এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “‘থার্মিট মিশ্রণ’ কী? থার্মিট পদ্ধতিতে বিজারক হিসেবে কী ব্যবহার করা হয়? প্রজ্জ্বলক মিশ্রণ কী?” — নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “ধাতুবিদ্যা” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

‘থার্মিট মিশ্রণ’ কী? থার্মিট পদ্ধতিতে বিজারক হিসেবে কী ব্যবহার করা হয়? প্রজ্জ্বলক মিশ্রণ কী?
3 ভাগ Fe₂O₃ এবং 1 ভাগ Al চূর্ণের মিশ্রণকে থার্মিট মিশ্রণ বলে। থার্মিট পদ্ধতিতে বিজারক হিসেবে অ্যালুমিনিয়াম চূর্ণ ব্যবহার করা হয়। এই পদ্ধতিতে ব্যবহৃত Mg চূর্ণ, পটাসিয়াম ক্লোরেট (KClO₃) এবং বেরিয়াম পারক্সাইডের (BaO₂) মিশ্রণকে প্রজ্জ্বলক মিশ্রণ বলে। এই মিশ্রণে আগুন ধরালে প্রচুর তাপের উৎপত্তি ঘটে (প্রায় 2000°C)।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
‘থার্মিট মিশ্রণ’ কী?
থার্মিট মিশ্রণ হল একটি বিশেষ রাসায়নিক মিশ্রণ যা লৌহ অক্সাইড (সাধারণত Fe₂O₃) এবং অ্যালুমিনিয়াম চূর্ণের একটি নির্দিষ্ট অনুপাতে তৈরি। সাধারণত এতে ৩ ভাগ ফেরিক অক্সাইড (Fe₂O₃) এবং 1 ভাগ অ্যালুমিনিয়াম (Al) চূর্ণ ব্যবহার করা হয়।
থার্মিট মিশ্রণের প্রধান বিক্রিয়া কী?
থার্মিট মিশ্রণের প্রধান বিক্রিয়া একটি প্রবল রেডক্স বিক্রিয়া, যেখানে অ্যালুমিনিয়াম ফেরিক অক্সাইড (Fe₂O₃) থেকে অক্সিজেন নিয়ে সেটিকে বিজারিত করে গলিত লোহা উৎপন্ন করে। বিক্রিয়াটি হল – Fe₂O₃ + 2Al → 2Fe + Al₂O₃ + তাপ
থার্মিট বিক্রিয়া শুরু করতে ‘প্রজ্জ্বলক মিশ্রণ’ কী?
প্রজ্জ্বলক মিশ্রণ একটি সহজে জ্বলে ওঠা রাসায়নিক মিশ্রণ, যা থার্মিট বিক্রিয়া শুরু করার জন্য প্রয়োজনীয় প্রাথমিক তাপ সরবরাহ করে। এটি সাধারণত ম্যাগনেসিয়াম চূর্ণ (Mg), পটাসিয়াম ক্লোরেট (KClO₃) ও বেরিয়াম পারক্সাইড (BaO₂)-এর সমন্বয়ে তৈরি হয়।
প্রজ্জ্বলক মিশ্রণ কীভাবে কাজ করে?
প্রজ্জ্বলক মিশ্রণে আগুন ধরালে এটি দ্রুত জ্বলে প্রচুর তাপ উৎপন্ন করে (প্রায় 2000°C)। এই উচ্চ তাপ থার্মিট মিশ্রণে থাকা অ্যালুমিনিয়াম ও ফেরিক অক্সাইডের মধ্যে বিক্রিয়া শুরু করার জন্য যথেষ্ট, যা পরে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সম্পন্ন হয়।
থার্মিট বিক্রিয়ায় এত বেশি তাপের (প্রায় 2000°C) প্রয়োজন কেন?
এই উচ্চ তাপমাত্রা দুটি কারণে গুরুত্বপূর্ণ –
1. বিক্রিয়া শুরু করার জন্য প্রয়োজনীয় সক্রিয়করণ শক্তি সরবরাহ করতে।
2. উৎপন্ন লোহাকে গলিত অবস্থায় রাখতে, যাতে তা ঢালাই বা মেরামতির কাজে ব্যবহার করা যায়।
থার্মিট পদ্ধতির একটি বাস্তব প্রয়োগ উল্লেখ করো।
থার্মিট পদ্ধতি ব্যবহার করে রেললাইন বা ভারী মেশিনারির ভাঙা লোহার যন্ত্রাংশ ঢালাই করা হয়। গলিত লোহা ভাঙা অংশে ঢেলে দিলে তা জমাট বেঁধে একটি শক্তিশালী সংযোগ তৈরি করে।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞান বিষয়ের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন — “‘থার্মিট মিশ্রণ’ কী? থার্মিট পদ্ধতিতে বিজারক হিসেবে কী ব্যবহার করা হয়? প্রজ্জ্বলক মিশ্রণ কী?” — নিয়ে আলোচনা করেছি। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভৌতবিজ্ঞানের অষ্টম অধ্যায় “পদার্থের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মসমূহ” -এর “ধাতুবিদ্যা” অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় এই প্রশ্নটি প্রায়ই আসে, তাই এটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন