এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “তড়িৎ বিশ্লেষণের মূলনীতিটি লেখো।” — নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “তড়িৎপ্রবাহ ও রাসায়নিক বিক্রিয়া” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

তড়িৎ বিশ্লেষণের মূলনীতিটি লেখো।
তড়িৎ বিশোধন পদ্ধতিতে ক্যাথোডরূপে ধাতুর বিশুদ্ধ পাতকে এবং অ্যানোডরূপে অবিশুদ্ধ সংশ্লিষ্ট ধাতুর মোটা পাতকে ব্যবহার করা হয়। উক্ত ধাতুটির কোনো উপযুক্ত লবণের জলীয় দ্রবণকে তড়িৎবিশ্লেষ্য হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এখন তড়িৎদ্বারের মাধ্যমে দ্রবণে তড়িৎ চালনা করলে অবিশুদ্ধ অ্যানোড থেকে ধাতুর পরমাণুগুলি ইলেকট্রন ত্যাগ করে আয়নরূপে দ্রবণে আসে। আবার দ্রবণ থেকে এই আয়নগুলি ক্যাথোডে গিয়ে ইলেকট্রন গ্রহণ করে ধাতব পরমাণুতে পরিণত হয়। ফলে অ্যানোডটির ক্রমশ ক্ষয় হয় এবং ক্যাথোডে উক্ত বিশুদ্ধ ধাতুটি জমা হওয়ায় ক্যাথোডটি ক্রমশ পুরু হতে থাকে। আবার অশুদ্ধিগুলি অ্যানোড মাড রূপে অ্যানোডে সঞ্চিত হয়।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
তড়িৎ বিশ্লেষণ কাকে বলে?
তড়িৎ বিশ্লেষণ হল একটি রাসায়নিক প্রক্রিয়া যেখানে তড়িৎ প্রবাহের মাধ্যমে কোনো তড়িৎ-বিশ্লেষ্য পদার্থ (electrolyte) ভেঙে তার উপাদানগুলিতে বিশ্লেষিত হয়। এই প্রক্রিয়ায় অ্যানোডে জারণ ও ক্যাথোডে বিজারণ ঘটে।
তড়িৎ বিশোধনে অ্যানোড ও ক্যাথোড কী দিয়ে তৈরি করা হয়?
তড়িৎ বিশোধনে অ্যানোড ও ক্যাথোড তৈরি করা হয় –
1. অ্যানোড – অবিশুদ্ধ ধাতুর মোটা পাত।
2. ক্যাথোড – বিশুদ্ধ ধাতুর পাতলা পাত।
3. তড়িৎবিশ্লেষ্য – সংশ্লিষ্ট ধাতুর কোনো উপযুক্ত লবণের জলীয় দ্রবণ।
তড়িৎ বিশোধনের সময় অ্যানোড মাড কী?
অবিশুদ্ধ ধাতুর অ্যানোডে উপস্থিত অপদ্রব্য (যেমন – সোনা, রূপা, সেলেনিয়াম ইত্যাদি) দ্রবণে যায় না, বরং অ্যানোডের নিচে পলির মতো জমা হয়, একে অ্যানোড মাড বলে। এটি থেকে মূল্যবান ধাতু পুনরুদ্ধার করা যায়।
তড়িৎ বিশোধন পদ্ধতিতে কোন কোন ধাতুর বিশোধন করা হয়?
তামা (Cu), দস্তা (Zn), সীসা (Pb), নিকেল (Ni), রূপা (Ag), সোনা (Au) প্রভৃতি ধাতুর বিশুদ্ধকরণে এই পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়।
তড়িৎ বিশ্লেষণ ও তড়িৎ বিশোধনের মধ্যে পার্থক্য কী?
তড়িৎ বিশ্লেষণ ও তড়িৎ বিশোধনের মধ্যে পার্থক্য হল –
1. তড়িৎ বিশ্লেষণ – যেকোনো তড়িৎ-বিশ্লেষ্যকে উপাদানে ভাঙ্গা।
2. তড়িৎ বিশোধন – একটি বিশেষ ধরনের তড়িৎ বিশ্লেষণ যার মাধ্যমে অশুদ্ধ ধাতুকে বিশুদ্ধ করা হয়।
তড়িৎ বিশোধনের প্রধান শর্ত কী?
তড়িৎ বিশোধনের প্রধান শর্ত হল –
1. অ্যানোড থেকে ধাতু দ্রবণে আয়ন হিসেবে যাবে।
2. ক্যাথোডে শুধু ঐ ধাতুর আয়নই বিজারিত হবে, অন্য কোনো আয়ন নয়।
3. তড়িৎবিশ্লেষ্য দ্রবণে সংশ্লিষ্ট ধাতুর আয়ন উপস্থিত থাকবে।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “তড়িৎ বিশ্লেষণের মূলনীতিটি লেখো।” — নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “তড়িৎপ্রবাহ ও রাসায়নিক বিক্রিয়া” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন