এখনই আমাদের Telegram Community গ্রুপে যোগ দিন। এখানে WBBSE বোর্ডের পঞ্চম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণির যেকোনো বিষয়ভিত্তিক সমস্যা শেয়ার করতে পারেন এবং একে অপরের সাহায্য করতে পারবেন। এছাড়া, কোনও সমস্যা হলে আমাদের শিক্ষকরা তা সমাধান করে দেবেন।

Telegram Logo Join Our Telegram Community

স্বামী বিবেকানন্দের নব্য বেদান্ত কী? স্বামী বিবেকানন্দের বেদান্তবাদ কেন ‘নব্য’?

এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “স্বামী বিবেকানন্দের বেদান্তবাদ কেন ‘নব্য’? স্বামী বিবেকানন্দের নব্য বেদান্ত কী? নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাস পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “স্বামী বিবেকানন্দের বেদান্তবাদ কেন ‘নব্য’? স্বামী বিবেকানন্দের নব্য বেদান্ত কী?“ প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের দ্বিতীয় অধ্যায় “সংস্কার – বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

স্বামী বিবেকানন্দের নব্য বেদান্ত কী? স্বামী বিবেকানন্দের বেদান্তবাদ কেন 'নব্য'?
Contents Show

স্বামী বিবেকানন্দের বেদান্তবাদ কেন ‘নব্য’?

স্বামী বিবেকানন্দের ধর্মীয় চিন্তাধারার গুরুত্বপূর্ণ দিক ছিল নব্য বেদান্তবাদ। প্রাচীন অদ্বৈত দর্শনে বলা হয় যে, ‘ব্রহ্ম সত্য, জগৎ মিথ্যা’। ব্রহ্ম ও আত্মা পৃথক কিছু নয়। অর্থাৎ ব্রহ্ম ছাড়া জগতের পৃথক কোনো অস্তিত্ব নেই। স্বামী বিবেকানন্দ প্রাচীন এই অদ্বৈত দর্শনের নিজস্ব ব্যাখ্যা দিয়ে এটিকে জনপ্রিয় করে তোলেন। তিনি বলেন সর্বত্রই ব্রহ্মের উপস্থিতি। সুতরাং, সাধারণ মানুষের সেবা করাই হল ব্রহ্মের সেবা করা। তাই স্বামীজির ধর্মমত ‘নব্য বেদান্তবাদ’ নামে পরিচিত।

স্বামী বিবেকানন্দের নব্য বেদান্ত কী?

সূচনা –

স্বামী বিবেকানন্দ আধ্যাত্মচেতনা ও দেশপ্রেমকে সমন্বিত করেছিলেন। ঈশ্বরের সচল রুপ মানুষের সেবার যে আদর্শ তিনি প্রচার করেন তা ‘নব্য বেদান্ত’ নামে পরিচিত।

লক্ষ্য –

ভারতবাসীর দারিদ্র্য, অশিক্ষা, ধর্মীয় ও সামাজিক কুসংস্কার প্রভৃতি স্বামীজির ধর্মচিন্তাকে গভীরভাবে প্রভাবিত করে। এজন্য মানুষকে অনুষ্ঠান-সর্বস্ব ধর্মের বেড়াজাল থেকে মুক্ত করে সেবার আদর্শ তুলে ধরাই বিবেকানন্দ তাঁর ধর্মচিন্তার মূল লক্ষ্য বলে ঘোষণা করেন।

নতুন ধর্মাদর্শ –

স্বামী বিবেকানন্দ অদ্বৈত বেদান্ত দর্শনের যে নতুন ব্যাখ্যা দেন তা নব্য বেদান্ত নামে পরিচিত। এই ব্যাখ্যায় তিনি বলেন যে, সর্বত্রই ব্রহ্মের উপস্থিতি রয়েছে। সাধারণ মানুষের সেবাই হল ব্রহ্মের সেবা।

শিকাগো সম্মেলন –

স্বামীজি 1893 খ্রিস্টাব্দে শিকাগো বিশ্বধর্ম সম্মেলনে যোগ দেন। সেখানে তিনি ভারতের সনাতন হিন্দু ধর্মের অদ্বৈত বেদান্তের বিশ্বজনীন আদর্শ ও বিশ্বজনীন মানব প্রেমের আদর্শ ব্যাখ্যা করেন।

সমাধি –

স্বামী বিবেকানন্দ নব্য বেদান্তবাদে মানুষের মুক্তির জন্য সমাধি অর্থাৎ ধ্যানের ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেন। এভাবে তিনি মানুষকে মুক্তির নতুন পথ দেখান।

উপসংহার –

স্বামীজি 1897 খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠা করেন নব্য বেদান্তের প্রাতিষ্ঠানিক রূপ রামকৃষ্ণ মিশন। যত্র জীব তত্র শিব মানুষকে ঈশ্বর জ্ঞানে সেবাই হল এই প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্য।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর

নব্য বেদান্তবাদ কী?

নব্য বেদান্তবাদ হল স্বামী বিবেকানন্দ কর্তৃক প্রাচীন অদ্বৈত বেদান্ত দর্শনের একটি আধুনিক ও ব্যবহারিক ব্যাখ্যা। তিনি এই দর্শনে মানুষের সেবাকে ব্রহ্মের সেবা হিসেবে ব্যাখ্যা করেন এবং সর্বত্র ব্রহ্মের উপস্থিতির কথা বলেন।

স্বামী বিবেকানন্দের নব্য বেদান্তবাদের মূল লক্ষ্য কী?

স্বামী বিবেকানন্দের নব্য বেদান্তবাদের মূল লক্ষ্য হল মানুষের দারিদ্র্য, অশিক্ষা, ধর্মীয় ও সামাজিক কুসংস্কার দূর করা এবং মানুষকে অনুষ্ঠান-সর্বস্ব ধর্মের বেড়াজাল থেকে মুক্ত করে সেবার আদর্শে উদ্বুদ্ধ করা।

নব্য বেদান্তবাদে ব্রহ্মের ধারণা কী?

নব্য বেদান্তবাদে ব্রহ্মের ধারণা হল যে ব্রহ্ম সর্বত্র বিরাজমান এবং প্রতিটি জীবেই ব্রহ্মের উপস্থিতি রয়েছে। তাই মানুষের সেবা করাই ব্রহ্মের সেবা করা।

শিকাগো বিশ্বধর্ম সম্মেলনে স্বামী বিবেকানন্দের ভূমিকা কী ছিল?

1893 সালে শিকাগো বিশ্বধর্ম সম্মেলনে স্বামী বিবেকানন্দ ভারতের সনাতন হিন্দু ধর্মের অদ্বৈত বেদান্তের বিশ্বজনীন আদর্শ ও বিশ্বজনীন মানব প্রেমের আদর্শ ব্যাখ্যা করেন। তাঁর বক্তব্য বিশ্বব্যাপী হিন্দু ধর্ম ও বেদান্ত দর্শনের প্রতি মানুষের আগ্রহ সৃষ্টি করে।

নব্য বেদান্তবাদে সমাধি বা ধ্যানের গুরুত্ব কী?

নব্য বেদান্তবাদে সমাধি বা ধ্যানের গুরুত্ব অপরিসীম। স্বামী বিবেকানন্দের মতে, ধ্যানের মাধ্যমে মানুষ আত্মসাক্ষাৎকার লাভ করতে পারে এবং ব্রহ্মের সাথে একাত্মতা অর্জন করতে পারে। এটি মানুষের আধ্যাত্মিক মুক্তির পথ।

রামকৃষ্ণ মিশনের উদ্দেশ্য কী?

রামকৃষ্ণ মিশনের উদ্দেশ্য হল ‘যত্র জীব তত্র শিব’ (প্রতিটি জীবেই শিবের উপস্থিতি) এই আদর্শে মানুষকে ঈশ্বর জ্ঞানে সেবা করা। এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে স্বামী বিবেকানন্দ নব্য বেদান্তবাদের আদর্শকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছেন।

নব্য বেদান্তবাদে সামাজিক সেবার গুরুত্ব কী?

নব্য বেদান্তবাদে সামাজিক সেবার গুরুত্ব অত্যন্ত বেশি। স্বামী বিবেকানন্দের মতে, মানুষের সেবা করাই হল ব্রহ্মের সেবা করা। তাই তিনি দারিদ্র্য, অশিক্ষা ও কুসংস্কার দূর করতে সামাজিক সেবার উপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেন।

নব্য বেদান্তবাদ কীভাবে প্রাচীন বেদান্ত থেকে আলাদা?

প্রাচীন বেদান্ত দর্শনে ব্রহ্ম ও জগতের সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করা হয় এবং জগৎকে মিথ্যা বলা হয়। কিন্তু নব্য বেদান্তবাদে স্বামী বিবেকানন্দ জগৎকে ব্রহ্মের প্রকাশ হিসেবে দেখেন এবং সামাজিক সেবা ও মানবপ্রেমকে ব্রহ্মের সেবা হিসেবে ব্যাখ্যা করেন।

স্বামী বিবেকানন্দের নব্য বেদান্তবাদের প্রভাব কী?

স্বামী বিবেকানন্দের নব্য বেদান্তবাদ ভারত ও বিশ্বব্যাপী আধ্যাত্মিক ও সামাজিক আন্দোলনে গভীর প্রভাব ফেলে। এটি মানুষকে ধর্মীয় সহিষ্ণুতা, মানবপ্রেম ও সামাজিক সেবার আদর্শে উদ্বুদ্ধ করে।


এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “স্বামী বিবেকানন্দের বেদান্তবাদ কেন ‘নব্য’? স্বামী বিবেকানন্দের নব্য বেদান্ত কী?” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই “স্বামী বিবেকানন্দের বেদান্তবাদ কেন ‘নব্য’? স্বামী বিবেকানন্দের নব্য বেদান্ত কী?” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের দ্বিতীয় অধ্যায় “সংস্কার – বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।

Share via:

মন্তব্য করুন