এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “সমযোজ্যতা কাকে বলে? সমযোজ্যতার পরিমাপ কী? উদাহরণ দাও।” — নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “আয়নীয় ও সমযোজী বন্ধন” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

সমযোজ্যতা কাকে বলে?
সমযোজ্যতা – নিকটতম নিষ্ক্রিয় গ্যাসের পরমাণুর মতো ইলেকট্রন বিন্যাস লাভের জন্য যখন দুটি পরমাণু এক বা একাধিক ইলেকট্রন জোড় সমভাবে ব্যবহার করে সবচেয়ে বাইরের কক্ষে আটটি ইলেকট্রন এবং হাইড্রোজেনের ক্ষেত্রে দুটি ইলেকট্রন সংখ্যা পূর্ণ করে অণু গঠন করে, তখন এরূপ অণু গঠন করার ক্ষমতাকে সমযোজ্যতা বলে।
সমযোজ্যতার পরিমাপ কী? উদাহরণ দাও।
সমযোজ্যতার পরিমাপ – কোনো মৌলের পরমাণু যতগুলি ইলেকট্রন জোড় গঠন করে পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত হয়ে অণু গঠন করে সেই ইলেকট্রন জোড়ের সংখ্যাই হল ওই মৌলের যোজ্যতা। যেমন-দুটি ক্লোরিন পরমাণু পরস্পরের মধ্যে একটি ইলেকট্রন জোড় গঠন করে ক্লোরিন অণু গঠন করে। সুতরাং, ক্লোরিনের যোজ্যতা = 1। আবার, দুটি অক্সিজেন পরমাণু পরস্পরের মধ্যে দুটি ইলেকট্রন জোড় গঠন করে অক্সিজেন অণু গঠন করে, সুতরাং অক্সিজেনের যোজ্যতা = 2।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
সমযোজ্য বন্ধন কাকে বলে?
যখন দুটি পরমাণু তাদের মধ্যে এক বা একাধিক ইলেকট্রন জোড় সমভাবে ভাগ করে নিয়ে একটি স্থিতিশীল অণু গঠন করে, তখন সেই বন্ধনকে সমযোজ্য বন্ধন বলে। এটি মূলত সমযোজ্যতার ফলেই সৃষ্টি হয়।
সমযোজ্যতা এবং জারণ সংখ্যা কী একই?
না, একই নয়। সমযোজ্যতা হল একটি পরমাণু গঠন করতে পারে এমন সমযোজ্য বন্ধনের প্রকৃত সংখ্যা (ইলেকট্রন জোড়ের সংখ্যা)। অন্যদিকে, জারণ সংখ্যা হল একটি তাত্ত্বিক ধারণা যা একটি পরমাণু তার যৌগে থাকা আধান নির্দেশ করে।
নাইট্রোজেন (N₂) অণুতে সমযোজ্যতা কত? ব্যাখ্যা করো।
নাইট্রোজেন অণুতে (N₂) নাইট্রোজেনের সমযোজ্যতা 3। কারণ, দুটি নাইট্রোজেন পরমাণু পরস্পরের মধ্যে তিন জোড়া ইলেকট্রন ভাগ করে নিয়ে একটি স্থিতিশীল অণু গঠন করে (একটি ত্রি-বন্ধন গঠন করে)।
হাইড্রোজেনের (H₂) সমযোজ্যতা কেন 1?
হাইড্রোজেন পরমাণুর সর্ববহিঃস্থ কক্ষপথে 1টি ইলেকট্রন থাকে। এটি নিকটতম নিষ্ক্রিয় গ্যাস হিলিয়ামের মতো ইলেকট্রন বিন্যাস (2টি ইলেকট্রন) লাভের জন্য আরেকটি হাইড্রোজেন পরমাণুর সাথে 1টি ইলেকট্রন জোড়া (1টি বন্ধন) তৈরি করে। যেহেতু এটি মাত্র 1টি ইলেকট্রন জোড়া গঠন করে, তাই এর সমযোজ্যতা 1।
জলের (H₂O) অণুতে অক্সিজেনের সমযোজ্যতা কত?
জলের অণুতে অক্সিজেনের সমযোজ্যতা 2। একটি অক্সিজেন পরমাণু দুটি হাইড্রোজেন পরমাণুর সাথে দুটি পৃথক ইলেকট্রন জোড়া (দুটি সমযোজ্য বন্ধন) গঠন করে। সুতরাং, এটি মোট 2টি ইলেকট্রন জোড়া গঠন করে, তাই এর সমযোজ্যতা 2।
সমযোজ্যতা নির্ধারণের নিয়ম কী?
সমযোজ্যতা নির্ধারণের মূল নিয়ম হল, কোনো মৌলের পরমাণু একটি অণু গঠন করার সময় অন্য পরমাণুর সাথে যতগুলি ইলেকট্রন জোড়া (সমযোজ্য বন্ধন) গঠন করে, সেই সংখ্যাই হল তার সমযোজ্যতা। এটি সাধারণত পর্যায় সারণির গ্রুপ নম্বর (যোজ্যতা ইলেকট্রন সংখ্যা) দিয়েও সম্পর্কিত।
কার্বন ডাই-অক্সাইড (CO₂) অণুতে কার্বনের সমযোজ্যতা কত?
কার্বন ডাই-অক্সাইড অণুতে কার্বনের সমযোজ্যতা 8। একটি কার্বন পরমাণু দুটি অক্সিজেন পরমাণুর সাথে মোট চারটি ইলেকট্রন জোড়া গঠন করে (প্রতিটি অক্সিজেনের সাথে দুটি করে, অর্থাৎ দুটি দ্বি-বন্ধন)। তাই, এর সমযোজ্যতা 8।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “সমযোজ্যতা কাকে বলে? সমযোজ্যতার পরিমাপ কী? উদাহরণ দাও।” — নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “আয়নীয় ও সমযোজী বন্ধন” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন