প্রাকৃতিক পলিমার এবং কৃত্রিম পলিমার কাকে বলে? প্রাকৃতিক পলিমার এবং কৃত্রিম পলিমারের মধ্যে পার্থক্য

Souvick

এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “প্রাকৃতিক পলিমার এবং কৃত্রিম পলিমার কাকে বলে? উদাহরণ দাও। প্রাকৃতিক পলিমার এবং কৃত্রিম পলিমারের মধ্যে পার্থক্য কী?” — নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “জৈব রসায়ন” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

প্রাকৃতিক পলিমার এবং কৃত্রিম পলিমার কাকে বলে? উদাহরণ দাও। প্রাকৃতিক পলিমার এবং কৃত্রিম পলিমারের মধ্যে পার্থক্য কী?

প্রাকৃতিক পলিমার এবং কৃত্রিম পলিমার কাকে বলে? উদাহরণ দাও।

প্রাকৃতিক পলিমার –

প্রাকৃতিক উদ্ভিদ বা প্রাণী থেকে যে পলিমারগুলি পাওয়া যায় তাকে প্রাকৃতিক পলিমার বলে। যেমন—প্রাকৃতিক রবার, সেলুলোজ, স্টার্চ প্রোটিন, নিউক্লিক অ্যাসিড ইত্যাদি।

কৃত্রিম পলিমার –

রসায়নাগারে কৃত্রিমভাবে যে পলিমার তৈরি করা হয় তাদের কৃত্রিম পলিমার বলে। যেমন – নাইলন, টেরিলিন, পলিথিন, টেফলন, পলিভিনাইল ক্লোরাইড (PVC) ইত্যাদি।

প্রাকৃতিক পলিমার এবং কৃত্রিম পলিমারের মধ্যে পার্থক্য কী?

প্রাকৃতিক পলিমার এবং কৃত্রিম পলিমারের মধ্যে পার্থক্য

প্রাকৃতিক পলিমারকৃত্রিম পলিমার
প্রাকৃতিক উদ্ভিদ বা প্রাণী থেকে যে পলিমারগুলি পাওয়া যায় তাকে প্রাকৃতিক পলিমার বলে।রসায়নাগারে কৃত্রিমভাবে যে পলিমার তৈরি করা হয়, তাদের কৃত্রিম পলিমার বলে।
এগুলি সাধারণত বায়োডিগ্রেডেবল পলিমার।এগুলি সাধারণত নন- বায়ো-ডিগ্রেডেবল পলিমার।
উদাহরণ – প্রাকৃতিক রবার, সেলুলোজ, স্টার্চ, প্রোটিন ইত্যাদি।উদাহরণ – নাইলন, পলিথিন, টেফলন ইত্যাদি।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর

পলিমার কাকে বলে?

পলিমার হল এক ধরনের বৃহৎ অণু যা অনেকগুলি ছোট ও একই বা ভিন্ন ধরনের অণুর পুনরাবৃত্তিমূলক সংযোগের মাধ্যমে গঠিত হয়। এই ছোট অণুগুলিকে মনোমার বলে। উদাহরণস্বরূপ, সেলুলোজ একটি প্রাকৃতিক পলিমার, যার মনোমার হল গ্লুকোজ।

বায়োডিগ্রেডেবল পলিমার বলতে কী বোঝায়?

যে পলিমারগুলি ব্যাকটেরিয়া বা অন্যান্য জীবাণুর দ্বারা প্রাকৃতিকভাবে পচে বা ভেঙে সহজেই পরিবেশে মিশে যায়, সেগুলোকে বায়োডিগ্রেডেবল পলিমার বলে। বেশিরভাগ প্রাকৃতিক পলিমার (যেমন – সেলুলোজ, স্টার্চ) বায়োডিগ্রেডেবল। কিছু কৃত্রিম পলিমারও বিশেষভাবে ডিজাইন করে বায়োডিগ্রেডেবল করা হয়।

কৃত্রিম পলিমারের প্রধান অসুবিধা কী?

কৃত্রিম পলিমারের প্রধান অসুবিধা হল এগুলি সাধারণত নন-বায়োডিগ্রেডেবল। ফলে এগুলি পরিবেশে দীর্ঘদিন অপরিবর্তিত থাকে এবং দূষণের সৃষ্টি করে। পলিথিন বা প্লাস্টিকের ব্যাগ এর প্রধান উদাহরণ।

প্রাকৃতিক পলিমারের কিছু ব্যবহারিক উদাহরণ দাও।

প্রাকৃতিক পলিমারের কিছু ব্যবহারিক উদাহরণ –
1. সেলুলোজ – কাগজ, কাপড় (সুতি বস্ত্র), আসবাবপত্র।
2. প্রোটিন (উল, সিল্ক) – পোশাক, কম্বল।
3. প্রাকৃতিক রবার – টায়ার, বেলুন, দস্তানা।
4. স্টার্চ – খাদ্য হিসেবে, আঠালো পদার্থ তৈরি করতে।

পলিমারকে তাপের প্রতি তার সাড়া অনুযায়ী কয় ভাগে ভাগ করা যায়?

পলিমারকে তাপের প্রতি তার সাড়া অনুযায়ী প্রধানত দুই ভাগে ভাগ করা যায়
1. থার্মোপ্লাস্টিক – যেগুলো তাপ দিলে নরম হয় ও গলে যায় এবং ঠাণ্ডা করলে শক্ত হয়। এদের পুনর্ব্যবহার করা যায়। উদাহরণ – পলিথিন, PVC।
2. থার্মোসেটিং – যেগুলো একবার গঠিত হওয়ার পরে তাপ দিলে গলে না গিয়ে পুড়ে যায় বা শক্ত হয়। এদের পুনর্ব্যবহার করা যায় না। উদাহরণ – বেকেলাইট, মেলামাইন।

PVC এর পূর্ণরূপ কী এবং এটি দিয়ে কী কী তৈরি হয়?

PVC এর পূর্ণরূপ হলো পলিভিনাইল ক্লোরাইড। এটি একটি কৃত্রিম পলিমার (থার্মোপ্লাস্টিক)।
ব্যবহার – পাইপ, বিদ্যুতের তারের অন্তরক আবরণ, জানালার ফ্রেম, জুতার সোল ইত্যাদি।

বায়োপলিমার কাকে বলে?

যে সকল পলিমার জীবন্ত অর্গানিজম (উদ্ভিদ বা প্রাণী) থেকে সরাসরি প্রাপ্ত হয়, সেগুলোকে বায়োপলিমার বলা হয়। প্রাকৃতিক পলিমারগুলো মূলত বায়োপলিমার, যেমন – প্রোটিন, নিউক্লিক অ্যাসিড, সেলুলোজ ইত্যাদি। তবে বর্তমানে কিছু বায়ো-ভিত্তিক উৎস থেকে তৈরি কৃত্রিম পলিমারকেও বায়োপলিমার বলা হয়।


এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “প্রাকৃতিক পলিমার এবং কৃত্রিম পলিমার কাকে বলে? উদাহরণ দাও। প্রাকৃতিক পলিমার এবং কৃত্রিম পলিমারের মধ্যে পার্থক্য কী?” — নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “জৈব রসায়ন” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।

Please Share This Article

Related Posts

ব্রোমিনের সঙ্গে অ্যাসিটিলিনের যুত বিক্রিয়াটি উল্লেখ করো।

ব্রোমিনের সঙ্গে অ্যাসিটিলিনের যুত বিক্রিয়াটি উল্লেখ করো।

কার্যকরী মূলক বা ক্রিয়াশীল গ্রুপ কাকে বলে? কার্যকরী মূলক ও জৈব মূলকের পার্থক্য বুঝিয়ে দাও।

কার্যকরী মূলক বা ক্রিয়াশীল গ্রুপ কাকে বলে? কার্যকরী মূলক ও জৈব মূলকের পার্থক্য বুঝিয়ে দাও।

একটি জৈব যৌগের আণবিক সংকেত C₂H₄O₂। যৌগটি জলে দ্রাব্য এবং যৌগটির জলীয় দ্রবণে NaHCO₃ যোগ করলে CO₂ নির্গত হয়। জৈব যৌগটিকে শনাক্ত করো। জৈব যৌগটির সঙ্গে ইথানলের বিক্রিয়া শর্ত ও সমিত রাসায়নিক সমীকরণসহ লেখো।

C₂H₄O₂ সংকেতের একটি জৈব যৌগ NaHCO₃-এর সাথে CO₂ গ্যাস দেয়। যৌগটি শনাক্ত করো ও ইথানলের সাথে এর বিক্রিয়ার শর্তসহ সমীকরণ দাও।

About The Author

Souvick

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

"SolutionWbbse" শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনলাইন অধ্যয়ন প্ল্যাটফর্ম। এখানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য গাইডলাইন, এবং বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনার সাহায্য প্রদান করা হয়। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকল বিষয়ের শিক্ষণীয় উপকরণ সহজেই সকল শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়া।

Editor Picks

Madhyamik History Suggestion 2026 Wbbse – স্তম্ভ মেলাও

Madhyamik History Suggestion 2026 Wbbse – ঠিক বা ভুল নির্ণয়

Madhyamik History Suggestion 2026 Wbbse – একটি বাক্যে উত্তর দাও

Madhyamik History MCQ Suggestion 2026 Wbbse

মাধ্যমিক গণিত – রাশিবিজ্ঞান: গড়, মধ্যমা, ওজাইভ, সংখ্যাগুরুমান – কষে দেখি 26.4