এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “সমযোজী যৌগের ভৌত অবস্থার পরিচয় দাও। সমযোজী যৌগের গলনাঙ্ক ও স্ফুটনাঙ্ক ধর্মের পরিচয় দাও।” — নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “আয়নীয় ও সমযোজী বন্ধন” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

সমযোজী যৌগের ভৌত অবস্থার পরিচয় দাও।
ভৌত অবস্থা – সমযোজী যৌগে আয়নের কোনো অস্তিত্ব নেই। অণুগুলির মধ্যে আন্তঃআণবিক আকর্ষণ বল খুব দুর্বল। সেইজন্য সমযোজী যৌগ বিচ্ছিন্ন অণুরূপে অবস্থান করে। স্বাভাবিক চাপ ও তাপমাত্রায় সমযোজী যৌগগুলি গ্যাসীয়, তরল অথবা কোমল কঠিন অবস্থায় থাকে। যেমন – মিথেন গ্যাসীয়; ইথানল ও ক্লোরোফর্ম তরল; ন্যাপথলিন, চিনি, গ্লুকোজ কঠিন।
সমযোজী যৌগের গলনাঙ্ক ও স্ফুটনাঙ্ক ধর্মের পরিচয় দাও।
গলনাঙ্ক ও স্ফুটনাঙ্ক – অণুগুলির মধ্যে আকর্ষণ বল খুব কম হওয়ায় সমযোজী যৌগের গলনাঙ্ক ও স্ফুটনাঙ্ক আয়নীয় যৌগের তুলনায় কম হয়। যেমন – ইথানলের স্ফুটনাঙ্ক 78.5°C, ক্লোরোফর্মের স্ফুটনাঙ্ক 61°C, ন্যাপথলিনের গলনাঙ্ক 80°C ও স্ফুটনাঙ্ক 218°C। কিন্তু আয়নীয় যৌগ সোডিয়াম ক্লোরাইডের গলনাঙ্ক 820°C এবং স্ফুটনাঙ্ক 1600°C।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
সমযোজী যৌগগুলি সাধারণত কোন কোন ভৌত অবস্থায় থাকে এবং কেন?
স্বাভাবিক তাপমাত্রা ও চাপে সমযোজী যৌগগুলি গ্যাসীয় (যেমন– মিথেন), তরল (যেমন – ইথানল, ক্লোরোফর্ম) বা কোমল কঠিন (যেমন – ন্যাপথলিন, চিনি) অবস্থায় থাকে। এর কারণ হলো সমযোজী যৌগের অণুগুলির মধ্যে কার্যকর আন্তঃআণবিক আকর্ষণ বল খুবই দুর্বল। ফলে অণুগুলি সহজেই আলাদা হয়ে যেতে পারে।
সমযোজী যৌগের গলনাঙ্ক ও স্ফুটনাঙ্ক সাধারণত কম হয় কেন?
সমযোজী যৌগের অণুগুলিকে কঠিন অবস্থায় একত্রে ধরে রাখা বা তরল অবস্থায় রাখার জন্য শুধুমাত্র দুর্বল আন্তঃআণবিক বলকে পরাজিত করতে হয়। এই বলগুলো খুব দুর্বল হওয়ায় সামান্য তাপশক্তিতেই ভেঙে যায়। তাই এদের গলনাঙ্ক ও স্ফুটনাঙ্ক আয়নীয় যৌগের তুলনায় অনেক কম।
আয়নীয় যৌগের সাথে তুলনা করে সমযোজী যৌগের গলনাঙ্ক–স্ফুটনাঙ্ক কম হয়—একটি উদাহরণ দাও।
সমযোজী যৌগ ন্যাপথলিনের (C₁₀H₈) গলনাঙ্ক 80°C এবং স্ফুটনাঙ্ক 218°C। অন্যদিকে, আয়নীয় যৌগ সোডিয়াম ক্লোরাইডের (NaCl) গলনাঙ্ক 820°C এবং স্ফুটনাঙ্ক 1600°C। এটি স্পষ্টভাবে প্রমাণ করে যে সমযোজী যৌগের গলনাঙ্ক–স্ফুটনাঙ্ক আয়নীয় যৌগের তুলনায় অনেক কম।
সমযোজী যৌগে কি আয়নের অস্তিত্ব থাকে?
না, শুদ্ধ সমযোজী যৌগে আয়নের কোনো অস্তিত্ব নেই। এগুলি নিরপেক্ষ অণু দ্বারা গঠিত।
সমযোজী যৌগগুলি বিদ্যুৎ পরিবহন করে কি?
সাধারণত করে না। যেহেতু এগুলিতে মুক্ত ইলেকট্রন বা আয়ন থাকে না, তাই কঠিন বা তরল অবস্থায় এরা বিদ্যুৎ পরিবহন করতে পারে না। তবে, কিছু সমযোজী যৌগ (যেমন – HCl) জলে দ্রবীভূত হয়ে আয়নিত হলে বিদ্যুৎ পরিবহন করতে পারে।।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “সমযোজী যৌগের ভৌত অবস্থার পরিচয় দাও। সমযোজী যৌগের গলনাঙ্ক ও স্ফুটনাঙ্ক ধর্মের পরিচয় দাও।” — নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “আয়নীয় ও সমযোজী বন্ধন” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন