এখনই আমাদের Telegram Community গ্রুপে যোগ দিন। এখানে WBBSE বোর্ডের পঞ্চম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণির যেকোনো বিষয়ভিত্তিক সমস্যা শেয়ার করতে পারেন এবং একে অপরের সাহায্য করতে পারবেন। এছাড়া, কোনও সমস্যা হলে আমাদের শিক্ষকরা তা সমাধান করে দেবেন।

Telegram Logo Join Our Telegram Community

পাশ্চাত্য শিক্ষা ও নারীশিক্ষার বিস্তারে রাধাকান্ত দেবের অবদান – শিক্ষাক্ষেত্রে রাধাকান্ত দেব -এর উদ্যোগ উল্লেখ করো

এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “শিক্ষাক্ষেত্রে রাধাকান্ত দেব -এর উদ্যোগ উল্লেখ করো। পাশ্চাত্য শিক্ষা ও নারীশিক্ষার বিস্তারে রাধাকান্ত দেবের অবদান। নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাস পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “শিক্ষাক্ষেত্রে রাধাকান্ত দেব -এর উদ্যোগ উল্লেখ করো। পাশ্চাত্য শিক্ষা ও নারীশিক্ষার বিস্তারে রাধাকান্ত দেবের অবদান।“ প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের দ্বিতীয় অধ্যায় “সংস্কার – বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

শিক্ষাক্ষেত্রে রাধাকান্ত দেব -এর উদ্যোগ উল্লেখ করো। পাশ্চাত্য শিক্ষা ও নারীশিক্ষার বিস্তারে রাধাকান্ত দেবের অবদান।
Contents Show

শিক্ষাক্ষেত্রে রাধাকান্ত দেব -এর উদ্যোগ উল্লেখ করো।

1817 খ্রিস্টাব্দের 4 জুলাই প্রতিষ্ঠিত হয় ‘স্কুল বুক সোসাইটি’-রাধাকান্ত দেব ছিলেন এর সহযোগী। তিনি 1818 খ্রিস্টাব্দ থেকে ‘হিন্দু কলেজ’-এর কাজকর্ম পরিচালনা করেন, তিনি এই কলেজের নিয়মাবলিও রচনা করেন। নারীশিক্ষার উন্নয়নের ব্যাপারেও তাঁর উল্লেখযোগ্য অবদান ছিল, 1853 খ্রিস্টাব্দে রাধাকান্ত দেব ‘হিন্দু মেট্রোপলিটান কলেজ’ -এর পরিচালন সমিতির সভাপতির পদে যোগদান করেন।

পাশ্চাত্য শিক্ষা ও নারীশিক্ষার বিস্তারে রাধাকান্ত দেবের অবদান।

সংস্কৃত ও ফারসি ভাষায় অসাধারণ পান্ডিত্য এবং রক্ষণশীল হিন্দু সমাজের নেতা হিসেবে পরিচিত রাজা রাধাকান্ত দেব পাশ্চাত্য শিক্ষা,নারীশিক্ষা ও চিকিৎসাবিদ্যা শিক্ষার পক্ষপাতী ছিলেন।

হিন্দু কলেজে অবদান –

তাঁর পিতা গোপীমোহন দেব হিন্দু কলেজের পরিচালন সমিতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। পিতার পর 1818 খ্রিস্টাব্দ থেকে দীর্ঘ বত্রিশ বছর ধরে তিনি এই প্রতিষ্ঠানের কাজকর্ম পরিচালনা করেন। কলেজের নিয়মাবলী রচনায় তাঁর ভূমিকা ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি ধর্মনিরপেক্ষ শিক্ষায় বিশ্বাসী ছিলেন এবং মনে করতেন যে শিক্ষকদের প্রধান কাজই ছিল ছাত্রদের পঠন-পাঠন এবং তাদের মধ্যে নৈতিকতা জাগ্রত করা।

শিক্ষাক্ষেত্রে রাধাকান্ত দেব -এর উদ্যোগ উল্লেখ করো। পাশ্চাত্য শিক্ষা ও নারীশিক্ষার বিস্তারে রাধাকান্ত দেবের অবদান।

ডেভিড হেয়ারকে সহযোগিতা –

দেশীয় ছাত্রদের জন্য স্কুল পাঠ্য বই রচনার উদ্দেশ্য 1817 খ্রিস্টাব্দের 4 ঠা জুলাই স্কুল বুক সোসাইটি প্রতিষ্টিত হলে রাধাকান্ত দেব সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। স্কুল বুক সোসাইটির উদ্যোগে স্কুল সোসাইটি 1818 খ্রিস্টাব্দের 1 লা সেপ্টেম্বর প্রতিষ্টিত হয়। এর উদ্দেশ্য ছিল কলকাতার বিভিন্ন অঞ্চলে বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা। এই সংগঠনের অবৈতনিক ভারতীয় সম্পাদক এবং ইউরোপীয় সম্পাদক ডেভিড হেয়ারের উদ্যোগে কলকাতায় বেশ কিছু বিদ্যালয় প্রতিষ্টিত হয়।

কলকাতা মেডিকেল কলেজে অবদান –

তিনি ভারতীয় ছাত্রদের বিজ্ঞান শিক্ষার পক্ষপাতী ছিলেন। কলকাতা মেডিকেল কলেজ এ শবব্যবচ্ছেদকে কেন্দ্র করে হিন্দুসমাজ যখন প্রবলভাবে আলোড়িত, তখন রক্ষণশীল হিন্দু সমাজের নেতা রাধাকান্ত দেব শবব্যবচ্ছেদকে সমর্থন জানান। উচ্চতর চিকিৎসা বিজ্ঞান ও শবব্যবচ্ছেদ শিক্ষার উদ্দেশ্য ইংল্যান্ড এ ভারতীয় ছাত্রদের পাঠাবার জন্য একটি তহবিল গঠিত হলে তিনি এই উদ্যোগকে সমর্থন জানান। তিনি ভারতীয় কৃষি ও উদ্যানপালন সংস্থার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ভাবে যুক্ত ছিলেন এবং কিছুদিন এই সংস্থার সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।

নারীশিক্ষায় অবদান –

তিনি নারীশিক্ষার সমর্থক ছিলেন এবং মনে করতেন যে নারীশিক্ষা ব্যতীত সমাজের কোনো উন্নয়ন সম্ভব নয়। স্কুল সোসাইটি র ভারতীয় সম্পাদক হিসেবে এ বিষয়ে তিনি যথেষ্ট সক্রিয় ছিলেন। 1822 খ্রিস্টাব্দে গৌরমোহন বিদ্যালঙ্কার স্ত্রী শিক্ষা বিধায়ক নামে একটি পুস্তিকা প্রকাশ করার উদ্যোগ নিলে রাধাকান্ত তাঁকে সাহায্য করেন। 1849 সালে ড্রিংক ওয়াটার বেথুন ক্যালকাটা ফিমেল স্কুল প্রতিষ্ঠায় উদ্যোগী হলে রাধাকান্ত তাঁকে এই শর্তে সাহায্য করতে সম্মত যে এখানে ছাত্রীদের মধ্য খ্রিস্টধর্ম প্রচার করা হবে না।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর

রাধাকান্ত দেব কে ছিলেন?

রাধাকান্ত দেব ছিলেন একজন বিশিষ্ট সমাজ সংস্কারক, শিক্ষাবিদ এবং হিন্দু সমাজের নেতা। তিনি পাশ্চাত্য শিক্ষা, নারীশিক্ষা এবং চিকিৎসাবিদ্যার প্রচারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। তিনি হিন্দু কলেজ, স্কুল বুক সোসাইটি এবং কলকাতা মেডিকেল কলেজের মতো প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিলেন।

রাধাকান্ত দেবের শিক্ষাক্ষেত্রে প্রধান অবদানগুলি কী ছিল?

1. হিন্দু কলেজ – তিনি 1818 সাল থেকে দীর্ঘ 32 বছর হিন্দু কলেজের পরিচালনায় যুক্ত ছিলেন এবং কলেজের নিয়মাবলী রচনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
2. স্কুল বুক সোসাইটি – 1817 সালে প্রতিষ্ঠিত এই সংস্থার মাধ্যমে তিনি স্কুল পাঠ্যবই রচনা ও প্রকাশের কাজে সহযোগিতা করেন।
3. নারীশিক্ষা – তিনি নারীশিক্ষার পক্ষে সক্রিয় ছিলেন এবং 1849 সালে বেথুন স্কুল প্রতিষ্ঠায় সাহায্য করেন।
4. কলকাতা মেডিকেল কলেজ – তিনি শবব্যবচ্ছেদ ও চিকিৎসাবিদ্যার শিক্ষাকে সমর্থন করেন এবং ভারতীয় ছাত্রদের উচ্চশিক্ষার জন্য ইংল্যান্ডে পাঠানোর উদ্যোগ নেন।

রাধাকান্ত দেব নারীশিক্ষার উন্নয়নে কী ভূমিকা পালন করেছিলেন?

রাধাকান্ত দেব নারীশিক্ষার গুরুত্ব উপলব্ধি করেছিলেন এবং এ বিষয়ে সক্রিয় ছিলেন। তিনি স্কুল সোসাইটির ভারতীয় সম্পাদক হিসেবে নারীশিক্ষার প্রচারে কাজ করেন। 1822 সালে গৌরমোহন বিদ্যালঙ্কারের স্ত্রী শিক্ষা বিধায়ক পুস্তিকা প্রকাশে তিনি সাহায্য করেন। 1849 সালে বেথুন স্কুল প্রতিষ্ঠায়ও তিনি সমর্থন জানান, তবে শর্ত রাখেন যে স্কুলে খ্রিস্টধর্ম প্রচার করা হবে না।

হিন্দু কলেজে রাধাকান্ত দেবের ভূমিকা কী ছিল?

রাধাকান্ত দেব 1818 সাল থেকে হিন্দু কলেজের পরিচালনার দায়িত্ব নেন এবং দীর্ঘ 32 বছর এই পদে ছিলেন। তিনি কলেজের নিয়মাবলী রচনা করেন এবং ধর্মনিরপেক্ষ শিক্ষায় বিশ্বাসী ছিলেন। তিনি মনে করতেন যে শিক্ষকদের প্রধান কাজ হল ছাত্রদের জ্ঞানদান এবং নৈতিকতা জাগ্রত করা।

স্কুল বুক সোসাইটি প্রতিষ্ঠায় রাধাকান্ত দেবের ভূমিকা কী ছিল?

1817 সালে স্কুল বুক সোসাইটি প্রতিষ্ঠিত হলে রাধাকান্ত দেব এর সহযোগী হিসেবে কাজ করেন। এই সংস্থার উদ্দেশ্য ছিল স্কুল পাঠ্যবই রচনা ও প্রকাশ করা। তিনি ডেভিড হেয়ারের সাথে যৌথভাবে কলকাতায় বেশ কিছু বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায়ও ভূমিকা রাখেন।

কলকাতা মেডিকেল কলেজে রাধাকান্ত দেবের অবদান কী?

রাধাকান্ত দেব কলকাতা মেডিকেল কলেজে শবব্যবচ্ছেদ ও চিকিৎসাবিদ্যার শিক্ষাকে সমর্থন করেন। তিনি ভারতীয় ছাত্রদের উচ্চতর চিকিৎসা বিজ্ঞান শিক্ষার জন্য ইংল্যান্ডে পাঠানোর উদ্যোগেও সহায়তা করেন। এছাড়াও, তিনি ভারতীয় কৃষি ও উদ্যানপালন সংস্থার সাথেও যুক্ত ছিলেন।

রাধাকান্ত দেবের শিক্ষা সংক্রান্ত চিন্তাধারা কী ছিল?

রাধাকান্ত দেব ধর্মনিরপেক্ষ শিক্ষায় বিশ্বাসী ছিলেন এবং মনে করতেন যে শিক্ষার মাধ্যমে সমাজের উন্নয়ন সম্ভব। তিনি পাশ্চাত্য শিক্ষা, নারীশিক্ষা এবং বিজ্ঞান শিক্ষার পক্ষে ছিলেন। তিনি শিক্ষকদের দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন ছিলেন এবং মনে করতেন যে তাদের প্রধান কাজ হল ছাত্রদের জ্ঞানদান ও নৈতিকতা শেখানো।

রাধাকান্ত দেবের নারীশিক্ষা সম্পর্কিত চিন্তাভাবনা কী ছিল?

রাধাকান্ত দেব নারীশিক্ষার গুরুত্ব উপলব্ধি করেছিলেন এবং মনে করতেন যে নারীশিক্ষা ছাড়া সমাজের উন্নয়ন সম্ভব নয়। তিনি নারীশিক্ষার প্রচারে সক্রিয় ছিলেন এবং বেথুন স্কুল প্রতিষ্ঠায় সাহায্য করেছিলেন, তবে শর্ত রেখেছিলেন যে স্কুলে ধর্মীয় প্রভাব থাকবে না।

রাধাকান্ত দেবের অন্যান্য সামাজিক অবদান কী ছিল?

রাধাকান্ত দেব শুধু শিক্ষাক্ষেত্রেই নয়, সমাজ সংস্কারেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি রক্ষণশীল হিন্দু সমাজের নেতা ছিলেন, তবে পাশ্চাত্য শিক্ষা ও বিজ্ঞান শিক্ষার পক্ষে ছিলেন। তিনি কলকাতা মেডিকেল কলেজে শবব্যবচ্ছেদের সমর্থন দিয়ে সমাজে বৈজ্ঞানিক চিন্তার প্রসারে ভূমিকা রাখেন।

রাধাকান্ত দেবের শিক্ষা সংক্রান্ত উদ্যোগগুলি কীভাবে সমাজকে প্রভাবিত করেছিল?

রাধাকান্ত দেবের উদ্যোগগুলি পাশ্চাত্য শিক্ষা, নারীশিক্ষা এবং বিজ্ঞান শিক্ষার প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাঁর প্রচেষ্টায় হিন্দু কলেজ, স্কুল বুক সোসাইটি এবং কলকাতা মেডিকেল কলেজের মতো প্রতিষ্ঠানগুলি গড়ে উঠে, যা পরবর্তীতে ভারতীয় শিক্ষা ব্যবস্থার মাইলফলক হয়ে ওঠে। তাঁর নারীশিক্ষার প্রচেষ্টা নারীদের সমাজে অধিকতর স্বাধীনতা ও শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি করে।


এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “শিক্ষাক্ষেত্রে রাধাকান্ত দেব -এর উদ্যোগ উল্লেখ করো। পাশ্চাত্য শিক্ষা ও নারীশিক্ষার বিস্তারে রাধাকান্ত দেবের অবদান।” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই “শিক্ষাক্ষেত্রে রাধাকান্ত দেব -এর উদ্যোগ উল্লেখ করো। পাশ্চাত্য শিক্ষা ও নারীশিক্ষার বিস্তারে রাধাকান্ত দেবের অবদান।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের দ্বিতীয় অধ্যায় “সংস্কার – বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।

Share via:

মন্তব্য করুন