নদী যখন অনেক দূর বয়ে এসে সমুদ্রের কাছে পৌঁছায়, তখন ভূমির ঢাল কমে যায় এবং নদীর গতিও ধীর হয়ে যায়। এই অবস্থাকে নদীর নিম্নগতি বলে।
নদী যখন অনেক দূর বয়ে এসে সমুদ্রের কাছে পৌঁছায়, তখন নদীর গতি কমে যায়। নদীর এই অংশে নদী অনেক বালি, পলি, কাদা ইত্যাদি বহন করে। নদীর গতি কমে যাওয়ায় এই বালি, পলি, কাদা নদীর তলদেশে জমা হতে থাকে।
দীর্ঘদিন ধরে এই বালি, পলি, কাদা জমা হয়ে নদীর মোহনার কাছে এক ধরণের ভূমিরূপ তৈরি হয়। এই ভূমিরূপের আকৃতি মাত্রাহীন ‘ব’ অক্ষর বা গ্রীক অক্ষর ডেল্টার (∆) মত হয়। এই ভূমিরূপকেই বদ্বীপ বলা হয়।
নদীর নিম্নগতিতে কীভাবে বদ্বীপ সৃষ্টি হয়?
নিম্নগতিতে নদী যতই মোহানার কাছে চলে আসে, ভূমির ঢাল ততই কমে যায়। এজন্য মোহানায় অর্থাৎ নদী এসে যেখানে সমুদ্রে মিলিত হয় সেখানে নদীর স্রোতের বেগ এবং বহন ক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়। এর ফলে তখন নদীর অবক্ষেপণ খুব বেড়ে যায়। নদীবাহিত পলি, বালি প্রভৃতি মোহানায় ব্যাপকভাবে সজ্জিত হয়। এ ছাড়া, নদীবাহিত এইসব পদার্থ সমুদ্রের লবণাক্ত জলের সংস্পর্শে এসে সুসংবদ্ধ হয় এবং মোহানায় জমা হতে শুরু করে। এগুলি জমতে জমতে ক্রমশ মোহানায় জলের ওপর নতুন ভূভাগ বা দ্বীপ সৃষ্টি হয়। তবে বদ্বীপ গঠনের জন্য মোহানায় নদীর সঞ্চয়ের হার সমুদ্রস্রোতের অপসারণ ক্ষমতার তুলনায় বেশি হওয়া দরকার। উদাহরণ — গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র নদীর মোহানায় এইভাবে যে বদ্বীপ সৃষ্টি হয়েছে সেটি বিশ্বের বৃহত্তম বদ্বীপ।
আরও পড়ুন – নদীর সঞ্জয়কার্যের ফলে গঠিত ভূমিরূপগুলি বর্ণনা করো
বদ্বীপ সংক্রান্ত কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর
পলল শঙ্কু ও পলল ব্যজনী কী?
পলল শঙ্কু: উচ্চ গতি বা পার্বত্য প্রবাহের শেষে এবং মধ্যগতির শুরুতে হঠাৎ ভূমি ঢাল হ্রাস পায়, এর ফলে পার্বত্য অঞ্চল থেকে বয়ে আনা নুড়ি, পাথর ও পলিরাশি সমভূমির শুরুতে পর্বতের পাদদেশে সঞ্চিত হয়ে যে ত্রিকোণাকৃতি ভূমিরূপের সৃষ্টি করে তাকেই পলল শঙ্কু বলা হয়।
পলল ব্যজনি: অনেকগুলো পলল শঙ্কু একসাথে মিশে যে হাত পাখার মতো যে ভূমিরূপ তৈরি করে, তাকেই পলল ব্যজনি বলে।
পলল শঙ্কু সৃষ্টির কারণ কী?
হঠাৎ ভূমি ঢালের পরিবর্তন এবং নদীর বহন ক্ষমতার হ্রাস এই প্রকার ভূমিরূপ সৃষ্টির কারণ।
নদীর নিম্নগতিতে কীভাবে বদ্বীপ সৃষ্টি হয়?
নদী যখন অনেক দূর বয়ে এসে সমুদ্রের কাছে পৌঁছায়, তখন নদীর গতি কমে যায় এবং ভূমির ঢাল কমে যায়, এই অবস্থাকে নদীর নিম্নগতি বলে। এই প্রক্রিয়ায় নদী অনেক বালি, পলি, কাদা ইত্যাদি বহন করে এবং নদীর গতি ধীর হয়ে যায়। নদীর এই অংশে বালি, পলি, কাদা নদীর তলদেশে জমা হতে থাকে। এই জমানো উপাদানগুলি দীর্ঘদিন ধরে নদীর মোহনার কাছে এক ধরণের ভূমিরূপ তৈরি হয়, যা বদ্বীপ হয়। এই ভূমিরূপের আকৃতি মাত্রাহীন, অথবা ‘ব’ অক্ষর বা গ্রীক অক্ষর ডেল্টার (∆) মত হতে পারে, এই রূপকে বদ্বীপ বলা হয়।
বদ্বীপ কি?
বদ্বীপ হলো এক ধরণের ভূমিরূপ, যা নদীর নিম্নগতির ফলে নদীর তলদেশে জমা হতে থাকে। এটি মোহানায় জমে যাওয়া বালি, পলি, কাদা ইত্যাদি উপাদানের সংমিশ্রণে তৈরি হয় এবং এর আকৃতি মাত্রাহীন, অথবা ‘ব’ অক্ষর বা গ্রীক অক্ষর ডেল্টার (∆) মত হতে পারে। বদ্বীপ অধিকাংশই নদীর মোহনার কাছে সমুদ্রে তৈরি হয়।