স্বাভাবিক তেজস্ক্রিয়তা কাকে বলে? তেজস্ক্রিয়তা একটি কেন্দ্রকঘটিত বা পারমাণবিক ঘটনা – ব্যাখ্যা করো।

Souvick

এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “স্বাভাবিক তেজস্ক্রিয়তা কাকে বলে? তেজস্ক্রিয়তা একটি কেন্দ্রকঘটিত বা পারমাণবিক ঘটনা – ব্যাখ্যা করো।” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “স্বাভাবিক তেজস্ক্রিয়তা কাকে বলে? তেজস্ক্রিয়তা একটি কেন্দ্রকঘটিত বা পারমাণবিক ঘটনা – ব্যাখ্যা করো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের সপ্তম অধ্যায় “পরমাণুর নিউক্লিয়াস“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

স্বাভাবিক তেজস্ক্রিয়তা কাকে বলে? তেজস্ক্রিয়তা একটি কেন্দ্রকঘটিত বা পারমাণবিক ঘটনা - ব্যাখ্যা করো।

স্বাভাবিক তেজস্ক্রিয়তা কাকে বলে?

স্বাভাবিক তেজস্ক্রিয়তা – ইউরেনিয়াম, থোরিয়াম, অ্যাক্টিনিয়ামের মতো ভারী মৌলগুলি (যাদের ভরসংখ্যা 210 বা তার বেশি), স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিয়ন্ত্রণ অযোগ্য পরিবর্তনের ফলে α, β ও γ-রশ্মি বিকিরণ করে অন্য মৌলে রূপান্তরিত হয় এবং শেষ পর্যন্ত লেডের অতেজস্ক্রিয় আইসোটোপে পরিণত হয়। প্রাকৃতিক মৌলগুলির নিউক্লিয়াস ঘটিত এই ধর্মকে স্বাভাবিক তেজস্ক্রিয়তা বলে।

তেজস্ক্রিয়তা একটি কেন্দ্রকঘটিত বা পারমাণবিক ঘটনা – ব্যাখ্যা করো

অথবা, কোনো মৌলের তেজস্ক্রিয়তা সম্পূর্ণ নিউক্লিয়াসজনিত ঘটনা-যুক্তিসহ ব্যাখ্যা করো।

তেজস্ক্রিয়তা একটি কেন্দ্রকঘটিত ঘটনা – প্রকৃতপক্ষে তেজস্ক্রিয়তা একটি নিউক্লিয় বা কেন্দ্রকঘটিত ঘটনা। নিউক্লিয়াস বা কেন্দ্রকের ভাঙনের ফলে একটি মৌলিক পদার্থের পরমাণু ভেঙে অন্য একটি মৌলিক পদার্থের পরমাণু পাওয়া যায়। এই ঘটনা তড়িৎক্ষেত্র, চুম্বকক্ষেত্র, চাপ, উত্তাপ ইত্যাদি কোনো কিছুর দ্বারা প্রভাবিত হয় না। এটি একটি স্বতঃস্ফূর্ত ঘটনা।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর

স্বাভাবিক তেজস্ক্রিয়তা কী?

যে প্রক্রিয়ায় ইউরেনিয়াম, থোরিয়াম, অ্যাক্টিনিয়ামের মতো ভারী মৌলগুলির (ভরসংখ্যা ২১০-এর বেশি) পরমাণুর নিউক্লিয়াস স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভেঙে α (আলফা), β (বিটা) ও γ (গামা) রশ্মি বিকিরণ করে এবং অবশেষে স্থিতিশীল লেডের আইসোটোপে পরিণত হয়, তাকেই স্বাভাবিক তেজস্ক্রিয়তা বলে।

তেজস্ক্রিয়তাকে কেন একটি নিউক্লিয়াসঘটিত বা কেন্দ্রকঘটিত ঘটনা বলা হয়?

তেজস্ক্রিয়তার পুরো প্রক্রিয়া শুধুমাত্র পরমাণুর নিউক্লিয়াস বা কেন্দ্রকের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। ইলেকট্রন বা ইলেকট্রন বিন্যাসের সাথে এর কোনো সম্পর্ক নেই। নিউক্লিয়াসের ভাঙন, বিকিরণের নির্গমন এবং এক মৌল থেকে অন্য মৌলে রূপান্তর – এই সবকিছুই নিউক্লিয়াসে ঘটে। তাই একে নিউক্লিয়াসঘটিত ঘটনা বলা হয়।

তেজস্ক্রিয়তা কীভাবে প্রমাণ করে যে এটি একটি নিউক্লিয়াসঘটিত ঘটনা?

যখন একটি তেজস্ক্রিয় মৌল α বা β কণা বিকিরণ করে, তখন এটি সম্পূর্ণ ভিন্ন রাসায়নিক ধর্মবিশিষ্ট একটি নতুন মৌলে পরিণত হয়। যেহেতু একটি পরমাণুর রাসায়নিক ধর্ম নির্ধারিত হয় এর ইলেকট্রন বিন্যাস দ্বারা, এবং ইলেকট্রন বিন্যাস নির্ভর করে নিউক্লিয়াসের প্রোটন সংখ্যার উপর, তাই নিউক্লিয়াসের পরিবর্তনই (প্রোটন সংখ্যার পরিবর্তন) নতুন মৌলের সৃষ্টি করে। এটি প্রমাণ করে ঘটনাটি নিউক্লিয়াসকেন্দ্রিক।

তেজস্ক্রিয়তার উপর তাপ, চাপ বা তড়িৎক্ষেত্রের কোনো প্রভাব আছে কি?

না, তেজস্ক্রিয়তা একটি স্বতঃস্ফূর্ত ও অনিয়ন্ত্রিত নিউক্লিয়ার প্রক্রিয়া। এটির হার বা প্রকৃতির উপর তাপমাত্রা, চাপ, তড়িৎক্ষেত্র, চুম্বকক্ষেত্র বা অন্য কোনো রাসায়নিক প্রক্রিয়ার কোনো প্রভাব পড়ে না।

স্বাভাবিক তেজস্ক্রিয়তার শেষ উৎপাদ সাধারণত কী?

স্বাভাবিক তেজস্ক্রিয়তার মাধ্যমে ভারী মৌলগুলির ক্ষয়প্রাপ্তির শৃঙ্খল সাধারণত স্থিতিশীল (অ-তেজস্ক্রিয়) লেড (Pb) এর আইসোটোপে গিয়ে শেষ হয়।

α, β ও γ-রশ্মির মধ্যে মৌলিক পার্থক্য কী?

α, β ও γ-রশ্মির মধ্যে মৌলিক পার্থক্য হল –
1. α-কণা – ধনাত্মক আধানযুক্ত হিলিয়াম নিউক্লিয়াস (He²⁺)।
2. β-কণা – ঋণাত্মক আধানযুক্ত উচ্চ গতিসম্পন্ন ইলেকট্রন (e⁻)।
3. γ-রশ্মি – তড়িৎ-চুম্বকীয় তরঙ্গ, আলোর মতোই কিন্তু অত্যন্ত উচ্চ শক্তি সম্পন্ন; এদের কোনো ভর বা আধান নেই।


এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “স্বাভাবিক তেজস্ক্রিয়তা কাকে বলে? তেজস্ক্রিয়তা একটি কেন্দ্রকঘটিত বা পারমাণবিক ঘটনা – ব্যাখ্যা করো।” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “স্বাভাবিক তেজস্ক্রিয়তা কাকে বলে? তেজস্ক্রিয়তা একটি কেন্দ্রকঘটিত বা পারমাণবিক ঘটনা – ব্যাখ্যা করো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের সপ্তম অধ্যায় “পরমাণুর নিউক্লিয়াস“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।

Please Share This Article

Related Posts

ব্রোমিনের সঙ্গে অ্যাসিটিলিনের যুত বিক্রিয়াটি উল্লেখ করো।

ব্রোমিনের সঙ্গে অ্যাসিটিলিনের যুত বিক্রিয়াটি উল্লেখ করো।

কার্যকরী মূলক বা ক্রিয়াশীল গ্রুপ কাকে বলে? কার্যকরী মূলক ও জৈব মূলকের পার্থক্য বুঝিয়ে দাও।

কার্যকরী মূলক বা ক্রিয়াশীল গ্রুপ কাকে বলে? কার্যকরী মূলক ও জৈব মূলকের পার্থক্য বুঝিয়ে দাও।

একটি জৈব যৌগের আণবিক সংকেত C₂H₄O₂। যৌগটি জলে দ্রাব্য এবং যৌগটির জলীয় দ্রবণে NaHCO₃ যোগ করলে CO₂ নির্গত হয়। জৈব যৌগটিকে শনাক্ত করো। জৈব যৌগটির সঙ্গে ইথানলের বিক্রিয়া শর্ত ও সমিত রাসায়নিক সমীকরণসহ লেখো।

C₂H₄O₂ সংকেতের একটি জৈব যৌগ NaHCO₃-এর সাথে CO₂ গ্যাস দেয়। যৌগটি শনাক্ত করো ও ইথানলের সাথে এর বিক্রিয়ার শর্তসহ সমীকরণ দাও।

About The Author

Souvick

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

"SolutionWbbse" শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনলাইন অধ্যয়ন প্ল্যাটফর্ম। এখানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য গাইডলাইন, এবং বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনার সাহায্য প্রদান করা হয়। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকল বিষয়ের শিক্ষণীয় উপকরণ সহজেই সকল শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়া।

Editor Picks

ইস্ট্রোজেন হরমোনের ক্ষরণস্থল উল্লেখ করে এর প্রধান কাজগুলি সংক্ষেপে বর্ণনা করো।

ইনসুলিন হরমোনের প্রধান কাজগুলির সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও।

হরমোনের ফিডব্যাক নিয়ন্ত্রণ কাকে বলে? উদাহরণসহ হরমোনের ফিডব্যাক নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি

প্রাণীদেহের বিভিন্ন কাজ নিয়ন্ত্রণে হরমোনের ভূমিকা সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখো।

প্রাণী হরমোনের উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্যগুলি সংক্ষেপে বর্ণনা করো।