এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “উপাদানগত তারতম্যের ভিত্তিতে বায়ুমণ্ডলের স্তরবিন্যাস করো।” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোল পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। “উপাদানগত তারতম্যের ভিত্তিতে বায়ুমণ্ডলের স্তরবিন্যাস, করো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের প্রথম অধ্যায় “বায়ুমণ্ডল – উপাদান ও উষ্ণতার ভিত্তিতে বায়ুমণ্ডলের স্তরবিন্যাস” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

উপাদানগত তারতম্যের ভিত্তিতে বায়ুমণ্ডলের স্তরবিন্যাস করো।
অথবা, রাসায়নিক গঠন অনুসারে বায়ুমণ্ডলের স্তরবিন্যাস করো ও বিবরণ দাও।
উপাদানগত তারতম্যের ভিত্তিতে বায়ুমণ্ডলের স্তর বিন্যাস –
উপাদানগত তারতম্যের ভিত্তিতে বা রাসায়নিক গঠন অনুসারে বায়ুমণ্ডলকে দুটি ভাগে ভাগ করা হয়। যথা –
সমমণ্ডল (Homosphere) –
সমুদ্র সমতল থেকে ঊর্ধ্বে 100 কিমি (মতান্তরে 80-90 কিমি) উচ্চতা পর্যন্ত অংশে বায়ুমণ্ডল গঠনকারী উপাদানগুলির অনুপাত মোটামুটি একই রকম থাকে, তাই এই স্তর সমমণ্ডল নামে পরিচিত।
বিশেষত্ব –
- বিভিন্ন প্রকার গ্যাস (নাইট্রোজেন 78.09%, অক্সিজেন 20.95%, কার্বন ডাইঅক্সাইড 0.03%, কয়েকটি নিষ্ক্রিয় গ্যাস), জলীয় বাষ্প এবং জৈব ও অজৈব কণিকা দ্বারা এই স্তরটি গঠিত।
- সমমণ্ডলের প্রকৃতিই পৃথিবীর জলবায়ু নির্ধারণ করে।
- সমমণ্ডলকে উষ্ণতা ও উচ্চতা অনুসারে তিনটি উপস্তরে ভাগ করা যায়। যথা – ট্রপোস্ফিয়ার, স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার ও মেসোস্ফিয়ার।
বিষমমণ্ডল (Heterosphere) –
হোমোস্ফিয়ার বা সমমণ্ডলের ঊর্ধ্বে প্রায় 100 কিমি থেকে 10,000 কিমি পর্যন্ত অংশে বায়ুমণ্ডল গঠনকারী উপাদানগুলির অনুপাত একই রকম থাকে না এবং বিভিন্ন গ্যাসের স্তরগুলির মধ্যে বিভিন্নতা দেখা যায়। তাই এই স্তর বিষমমণ্ডল নামে পরিচিত।
বিশেষত্ব –
- এই স্তরটিতে আণবিক ওজন অনুসারে প্রথমে ভারী গ্যাস এবং ধীরে ধীরে উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে হালকা গ্যাস অবস্থান করে।
- আয়নিত মাত্রা ও অন্যান্য বৈশিষ্ট্য অনুসারে বিষমমণ্ডলকে তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়। যথা – আয়নোস্ফিয়ার, এক্সোস্ফিয়ার এবং ম্যাগনেটোস্ফিয়ার।


কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
উপাদানগত তারতম্যের ভিত্তিতে বায়ুমণ্ডলকে কয়টি ভাগে ভাগ করা হয়?
উপাদানগত তারতম্যের ভিত্তিতে বায়ুমণ্ডলকে দুটি প্রধান ভাগে ভাগ করা হয় –
1. সমমণ্ডল (Homosphere)
2. বিষমমণ্ডল (Heterosphere)
সমমণ্ডল কাকে বলে? এর উচ্চতা কত?
সমুদ্র সমতল থেকে 80-100 কিমি উচ্চতা পর্যন্ত বায়ুমণ্ডলের যে অংশে গ্যাসীয় উপাদানগুলির অনুপাত প্রায় একই থাকে, তাকে সমমণ্ডল (Homosphere) বলে।
সমমণ্ডলের প্রধান গ্যাসগুলি কী কী?
সমমণ্ডলের প্রধান গ্যাসগুলি হলো –
1. নাইট্রোজেন (78.09%)
2. অক্সিজেন (20.95%)
3. কার্বন ডাইঅক্সাইড (0.03%)
4. অন্যান্য নিষ্ক্রিয় গ্যাস (আর্গন, নিয়ন ইত্যাদি)
সমমণ্ডলকে কয়টি স্তরে ভাগ করা যায়?
সমমণ্ডলকে তিনটি স্তরে ভাগ করা যায় –
1. ট্রপোস্ফিয়ার (ভূপৃষ্ঠ থেকে 10-12 কিমি পর্যন্ত)
2. স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার (10-50 কিমি পর্যন্ত)
3. মেসোস্ফিয়ার (50-80/100 কিমি পর্যন্ত)
বিষমমণ্ডল কাকে বলে? এর উচ্চতা কত?
সমমণ্ডলের উপরে 100 কিমি থেকে 10,000 কিমি পর্যন্ত বায়ুমণ্ডলের যে অংশে গ্যাসীয় উপাদানগুলির অনুপাত সমান থাকে না, তাকে বিষমমণ্ডল (Heterosphere) বলে।
বিষমমণ্ডলে গ্যাসগুলি কীভাবে সজ্জিত থাকে?
বিষমমণ্ডলে গ্যাসগুলি আণবিক ওজনের ভিত্তিতে স্তরবদ্ধ থাকে –
1. নিচে নাইট্রোজেন (N₂)
2. তার উপরে অক্সিজেন (O₂)
3. তারপর হিলিয়াম (He)
4. সবচেয়ে উপরে হাইড্রোজেন (H₂)
বিষমমণ্ডলের প্রধান স্তরগুলি কী কী?
বিষমমণ্ডলকে প্রধানত তিনটি স্তরে ভাগ করা যায় –
1. আয়নোস্ফিয়ার (100-400 কিমি) – আয়নিত কণা থাকে, রেডিও তরঙ্গ প্রতিফলন করে।
2. এক্সোস্ফিয়ার (400-10,000 কিমি) – অত্যন্ত হালকা গ্যাস (হাইড্রোজেন, হিলিয়াম) থাকে।
3. ম্যাগনেটোস্ফিয়ার – পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্র দ্বারা প্রভাবিত অঞ্চল।
আয়নোস্ফিয়ার কেন গুরুত্বপূর্ণ?
আয়নোস্ফিয়ার রেডিও তরঙ্গ প্রতিফলন করে, যা দূরসঞ্চার (টেলিকমিউনিকেশন) ও বেতার যোগাযোগে সাহায্য করে। এছাড়া এখানে অরোরা (মেরুজ্যোতি) দেখা যায়।
এক্সোস্ফিয়ারকে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের শেষ স্তর বলা হয় কেন?
এক্সোস্ফিয়ার 10,000 কিমি পর্যন্ত বিস্তৃত এবং এখানে বায়ুর ঘনত্ব এতই কম যে গ্যাসীয় কণাগুলি মহাশূন্যে মিশে যায়। তাই এটিকে বায়ুমণ্ডলের শেষ স্তর ধরা হয়।
এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “উপাদানগত তারতম্যের ভিত্তিতে বায়ুমণ্ডলের স্তরবিন্যাস, করো।” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই “উপাদানগত তারতম্যের ভিত্তিতে বায়ুমণ্ডলের স্তরবিন্যাস করো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের প্রথম অধ্যায় “বায়ুমণ্ডল – উপাদান ও উষ্ণতার ভিত্তিতে বায়ুমণ্ডলের স্তরবিন্যাস” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।