলেন?
এই ঘোষণাপত্রটি লর্ড ক্যানিং (ভারতের গভর্নর জেনারেল) এলাহাবাদ দরবারে পাঠ করেন।
মহারানির ঘোষণাপত্রের একটি সীমাবদ্ধতা কী ছিল?
যদিও এটি ভারতীয়দের কিছু অধিকার দিয়েছিল, কিন্তু প্রকৃত ক্ষমতা ভারতীয়দের হাতে দেওয়া হয়নি – শাসনব্যবস্থা সম্পূর্ণ ব্রিটিশদের হাতেই থেকে যায়।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “মহারানির ঘোষণাপত্র বলতে কী বোঝো? মহারানির ঘোষণাপত্রের (1858) মূল উদ্দেশ্য কী ছিল?” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই “মহারানির ঘোষণাপত্র বলতে কী বোঝো? মহারানির ঘোষণাপত্রের (1858) মূল উদ্দেশ্য কী ছিল?” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের চতুর্থ অধ্যায় “সংঘবদ্ধতার গোড়ার কথা” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।