এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “থার্মিট পদ্ধতির কয়েকটি ব্যবহারিক প্রয়োগ ও উপযোগিতা উল্লেখ করো।” — নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “ধাতুবিদ্যা” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

থার্মিট পদ্ধতির কয়েকটি ব্যবহারিক প্রয়োগ ও উপযোগিতা উল্লেখ করো।
- থার্মিট পদ্ধতির ব্যবহারিক প্রয়োগ – থার্মিট পদ্ধতিতে আয়রন, ক্রোমিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ প্রভৃতি ধাতুর অক্সাইড থেকে ধাতুগুলিকে নিষ্কাশন করা হয়।
- থার্মিট পদ্ধতির উপযোগিতা – এই পদ্ধতিতে বৃহৎ পরিকাঠামো ছাড়াই ধাতু নিষ্কাশন করা যায়। প্রয়োজনমতো অল্প পরিমাণ ধাতব অক্সাইডকে Al চূর্ণ দ্বারা বিজারিত করে প্রাপ্ত ধাতুকে সরাসরি কাজে লাগানো যায়।
- থার্মিট পদ্ধতির ব্যবহারিক প্রয়োগ – থার্মিট পদ্ধতিতে ট্রামলাইন, রেললাইনের ফাটল, জাহাজের ভাঙা অংশ বা বড়ো বড়ো মেশিন মেরামত করা হয়।
- থার্মিট পদ্ধতির উপযোগিতা – এক্ষেত্রে, ট্রামলাইন, রেললাইন, জাহাজে ও বড়ো বড়ো মেশিন প্রভৃতির ভাঙা অংশকে মেরামত করতে কারখানায় বা অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন হয় না।
- থার্মিট পদ্ধতির ব্যবহারিক প্রয়োগ – এই পদ্ধতিতে উপজাত পদার্থ হিসেবে প্রাপ্ত Al₂O₃ -এর ব্যবহার।
- থার্মিট পদ্ধতির উপযোগিতা – Al₂O₃ এমরি চূর্ণ (emery powder) রূপে ধাতু পালিশ করতে, চুল্লির অভ্যন্তরের আস্তরণ হিসেবে, অগ্নিসহ ইট তৈরি করতে ব্যবহৃত হয়।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
থার্মিট পদ্ধতি কী?
থার্মিট পদ্ধতি একটি রাসায়নিক বিক্রিয়া যেখানে অ্যালুমিনিয়াম পাউডার একটি ধাতব অক্সাইডকে বিজারিত করে সেই ধাতু এবং অ্যালুমিনিয়াম অক্সাইড উৎপন্ন করে। এটি একটি অত্যন্ত তাপ উৎপাদী বিক্রিয়া।
থার্মিট পদ্ধতির প্রধান দুটি ব্যবহারিক প্রয়োগ উল্লেখ করো।
থার্মিট পদ্ধতির প্রধান দুটি ব্যবহারিক প্রয়োগ –
1. ধাতু নিষ্কাশন – আয়রন (লোহা), ক্রোমিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ প্রভৃতি ধাতুর অক্সাইড থেকে ধাতু নিষ্কাশনে এটি ব্যবহৃত হয়।
2. ঢালাই ও মেরামতি – রেললাইন, ট্রামলাইন, জাহাজের ভাঙা অংশ বা বড়ো মেশিনের ফাটল মেরামত করতে এই পদ্ধতিতে ঢালাই করা হয়।
থার্মিট পদ্ধতির সবচেয়ে বড়ো সুবিধা বা উপযোগিতা কী?
এই পদ্ধতির একটি বড়ো সুবিধা হল যে বৃহৎ পরিকাঠামো বা কারখানায় নিয়ে যাওয়া ছাড়াই, প্রয়োজনমতো স্থানেই অল্প পরিমাণে ধাতু নিষ্কাশন বা মেরামতির কাজ করা যায়।
রেললাইন মেরামতে থার্মিট পদ্ধতি কেন বিশেষভাবে উপযোগী?
রেললাইন মেরামতে থার্মিট পদ্ধতি বিশেষভাবে উপযোগী কারণ, রেললাইনের মতো বড়ো ও স্থির কাঠামোকে মেরামত করার সময় সেটিকে কারখানায় নিয়ে যাওয়া অত্যন্ত কষ্টসাধ্য এবং ব্যয়বহুল। থার্মিট পদ্ধতিতে সরাসরি সেই স্থানেই দ্রুত এবং মজবুত ঢালাই করা সম্ভব।
থার্মিট বিক্রিয়ায় কী কী উৎপাদ পাওয়া যায়?
থার্মিট বিক্রিয়ায় দুটি প্রধান উৎপাদ হল –
1. প্রধান উৎপাদ – কাঙ্ক্ষিত ধাতু (যেমন গলিত লোহা)।
2. উপজাত পদার্থ – অ্যালুমিনিয়াম অক্সাইড (Al₂O₃)।
থার্মিট বিক্রিয়ায় উৎপন্ন অ্যালুমিনিয়াম অক্সাইড (Al₂O₃) এর কী ব্যবহার হয়?
উৎপন্ন Al₂O₃ কে নিম্নলিখিত কাজে ব্যবহার করা হয় –
1. এমরি পাউডার হিসেবে ধাতু পালিশ করতে।
2. চুল্লির ভিতরের দিকের আস্তরণ হিসেবে।
3. অগ্নিসহ ইট (Firebricks) তৈরি করতে।
থার্মিট পদ্ধতিতে সাধারণত কোন ধাতুকে বিজারক হিসেবে ব্যবহার করা হয়?
থার্মিট পদ্ধতিতে অ্যালুমিনিয়াম (Al) ধাতুর গুঁড়োকে বিজারক হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “থার্মিট পদ্ধতির কয়েকটি ব্যবহারিক প্রয়োগ ও উপযোগিতা উল্লেখ করো।” — নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “ধাতুবিদ্যা” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন