এখনই আমাদের Telegram Community গ্রুপে যোগ দিন। এখানে WBBSE বোর্ডের পঞ্চম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণির যেকোনো বিষয়ভিত্তিক সমস্যা শেয়ার করতে পারেন এবং একে অপরের সাহায্য করতে পারবেন। এছাড়া, কোনও সমস্যা হলে আমাদের শিক্ষকরা তা সমাধান করে দেবেন।

Telegram Logo Join Our Telegram Community

তিতুমিরের নেতৃত্বে বারাসত বিদ্রোহ সম্পর্কে টীকা লেখো।

এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “তিতুমিরের নেতৃত্বে বারাসত বিদ্রোহ – টীকা লেখো। নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাস পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই “তিতুমিরের নেতৃত্বে বারাসত বিদ্রোহ – টীকা লেখো।“ প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের তৃতীয় অধ্যায় “প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ – বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ“ -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

তিতুমিরের নেতৃত্বে বারাসত বিদ্রোহ - টীকা লেখো।

তিতুমিরের নেতৃত্বে বারাসত বিদ্রোহ – টীকা লেখো।

বাংলায় ওয়াহাবি আন্দোলনের প্রাণপুরুষ ছিলেন মির নিসার আলি, তিতুমির নামেই যিনি ইতিহাসে সমধিক পরিচিত। সৈয়দ আহমেদের শিষ্যত্ব গ্রহণ করে তিনি বাংলায় ওয়াহাবি আদর্শ প্রচার করেন।

তিতুমিরের লক্ষ –

তিতুমিরের মূল লক্ষ ছিল স্থানীয় অত্যাচারী জমিদার, নীলকর ও তাদের মদতদাতা ইংরেজদের বিতাড়ন এবং শোষণমুক্ত স্বাধীন শাসন প্রতিষ্ঠা।

আন্দোলনের সূচনা –

24 পরগণার পুঁড়া গ্রামের অত্যাচারী জমিদার কৃষ্ণদেব রায়, গোবরডাঙার জমিদার এবং স্থানীয় সুদখোর মহাজনদের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণার মধ্য দিয়ে তিতুর নেতৃত্বে আন্দোলনের সূচনা হয়।

আন্দোলনের বিস্তার –

ক্রমে 24 পরগণা, নদিয়া, রাজশাহি, ঢাকা, পাবনার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে তিতুমিরের নেতৃত্বে ওয়াহাবি আন্দোলন দাবানলের মতো ছড়িয়ে পরে। তিতুমিরের বারাসাত বিদ্রোহ জমিদার ও নীলকর বিরোধিতা থেকে ক্রমে প্রত্যক্ষ ব্রিটিশ বিরোধী সংগ্রামে পর্যবসিত হয়।

বাঁশের কেল্লা –

জমিদারদের বিরুদ্ধে সাফল্য লাভের পর তিতুমির বারাসাতের নিকটবর্তী নারকেলবেড়িয়া গ্রামে বাঁশের কেল্লা নির্মাণ করে তার সদর দপ্তর স্থাপন করেন। তিনি নিজেকে ওই অঞ্চলের ‘বাদশাহ্’ ঘোষণা করেন এবং স্থানীয় জমিদার, নীলকর ও মহাজনদের কাছ থেকে রাজস্ব দাবি করা হয়।

বিদ্রোহের অবসান –

তিতুমিরের কার্যকলাপ ব্রিটিশ শাসকের মনে ভীতির সঞ্চার করে। শেষ পর্যন্ত বড়োলার্ট লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্কের নির্দেশে এক বিশাল বাহিনী 1831 খ্রিস্টাব্দে বাঁশের কেল্লা আক্রমণ করে। কর্ণেল স্টুয়ার্টের কামানের গোলার আঘাতে কেল্লা ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। তিতুমির ও তার কয়েকজন অনুগামী যুদ্ধক্ষেত্রে বীরের মতো মৃত্যু বরণ করেন।

মন্তব্য –

তিতুমিরের নেতৃত্বে ওয়াহাবি আন্দোলন কিছু ক্ষেত্রে ধর্মীয় সংকীর্ণতা দোষে দুষ্ট হলেও ইতিহাসবিদ গৌতম ভদ্র প্রমুখ তিতুমিরের অসাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গির ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। তাঁর মরণপণ সংগ্রাম স্বৈরাচার বিরোধিতার এক উজ্জ্বল ইতিবৃত্ত।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর

তিতুমির কে ছিলেন?

তিতুমিরের প্রকৃত নাম মির নিসার আলি। তিনি বাংলার ওয়াহাবি আন্দোলনের নেতা ছিলেন এবং সৈয়দ আহমেদের শিষ্যত্ব গ্রহণ করে বাংলায় ওয়াহাবি আদর্শ প্রচার করেন।

বারাসাত বিদ্রোহের কারণ কী ছিল?

বারাসাত বিদ্রোহের মূল কারণ ছিল –
1. স্থানীয় জমিদার, নীলকর ও ইংরেজ শাসকদের অত্যাচার ও শোষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ।
2. কৃষ্ণদেব রায় (জমিদার), গোবরডাঙার জমিদার ও সুদখোর মহাজনদের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা।

তিতুমিরের লক্ষ্য কী ছিল?

তিতুমিরে চেয়েছিলেন –
1. জমিদার, নীলকর ও ইংরেজদের উৎখাত করতে।
2. শোষণমুক্ত স্বাধীন শাসন প্রতিষ্ঠা করতে।

বাঁশের কেল্লা কী?

তিতুমির বারাসাতের নারকেলবেড়িয়া গ্রামে বাঁশের কেল্লা নির্মাণ করেন এবং সেখানে তার সদর দপ্তর স্থাপন করেন। তিনি নিজেকে ‘বাদশাহ্’ ঘোষণা করেন ও জমিদারদের কাছ থেকে রাজস্ব আদায় শুরু করেন।

বারাসাত বিদ্রোহ কীভাবে শেষ হয়?

1831 সালে ব্রিটিশ সেনাবাহিনী কর্ণেল স্টুয়ার্টের নেতৃত্বে বাঁশের কেল্লা আক্রমণ করে। কামানের গোলায় কেল্লা ধ্বংস হয় এবং তিতুমির ও তার অনুগামীরা যুদ্ধে মৃত্যুবরণ করেন।

তিতুমিরের বিদ্রোহের ঐতিহাসিক গুরুত্ব কী?

তিতুমিরের বিদ্রোহের ঐতিহাসিক গুরুত্বগুলি হল –
1. এটি ছিল বাংলায় প্রথম সশস্ত্র ব্রিটিশবিরোধী সংগ্রাম।
2. ধর্মীয় চেতনার পাশাপাশি এটি ছিল শোষণবিরোধী কৃষক বিদ্রোহ।
3. ইতিহাসবিদ গৌতম ভদ্র তিতুমিরের অসাম্প্রদায়িক চেতনার প্রশংসা করেছেন।

তিতুমিরের আন্দোলন কি শুধু ধর্মীয় ছিল?

না, এটি কেবল ধর্মীয় আন্দোলন ছিল না। এটি জমিদার, নীলকর ও ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে কৃষকদের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংগ্রাম ছিল।

তিতুমিরের বিদ্রোহের ব্যর্থতার কারণ কী?

তিতুমিরের বিদ্রোহের ব্যর্থতার কারণগুলি হল –
1. ব্রিটিশদের সামরিক শক্তির কাছে তিতুমিরের সৈন্যদের পরাজয়।
2. আধুনিক অস্ত্র ও কৌশলের অভাব।
3. ব্যাপক জনসমর্থনের অভাব।

তিতুমিরের সংগ্রামের স্মৃতিচিহ্ন কী আছে?

বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের বারাসাত ও নারকেলবেড়িয়া অঞ্চলে তিতুমিরের বাঁশের কেল্লার স্মৃতি রয়েছে। তাঁকে ব্রিটিশবিরোধী সংগ্রামের অগ্রপথিক হিসেবে স্মরণ করা হয়।

তিতুমিরের বিদ্রোহের পরবর্তী প্রভাব কী ছিল?

এটি পরবর্তীকালে সিপাহি বিদ্রোহ (1857) ও অন্যান্য কৃষক আন্দোলনকে প্রেরণা দিয়েছিল।


এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “তিতুমিরের নেতৃত্বে বারাসত বিদ্রোহ – টীকা লেখো।” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই “তিতুমিরের নেতৃত্বে বারাসত বিদ্রোহ – টীকা লেখো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ইতিহাসের তৃতীয় অধ্যায় “প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ – বৈশিষ্ট্য ও বিশ্লেষণ” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।

Share via:

মন্তব্য করুন