এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “নীল বিদ্রোহ কি? নীলবিদ্রোহে হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের ভূমিকা কীরূপ ছিল?” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাস পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “নীল বিদ্রোহ কি? নীলবিদ্রোহে হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের ভূমিকা কীরূপ ছিল?।“ প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের তৃতীয় অধ্যায় “প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ – বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

নীল বিদ্রোহ কি?
18 শতকে ইউরোপে শিল্প বিপ্লবের ফলে ইংল্যান্ডে বস্ত্র শিল্পে নীলের ব্যাপক চাহিদা বৃদ্ধি পায়। এসময় ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলা ও বিহারের কৃষকদের লাভজনক নীল চাষে উৎসাহিত করে। কিন্তু নীল চাষ কৃষকদের জন্য লাভজনক না হওয়ায় কৃষকেরা নীল চাষে অস্বীকৃতি জানালে তাদের উপর অমানবিক নির্যাতন শুরু হয়। 1859-1860 সাল জুড়ে বাংলার বিস্তৃর্ন অঞ্চলব্যপী নির্যাতিত কৃষকেরা সংঘবদ্ধ ভাবে নীল চাষ করাতে অসম্মতি জানায়। নীলকরদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কৃষকদের এই বিদ্রোহ কে ইতিহাসে ‘নীল বিদ্রোহ’ (Indigo revolt) নামে পরিচিত।
নীলবিদ্রোহে হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের ভূমিকা কীরূপ ছিল?
হিন্দু প্যাট্রিয়ট পত্রিকার সম্পাদক হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায় তাঁর পত্রিকায় একদিকে নীলকর সাহেবদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন এবং অন্যদিকে নীলকর-বিরোধী জনমত গঠনে, প্রয়াসী হয়েছিলেন। সাধারণ কৃষকদের উপর নীলকর সাহেবদের অকথ্য অত্যাচার, দাঁদন প্রথা, উর্বর জমিতে বলপূর্বক নীলচাষে কৃষকদ্যে বাধ্য করা প্রভৃতি বিষয় তাঁর পত্রিকায় বিস্তৃতভাবে তুলে ধরেন। তিনি তাঁর পত্রিকার মাধ্যমে নীলকর সাহেবদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে শিক্ষিত মধ্যবিত্ত শ্রেণিকে সংগঠিত করেন।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
নীল বিদ্রোহের কারণ কী ছিল?
নীল বিদ্রোহের কারণ গুলি হল –
1. শিল্প বিপ্লবের কারণে ইংল্যান্ডে নীলের চাহিদা বেড়ে যাওয়া।
2. ব্রিটিশ নীলকররা কৃষকদের উর্বর জমিতে নীল চাষে বাধ্য করা।
3. নীল চাষে কৃষকদের ক্ষতি হওয়া (দাদন প্রথা ও শোষণ)।
4. নীলকরদের অত্যাচার ও শারীরিক নির্যাতন।
নীল বিদ্রোহ কখন হয়েছিল?
1859-1860 সাল জুড়ে বাংলা ও বিহারে নীল বিদ্রোহ সংঘটিত হয়।
নীল বিদ্রোহের ফলাফল কী ছিল?
নীল বিদ্রোহের ফলাফল গুলি হল –
1. ব্রিটিশ সরকার নীল কমিশন গঠন করে (1860)।
2. নীল চাষে কৃষকদের জোর করার নীতি কিছুটা শিথিল হয়।
3. পরবর্তীতে কৃত্রিম নীলের আবিষ্কারে নীল চাষের গুরুত্ব কমে যায়।
নীল বিদ্রোহের নেতৃত্বে কারা ছিলেন?
1. দিগম্বর বিশ্বাস ও বিষ্ণুচরণ বিশ্বাস (নদীয়া জেলার নেতা)।
2. রফিক মণ্ডল ও কাদের মোল্লা (চৌগাছা অঞ্চলের নেতা)।
3. হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায় (সাংবাদিক ও গণমাধ্যমের মাধ্যমে সমর্থন)।
নীল বিদ্রোহের ঐতিহাসিক গুরুত্ব কী?
নীল বিদ্রোহের ঐতিহাসিক গুরুত্ব গুলি হল –
1. এটি ছিল ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে প্রথম সংগঠিত কৃষক বিদ্রোহ।
2. পরবর্তীতে ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে কৃষকদের সংঘর্ষের প্রেরণা দেয়।
3. ব্রিটিশ শোষণ নীতির বিরুদ্ধে গণসচেতনতা তৈরি করে।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “নীল বিদ্রোহ কি? নীলবিদ্রোহে হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের ভূমিকা কীরূপ ছিল?” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই “নীল বিদ্রোহ কি? নীলবিদ্রোহে হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের ভূমিকা কীরূপ ছিল?” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের তৃতীয় অধ্যায় “প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ – বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।