সাঁওতাল বিদ্রোহের কয়েকটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো।

Rahul

এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “সাঁওতাল বিদ্রোহের কয়েকটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো। নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাস পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “সাঁওতাল বিদ্রোহের কয়েকটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো।“ প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের তৃতীয় অধ্যায় “প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ – বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

সাঁওতাল বিদ্রোহের কয়েকটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো।

সাঁওতাল বিদ্রোহের কয়েকটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো।

উনিশ শতকের প্রথমের দিকে সাঁওতালরা ছোটোনাগপুর অঞ্চল থেকে ‘বিতাড়িত হয়ে ‘দামিন-ই-কোহ্’ নামে রাজমহল পাহাড়ের প্রান্তবর্তী সমতল অঞ্চলে বসতি স্থাপন করে এবং আবাদযোগ্য জমি গড়ে তোলে, কিন্তু ঔপনিবেশিক অরণ্য আইন তাদের শান্তি ও পরিশ্রমের মূলে আঘাত করলে সাঁওতালরা বিদ্রোহ শুরু করে।

সাঁওতাল বিদ্রোহের বৈশিষ্ট্য –

  • সাঁওতাল বিদ্রোহ ছিল আদিবাসী বিদ্রোহীগুলির মধ্যে সবচেয়ে ব্যাপক ও তাৎপর্যপূর্ণ।
  • এই বিদ্রোহের পিছনে ছিল অর্থনৈতিক শোষণ ও জমিদার, মহাজন, ঔপনিবেশিকদের অত্যাচারের কাহিনি।
  • সাঁওতাল ছাড়াও এই বিদ্রোহে অংশগ্রহণ করেছিল কামার, কুমোর, ছুতোর, তাঁতি, ডোম, চর্মকার, তেলি প্রভৃতি। তাছাড়াও মোমিন সম্প্রদায়ের দরিদ্র মুসলমানরাও এতে যোগদান করে।
  • এই বিদ্রোহে অংশগ্রহণকারীদের অবস্থান দেখে বোঝা যায় এটি একটি ‘গণবিদ্রোহের’ রূপ নিয়েছিল।
  • সাঁওতাল বিদ্রোহে বিদ্রোহীদের প্রধান লক্ষ ছিল, সাঁওতালদের জন্য একটি স্বাধীন রাজ্য প্রতিষ্ঠা।

মন্তব্য –

সাঁওতাল বিদ্রোহ ছিল জমিদার, মহাজন ও ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে এক ব্যাপক বিদ্রোহ।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর

সাঁওতাল বিদ্রোহ কখন হয়েছিল?

সাঁওতাল বিদ্রোহ 1855-1856 সালে সংঘটিত হয়েছিল।

সাঁওতাল বিদ্রোহের নেতৃত্ব কে দিয়েছিলেন?

সিধু ও কানহু ছিলেন এই বিদ্রোহের প্রধান নেতা। এছাড়াও চাঁদ ও ভৈরবও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।

সাঁওতাল বিদ্রোহের কারণ কী ছিল?

সাঁওতাল বিদ্রোহের কারণগুলি হল –
1. জমিদার, মহাজন ও ব্রিটিশ শাসকদের শোষণ।
2. অরণ্য আইনের মাধ্যমে সাঁওতালদের জমি ও জীবিকার উপর আক্রমণ।
3. করের চাপ ও ঋণের জালে ফেলে সাঁওতালদের দারিদ্র্য বৃদ্ধি।

সাঁওতাল বিদ্রোহের বৈশিষ্ট্য কী ছিল?

সাঁওতাল বিদ্রোহের বৈশিষ্ট্যগুলি হল –
1. এটি ছিল আদিবাসী বিদ্রোহগুলির মধ্যে সবচেয়ে বড় ও সংগঠিত বিদ্রোহ।
2. শুধু সাঁওতালরাই নয়, অন্যান্য নিম্নবর্ণের হিন্দু ও দরিদ্র মুসলমানরাও এতে যোগ দেয়।
3. বিদ্রোহীরা একটি স্বাধীন সাঁওতাল রাজ্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য নিয়েছিল।

সাঁওতাল বিদ্রোহের ফলাফল কী ছিল?

সাঁওতাল বিদ্রোহের ফলাফলগুলি হল –
1. ব্রিটিশ সরকার ‘সাঁওতাল পরগনা’ নামে একটি আলাদা জেলা গঠন করে (1855)।
2. কিন্তু প্রকৃতপক্ষে সাঁওতালদের অবস্থার উন্নতি হয়নি, শোষণ অব্যাহত থাকে।
3. এই বিদ্রোহ পরবর্তীতে ভারতের অন্যান্য আদিবাসী ও কৃষক বিদ্রোহকে প্রভাবিত করে।

সাঁওতাল বিদ্রোহকে গণবিদ্রোহ বলা হয় কেন?

সাঁওতাল বিদ্রোহকে গণবিদ্রোহ বলা হয় কারণ এতে শুধু সাঁওতালরাই নয়, বিভিন্ন পেশার নিম্নবর্ণের মানুষ ও দরিদ্র মুসলমানরাও অংশগ্রহণ করেছিল।

সাঁওতাল বিদ্রোহের গুরুত্ব কী?

এটি ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে আদিবাসী ও শোষিত মানুষের সংঘবদ্ধ প্রতিরোধের একটি উল্লেখযোগ্য উদাহরণ।


এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “সাঁওতাল বিদ্রোহের কয়েকটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো।” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই “সাঁওতাল বিদ্রোহের কয়েকটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের তৃতীয় অধ্যায় “প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ – বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।

Please Share This Article

Related Posts

সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলনে ছাত্রদের অবদান আলোচনা করো।

সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলনে ছাত্রদের অবদান আলোচনা করো।

রাজ্য পুনর্গঠন কমিশন (1953 খ্রিস্টাব্দ) কেন গঠিত হয়েছিল? ভারতের রাজ্য পুনর্গঠন এর ভিত্তিগুলি লেখো।

রাজ্য পুনর্গঠন কমিশন (1953 খ্রিস্টাব্দ) কেন গঠিত হয়েছিল? ভারতের রাজ্য পুনর্গঠন এর ভিত্তিগুলি লেখো।

দার কমিশন কী? দার কমিশন (1948 খ্রিস্টাব্দ) কেন গঠিত হয়েছিল?

দার কমিশন কী? দার কমিশন (1948 খ্রিস্টাব্দ) কেন গঠিত হয়েছিল?

About The Author

Rahul

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

"SolutionWbbse" শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনলাইন অধ্যয়ন প্ল্যাটফর্ম। এখানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য গাইডলাইন, এবং বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনার সাহায্য প্রদান করা হয়। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকল বিষয়ের শিক্ষণীয় উপকরণ সহজেই সকল শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়া।

Editor Picks

তোমার জীবনের একটি স্মরণীয় অভিজ্ঞতা – প্রবন্ধ রচনা

একটি গ্রামের ভ্রমণের অভিজ্ঞতা – প্রবন্ধ রচনা

অরণ্য ভ্রমণের অভিজ্ঞতা – প্রবন্ধ রচনা

র‍্যাগিং ও ছাত্রসমাজ – প্রবন্ধ রচনা

আলোর প্রতিসরণ কাকে বলে? প্রতিসরণের সূত্রসমূহ