সোডিয়াম বাইকার্বনেটের সঙ্গে অ্যাসিটিক অ্যাসিডের বিক্রিয়াটি লেখো।

Souvick

এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “সোডিয়াম বাইকার্বনেটের সঙ্গে অ্যাসিটিক অ্যাসিডের বিক্রিয়াটি লেখো।” — নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “জৈব রসায়ন” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

সোডিয়াম বাইকার্বনেটের সঙ্গে অ্যাসিটিক অ্যাসিডের বিক্রিয়াটি লেখো।
Contents Show

সোডিয়াম বাইকার্বনেটের সঙ্গে অ্যাসিটিক অ্যাসিডের বিক্রিয়াটি লেখো।

সোডিয়াম বাইকার্বনেটের সঙ্গে বিক্রিয়া – সোডিয়াম বাইকার্বনেটের সঙ্গে অ্যাসিটিক অ্যাসিডের বিক্রিয়ায় সোডিয়াম অ্যাসিটেট লবণ, কার্বন ডাইঅক্সাইড ও জল উৎপন্ন হয়। এই বিক্রিয়ার দ্বারা জৈব যৌগে –COOH গ্রুপের উপস্থিতি জানা যায়।

CH₃COOH + NaHCO₃ → CH₃COONa + CO₂ + H₂O

কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর

সোডিয়াম বাইকার্বনেট ও অ্যাসিটিক অ্যাসিডের বিক্রিয়াটি রাসায়নিক সমীকরণসহ লেখো।

রাসায়নিক বিক্রিয়াটি নিম্নরূপ –
CH₃COOH + NaHCO₃ → CH₃COONa + CO₂ + H₂O
(অ্যাসিটিক অ্যাসিড) + (সোডিয়াম বাইকার্বনেট) → (সোডিয়াম অ্যাসিটেট) + (কার্বন ডাই-অক্সাইড) + (জল)

সোডিয়াম বাইকার্বনেট ও অ্যাসিটিক অ্যাসিডের বিক্রিয়াটি কী ধরনের বিক্রিয়া?

এই বিক্রিয়াটি একটি অম্ল-ক্ষারক নিরপেক্ষকরণ বিক্রিয়া (Acid-Base Neutralization Reaction)।
এখানে, অ্যাসিটিক অ্যাসিড (একটি দুর্বল অম্ল) সোডিয়াম বাইকার্বনেট (একটি ক্ষারক) এর সাথে বিক্রিয়া করে একটি লবণ (সোডিয়াম অ্যাসিটেট), জল এবং কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাস উৎপন্ন করে।

সোডিয়াম বাইকার্বনেট ও অ্যাসিটিক অ্যাসিডের বিক্রিয়ায় কোন গ্যাস উৎপন্ন হয় এবং কীভাবে এটি শনাক্ত করা যায়?

উৎপন্ন গ্যাস – কার্বন ডাই-অক্সাইড (CO₂)।
শনাক্ত করার পদ্ধতি – বিক্রিয়া মিশ্রণের মধ্য দিয়ে যদি চুনের জল (Lime Water) প্রবাহিত করা হয়, তবে চুনের জল প্রথমে ঘোলা হয়ে যায় এবং অতিরিক্ত CO₂ প্রবাহিত করলে তা আবার পরিষ্কার হয়ে যায়। এইভাবে কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাস শনাক্ত করা যায়।

সোডিয়াম বাইকার্বনেট ও অ্যাসিটিক অ্যাসিডের বিক্রিয়াটি কেন –COOH (কার্বক্সিলিক অ্যাসিড) গ্রুপ শনাক্ত করার জন্য ব্যবহার করা হয়?

শুধুমাত্র কার্বক্সিলিক অ্যাসিড (–COOH গ্রুপ যুক্ত যৌগ) এবং এর মতো কিছু নির্দিষ্ট অম্লই সোডিয়াম বাইকার্বনেটের (বেকিং সোডা) সাথে বিক্রিয়া করে সক্রিয়ভাবে বুদবুদসহ কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাস নির্গত করে। অন্য অনেক অম্লীয় গোষ্ঠী (যেমন ফেনলের -OH) এই বিক্রিয়া দেখায় না। তাই, কোনো জৈব যৌগে বেকিং সোডার দ্রবণের সাথে বিক্রিয়া করে CO₂ গ্যাস নির্গত হলে, বোঝা যায় যে সেই যৌগে –COOH গ্রুপ উপস্থিত রয়েছে।

সোডিয়াম বাইকার্বনেট ও অ্যাসিটিক অ্যাসিডের বিক্রিয়াটির দৈনন্দিন জীবনে দুটি ব্যবহার উল্লেখ করো।

সোডিয়াম বাইকার্বনেট ও অ্যাসিটিক অ্যাসিডের বিক্রিয়াটির দৈনন্দিন জীবনে দুটি ব্যবহার –
1. খাদ্য প্রস্তুতিতে – কেক বা পাউরুটি বানানোর সময় বেকিং পাউডার (যাতে সোডিয়াম বাইকার্বনেট থাকে) ব্যবহার করা হয়। ময়দার সাথে থাকা অ্যাসিডিক উপাদান (বা দই, লেবুর রস) এর সাথে এর বিক্রিয়ায় CO₂ গ্যাসের বুদবুদ তৈরি হয়, যা খাদ্যকে ফুলিয়ে তোলে এবং নরম করে।
2. অগ্নিনির্বাপক হিসেবে – কিছু ধরনের অগ্নিনির্বাপকে এই বিক্রিয়াটি কাজে লাগানো হয়। অ্যাসিড ও বাইকার্বনেটের বিক্রিয়ায় দ্রুত প্রচুর CO₂ গ্যাস তৈরি হয়ে আগুনের উপর একটি স্তর সৃষ্টি করে, যা অক্সিজেনকে বঞ্চিত করে আগুন নিভিয়ে দেয়।

সোডিয়াম বাইকার্বনেট ও অ্যাসিটিক অ্যাসিডের বিক্রিয়াটি কেন একটি ডবল ডিসপ্লেসমেন্ট বিক্রিয়ার উদাহরণ?

সোডিয়াম বাইকার্বনেট ও অ্যাসিটিক অ্যাসিডের বিক্রিয়াটি একটি ডবল ডিসপ্লেসমেন্ট বিক্রিয়ার উদাহরণ কারণ এই বিক্রিয়ায় আয়নগুলোর বিনিময় ঘটেছে।
1. অ্যাসিটিক অ্যাসিডের H⁺ আয়ন এবং সোডিয়াম বাইকার্বনেটের HCO₃⁻ আয়ন মিলে H₂CO₃ (কার্বনিক অ্যাসিড) গঠন করে, যা অস্থির হয়ে CO₂ ও H₂O -তে পরিণত হয়।
2. অবশিষ্ট CH₃COO⁻ এবং Na⁺ আয়ন মিলে CH₃COONa লবণ গঠন করে।
এই আয়নিক বিনিময়ের কারণে এটিকে ডবল ডিসপ্লেসমেন্ট বিক্রিয়াও বলা যায়।


এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “সোডিয়াম বাইকার্বনেটের সঙ্গে অ্যাসিটিক অ্যাসিডের বিক্রিয়াটি লেখো।” — নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “জৈব রসায়ন” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।

Please Share This Article

Related Posts

ইক্ষুশর্করা বা সুক্রোজ থেকে ইথাইল অ্যালকোহলে রূপান্তর করো।

ইক্ষুশর্করা বা সুক্রোজ থেকে ইথাইল অ্যালকোহলে রূপান্তর করো।

কোনো পাত্রে মিথেন ও ইথিলিনের মিশ্রণ থাকলে কীভাবে পৃথক করবে?

কোনো পাত্রে মিথেন ও ইথিলিনের মিশ্রণ থাকলে কীভাবে পৃথক করবে?

পলিমারিজেশনের মাত্রা লেখো।

পলিমারিজেশনের মাত্রা লেখো।

About The Author

Souvick

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

"SolutionWbbse" শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনলাইন অধ্যয়ন প্ল্যাটফর্ম। এখানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য গাইডলাইন, এবং বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনার সাহায্য প্রদান করা হয়। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকল বিষয়ের শিক্ষণীয় উপকরণ সহজেই সকল শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়া।

Editor Picks

ইক্ষুশর্করা বা সুক্রোজ থেকে ইথাইল অ্যালকোহলে রূপান্তর করো।

কোনো পাত্রে মিথেন ও ইথিলিনের মিশ্রণ থাকলে কীভাবে পৃথক করবে?

পলিমারিজেশনের মাত্রা লেখো।

অক্সিজেন এবং ইথাইনের একটি মিশ্রণকে ঝালাইয়ের জন্য পোড়ানো হল। এখানে কেন ইথাইন এবং বায়ুর মিশ্রণ ব্যবহার করা হল না?

থার্মোপ্লাস্টিক ও থার্মোসেটিং পলিমার বলতে কী বোঝো? উদাহরণ দাও।