প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর কমিউনিস্ট ভাবধারা ও শ্রমিক আন্দোলনের প্রসার রোধের ক্ষেত্রে ব্রিটিশ সরকারের উদ্যোগসমূহ উল্লেখ করো।

Rahul

এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর কমিউনিস্ট ভাবধারা ও শ্রমিক আন্দোলনের প্রসার রোধের ক্ষেত্রে ব্রিটিশ সরকারের উদ্যোগসমূহ উল্লেখ করো।” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাস পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর কমিউনিস্ট ভাবধারা ও শ্রমিক আন্দোলনের প্রসার রোধের ক্ষেত্রে ব্রিটিশ সরকারের উদ্যোগসমূহ উল্লেখ করো।“ প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের ষষ্ট অধ্যায় “বিশ শতকের ভারতে কৃষক, শ্রমিক ও বামপন্থী আন্দোলন: বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর কমিউনিস্ট ভাবধারা ও শ্রমিক আন্দোলনের প্রসার রোধের ক্ষেত্রে ব্রিটিশ সরকারের উদ্যোগসমূহ উল্লেখ করো।
Contents Show

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর কমিউনিস্ট ভাবধারা ও শ্রমিক আন্দোলনের প্রসার রোধের ক্ষেত্রে ব্রিটিশ সরকারের উদ্যোগসমূহ উল্লেখ করো।

কমিউনিস্ট ভাবধারা ও শ্রমিক আন্দোলন রোধে ব্রিটিশ সরকারের উদ্যোগ

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর ভারতে শ্রমিক আন্দোলন এবং কমিউনিস্ট ভাবধারার প্রসার ব্রিটিশ সরকারকে অস্বস্তির মধ্যে ফেলে দিলে তারা এই ভাবধারার প্রসার রোধের ব্যাপারে কতকগুলি উদ্যোগ গ্রহণ করে। এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হল –

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর কমিউনিস্ট ভাবধারা ও শ্রমিক আন্দোলনের প্রসার রোধের ক্ষেত্রে ব্রিটিশ সরকারের উদ্যোগসমূহ উল্লেখ করো।
  • হুইটলি কমিশন – 1929 খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ সরকার হুইটলি কমিশন গঠন করে শ্রমিক আন্দোলনকে দুর্বল করে দেওয়ার ব্যবস্থা করে এবং শ্রমিকদের অবস্থার উন্নতির ব্যাপারে কয়েকটি পদক্ষেপ গ্রহণ করে। জাতীয় নেতাদের তুলনায় সরকার শ্রমিক উন্নয়নের . ব্যাপারে যে বিশেষভাবে আগ্রহী তা বোঝাবার চেষ্টা করে।
  • শিল্প বিরোধ এবং জন-নিরাপত্তা বিল – বড়োলাট লর্ড আরউইন শ্রমিক আন্দোলনের প্রসার ও কমিউনিস্ট ভাবধারার প্রসার রোধের উদ্দেশ্যে 1929 খ্রিস্টাব্দে ‘শিল্প-বিরোধ বিল’ ও ‘জন-নিরাপত্তা বিল’ পাস করেন। প্রথমটির দ্বারা শ্রমিকদের ধর্মঘট করার অধিকারকে বে-আইনি ঘোষণা করা হয় এবং দ্বিতীয়টির দ্বারা কমিউনিস্ট নেতাদের দমন করার ব্যবস্থা করা হয়।
  • মিরাট ষড়যন্ত্র মামলা – শ্রমিকদের মধ্যে যাতে বামপন্থীরা যোগাযোগ করতে না পারে এবং শ্রমিকরাও যেন সংঘবদ্ধ হতে না পারে সেই উদ্দেশ্যে ব্রিটিশ সরকার শ্রমিক আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত বামপন্থী নেতাদের বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা ষড়যন্ত্র মামলা জারি করে 33 জন বামপন্থী নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে 1929 খ্রিস্টাব্দে যে মামলা দায়ের করে তা ‘মিরাট ষড়যন্ত্র মামলা’ নামে পরিচিত। এই মামলায় শীর্ষস্থানীয় কমিউনিস্ট নেতাদের জড়িয়ে দিয়ে শ্রমিক আন্দোলন তথা কমিউনিস্ট ভাবধারা প্রসারকে দুর্বল করার চেষ্টা করে।

কমিউনিস্ট ভাবধারা ও শ্রমিক আন্দোলন রোধে ব্রিটিশ সরকারের উদ্যোগের মন্তব্য –

ব্রিটিশ সরকার কমিউনিস্ট পার্টিকে শ্রমিক আন্দোলনের চালিকা শক্তি বলে মনে করে শেষপর্যন্ত 1934 খ্রিস্টাব্দে কমিউনিস্ট পার্টিকে নিষিদ্ধ বলে ঘোষণা করে।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর ভারতে কমিউনিস্ট ভাবধারা ও শ্রমিক আন্দোলন কেন ব্রিটিশ সরকারের জন্য উদ্বেগের কারণ ছিল?

কমিউনিস্ট আদর্শ শ্রমিকদের সংঘবদ্ধ করে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনকে শক্তিশালী করতে পারত, যা শাসনের জন্য হুমকি ছিল।

হুইটলি কমিশন (1929 খ্রিস্টাব্দ) কীভাবে শ্রমিক আন্দোলন দমন করতে চেয়েছিল?

এটি শ্রমিকদের দাবি মেটানোর ভান করে সরকার “শ্রমিক-বান্ধব” ভাবমূর্তি তৈরি করতে চেয়েছিল, যাতে তারা বিপ্লবী পথ থেকে সরে আসে।

‘শিল্প-বিরোধ বিল’ ও ‘জন-নিরাপত্তা বিল’ -এর উদ্দেশ্য কী ছিল?

‘শিল্প-বিরোধ বিল’ ও ‘জন-নিরাপত্তা বিল’ -এর উদ্দেশ্য ছিল –
1. শিল্প-বিরোধ বিল – ধর্মঘটকে অবৈধ ঘোষণা করে শ্রমিক সংঘর্ষ বন্ধ করা।
2. জন-নিরাপত্তা বিল – কমিউনিস্ট নেতাদের গ্রেফতার ও দমনের আইনি ভিত্তি তৈরি করা।

মিরাট ষড়যন্ত্র মামলা (1929 খ্রিস্টাব্দ) কী ছিল? এর প্রভাব কী হয়েছিল?

33 জন কমিউনিস্ট ও ট্রেড ইউনিয়ন নেতাকে মিথ্যা ষড়যন্ত্রের মামলায় ফাঁসিয়ে আন্দোলন দুর্বল করা হয়। এতে আন্দোলন সাময়িকভাবে স্তিমিত হলেও পরে তা আরও প্রসারিত হয়।

কমিউনিস্ট ভাবধারা ও শ্রমিক আন্দোলন রোধে ব্রিটিশ সরকার শেষ পর্যন্ত কোন সিদ্ধান্ত নেয়?

1934 সালে কমিউনিস্ট পার্টিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে, কারণ তারা এটিকে “শ্রমিক আন্দোলনের মূল চালিকাশক্তি” হিসেবে দেখত।

কমিউনিস্ট ভাবধারা ও শ্রমিক আন্দোলন রোধে ব্রিটিশ সরকারের উদ্যোগের দমননীতির দীর্ঘমেয়াদী ফলাফল কী ছিল?

যদিও ব্রিটিশ সরকার আন্দোলনকে সাময়িকভাবে দমন করতে পেরেছিল, কিন্তু কমিউনিস্ট আদর্শ ভারতে করে এবং পরবর্তীতে স্বাধীনতা আন্দোলনে প্রভাব ফেলে।

কমিউনিস্ট ভাবধারা ও শ্রমিক আন্দোলন রোধে ব্রিটিশ সরকারের দ্যোগগুলো কি সম্পূর্ণ সফল ছিল?

না, বরং দমননীতি শ্রমিক ও বামপন্থীদের মধ্যে ব্রিটিশ বিরোধী মনোভাব আরও শক্তিশালী করেছিল।

কমিউনিস্ট ভাবধারা ও শ্রমিক আন্দোলন রোধে ব্রিটিশ ব্রিটিশ সরকারের এই নীতির সমালোচনা কী ছিল?

সমালোচকরা মনে করেন, শ্রমিকদের ন্যায্য দাবিকে রাজনৈতিকভাবে দমন করা হয়েছিল, যা গণতান্ত্রিক অধিকারের লঙ্ঘন।


এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর কমিউনিস্ট ভাবধারা ও শ্রমিক আন্দোলনের প্রসার রোধের ক্ষেত্রে ব্রিটিশ সরকারের উদ্যোগসমূহ উল্লেখ করো।” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই “প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর কমিউনিস্ট ভাবধারা ও শ্রমিক আন্দোলনের প্রসার রোধের ক্ষেত্রে ব্রিটিশ সরকারের উদ্যোগসমূহ উল্লেখ করো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের ষষ্ঠ অধ্যায় “বিশ শতকের ভারতে কৃষক, শ্রমিক ও বামপন্থী আন্দোলন: বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।

Please Share This Article

Related Posts

দেশীয় রাজ্য বলতে কী বোঝো? দেশীয় রাজ্যগুলির ভারতভুক্তিকরণের ক্ষেত্রে ভারত সরকার কী ধরনের পদ্ধতি অবলম্বন করেছিল?

দেশীয় রাজ্যগুলির ভারতভুক্তিকরণের ক্ষেত্রে ভারত সরকার কী ধরনের পদ্ধতি অবলম্বন করেছিল?

ভারত-বিভাজনের অনিবার্যতার কারণ বিশ্লেষণ করো।

ভারত বিভাজনের অনিবার্যতার কারণ বিশ্লেষণ করো।

দেশীয় রাজ্যগুলি সম্পর্কে জাতীয় কংগ্রেসের মনোভাব ঠিক কী ছিল, তাই নিয়ে আলোচনা করো।

দেশীয় রাজ্যগুলি সম্পর্কে জাতীয় কংগ্রেসের মনোভাব আলোচনা করো।

About The Author

Rahul

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

"SolutionWbbse" শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনলাইন অধ্যয়ন প্ল্যাটফর্ম। এখানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য গাইডলাইন, এবং বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনার সাহায্য প্রদান করা হয়। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকল বিষয়ের শিক্ষণীয় উপকরণ সহজেই সকল শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়া।

Editor Picks

উত্তর ভারতের নদনদীর সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।

দেশীয় রাজ্যগুলির ভারতভুক্তিকরণের ক্ষেত্রে ভারত সরকার কী ধরনের পদ্ধতি অবলম্বন করেছিল?

ভারত বিভাজনের অনিবার্যতার কারণ বিশ্লেষণ করো।

ভাঙ্গর ও খাদার বলতে কি বোঝো? ভাঙ্গর ও খাদারের মধ্যে পার্থক্য

দেশীয় রাজ্যগুলি সম্পর্কে জাতীয় কংগ্রেসের মনোভাব আলোচনা করো।