এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “সমযোজী বন্ধন কাকে বলে? সমযোজী বন্ধন কয় প্রকার ও কী কী? প্রত্যেকের উদাহরণ দাও।” — নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “আয়নীয় ও সমযোজী বন্ধন” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

সমযোজী বন্ধন কাকে বলে?
সমযোজী বন্ধন – সমযোজ্যতার সাহায্যে অণু গঠনের সময় ইলেকট্রন জোড়ের মাধ্যমে পরমাণুগুলির মধ্যে যে বন্ধন সৃষ্টি হয় তাকে সমযোজী বন্ধন বলে।
সমযোজী বন্ধন কয় প্রকার ও কী কী? প্রত্যেকের উদাহরণ দাও।
সমযোজী বন্ধনের প্রকারভেদ – সমযোজী বন্ধন তিন প্রকারের হয়। যেমন –
- একবন্ধন – দুটি একই বা ভিন্ন পরমাণুর মধ্যে একটি ইলেকট্রন জোড় গঠিত হলে একবন্ধন গঠিত হয়। একে (‘─’) চিহ্ন দ্বারা প্রকাশ করা হয়। যেমন – মিথেন (CH₄)।
- দ্বিবন্ধন – দুটি পরমাণুর মধ্যে দুটি ইলেকট্রন জোড় গঠিত হলে দ্বিবন্ধন গঠিত হয়। একে (‘═’) চিহ্ন দ্বারা প্রকাশ করা হয়। যেমন – ইথিলিন (C₂H₄)।
- ত্রিবন্ধন – দুটি পরমাণুর মধ্যে তিনটি ইলেকট্রন জোড় গঠিত হলে ত্রিবন্ধন গঠিত হয়। একে (‘☰’) চিহ্ন দ্বারা প্রকাশ করা হয়। যেমন – অ্যাসিটিলিন (C₂H₂)।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
সমযোজী বন্ধন কী?
সমযোজী বন্ধন হল দুটি পরমাণুর মধ্যে এক বা একাধিক ইলেকট্রন জোড় ভাগাভাগির মাধ্যমে গঠিত একটি রাসায়নিক বন্ধন। এটি সাধারণত দুটি অধাতু পরমাণুর মধ্যে ঘটে।
সমযোজী বন্ধনের প্রতিটির রাসায়নিক চিহ্ন কী?
সমযোজী বন্ধনের প্রতিটির রাসায়নিক চিহ্ন হল –
1. একবন্ধনকে ‘–‘ (একটি ড্যাশ) দ্বারা দেখানো হয়।
2. দ্বিবন্ধনকে ‘=‘ (দুটি সমান চিহ্ন) দ্বারা দেখানো হয়।
3. ত্রিবন্ধনকে ‘≡‘ (তিনটি সমান চিহ্ন) দ্বারা দেখানো হয়।
সমযোজী একবন্ধনের দুটি উদাহরণ দাও।
সমযোজী একবন্ধনের দুটি উদাহরণ হল –
1. জল (H₂O) – প্রতিটি হাইড্রোজেন পরমাণু অক্সিজেন পরমাণুর সাথে একটি করে একবন্ধন গঠন করে।
2. হাইড্রোজেন ক্লোরাইড (HCl) – হাইড্রোজেন ও ক্লোরিন পরমাণুর মধ্যে একটি একবন্ধন থাকে।
সমযোজী দ্বিবন্ধনের একটি উদাহরণ দাও।
সমযোজী দ্বিবন্ধনের একটি উদাহরণ হল – অক্সিজেন গ্যাস (O₂) – দুটি অক্সিজেন পরমাণুর মধ্যে একটি দ্বিবন্ধন থাকে।
সমযোজী ত্রিবন্ধনের আরও একটি উদাহরণ দাও।
সমযোজী ত্রিবন্ধনের আরও একটি উদাহরণ হল – নাইট্রোজেন গ্যাস (N₂) – এটি বায়ুর প্রধান উপাদান; দুটি নাইট্রোজেন পরমাণুর মধ্যে একটি শক্তিশালী ত্রিবন্ধন থাকে।
সমযোজী বন্ধনের প্রকারভেদের উপর অণুর আকৃতি কীভাবে নির্ভর করে?
সমযোজী বন্ধনের প্রকার (একক, দ্বি বা ত্রি) অণুতে পরমাণুগুলির মধ্যে দূরত্ব এবং বন্ধন কোণকে প্রভাবিত করে। সাধারণত, বন্ধনের সংখ্যা যত বেশি হয়, পরমাণুগুলির মধ্যে দূরত্ব তত কমে যায়। যেমন – C–C একবন্ধন, C=C দ্বিবন্ধন এবং C≡C ত্রিবন্ধনের দৈর্ঘ্য ক্রমান্বয়ে কমতে থাকে।
সমযোজী বন্ধনের প্রকারের সাথে বন্ধন শক্তির কী সম্পর্ক?
সমযোজী বন্ধন শক্তি বন্ধনের সংখ্যার সাথে বৃদ্ধি পায়। একটি দ্বিবন্ধন একবন্ধনের চেয়ে শক্তিশালী, তবে এটি একবন্ধনের ঠিক দ্বিগুণ নয়। একইভাবে, একটি ত্রিবন্ধন সবচেয়ে শক্তিশালী। যেমন – N₂ গ্যাসের ত্রিবন্ধন ভাঙা অত্যন্ত কঠিন, ফলে এটি খুব স্থিতিশীল ও নিষ্ক্রিয় থাকে।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “সমযোজী বন্ধন কাকে বলে? সমযোজী বন্ধন কয় প্রকার ও কী কী? প্রত্যেকের উদাহরণ দাও।” — নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “আয়নীয় ও সমযোজী বন্ধন” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন