এখনই আমাদের Telegram Community গ্রুপে যোগ দিন। এখানে WBBSE বোর্ডের পঞ্চম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণির যেকোনো বিষয়ভিত্তিক সমস্যা শেয়ার করতে পারেন এবং একে অপরের সাহায্য করতে পারবেন। এছাড়া, কোনও সমস্যা হলে আমাদের শিক্ষকরা তা সমাধান করে দেবেন।

Telegram Logo Join Our Telegram Community

নীলদর্পণ নাটক থেকে উনিশ শতকের বাংলার সমাজের কীরূপ প্রতিফলন পাওয়া যায়?

এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “নীলদর্পণ নাটক থেকে উনিশ শতকের বাংলার সমাজের কীরূপ প্রতিফলন পাওয়া যায়? নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাস পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “নীলদর্পণ নাটক থেকে উনিশ শতকের বাংলার সমাজের কীরূপ প্রতিফলন পাওয়া যায়?“ প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের দ্বিতীয় অধ্যায় “সংস্কার – বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

নীলদর্পণ নাটক থেকে উনিশ শতকের বাংলার সমাজের কীরূপ প্রতিফলন পাওয়া যায়?
Contents Show

নীলদর্পণ নাটক থেকে উনিশ শতকের বাংলার সমাজের কীরূপ প্রতিফলন পাওয়া যায়?

উনিশ শতকে বাংলার নিপীড়িত কৃষক সমাজের এক জীবন্ত নাট্য দলিল দীনবন্ধু মিত্রের ‘নীলদর্পণ’।

প্রেক্ষাপট –

বাংলার নীলচাষিদের উপর নীলকর সাহেবদের শোষণ, অত্যাচার ও নীলবিদ্রোহের প্রেক্ষাপটে কোম্পানির কর্মচারী দীনবন্ধু মিত্র 1860 খ্রিস্টাব্দে ‘কষ্যচিৎ পথিকষ্য’ (জনৈক পথিক) ছদ্মনামের আড়ালে রচনা করেন ‘নীলদর্পণ’।

নীলদর্পণ নাটক থেকে উনিশ শতকের বাংলার সমাজের কীরূপ প্রতিফলন পাওয়া যায়?

সমাজচিত্র –

নীলচাষ এবং নীলকরদের অত্যাচারে বাংলার সমাজ-জীবনে যে ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল, তার অশ্রুসজল কাহিনি ‘নীলদর্পণ’-এ পরিবেশিত হয়েছে। অত্যাচারী নীলকর উড সাহেবের চরিত্র চিত্রণের মধ্য দিয়ে নাট্যকার নীলকরদের অত্যাচার, দমন-পীড়নের বাস্তব চিত্র অঙ্কন করেছেন। নীলকররা ছলে-বলে-কৌশলে দরিদ্র প্রজাকে কিছু টাকা দাঁদন দিয়ে তাকে নীলচাষে এবং উৎপন্ন নীল নীলকরদের কাছে বিনা লাভে বিক্রি করতে বাধ্য করত। প্রহার, বলপূর্বক আটক, গৃহদাহ, কৃষিসরঞ্জাম বাজেয়াপ্তকরণ, স্ত্রী-কন্যার অপহরণ, লাঞ্ছনা প্রভৃতি ছিল নীলচাষিদের নিত্যপ্রাপ্তি। এসবের বিরুদ্ধে তারা একজোট হয়েছিল। তাদের সম্মিলিত প্রতিবাদের ভাষাই ধরা পড়েছে এই নাটকে। সাধুচরণ, ক্ষেত্রমণি, তোরাপ, আদুরি প্রমুখ শ্রমজীবি চরিত্ররা হয়ে উঠেছে নীলকর বিরোধী আন্দোলনের প্রতিভূ।

ভাষান্তর –

নীলচাষিদের করুন কাহিনি শ্বেতাঙ্গ সমাজের কাছে তুলে ধরতে মাইকেল মধুসূদন দত্ত গোপনে এর ইংরেজি অনুবাদ করেন। রেভারেন্ড জেমস লঙ নামক জনৈক ভারত প্রেমিক খ্রিস্টান পাদ্রী ‘The Indigo-Planting Mirror’ শিরোনামে এই অনুবাদটি প্রকাশ করেন। কিন্তু স্বার্থ বিরোধী হওয়ায় নীলকররা লঙ সাহেবের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করে। মামলায় পরাজিত লঙ সাহেবের এক মাসের কারাদণ্ড ও হাজার টাকা জরিমানা হয়।

মন্তব্য –

নীলদর্পণ যথার্থই নীল বিদ্রোহের এক জীবন্ত দলিল। অনুদিত নীলদর্পণ একদিকে যেমন শ্বেতাঙ্গ সমাজকে নীলকরদের অত্যাচার সম্পর্কে শিহরিত করে, অন্যদিকে এই নাটক সাম্রাজ্যবাদী শোষণ ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে বাঙালি সমাজকে সচেতন ও প্রতিবাদী করে তোলে। ‘নীলদর্পণ’ বাঙালির মনে জ্বালিয়ে দেয় দেশপ্রেম ও জাতীয়তাবাদের বহ্নিশিখা।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর

নীলদর্পণ নাটকটি কে লিখেছেন?

নীলদর্পণ নাটকটি লিখেছেন দীনবন্ধু মিত্র। তিনি এটি 1860 সালে “কষ্যচিৎ পথিকষ্য” (জনৈক পথিক) ছদ্মনামে প্রকাশ করেন।

নীলদর্পণ নাটকের পটভূমি কী?

নীলদর্পণ নাটকের পটভূমি হলো উনিশ শতকে বাংলার নীলচাষিদের উপর নীলকর সাহেবদের শোষণ ও অত্যাচার। নীলকররা কৃষকদের জোরপূর্বক নীলচাষ করতে বাধ্য করত এবং তাদের ওপর বিভিন্ন ধরনের অত্যাচার চালাত।

নীলদর্পণ নাটকে কী ধরনের সমাজচিত্র ফুটে উঠেছে?

নীলদর্পণ নাটকে বাংলার নীলচাষিদের দুর্দশা, নীলকরদের অত্যাচার, শোষণ ও দমন-পীড়নের বাস্তব চিত্র ফুটে উঠেছে। নাটকে নীলকরদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে কৃষকদের প্রতিবাদ ও সংঘবদ্ধ হওয়ার চিত্রও দেখানো হয়েছে।

নীলদর্পণ নাটকের প্রধান চরিত্রগুলি কারা?

নীলদর্পণ নাটকের প্রধান চরিত্রগুলি হলো সাধুচরণ, ক্ষেত্রমণি, তোরাপ, আদুরি প্রমুখ। এরা সবাই নিপীড়িত কৃষক সমাজের প্রতিনিধি এবং নীলকরদের বিরুদ্ধে সংগ্রামের প্রতীক।

নীলদর্পণ নাটকের ইংরেজি অনুবাদ কে করেছিলেন?

নীলদর্পণ নাটকের ইংরেজি অনুবাদ করেছিলেন মাইকেল মধুসূদন দত্ত। এটি “The Indigo-Planting Mirror” শিরোনামে প্রকাশিত হয়।

নীলদর্পণ নাটকের ইংরেজি অনুবাদ প্রকাশ করেছিলেন কে?

নীলদর্পণ নাটকের ইংরেজি অনুবাদ প্রকাশ করেছিলেন রেভারেন্ড জেমস লঙ। তিনি একজন ভারতপ্রেমিক খ্রিস্টান পাদ্রী ছিলেন।

নীলদর্পণ নাটকের ইংরেজি অনুবাদ প্রকাশের পর কী ঘটেছিল?

নীলদর্পণ নাটকের ইংরেজি অনুবাদ প্রকাশের পর নীলকররা রেভারেন্ড জেমস লঙের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করে। মামলায় লঙ সাহেবের এক মাসের কারাদণ্ড ও হাজার টাকা জরিমানা হয়।

নীলদর্পণ নাটকের ঐতিহাসিক গুরুত্ব কী?

নীলদর্পণ নাটকটি উনিশ শতকের বাংলার নীল বিদ্রোহের একটি জীবন্ত দলিল। এটি নীলকরদের অত্যাচার ও শোষণের বিরুদ্ধে কৃষকদের সংগ্রামের চিত্র তুলে ধরে। এছাড়া, এটি সাম্রাজ্যবাদী শোষণের বিরুদ্ধে বাঙালি সমাজকে সচেতন ও প্রতিবাদী করে তোলে।

নীলদর্পণ নাটকটি বাঙালি সমাজে কী প্রভাব ফেলেছিল?

নীলদর্পণ নাটকটি বাঙালি সমাজে দেশপ্রেম ও জাতীয়তাবাদের চেতনা জাগ্রত করেছিল। এটি নীলকরদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করে এবং শোষণের বিরুদ্ধে সংগ্রামের প্রেরণা দেয়।

নীলদর্পণ নাটকটি কেন গুরুত্বপূর্ণ?

নীলদর্পণ নাটকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি উনিশ শতকের বাংলার সমাজের একটি বাস্তব চিত্র তুলে ধরে। এটি নীলকরদের অত্যাচার, কৃষকদের দুর্দশা এবং তাদের সংগ্রামের কথা বলে, যা বাংলার ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়।


এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “নীলদর্পণ নাটক থেকে উনিশ শতকের বাংলার সমাজের কীরূপ প্রতিফলন পাওয়া যায়?” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই “নীলদর্পণ নাটক থেকে উনিশ শতকের বাংলার সমাজের কীরূপ প্রতিফলন পাওয়া যায়?” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের দ্বিতীয় অধ্যায় “সংস্কার – বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।

Share via:

মন্তব্য করুন