এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “রানি শিরোমণি কে ছিলেন? রানি শিরোমণি বিখ্যাত কেন?” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাস পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “রানি শিরোমণি কে ছিলেন? রানি শিরোমণি বিখ্যাত কেন?“ প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের তৃতীয় অধ্যায় “প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ – বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

রানি শিরোমণি কে ছিলেন?
ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি 1794-1798 খ্রিস্টাব্দে চূয়াড়দের স্বত্বভুক্ত পাইকান জমি বাজেয়াপ্ত করে এবং মেদিনীপুরের কর্ণগড়ের রানির জমিদারিও দখল করে নেয়।
এর প্রতিবাদে 1799 খ্রিস্টাব্দে কর্ণগড়ের রানি শিরোমণি পাইক ও সাধারণ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে কোম্পানির বিরুদ্ধে বিদ্রোহের ডাক দেন শুরু হয় দ্বিতীয় চূয়াড় বিদ্রোহ। রানির পাশে দাঁড়ান গোবর্ধন দিকপতি নামে এক সর্দার।
এপ্রিল মাসে রানিকে গ্রেপ্তার করা হয়, কিন্তু প্রমাণের অভাবে 1800 খ্রিস্টাব্দে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। চূয়াড় বিদ্রোহে রানি শিরোমণির অসামান্য অবদানের জন্য তাঁকে ঝাঁসীর রানি লক্ষ্মী বাঈ এর সঙ্গে তুলনা করে “মেদিনীপুরের লক্ষ্মী বাঈ” (Laxmi Bai of Madinipur) বলে অভিহিত করা হয়।
রানি শিরোমণি বিখ্যাত কেন?
চুয়াড় বিদ্রোহের দ্বিতীয় পর্বের অন্যতম প্রধান নেত্রী ছিলেন – মেদিনীপুরের কর্ণগড়ের জমিদার রানি শিরোমণি। তিনি সশস্ত্র পথে চুয়াড়দের সংগঠিত করেন। তাঁর নেতৃত্বে 1799 খ্রিস্টাব্দ নাগাদ বিদ্রোহ প্রবল আকার ধারণ করে। চুয়াড় বিদ্রোহে তাঁর অসামান্য অবদানের জন্য তাকে ‘মেদিনীপুরের লক্ষ্মীবাঈ’ অভিধায় ভূষিত করা হয়।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
রানি শিরোমণিকে কেন “মেদিনীপুরের লক্ষ্মীবাঈ” বলা হয়?
ঝাঁসির রানি লক্ষ্মীবাঈয়ের মতোই তিনি ব্রিটিশ শক্তির বিরুদ্ধে রণকৌশল ও সাহসিকতার জন্য পরিচিত ছিলেন। তাই তাঁকে এই সম্মানজনক উপাধি দেওয়া হয়।
ব্রিটিশরা কেন রানির জমিদারি দখল করে?
1794 – 1798 সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি চূয়াড়দের জমি (পাইকান) ও কর্ণগড়ের জমিদারি বাজেয়াপ্ত করে, যা স্থানীয় জনগণের ক্ষোভের কারণ হয়।
চূয়াড় বিদ্রোহ কী?
এটি মেদিনীপুর-বাঁকুড়া অঞ্চলের আদিবাসী ও স্থানীয় মানুষদের ব্রিটিশ শোষণের বিরুদ্ধে সংঘটিত দুটি বিদ্রোহ (প্রথম – 1768, দ্বিতীয় – 1799)। রানি শিরোমণি দ্বিতীয় বিদ্রোহের নেত্রী ছিলেন।
রানি শিরোমণিকে কী গ্রেপ্তার করা হয়েছিল?
হ্যাঁ, 1799 সালের এপ্রিলে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়, কিন্তু প্রমাণের অভাবে 1800 সালে মুক্তি দেওয়া হয়।
গোবর্ধন দিকপতি কে ছিলেন?
তিনি ছিলেন রানি শিরোমণির প্রধান সহযোগী ও বিদ্রোহের সর্দার, যিনি রানির সঙ্গে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে অংশ নেন।
রানি শিরোমণিকে সংগ্রামের ঐতিহাসিক গুরুত্ব কী?
তিনি ভারতের প্রাক্ 1857 স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম নারী নেত্রী, যাঁর সংগ্রাম স্থানীয় জনগণের স্বাধিকার চেতনাকে জাগ্রত করেছিল।
রানি শিরোমণি স্মৃতি কীভাবে রক্ষিত হচ্ছে?
পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুর ও বাঁকুড়া অঞ্চলে স্থানীয় লোকগাথা, গবেষণা ও সরকারি উদ্যোগে তাঁর অবদান স্মরণ করা হয়।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “রানি শিরোমণি কে ছিলেন? রানি শিরোমণি বিখ্যাত কেন?” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই “রানি শিরোমণি কে ছিলেন? রানি শিরোমণি বিখ্যাত কেন?” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের তৃতীয় অধ্যায় “প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ – বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।