ইয়ার্দাং ও জিউগেন কাকে বলে? ইয়ার্দাং ও জিউগেন -এর পার্থক্য লেখো।

Rahul

এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “ইয়ার্দাং ও জিউগেন কাকে বলে? ইয়ার্দাং ও জিউগেন -এর পার্থক্য লেখো।” নিয়ে আলোচনা করব। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোল পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। “ইয়ার্দাং ও জিউগেন কাকে বলে? ইয়ার্দাং ও জিউগেন -এর পার্থক্য লেখো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের প্রথম অধ্যায় “বহির্জাত প্রক্রিয়া ও তার দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপ – বায়ুর বিভিন্ন কাজ ও তাদের দ্বারা সংশ্লিষ্ট ভূমিরূপ” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়।

ইয়ার্দাং ও জিউগেন -এর পার্থক্য লেখো।
ইয়ার্দাং ও জিউগেন -এর পার্থক্য লেখো।

ইয়ার্দাং ও জিউগেন কাকে বলে?

ইয়াদাং –

সংজ্ঞা –

মরূভূমি বা মরূপ্রায় অঞ্চলে বায়ুপ্রবাহের গতিপথে কঠিন ও কোমল শিলা উলম্বভাবে অবস্থান করলে অবঘর্ষ প্রক্রিয়ায় কোমল শিলা দ্রুত ক্ষয়প্রাপ্ত হলেও কঠিন শিলাস্তর পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ে টিলার আকারে দাঁড়িয়ে থাকে, এদের ইয়াদাং বলে।

বৈশিষ্ট্য –

  • ইয়াদাং এর উচ্চতা 6 মিটার, প্রস্ত 36 মিটার, বিস্তার 70-400 মিটার পর্যন্ত হতে পারে।
  • এদের মাথাগুলি ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে সূচালো হলে তাকে নিডিল বলে।
  • শিলাস্তর বায়ুপ্রবাহের সমান্তরালে বিন্যাস্ত হওয়া দরকার।

উদাহরণ – চিলির আটাকামা ও সৌদি আরবের মরূভূমিতে ইয়াদাং বেশি দেখা যায়।

জিউগেন –

সংজ্ঞা –

মরু অঞ্চলে কঠিন ও কোমল শিলা বায়ুপ্রবাহের সঙ্গে আড়াআড়িভাবে অবস্থান করলে বায়ুর অবঘর্ষ প্রক্রিয়ায় কঠিন শিলা কম এবং কোমল শিলা দ্রুত ক্ষয়পেয়ে উপরে চওড়া নীচে সরূ আকৃতির যে ভূমিরূপ সৃষ্টি করে তাকে জিউগেন বলে।

বৈশিষ্ট্য –

  • এদের উপরিভাগ বা মস্তকদেশ চ্যাপটা ও সমতল হয়।
  • এদের উচ্চতা 2-40 মিটার পর্যন্ত হয়।
  • এদের দেখতে ছোটো ছোটো ব্যাঙের ছাতার মতো হয়ে।

উদাহরণ – কালাহারি ও অস্ট্রেলিয়ার মরুভূমিতে এরূপ ভূমিরূপ দেখতে পাওয়া যায়।

ইয়ার্দাং ও জিউগেন -এর পার্থক্য লেখো।

ইয়ার্দাং ও জিউগেনের মধ্যে পার্থক্য –

বিষয়ইয়ার্দাংজিউগেন
গঠনের কারণবায়ুর গতিপথে কঠিন ও কোমল শিলা উল্লম্ব বা একনত ভাবে অবস্থান করলে বায়ুর ক্ষয়কার্যের ফলে কোমল শিলা ক্ষয় পেয়ে ইয়ার্দাং গঠন করে।বায়ুর গতিপথে কঠিন ও কোমল শিলা সমান্তরালে অবস্থান করলে বায়ুর ক্ষয়কার্যের ফলে শৈলশিরার মতো জিউগেন গঠন করে।
অবস্থানএই ভূমিরূপগুলি সাধারণত সমান্তরালভাবে অবস্থান করে।এই ভূমিরূপের ক্ষেত্রে কঠিন শিলা কম এবং কোমল শিলা বেশি ক্ষয় পাওয়ায় ছোটো ব্যাঙের ছাতার মতো অবস্থান করে।
প্রকৃতিএদের মাথাগুলি ক্ষয়কাজের ফলে ছুঁচোলো বা অসমতল প্রকৃতির হয়।এদের মাথাগুলি সমতল চূড়াবিশিষ্ট হয়। ভূপৃষ্ঠ থেকে 3-30 মিটার পর্যন্ত উঁচু হয়।
বৈশিষ্ট্যইয়ার্দাং -এর মাথাগুলি ক্রমশ ক্ষয় পেয়ে ছুঁচোলো প্রকৃতির হয়, এদের নিডিল বলে।বায়ুর ক্ষয়কাজের ফলে জিউগেনের মাথাগুলি ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে চ্যাপটা আকৃতিবিশিষ্ট হয়।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর

ইয়ার্দাং কাকে বলে?

মরুভূমি বা মরুপ্রায় অঞ্চলে বায়ুপ্রবাহের গতিপথে কঠিন ও কোমল শিলা উল্লম্বভাবে অবস্থান করলে বায়ুর অবঘর্ষ প্রক্রিয়ায় কোমল শিলা দ্রুত ক্ষয়প্রাপ্ত হয়, কিন্তু কঠিন শিলাস্তরগুলি বিচ্ছিন্ন হয়ে টিলার আকারে দাঁড়িয়ে থাকে। এই ভূমিরূপকে ইয়ার্দাং বলে।

জিউগেন কী?

মরু অঞ্চলে কঠিন ও কোমল শিলা বায়ুপ্রবাহের সঙ্গে আড়াআড়িভাবে অবস্থান করলে বায়ুর অবঘর্ষ প্রক্রিয়ায় কোমল শিলা দ্রুত ক্ষয় পেয়ে উপরে চওড়া ও নীচে সরু আকৃতির ভূমিরূপ সৃষ্টি করে, একে জিউগেন বলে।

ইয়ার্দাং -এর উচ্চতা কত হতে পারে?

ইয়ার্দাং -এর উচ্চতা সাধারণত 6 মিটার, প্রস্থ 36 মিটার এবং বিস্তার 70-400 মিটার পর্যন্ত হতে পারে।

নিডিল কী?

ইয়ার্দাং -এর মাথাগুলো ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে সূচালো আকৃতি ধারণ করলে তাকে নিডিল বলে।

জিউগেন দেখতে কেমন হয়?

জিউগেন দেখতে ছোটো ছোটো ব্যাঙের ছাতার মতো হয়, যার মাথা চ্যাপটা ও নিচের দিক সরু।

ইয়ার্দাং ও জিউগেন কোথায় দেখা যায়?

1. ইয়ার্দাং – চিলির আটাকামা মরুভূমি, সৌদি আরবের মরুভূমি।
2. জিউগেন – কালাহারি মরুভূমি, অস্ট্রেলিয়ার মরুভূমি।

বায়ুর কোন প্রক্রিয়ায় ইয়ার্দাং ও জিউগেন সৃষ্টি হয়?

বায়ুর অবঘর্ষ প্রক্রিয়া (Abrasion) ও অপসারণ প্রক্রিয়া (Deflation) এর মাধ্যমে ইয়ার্দাং ও জিউগেন সৃষ্টি হয়।

ইয়ার্দাং ও জিউগেনের সৃষ্টিতে শিলার প্রকৃতি কীভাবে ভূমিকা রাখে?

1. ইয়ার্দাং – কঠিন ও কোমল শিলা উল্লম্বভাবে থাকলে কোমল শিলা দ্রুত ক্ষয় পায়।
2. জিউগেন – কঠিন ও কোমল শিলা আড়াআড়িভাবে থাকলে কোমল শিলা বেশি ক্ষয় পায়।

জিউগেনের উচ্চতা কত পর্যন্ত হতে পারে?

জিউগেনের উচ্চতা সাধারণত 2-40 মিটার পর্যন্ত হয়।


এই আর্টিকেলে আমরা মাধ্যমিক ভূগোলের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন “ইয়ার্দাং ও জিউগেন কাকে বলে? ইয়ার্দাং ও জিউগেন -এর পার্থক্য লেখো।” নিয়ে আলোচনা করেছি। এই “ইয়ার্দাং ও জিউগেন কাকে বলে? ইয়ার্দাং ও জিউগেন -এর পার্থক্য লেখো।” প্রশ্নটি মাধ্যমিক ভূগোলের প্রথম অধ্যায় “বহির্জাত প্রক্রিয়া ও তার দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপ – বায়ুর বিভিন্ন কাজ ও তাদের দ্বারা সংশ্লিষ্ট ভূমিরূপ” -এর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নটি মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবং চাকরির পরীক্ষায় প্রায়ই দেখা যায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য উপকারী হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন বা অসুবিধা থাকলে, আমাদের সাথে টেলিগ্রামে যোগাযোগ করতে পারেন, আমরা উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়া, নিচে আমাদের এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনের সাথে শেয়ার করুন, যাদের এটি প্রয়োজন হতে পারে। ধন্যবাদ।

Please Share This Article

Related Posts

রাশিবিজ্ঞান-গড়, মধ্যমা, ওজাইভ, সংখ্যাগুরুমান-কষে দেখি 26.4-মাধ্যমিক গণিত

মাধ্যমিক গণিত – রাশিবিজ্ঞান: গড়, মধ্যমা, ওজাইভ, সংখ্যাগুরুমান – কষে দেখি 26.4

রাশিবিজ্ঞান-গড়, মধ্যমা, ওজাইভ, সংখ্যাগুরুমান-কষে দেখি 26.3-মাধ্যমিক গণিত

মাধ্যমিক গণিত – রাশিবিজ্ঞান: গড়, মধ্যমা, ওজাইভ, সংখ্যাগুরুমান – কষে দেখি 26.3

রাশিবিজ্ঞান-গড়, মধ্যমা, ওজাইভ, সংখ্যাগুরুমান - কষে দেখি 26.2-মাধ্যমিক গণিত

মাধ্যমিক গণিত – রাশিবিজ্ঞান: গড়, মধ্যমা, ওজাইভ, সংখ্যাগুরুমান – কষে দেখি 26.2

About The Author

Rahul

Tags

মন্তব্য করুন

SolutionWbbse

"SolutionWbbse" শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনলাইন অধ্যয়ন প্ল্যাটফর্ম। এখানে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য গাইডলাইন, এবং বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনার সাহায্য প্রদান করা হয়। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকল বিষয়ের শিক্ষণীয় উপকরণ সহজেই সকল শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়া।

Editor Picks

Madhyamik English Suggestion 2026

Madhyamik Bengali Suggestion 2026

Madhyamik Bengali Suggestion 2026 – প্রবন্ধ রচনা

Madhyamik Bengali Suggestion 2026 – প্রতিবেদন

Madhyamik Bengali Suggestion 2026 – সংলাপ